মঙ্গলবার | ৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:০২
Logo
এই মুহূর্তে ::
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী : তপন মল্লিক চৌধুরী সাত্যকি হালদার-এর ছোটগল্প ‘ডেলিভারি বয়’ নব নব রূপে এস প্রাণে : মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য ভারতের সংবিধান লেখার সেই ঝর্না কলমটা… : দিলীপ মজুমদার গীতা রাজনৈতিক অস্ত্র নয়, ভারতাত্মার মর্মকথা : সন্দীপন বিশ্বাস সিন্ধুসভ্যতা ও সুমেরীয় সভ্যতায় কস্তুরীর ভূমিকা : অসিত দাস রবি ঠাকুর ও তাঁর জ্যোতিদাদা : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী তরল সোনা খ্যাত আগর-আতর অগুরু : রিঙ্কি সামন্ত নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সাদা-কালো রীল’ গঙ্গার জন্য লড়াই, স্বার্থান্বেষীদের ক্রোধের শিকার সাধুরা : দিলীপ মজুমদার সিন্ধুসভ্যতার প্রধান মহার্ঘ রপ্তানিদ্রব্য কস্তুরী : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক করিডোর : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন রামকৃষ্ণ মিশন মানে ধর্মকর্ম নয়, কর্মই যাঁদের ধর্ম তাঁরাই যোগ্য : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে সিংহবাহিনী মন্দির, নবগ্রাম (ঘাটাল) : কমল ব্যানার্জী পরিবেশ মেলা ২০২৫ : ড. দীপাঞ্জন দে মন্দির-রাজনীতি মন্দির-অর্থনীতি : দিলীপ মজুমদার স্বাধীনতা-সংগ্রামী মোহনকালী বিশ্বাস স্মারকগ্রন্থ : ড. দীপাঞ্জন দে অক্ষয়তৃতীয়া, নাকি দিদিতৃতীয়া : অসিত দাস আরএসএস-বিজেপি, ধর্মের তাস ও মমতার তৃণমূল : দিলীপ মজুমদার সাবিত্রি রায় — ভুলে যাওয়া তারার খোঁজে… : স্বর্ণাভা কাঁড়ার ছ’দশক পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত বা সাময়িক অকার্যকর হওয়া নিয়ে প্রশ্ন : তপন মল্লিক চৌধুরী বিস্মৃতপ্রায় বঙ্গের এক গণিতবিদ : রিঙ্কি সামন্ত অসুখবেলার পাণ্ডুলিপি : পুরুষোত্তম সিংহ বাবু-ইংরেজি আর সাহেবি বাংলা : মাহবুব আলম সিন্ধুসভ্যতার ফলক ও সিলে হরিণের শিং-বিশিষ্ট ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি : অসিত দাস বৈশাখ মাসে কৃষ্ণপক্ষে শ্রীশ্রীবরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত সিন্ধুসভ্যতার লিপি যে প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার অকাট্য প্রমাণ : অসিত দাস বাঙালির মায়াকাজল সোনার কেল্লা : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ট্যাটু এখন ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ : রিঙ্কি সামন্ত ফের আমেদাবাদে হিন্দুত্ববাদীদের অন্য ধর্মের উপর হামলা : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ অক্ষয় তৃতীয়ার আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

নব নব রূপে এস প্রাণে : মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য

মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য / ৩৫ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ৫ মে, ২০২৫

বাঙালীর অন্তরআত্মায় কান পাতলে একটা নামই রিনরিনিয়ে ওঠে। “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর”। মানবমনের সকল অনুভূতিতে যে তাঁর অনায়াস চলন! তাইতো নানান দৃষ্টকোণ থেকে তাঁর সৃষ্টি ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে অনুভূত হয়ে জুড়ে থাকে বাঙালীর সকল সত্তায়। তাঁর ভাবনায় নারী মননের বিকাশ যেভাবে ঘটেছে আজকের নারীর তাকে অস্বীকার করার সাধ্য কি! যুগান্তরের আলোয় সে নিজের মতো করে নতুনভাবে রবি-ভাবনায় মজে থাকে। রবীন্দ্র-সৃষ্টি যে চির-নতুন। আবহমানের প্রথম রবিরশ্মিতে প্রতিটি দিন যেমন নতুন করে উদ্ভাসিত হয় ঠিক তেমনই একেক মনের বীণার তারে কবির সৃষ্টি একেকভাবে ঝঙ্কৃত হয়ে চলে। আমরা উদ্দীপিত হই। তিনিই আবার নিয়ে চলেন নতুনের খোঁজে। কল্পনার আকাশ বড়ো হতে থাকে। এ থেকে বাঙালীর ইহজনমে মুক্তি নেই। অপার আনন্দে রবিঠাকুরের আসন পাতা থাকে হৃদয় জুড়ে।

এই বিশ্বসংসারে বারেবারে নিজেকে খুঁজে ফেরে নারী, “কে আমি?”

উত্তর মেলে না।

এই কঠিন ধরণী যখন মূক হয়ে থাকে তখনই জীবনের সব অম্লমধুর, হর্ষ-বিষাদ অনুভূতির ডালার মাঝে নারী সত্তার প্রকৃত রূপটিকে মেলে ধরে কবির সৃষ্টি। সেই অতল গহীন রত্নরাজির মাঝে এক অসীম নিত্য আনন্দে নিজেকে সে দেখতে পায়; পুলকিত হয়। মনের অনন্ত দোলাচল কাটিয়ে নারী-মন বাতাসে অণুরনিত হয়ে বলে ওঠে, “ওগো কবি, তোমার সৃষ্টিমাঝে আমিই যে চারুলতা, আমিই দামিনী, আবার একাধারে আমিই লাবণ্য, বিমলা, কুমুদিনী। আমার জীবনে শ্বাসের বাতাস হয়ে তুমিই যে আমার মরণ, রবি ঠাকুর।”

তাইতো ঘরে-বাইরে নানান ওঠাপড়ায় জর্জরিত হয়েও এযুগের মেয়ে ভাবে, “সন্দীপ, তোমার বোহেমিয়ান জীবনে আমি যে মরেছি; সংসারঘাটায় জীবনের নোঙর আটকে, তবু তোমার ডাক উপেক্ষা করতে পারি কই?

ইহজীবনে আর কোথাও আমার রূপের কদর না থাকলেও আমিই তো তোমার মক্ষী, মক্ষীরাণী।”

ভাবে, “শুধুমাত্র প্রাচুর্য কি জীবনের ঘড়া ভরাতে পারে, যদি না তাতে থাকে স্তাবকতার ছলাৎছল!

রবিঠাকুর তুমি বুঝি জানতে, সহস্র আলোকবর্ষ জুড়ে আমার মতো সামান্যা সীমন্তিনী তোমার সন্দীপের প্রেমে উতলা হবে? তাই বুঝি বাইরের খোলা হাওয়ার ডাকে তোমার বিমলাকেও অন্তর্দ্বন্দ্বে ছিন্নভিন্ন করে চিরকালীন দোলাচলের আয়নার সামনে দাঁড় করিয়েছিলে?

ওগো হৃদয়হরণ, তোমার এ ডাকে আজ আমিও যে ভেসেছি অনির্দেশের পথে, তাইতো আজ এ বাদলঘন নিশীথে আমার মনের রক্তকরবীর ডালি নিয়ে এসেছি তোমারই দ্বারে।

প্রেমের ঠাকুর, এ ভালোবাসার মরণে আজ আমার লাজ নেই, শঙ্কা নেই; জানি শেষ পর্যন্ত তুমি আমাতেই আছ। তোমার বাণী বাজে বুকের মাঝে, —

পাড়ি দিতে নদী হাল ভাঙে যদি, ছিন্ন পালের কাছি

মৃত্যুর মুখে দাঁড়ায়ে জানিব তুমি আছ আমি আছি।

আমায় নিয়ে নিত্য খেলায় মেতে থাক তুমি। দেশের বিমূর্ত আত্মাকে যখন মূর্ত করে তোল, আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে। তোমার ইচ্ছেয় আজকের সুচরিতা অস্ফুটে ডেকে ওঠে, — “এই গোরা, গোরা।” জানি সে সাড়া দেবে না, তবুও; আমার হৎপিণ্ডের লাবডুব শব্দ যে নিজের কানেই বাজতে থাকে। মনে মনে বলি, — “তুমি জান না গোরা, তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম, মনের দুন্দুভিতে ঘা পড়েছিল। রবিঠাকুরের পাতায় তোমার তেজোদৃপ্ত চেহারায় মুগ্ধ ছিলাম আমি, যদিও তোমার প্রেমিকা সুচরিতার মতই তোমার উগ্ৰ হিঁদুয়ানীকে পছন্দ করতাম না মোটেই, তবুও তোমার যুক্তিনিষ্ঠ সত‍্যকার দেশপ্রেমের ভেতর দিয়ে কৈশোরের আঙিনা ছেড়ে সদ্য যৌবনে পা দেওয়া আমি চিনেছিলাম আমার প্রকৃত ভারতবর্ষকে।

আজ তুমি রবিবাবুর পাতা থেকে উঠে এসেছ আমার সামনে। শিয়ালদহ স্টেশনের অজস্র যাত্রীর ভিড়ের মাঝে আমার মুগ্ধ দৃষ্টি এখন তোমাতেই আটকে। সবেমাত্র স্টেশনে এসে থামা ট্রেন থেকে নেমে আমার সামনে দিয়ে তুমি চলে যাচ্ছ তোমার গন্তব্যের পথে।

উন্নত গ্ৰীবা, প্রশস্ত ললাট, কাঁধ পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা খেয়ালী চুল, তপ্ত কাঞ্চনবর্ণ চেহারায় পাঞ্জাবীর ওপর একটা ঝোলা নিয়ে আজকের গোরা চলেছে আমার সামনে দিয়ে। কোনদিকে দৃকপাত না করে ঋজু পদক্ষেপে যেন ভারতবর্ষের আত্মাকে আত্মস্থ করে চলেছে এক বাউল সন্ন্যাসী। আজ একুশ শতকের সুচরিতাও মুগ্ধ রবিঠাকুরের পাতা থেকে উঠে আসা তার আপন গোরাতে।”

ওগো নিরুপম, তোমার সাধারণ মেয়ে তোমাকে আকুতি জানিয়েছিল একটিবার তাকে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ আমার মতো সামান্যার কাছে তুমি যে নিজেই হেরে বসেছ সারা জনমের মতো। বাঁধা পড়েছো আমার হৃদয়কুসুমের তিথিডোরে। সে ডোর ছিন্ন করবে এমন সাধ‍্য তোমার নেই।

ওগো পরাণসখা, তোমার কিরণেই আজ আমার সাজহীন অর্ঘ্যডালি আপন মহিমায় দীপ্ত। আমি জানি, —

আমায় দেখবে বলে তোমার অসীম কৌতূহল

নইলে তো এই সূর্যতারা সকলি নিষ্ফল।

তোমার অসীম প্রসন্নতার মাঝেই আমার হৃদয়ের সকল আলো লুকিয়ে আছে। সব সুন্দরের আশায় আমার সকল প্রেমের ঐশ্বর্যের মুক্তি তোমারই সৃষ্টির মাঝখানে।

তবে ঠাকুর তোমাকেই বলি, আমি কিন্তু তোমার লাবণ্যর মতো মহিয়সী নই কখনোই। তার আবেগকে সে রেখেছে একান্ত অনুভূতির আড়ালে আর তার ভালোবাসা লোকায়তের সীমানা ছাড়িয়ে এক অনন‍্য শাশ্বত মাধুর্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। হারানোর বেদনাতেও তোমার লাবণ‍্য সংযত। তাইতো সে তার ভালোবাসাকে অনায়াসে বলতে পারে, “তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারই দান, গ্ৰহণ করেছ যত, ঋণী তত করেছ আমায়”।

ওগো সখা, তোমাকে কিছু দেওয়ার স্পর্ধা যে এই সামান‍্যার নেই। আমি ঋণীই ও তো নই কোনোভাবে। তোমার সকল সৃষ্টি যে আমারই মাঝে প্রকাশিত আমার প্রাণবায়ু যে তোমাতেই নিহিত।

হে প্রিয়, ‘তোমার আলোয় নাই তো ছায়া

আমার মাঝে পায় সে কায়া

হয় সে আমার অশ্রুজলে সুন্দর বিধুর

আমার মধ্যে তোমার শোভা এমনই সুমধুর’

এক অবিনশ্বর শাশ্বত সৌন্দর্যে তোমাতেই আমি নব নব রূপে এক সামান্যা নারী।।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন