শনিবার | ৩রা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:২২
Logo
এই মুহূর্তে ::
সিন্ধুসভ্যতার প্রধান মহার্ঘ রপ্তানিদ্রব্য কস্তুরী : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক করিডোর : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন রামকৃষ্ণ মিশন মানে ধর্মকর্ম নয়, কর্মই যাঁদের ধর্ম তাঁরাই যোগ্য : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে সিংহবাহিনী মন্দির, নবগ্রাম (ঘাটাল) : কমল ব্যানার্জী পরিবেশ মেলা ২০২৫ : ড. দীপাঞ্জন দে মন্দির-রাজনীতি মন্দির-অর্থনীতি : দিলীপ মজুমদার স্বাধীনতা-সংগ্রামী মোহনকালী বিশ্বাস স্মারকগ্রন্থ : ড. দীপাঞ্জন দে অক্ষয়তৃতীয়া, নাকি দিদিতৃতীয়া : অসিত দাস আরএসএস-বিজেপি, ধর্মের তাস ও মমতার তৃণমূল : দিলীপ মজুমদার সাবিত্রি রায় — ভুলে যাওয়া তারার খোঁজে… : স্বর্ণাভা কাঁড়ার ছ’দশক পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত বা সাময়িক অকার্যকর হওয়া নিয়ে প্রশ্ন : তপন মল্লিক চৌধুরী বিস্মৃতপ্রায় বঙ্গের এক গণিতবিদ : রিঙ্কি সামন্ত অসুখবেলার পাণ্ডুলিপি : পুরুষোত্তম সিংহ বাবু-ইংরেজি আর সাহেবি বাংলা : মাহবুব আলম সিন্ধুসভ্যতার ফলক ও সিলে হরিণের শিং-বিশিষ্ট ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি : অসিত দাস বৈশাখ মাসে কৃষ্ণপক্ষে শ্রীশ্রীবরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত সিন্ধুসভ্যতার লিপি যে প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার অকাট্য প্রমাণ : অসিত দাস বাঙালির মায়াকাজল সোনার কেল্লা : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ট্যাটু এখন ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ : রিঙ্কি সামন্ত ফের আমেদাবাদে হিন্দুত্ববাদীদের অন্য ধর্মের উপর হামলা : তপন মল্লিক চৌধুরী লোকসংস্কৃতিবিদ আশুতোষ ভট্টাচার্য ও তাঁর চিঠি : দিলীপ মজুমদার নববর্ষের সাদর সম্ভাষণ : শিবরাম চক্রবর্তী নববর্ষ গ্রাম থেকে নগরে : শিহাব শাহরিয়ার ফিরে আসছে কলের গান : ফজলুল কবির সিন্ধুসভ্যতার ফলকে খোদিত ইউনিকর্ন আসলে একশৃঙ্গ হরিণ : অসিত দাস একটু রসুন, রসুনের কথা শুনুন : রিঙ্কি সামন্ত ১২ বছর পর আরামবাগে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্বের সয়লা উৎসব জমজমাট : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কোনিয়াকদের সঙ্গে দু’দিন : নন্দিনী অধিকারী স্বচ্ছ মসলিনের অধরা ব্যুৎপত্তি : অসিত দাস বাড়বে গরম, চোখের নানান সমস্যা থেকে সাবধান : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ অক্ষয় তৃতীয়ার আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বাংলা কবিতার আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথের কবিতা লিখছেন উৎপল মণ্ডল

উৎপল মণ্ডল / ২০০০ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ৯ মে, ২০২১

বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার কথা বললেই ঝপ করে দুটো সময় ভেসে ওঠে চোখে। তাই, বিষয়টা একটু আগে থেকে ভাবা দরকার। প্রথম আধুনিকতা বাংলা সাহিত্যে আসছে উনিশ শতকে; সাহিত্য সমালোচকেরা তাই বলছেন এবং তা আসছে নবজাগরণের হাত ধরে। এটা আমরা সকলেই জানি। এই যে নবজাগরণের হাত ধরে বাংলা সাহিত্যে প্রথম আধুনিকতা আসছে তার প্রথম পুরোহিত অবশ্যই মধুসূদন দত্ত। শিবনারায়ণ রায় মহাশয় বলছেন, তিনি শুধুমাত্র বাংলা সাহিত্যে নয়, সমগ্র ভারতবর্ষের প্রথম আধুনিক কবি। এবং কি অদ্ভুত সমাপতন যে বছরে মধুসূদন দত্তের আধুনিকতার প্রকাশ, সেই বছরই আবির্ভাব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৬১)। উনিশ শতকের এই আধুনিকতার অনেক বৈশিষ্ট্য যা সাহিত্যের ইতিহাসের বইতে লেখা আছে, কিন্তু কেন্দ্রিয় কথা দুটো — (এক) মানবতাবাদ (দুই) ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য। এই ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের হাত ধরেই কিন্তু আসছে গীতিকবিতা। বাঙালির প্রতিভা মূলত গীতিকাব্যিক। তবু সার্থক গীতিকবিতার জন্য নবজাগরনের দীক্ষা নিতে হয়। আর সেই গীতিকবিতা রবীন্দ্রনাথের হাতে যখন পড়ল তখন তা পৌঁছে গেল বিশ্বের দরবারে। গীতিকবিতা এক আন্তর্জাতিক মাত্রা পেল।

আর দ্বিতীয় আধুনিকতা রবীন্দ্রউত্তরকালের আধুনিকতা; অর্থাৎ তিরিশের কবিদের থেকে যার সূত্রপাত। তার আগেই নজরুল- মোহিতলাল- যতীন্দ্রনাথ,এই তিনজনের মধ্যে অন্যরকম প্রয়াস দেখা যায়, কিন্তু আসলে রবীন্দ্রোত্তর আধুনিকতাকে পাচ্ছি তিরিশের দশকে- তেমনই বলেন সমালোচকরা। উনিশ শতক আর বিশ শতকে তিরিশের দশক — এই দুটো সময়ের মাঝখানে রবীন্দ্রনাথ কি করছেন — সেটা আমরা দেখবো। এবং তাঁর মধ্যেও কোথায় লুকিয়ে আছে পরবর্তী আধুনিকতার সূত্র — তাও দেখবো।

উনিশ শতকের কাব্যভাষায় মূলত আমরা যেটা দেখেছি, অল্প কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, সেটা হচ্ছে বস্তুসত্য (মেটেরিয়ালিস্টিক ট্রুথ)। প্রথম রবীন্দ্রনাথের গানে এই জায়গাটা ভাঙতে শুরু করে এবং শব্দ পৌঁছে যায় সেনসেশনাল ট্রুথে। রবীন্দ্রনাথ যখন লেখেন ‘শ্রাবণঘন গগন মোহে গোপন তব চরণ ফেলি’ সুরেশচন্দ্র সমাজপতিরা তখন ব্যাঙ্গ করে বলেন, চরণ কি করিয়া গোপন হয় তাহা বুঝিতে পারিলাম না। বক জাতীয় কোনও কোনও পক্ষী একটি চরণ গোপন করিয়া থাকে’। তাঁরা ধরতেই পারছেন না রবীন্দ্রনাথ নিঃশব্দে শব্দকে মেটেরিয়ালিস্টিক ট্রুথ থেকে সেনসেশনাল ট্রুথে পৌঁছে দিচ্ছেন। ‘আমি কান পেতে রই’, ‘তোমার এই আসন তলে মাটির পড়ে লুটিয়ে রব’ প্রভৃতি পঙতিও লক্ষ্যণীয়। ব্যাপারটা তো এমন নয় যে, কারো পায়ের তলায় তিনি ধুলোয় লুটোপুটি খাবেন! এই অর্থ তাঁরা ধরতে পারছেন না।

উনিশ শতকের কাব্যে মেটেরিয়ালিস্টিক ট্রুথের ছবি পাচ্ছি,যেমন মধুসূদনের কাব্যে — ‘অশ্রুআঁখি বিধুমুখী ভ্রমে ফুলবনে/ কভু ব্রজ কুঞ্জবনে হায়রে যেমনি/ ব্রজবালা নাহি হেরি কদম্বের মূলে/ পীতধরা পীতাম্বরে অধরে মুরলী’। — উপমাটিতে কৃষ্ণকে না দেখে রাধার মনের যে অবস্থা, তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।কিংবা ‘দূরে দূরে গ্রাম দশ বারোখানি/মাঝখানে একখানি হাট/ সন্ধ্যায় জ্বলে না প্রদীপখানি/ প্রভাতে পড়ে না ঝাট’; কিংবা, ‘কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি/বোঝাই করা কলসি হাঁড়ি’ — এসব কবিতায় চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেই চিত্রটাই, বস্তু সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে। কিন্তু ‘গোপনে তব চরণ ফেলি’ বা ‘সোনার তরী’র ‘ভরা পালে চলে যায়/ কোনো দিকে নাহি চায়/ ঢেউগুলি নিরুপায় ভাঙে দুধারে’ প্রভৃতি কবিতা ভিন্ন মার্গের। বুদ্ধদেব বসু বলছেন, ঢেউগুলিকে নিরুপায় হতে হল মিল রক্ষার তাগিদে; ছন্দ রক্ষার তাগিদে। আসল ব্যাপারটা যে তা নয়, সেটা প্রথম বললেন সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়। উনিশ শতকীয় যে মিলের কথা বুদ্ধদেব বসু বলেছেন সেটা কিন্তু এখানে নেই, যেখানে নৌকোর হাল পড়ছে, সেখানে ঢেউ তো তার নিজস্ব গতি হারাতে বাধ্য। এটাই ঢেউয়ের নিরুপায়তা এবং তার পরিণতি কূলে গিয়ে আছড়ে পড়া। প্রশ্ন সেখানেও নয়। আসলে মেটেরিয়ালিস্টিক ট্রুথ থেকে আবেদনটি পৌঁছে যাচ্ছে সেনসেশনাল ট্রুথে। অর্থাৎ আসলে সে নাবিক মহকাল, সে উদাসীন। নাবিক চলে যাচ্ছে, তার কাছে জল জগতের ঢেউ যেমন নিরুপায়, চাষীও সেরকম নিরুপায়। কবিতার শেষে গিয়ে আমরা তাই দেখতে পাবো। এই ভাবে ক্রিয়া ও বিশেষণকে বিশেষভাবে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ কবিতা লেখার পূর্বতন ঢংকে সম্পূর্ণত ভেঙে দিয়েছেন বলেই মনে হয়।

রবীন্দ্রনাথের গানে এটা দেখা যাচ্ছে বারবার। “আমি কান পেতে রই” বা “তোমার ঐ আসন তলে মাটির পরে লুটিয়ে রব” বা “যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙলো ঝড়ে/ জানি নাইকো তুমি এলে আমার ঘরে/ সব যে হয়ে গেল কালো/ নিবে গেল দীপের আলো’ –এখানে কীভাবে বস্তুসত্য ভেঙে যাচ্ছে দেখা যাক। প্রশ্ন হলো বস্তু সত্য দিয়ে যদি ভাবা হয়, তাহলে প্রথমে প্রশ্নটা হবে ঝড়ের গতিবেগ কত ছিল? অথবা দরজাগুলি কত পলকা ছিল? একটা একটা করে দরজাগুলি ভেঙে গেল কীভাবে — এই ধরণের কোনো প্রশ্ন আমাদের মনে আসছেই না। আমরা স্বাভাবিক জ্ঞান থেকেই বুঝে যাচ্ছি ব্যাপারটা আসলে কী? এটাকেই বলতে চাইছি নিঃশব্দ বিপ্লব। আধুনিকতা মানে আপাতভাবে যে চিৎকার চেচামেচি, তা না করেও এক নিশঃব্দ বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের হাতে। আর এভাবেই পাঠকের মননভূমিটাকে তিনি তৈরি করে দিচ্ছেন। আমাদের বিশ্বাস এই নিঃশব্দ বিপ্লবে পাঠকের মননভূমিটাকে যদি রবীন্দ্রনাথ তৈরি করে না দিতেন, তাহলে প্রথমত বাঙালি, পাঠক বুঝতেই পারতেন না — শিশিরের শব্দের মতন কীভাবে সন্ধ্যা নেমে আসে।

 দ্বিতীয়ত, বস্তু সত্য থেকে সেনসেশনাল সত্যের দিকে যে যাত্রা, যা তিরিশের কবিতায় দারুণভাবে রয়েছে, তারও সূচনা এই লগ্নেই। আরএই বিষয়টির ওপরেই নির্মিত হয় যাবতীয় পোস্টমর্ডান তত্ত্বের ব্যাখ্যা । এটা নিশ্চয়ই একবাক্যে সবাই স্বীকার করবেন যে, পোস্টমর্ডান সমস্ত তত্ত্বের আঁতুরঘর ফের্দিনা দ্য সোস্যুরের ভাষাতত্ত্ব। তিনি লাঙ আর পারোলের কথা বলেছেন — একটা সমাজ স্বীকৃত সত্য আর একটা সমাজস্বীকৃত নয়,কবিদের নিজস্ব প্রবণতা অনুযায়ী।রবীন্দ্রনাথের এই নিজস্ব প্রবণতাটা পাচ্ছি তাঁর গান থেকেই। প্রসঙ্গত বলে নেওয়া ভালো স্যসুর মারা যাচ্ছেন ১৯১৩ তে, এবছরই রবীন্দ্রনাথ নোবেল পাচ্ছেন। আর সমস্যা হল, স্যসুর কিছু লিখে যাননি। তাঁর প্রিয় দুই ছাত্র আলবেয়ার শেসেই ও শার্ল বালি, স্যসুর যে গল্পগুলি বলতেন সেগুলি তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশ করেন। এর ওপরই দাঁড়িয়ে আছে পোস্টমর্ডান থিয়োরিগুলি।

এর পর কল্লোল গোষ্ঠী চলে আসে আর তিনি দেখেন কিভাবে পয়েটিক ডিকশন বদলে যাচ্ছে। । বিষয়টি একটু বুঝে নেওয়া যাক–

প্রয়োজনের খাতিরে এর আগের ইতিহাসটা একটু দেখে নিতে হবে। ১৯১৭ তে হয়ে গেল বলশেভিক বিপ্লব। ১৯২২ শে নজরুলের ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় চলে আসছে ‘টরপেডো’ ‘মাইন’ প্রভৃতি শব্দ। তার কিছু পরে প্রেমেন্দ্র মিত্র লিখছেন—‘আমি কবি যত কামারের আর ছুতোরের, মুটে মজুরের/ আমি কবি যত ইতরের’। আমাদের দেশে তখন মার্কসীয় দর্শন ঢুকে পড়েছে। তিরিশের কবি সাহিত্যিকেরা ভাবছেন নিচের তলার মানুষদের জন্য। এই সময় থেকেই কবিতার ভাষাও যে বদলে যাচ্ছে তা রবীন্দ্রনাথ খুব ভাল করে বুঝতে পারছেন। তার মোক্ষম দুটি প্রমাণ হল — (এক) তাঁর ব্যক্তিগত চিঠিপত্র (দুই) শেষের কবিতায় কবিদের দুটি দল। একটা দল বলছে রবীন্দ্রনাথের কবিতা বড্ড সেকেলে হয়ে যাচ্ছে। এই সমালোচকদের আড়ালে আসলে রবীন্দ্রনাথ এটা নিজেই নিজেকে নিয়ে বলছেন। অর্থাৎ তিনি নিজের সেকেলে হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি বুঝতে পারছেন ও নিজেকে ক্রমাগত বদলে নিচ্ছেন। যার প্রমাণ ‘খাপছাড়া’তে পাচ্ছি — ‘শুটকি মাছের যারা রাধুনিক/ সেই দলেতে ছিলে তুমি আধুনিক’। আরও পরে তাঁর চারপাশের জীবন ও জীবন সংলগ্ন শব্দকে কবিতায় তুলে ধরেছেন। এই সময়ের বহু কবিতায় তার বহু প্রমাণ আছে—গলিটার কোণে কোণে/ জমে ওঠে পচে ওঠে/ আমের খোসা ও আঁটি, কাঁঠালের ভুতি/ মাছের কানকা/ মরা বিড়ালের ছানা /ছাইপাশ আর কত কী যে’ অথবা ‘ মরা বিড়ালের দেহ পেঁকো নর্দমায়/ বীভৎস মাছির দল ঐক্যতান বাদন জমায়’। এই ভাষা রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতায় ব্যবহার করছেন। নিজেকে বার বার ভেঙে নিজেকেই এবং সমকালকে অতিক্রম করছেন।

আধুনিকতার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং ক্রমাগত গ্রহণ বর্জন। শুধুমাত্র কবিতার ক্ষেত্রেই নয়, জীবনের ক্ষেত্রেও একটি আধুনিক ও বড় বৈশিষ্ট্য। শুধু তাই নয়, যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় তিরিশের কবিরা প্রায় সকলেই চলে এসেছেন। ১৯২৭ এ ‘ঝরাপালক’ লেখা হয়ে গেছে। সুধীন্দ্রনাথ, অমিয় চক্রবর্তী সকলেই চলে এসেছেন। এদের কবিতায় ভাষাগত বিশেষত্ব আমরা লক্ষ্য করি।একটু ব্যাখ্যা দরকার। বোদলেয়ার বলেছেন আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের অনুভূতি আলাদা আলাদা কিন্তু এর কেন্দ্রিয় জায়গাটা এক অর্থাৎ মন। ত্বকের যে অনুভূতি, কান দিয়ে যা শুনছি; তা যাচ্ছে মস্তিষ্কে। সেখান থেকে নির্দেশ আসছে। সামনে কারা আছে বা কাদের দেখছি তাও নির্দেশ দিচ্ছে ব্রেন। বোদলেয়ার বলছেন আমাদের প্রত্যেক ইন্দ্রিয়ের যে ইন্দ্রিয়বেদ্যতা তার উৎস হচ্ছে এক। সেটাই যদি হয়, তাহলে এক ইন্দ্রিয়ের ইন্দ্রিয়বেদ্যতাকে আর এক ইন্দ্রিয়ের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করলে অসুবিধে কোথায়? বোদলেয়ারের এই বক্তব্যের ফল ‘ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুখে ফেলে চিল’ অথবা ‘শিশিরের শব্দের মতন সন্ধ্যা আসে’। এই সিনেস্থেসিয়া বা অনুভুতির ইন্দ্রিয়ান্তরকরন- এটা রবীন্দ্রনাথ কবিতার মধ্য দিয়ে দেখাচ্ছেন, – (১) বাজিয়েছে বীণ তোমার আঁখির আলো (২) নিরীহ দিনগুলি ব্যাঙের মতো একঘেয়ে ডাকে। (৩) চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙেছে’,(৪) এ অশ্রুজল,এ ভাঙা বুক/ভাঙ্গা বাদ্যের মতো বাজিয়ে সাথে সাথে নিশিদিন– অনেক আছে এমন।

রবীন্দ্রনাথের কবিতায় যে সিনেস্থেসিয়া আছে, তা আমরা আলাদা করে ভাবতে পারছি না যেমন ভাবছি জীবনানন্দ বা অন্যদের ক্ষেত্রে। তার কারণ ছন্দের মধ্য দিয়ে তিনি লিখছেন এবং সুরের মধ্যে আমরা হারিয়ে যাচ্ছি। এভাবেই ভাষাতাত্ত্বিক দিক থেকে রবীন্দ্রনাথ সময়কে অনুভব করছেন এবং তাঁকে অতিক্রম করে যাচ্ছেন, যা তিরিশের কবিদের অনেকটা সহায়ক হয়ে উঠছে। মানুষ অসচেতনভাবে কবিতার মধ্য দিয়ে সেনসেশনাল ট্রুথকে বুঝতে পারছে। রবীন্দ্র কবিতার মধ্য দিয়ে নিঃশব্দে এই ব্যাপারটা ঘটেছে বলেই সাধারণ পাঠকের কাছে তিরিশের কবিতা অনেক বেশি বোধগম্য হয়েছে।

এছাড়া আধুনিক কবিতার আরো বিষয়গত দিক থেকে বৈশিষ্ট্যের কথা সমালোচকেরা বলে থাকেন। যেমন ‘পরাবাস্তবতা’ — তাঁর শেষের দিকের কবিতাগুলির মধ্যে প্রচুর পরাবাস্তবতার ছবি আছে। ‘বিচিত্রিতা’র ‘কালোঘোড়া’ কবিতাটি যেমন — ‘কালো ঘোড়ার অন্তরে যে সাদা …./ সে আমার অন্ধ অভিলাস… অসাধ্যের সাধনায় ছুটে যায় বলে……।সাবকনসাস মাইন্ডের চিন্তাভাবনা, পরাবাস্তবতা, প্রান্তিকের ৫ নম্বর কবিতাটিতে লক্ষ্য করি।রবীন্দ্রউত্তর কবিদের কবিতায় যে নৈরাশ্যবোধ দেখা যায়, তা রবীন্দ্র কবিতাতেও প্রচুর আছে। ‘নবযাত্রিক’, ‘কেন’ প্রভৃতি কবিতা লক্ষ্য করলেই বিষয়টি বোঝা যায়।তবে আমার ধারনা এই যে, আধুনিক কবিদের যে নৈরাশ্যবোধ তা এসেছে ব্যক্তিগত না পাওয়া থেকে, নির্বেদ থেকে। আর রবীন্দ্রনাথের নৈরাশ্যবোধ কোনো ব্যক্তিগত না পাওয়া থেকে নয়, এসেছে বিশ্বগত যন্ত্রনাবোধ থেকে।

আধুনিক কবিদের যে নগরচেতনা, তা রবীন্দ্রনাথেও প্রচুর রয়েছে। ‘চিত্রা’র ‘নগরসঙ্গীত’, ‘বধু’ কবিতায় প্রচুর নগরচেতনা রয়েছে।

ডারুইনের বিবর্তনবাদ রবীন্দ্রনাথের বহু কবিতায় উঠে এসেছে। ‘সমুদ্রের প্রতি’, ‘বসুন্ধরা’ ,’প্রথম দিনের সূর্য’ প্রভৃতি কবিতায় তার পরিচয় পাওয়া যায়। ডারউইনের বিবর্তনবাদের মধ্যে রয়েছে, জীবজগতের অনাগত ভবিষ্যতের সম্ভাবনার কথা। একে উলটে আমরা বলতে পারি যে, আমরা বিবর্তিত হতে হতে কোথায় চলে এসেছি এবং আগামী দিনে কোথায় গিয়ে পৌঁছাবো, তা আমরা জানি না। রবীন্দ্রনাথের কবিতায় এইরকম একাধিক ডাইমেনশন উঠে এসেছে। কিংবা বলা ভাল মাল্টিডাইমেনশনাল বলেই তা কবিতা।

প্রথম দিনের সূর্য/ প্রশ্ন করেছিল সত্তার নতুন আবিরভাবে/ কে তুমি/ মেলেনি উত্তর।

…….

দিবসের শেষ সূর্য/ শেষ প্রশ্ন উচ্চারিল/ কে তুমি/ পেলো না উত্তর।

বিবর্তনবাদের তত্ত্ব এখানে খুব সুন্দরভাবে উঠে এসেছে। সমুদ্রের প্রতি , বসুন্ধরা প্রভৃতি এরকম অনেক কবিতায় তা আছে।

আর সবথেকে বড় কথা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য। আইনস্টাইনের এই আপেক্ষিকতাবাদের সাথে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের দারুণ মিল আছে—আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ/চুনী উঠলো রাঙা হয়ে/ আমি বললাম গোলাপ সুন্দর/তাই গোলাপ সুন্দর হয়ে উঠলো । এখানে চূড়ান্ত আপেক্ষিকতার দৃষ্টান্ত উঠে এসেছে। আমার সাপেক্ষে গোলাপ সুন্দর, সেটা অন্যের কাছে সুন্দর নাও হতে পারে।

বিজ্ঞান তো রবীন্দ্রনাথের কবিতার যত্রতত্র। ইওরোপ কবিতায় বিজ্ঞানকে ধরতে পারেননি, রবীন্দ্রনাথ পারলেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর সমস্ত গতিশক্তি উৎপন্ন হয় স্থিতিশক্তি থেকে। ‘বলাকা’র ‘ছবি’ কবিতায় কবি লিখছেন ‘তুমি কি কেবলই ছবি শুধু পটে লেখা’। তারপর বলছেন—তুমি আমার মধ্যে আছো, আমি গতিশীল সুতরাং তুমিও গতিশীল। কাইনেটিক এনার্জি শুরু হচ্ছে পোটেনশিয়াল এনার্জি থেকে — এই ভাবনা মিশে গেছে যেন গোটা কবিতার ভাববস্তুতে ।

..আধুনিক কবিদের, বিশেষত তিরিশের কবিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য আন্তর্জাতিকতা। তিরিশের কবিরা প্রচন্ড আন্তর্জাতিক। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোসিমার ঘটনা আধুনিক কবিদের কবিতায় প্রভাব ফেলল না। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের আন্তর্জাতিকতা একটি সত্যকারের বোধ। ১৯১৪ তে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ভারতে বসেই তিনি লিখছেন ‘বলাকা’র ‘ঝড়ের খেয়া’—দূর হতে কি শুনিস মৃত্যুর গর্জন ওরে.. এখানে, এই যে মানব সভ্যতা চূড়ান্ত দুর্দিনের কবলে পড়েছে, তিনি বলছেন এর মধ্য দিয়েই তরী বেয়ে নিয়ে যেতে হবে। কবিতার শেষে কবি বলছেন ‘নতুন উষার স্বর্ণদ্বার খুলিতে বিলম্ব কত আর’। অর্থাৎ এই দিন একদিন গত হবে। গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তীর ভাষায় ‘পৃথিবী আবার শান্ত হবে’। কবিও এমনই ভাবছেন। কিন্তু পৃথিবী শান্ত হলনা। ১৯৩১এ হিটলার জার্মানীতে বসলেন চ্যন্সেলর হয়ে। তারপর জার্মানী সহ ইওরোপের ইতিহাস অনেকেরই জানা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ভার্সাই সন্ধির মধ্য দিয়ে জার্মানীর ওপর যা চাপিয়ে দেওয়া হল এবং জার্মানীকে যেভাবে পর্যুদস্ত করা হল, অর্থনৈতিক দায় চাপানো হল; সেই পরিস্থিতিতে হিটলারের মতো মানুষের প্রয়োজন ছিল। তখন রবীন্দ্রনাথের অন্তিম সময়। বার বার অসুস্থ হচ্ছেন। ‘প্রান্তিক’ কাব্যে লিখছেন — ‘নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিশ্বাস/ শান্তির ললিত বাণী শোনইবে ব্যররথ পরিহাস/ বিদায় নেবার আগে ডাক দিত্যে যায়/ দানব্বের সাথে যার আসংগ্রামের তরে/প্রস্তুত হতেছে ঘরে ঘরে’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালিন অসুস্থতা থেকে উঠে লিখছেন ‘আরোগ্য’ কাব্যের ‘ওরা কাজ করে’ কবিতাটি। এই কবিতার সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কোনও যোগ আছে কিনা আমাদের জানা নেই, কিন্তু আমার মনে হয় ১৯৪০ এ লেখা কবিতাটি শুরু হয়েছে—‘অলস সময়ধারা বেয়ে/ মন চলে শূণ্য পানে চেয়ে’। একজন অসুস্থ মানুষের আকাশের দিকে চেয়ে ইতিহাসের কথা মনে পড়ছে। এসেছে মোঘল, ইংরেজ; একে একে সবাই চলে গেছে; ইংরেজও চলে যাবে; তিনি ভবিষ্যতবাণী করেছেন—‘জানি তার পণ্যবাহী সেনা/ জ্যোতিষ্কলোকের মাঝে রেখামাত্র চিহ্ন রাখিবে না’। এবং তিনি বলছেন, এই সাম্রাজ্যবাদীদের ইতিহাস ‘শিশুপাঠ্য কাহিনী’তে স্থান পাবে। তাঁদের তৈরি ইতিহাস আসল ইতিহাস নয়, ইতিহাস রচনা করে কর্মমুখর মানুষ। যে মানুষটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের রক্তাক্ত পৃথিবীকে দেখে আশা পোষণ করেছিলেন’ উষার স্বর্ণদ্বার খুলিতে বিলম্ব কত আর’ সেই বিশ্বমানবতাবাদী মানুষটি দেখছেন নতুন উষার স্বর্ণদ্বার তো খুললো না! পৃথিবী আবার বিষবাস্পে জর্জরিত হচ্ছে। এটুকু নিশ্চিতভাবেই বলা যায় এই মৃত্যুপথযাত্রী প্রাজ্ঞ মানুষটি নিতান্ত বালখিল্য মানসিকতা থেকে ভবিষ্যৎ বাণী করবেন না। আসলে এখানে তিনি সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে আলতো করে চাবুক মেরেছেন। আর এখানেই এই কবিতার সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্পর্ক রচিত হয়ে যায়। এখানেই রবীন্দ্রনাথের বিশ্ববোধ। আর এই বিশ্ববোধ একান্তভাবেই বাঙালীর ভাবে প্রকাশিত। কবিতায় তিনি বিদেশী শব্দ একেবারেই ব্যবহার করেননি। সারা বিশ্ব তিনি ঘুরেছেন, আত্মস্থ করেছেন, গ্রহণ করেছেন কিন্তু প্রকাশ করেছেন একেবারেই বাঙালি ভাবে, সরল ভাবে, বিদেশিয়ানার কোন ছিটেফোঁটাও ! আর একটা কথা বলে শেষ করবো, যা ঠিক আধুনিক নয় উত্তরাধুনিক স্তরে।

এখন তো পোস্ট কলোনিয়াল ভাবনা ভাবা হয়, কিন্তু আমি যদি বলি, ইংরেজ শাসনে বসে একজন মানুষ সেই ভাবনাই ভেবেছেন !!

লেখক উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর


আপনার মতামত লিখুন :

9 responses to “বাংলা কবিতার আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথের কবিতা লিখছেন উৎপল মণ্ডল”

  1. SUBRATA DAS says:

    এ ভাবেও যে ভাবা যায় !!আমরা ছাত্ররা মুগ্ধ ও,সমৃদ্ধ ।এ ধরনের লেখা সত্যি অনুপ্রেরণা জাগায়। পরের লেখার আশা রাখছি…

  2. Rejaul Islam says:

    অসাধারণ বিশ্লেষণ স্যার। আরও যেন নতুনভাবে চোখ খুলে দিলেন। খুব ভালো লাগলো।

  3. Nihar subhra Adhikari says:

    অসাধারণ লেখা। নিজস্ব মননঋদ্ধ অসামান্য বিশ্লেষণ। নতুন কিছু জানলাম।

  4. Pritam Pramanik says:

    খুব ভালো লাগলো স্যার l আধুনিকতার পুরো ইতিহাস যেন সংক্ষেপে বুঝতে পারলাম l

  5. Sarkari Chakrabarty says:

    খুব ভালো লাগলো লেখাটা। রবীন্দ্র কবিতার এরকম বিশ্লেষণ খুব বেশী পড়িনি।

  6. Tanmay Banerjee says:

    খুব ভালো আলোচনা। কিছু আবছা ধারণা প্রাঞ্জল হয়ে গেল। ধন্যবাদ।

  7. Sanjit Dutta says:

    সারা বিশ্ব তিনি ঘুরেছেন, আত্মস্থ করেছেন, গ্রহণ করেছেন কিন্তু প্রকাশ করেছেন একেবারেই বাঙালি ভাবে, সরল ভাবে, বিদেশিয়ানার কোন ছিটেফোঁটাও !
    আধুনিক কবি রবীন্দ্রনাথ..
    স্যার আপনার লেখা পড়ে খুব ভালো লাগে,
    আপনি সহজ ভাবে গভীর বিষয় টি বুঝিয়ে দেন খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ স্যার ♥️

  8. নুনম মুখোপাধ্যায় says:

    আশ্চর্য লাগলো। চোখের সামনে পরতে পরতে যেন একটার পর একটা বন্ধ দ্বার খুলে যাচ্ছে। ভাবনা চিন্তার যে জটগুলো এতোদিন ঘুলিয়ে ছিল আজ আশ্চর্য ভাবে সব জটিলতা কেটে গেছে এই সুগভীর বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে। এই বিশ্লেষণ একজন লেখক, পাঠক, চিন্তক, সুবিবেচক কবির। এই বিশ্লেষণ অনুভূতির কোনো এক গোপনকোষে তার মণিমুক্ত ছড়িয়ে ব্যক্ত হওয়ার ব্যগ্র বাসনায় অধীর হয়ে ছিল। তাকে সুচারু ও যথাযথভাবে এই নান্দনিক প্রকাশে আমি স্তন্ধ,রুদ্ধ,বিমুগ্ধ ও অভিভূত।

    অন্তরের খুব গভীরে যে ভাবনার স্তর আমায় বারবার আন্দোলিত করেছে, নিজের বোধের যে অগম্যতা আমায় ব্যথিত করেছে, আজ কি আশ্চর্য জাদুবলে আপনার লেখার মধ্যে দিয়ে আমি আমার অজস্র প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি। এই অনবদ্য মননশীলচর্চার পাঠক হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আপনার চরণে সহস্র প্রণাম।

  9. Pravas majumder says:

    আপনি যদি চল্লিশের কবিদের নিয়ে আলোচনা করেন তবে উপকৃত হই।এবং তিরিশ ও চল্লিশের কবিদের কবিতায় অমিলের জায়গা গুলো যদি তুলেধরেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন