বৃহস্পতিবার | ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:১৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
কেন বারবার মণিপুরে আগুন জ্বলে আর রক্ত ঝড়ে : তপন মল্লিক চৌধুরী শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (শেষ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (প্রথম পর্ব) : অভিজিৎ রায় শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (ষষ্ঠ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (পঞ্চম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ? : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (চতুর্থ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার শতবর্ষে সঙ্গীতের ‘জাদুকর’ সলিল চৌধুরী : সন্দীপন বিশ্বাস সাজানো বাগান, প্রায় পঞ্চাশ : অমর মিত্র শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (তৃতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (একাদশ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার খাদ্যদ্রব্যের লাগামছাড়া দামে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের : তপন মল্লিক চৌধুরী মিয়ানমারের সীমান্ত ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (দ্বিতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (দশম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বুদ্ধদেব গুহ-র ছোটগল্প ‘পহেলি পেয়ার’ ‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (প্রথম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (নবম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘তোমার নাম’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (অষ্টম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘হাওয়া-বদল’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার প্রবোধিনী একাদশী ও হলদিয়ায় ইসকন মন্দির : রিঙ্কি সামন্ত সেনিয়া-মাইহার ঘরানার শুদ্ধতম প্রতিনিধি অন্নপূর্ণা খাঁ : আবদুশ শাকুর নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘শুভ লাভ’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

উৎসবের আমেজ আহারে : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৬২৭ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২

বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। দুর্গাপূজা আমাদের কাছে যতটা ধর্মীয়, ততটাই সামাজিক। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই নয়, এতে সব ধর্মের মানুষেরাই অংশ গ্রহণ করেন। আসলে কোথাও যেন বাড়ির মেয়ে বাপের বাড়ী ফেরার আমোদের বহিঃপ্রকাশ দুর্গাপূজা। এহেন অনুষ্ঠানে খাওয়া দাওয়া হবে না, এটা তো হতেই পারে না।

শুরুতে কলকাতার বনেদি পরিবারগুলোতে পুজোয় মহাভোজের আয়োজন করা হতো। মুখরোচক নানান খাবার তৈরি হতো বাঙালি রন্ধন পটিয়সী গৃহিণীর রান্নাঘর থেকেই। প্রাচীনকালে রন্ধন শৈলীকে চৌষট্টি কলার অন্যতম কলা বলে গণ্য করা হতো। পরিবারের সকলে পুজোয় একত্রিত হলে নিজেকে সু-রাঁধুনী প্রমাণ করার জন্য চলতো খাদ্যের নানা রকম নবপদ সৃষ্টি। সেই ট্র্যাডিশন কিন্তু আজো চলে আসছে।

নারকেলি মুরগি

যেহেতু পুজোর মরশুম চলছে, উৎসবের আবহাওয়ায় হেঁসেলে নতুনত্ব আনতে সবাই চায়। ঘরেতে রোজের একঘেয়ে রান্না না করে ট্রাই করতে পারেন নবরত্ন কোর্মা, নারকেলি মুরগি, চিংড়ি মাছের দই কারি, চিতল মুইঠ্যার পোলাও, কাজু-পোস্ত ইলিশ, চট্টগ্রামের মেজবানি মাটন, বরিশালের চিংড়ি পিঠা, আম-কাসুন্দি পাবদা, গন্ধরাজি ভেটকি, আফগানি পমফ্রেট, গোল্ডেন ফ্রায়েড প্রণ….। পদের রেসিপি ইন্টারনেট সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। নতুন নতুন ডিশ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন আপনজনেদের।

অষ্টমীতে লুচি, ছোলার ডাল, কাশ্মীরি আলুর দম যতোই ভালো লাগুক না কেন বাঙালির নবমী কিম্বা দশমীতে পাঁঠা বা খাসির মাংসের পাল্লাই ভারী হয় বেশি। তান্ত্রিকমতে অষ্টমী যখন শেষ হয় আর নবমী যখন শুরু হয়, সেই সন্ধিক্ষণই বলির আদর্শ সময়। মা দুর্গাকে এই সময় চামুণ্ডা রূপে পুজো করা হয়। কচি পাঁঠার মাংসকে পেঁয়াজ রসুন ছাড়া রান্না করা হয় ভোগ দেওয়ার জন্য। তাই পুজোয় মটনের আধিপত্য লক্ষনীয়।

নবরত্ন কোর্মা

কষা মাংসের অভিজাত্য হোক বা আলু দিয়ে ঘরোয়া মাংসের আরাম, মাটন সর্বদাই মোহময়। মসলাপাতির অনুপাত বা মূল উপকরণের বৈচিত্র্যে মটনের কোন রান্না হয় স্বাদে জোরালো বা কোনটা রাস্টিক, আবার কোনোটা হাল্কা অথচ সতেজ। পোলাও বা সাদা ভাতের সঙ্গে জমিয়ে মটন খেতে চাইলে বানিয়ে ফেলুন লালটুকটুকে কড়াই মটন বা মটন কোর্মা।

সাদা বড়ো কাঁচের বাটি বা স্টিলের পাত্রে লাল টকটকে ঝোল তাতে মাথা উচুঁ করে ভাসছে মাংসের টুকরো সঙ্গে আটার তন্দুরি রুটি, এক প্লেট স্যালাড আর একটা ছোট বাটির টক দই। গরম রুটি একটু ছিঁড়ে লাল টকটকে মাংসের ঝোলে ডুবিয়ে আলতো করে মুখে ফেলা। রুটি-মাংসের যুগলবন্দী শুধুই দেবে আপনাকে মুগ্ধতা।

চিংড়ি মাছের দই কারি

যুগের পরিবর্তনে বাঙালি খাওয়াদাওয়া আজ অনেকটাই পরিবর্তিত। বিভিন্ন উৎসবের আয়োজনে গৃহিণীরা আজকে আর পঞ্চব্যঞ্জন রাঁধার ঝক্কি নিতে চান না। দুর্গাপুজোর খাওয়া-দাওয়া ক্ষেত্রে এখন অধুনা বাঙালি রেস্তোরাঁর দিকে ঝুঁকেছে। পাত পারছে রেস্তোরাঁর টেবিলে।

তবে পুজোর দিনটা একটু রাজকীয়ভাবে কাটালে মন্দ হয় না। পর্দা বিরিয়ানি, গালাওটি কাবাব, শাহী টুকরার মতো নবাবী স্বাদ পেতে গেলে খেতে পারেন আমার পছন্দের ‘অউধ ১৫৯০’ রেস্তোরাঁয়। পনির সুগন্ধি কাবাব, শাহী দহি কাবাব, মুর্গ কলমি কাবাব দিয়ে শুরু করে মেন কোর্সে রাখতে পারেন অউধ স্পেশাল রান বিরিয়ানি, পিস পোলাও। চাইলে সবজি বিরিয়ানি, ইরানি ঝিঙা মসালা, পনির কোরমা, নেহারি খাস ইত্যাদিও নিতে পারেন।

চিতল মাছের মুইঠ্যা

আপনি যদি চাইনিজ খাবার পছন্দ করেন তবে চলে যেতে পারেন যে কোন চিনে রেস্তোরাঁয়। খেতে পারেন ক্রিস্পি বাটার চিলি গার্লিক প্রণ, চিকেন দান দান নুডুলস, তাওস স্পেশাল ব্ল্যাক পেপার ল্যাম্ব, কুং পাও পর্ক বাও, চিকেন বাও, স্মোকড চিলি পর্ক, ক্রিসপি সিসম চিকেন। সঙ্গে রাইস আর নুডলসের নানারকম পদ আছেই। যে কোন একটি আইটেম বেছে নিয়ে সঙ্গে কামড় বসাতে পারেন তুলতুলে বাও কিম্বা ঝালঝাল চিলি পর্কে। ল্যাম্ব বা ব্রকলির ডিশ ও মন্দ লাগবে না।

চট্টগ্রামের মেজবানি মাটন

এবার আসি দশমীর কথায়। মেয়ে সেদিন শ্বশুর বাড়ি ফিরবে তাই বাড়িতে সবার মন খারাপ। এমনকি রান্না করার ইচ্ছাটুকুও নেই। ফলে আগের দিনের রান্না অর্থ্যৎ পান্তাভাত খাওয়া চলে। এই রীতিকেই বলে শীতলভোগ। কিন্ত শ্বশুর বাড়ি যাবার সময় বাড়ীর ভালো জিনিসটা মেয়েকে খাইয়ে, বেঁধে দেওয়া হয়। বাড়িতে তৈরি বড়ি, আচার, পিঠাপুলি, নাড়ুর মিষ্টিপদ ইত্যাদির প্রচলন আমরা সেখান থেকেই দেখতে পাই। আর বাঙালির সুসংবাদে মিষ্টি, আতিথ্যে মিষ্টি, ভদ্রতায় মিষ্টি, উৎসবে মিষ্টি, খাওয়ার পাতে শেষে মিষ্টি থাকবেই। তবে মিষ্টির ব্যাপারে আমার পছন্দ হুগলির মিষ্টি।

বরিশালের চিংড়ি পিঠা

হুগলি জেলা বঙ্গীয় মিষ্টান্নের পীঠস্থান বুঝতে গেলে আপনাকে খেতে হবে চন্দননগরের সূর্য মোদকের জলভরা সন্দেশ। কিংবদন্তি অনুসারে চন্দননগরের সূর্য কুমার মোদক-ই জলভরা তালশাঁস সন্দেশের আবিস্কারক। সুরসিকরা জানেন, কলকাতার জলভরা শুয়ে থাকে আর চন্দননগরের সূর্য মোদকের জলভরা দাঁড়িয়ে থাকে।

শোনা যায়, সূর্য মোদকের আদি নিবাস ছিলো সুখচরে। সেখান থেকে তিনি চলে এসেছিলেন হুগলি জেলার চন্দননগরে। হুগলিতে সেই সময় খুব ভালো আখ ও চিনি তৈরি করা হতো। সেই চিনি থেকেই মঠ, মুড়কি খুব ভালো তৈরি হতো। সূর্য মোদকেরা প্রথমে দোলো চিনি তৈরি করতেন, পরে মিষ্টান্ন ব্যবসায় আসেন।

গন্ধরাজি ভেটকি

বাঙালির দুর্গাপূজায় খাওয়া দাওয়া এক বিশেষ আকর্ষণ। আর সেই খাওয়া দাওয়ার গপ্প শুরু করলে শেষ করা মুস্কিল। তবে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, বাঙালির উৎসবের ধারা কি সত্যিই পাল্টেছে? আমরা ছোটোবেলায় যেভাবে আনন্দ করতাম, আমাদের ছেলে মেয়েরা কি এখনও সেইভাবে আহ্লাদে আটখানা হয়!! উত্তর হ্যাঁ বা না — যাই হোক না কেন, সবকিছু নিয়েই চলতে হবে। শেষে সকলকে শারদীয়া শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকে লেখার ইতি টানলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।।


আপনার মতামত লিখুন :

8 responses to “উৎসবের আমেজ আহারে : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Amar Nath Banerjee says:

    বেশ ভালো লিখছিস। আমি তোর Fan হয়ে গেছি। অনেক বন্ধুদের বলেছি তোর লেখার কথা।

  2. আশিস ব্যানার্জী says:

    রসালো রেসিপির লেখা, জিভে জল আনা স্বাদ, চমৎকার পরিবেশন।

  3. p k biswas says:

    উৎসবের আমেজ আহারে€ চমৎকার সুন্দর রচনা
    ভোজনের ভজন কীর্তন ভালোলেখা ভালোলাগা
    নিবেদন* অজানাকে জানিয়ে জ্ঞান বৃদ্ধি হলো,কত
    কিছু জানতে পারলাম।ধন্যবাদ পেজ ফোর⭐

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন