বৃহস্পতিবার | ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:০১
Logo
এই মুহূর্তে ::
হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (দ্বিতীয় পর্ব) : অভিজিৎ রায় কেন বারবার মণিপুরে আগুন জ্বলে আর রক্ত ঝড়ে : তপন মল্লিক চৌধুরী শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (শেষ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (প্রথম পর্ব) : অভিজিৎ রায় শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (ষষ্ঠ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (পঞ্চম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ? : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (চতুর্থ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার শতবর্ষে সঙ্গীতের ‘জাদুকর’ সলিল চৌধুরী : সন্দীপন বিশ্বাস সাজানো বাগান, প্রায় পঞ্চাশ : অমর মিত্র শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (তৃতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (একাদশ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার খাদ্যদ্রব্যের লাগামছাড়া দামে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের : তপন মল্লিক চৌধুরী মিয়ানমারের সীমান্ত ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (দ্বিতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (দশম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বুদ্ধদেব গুহ-র ছোটগল্প ‘পহেলি পেয়ার’ ‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (প্রথম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (নবম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘তোমার নাম’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (অষ্টম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘হাওয়া-বদল’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার প্রবোধিনী একাদশী ও হলদিয়ায় ইসকন মন্দির : রিঙ্কি সামন্ত সেনিয়া-মাইহার ঘরানার শুদ্ধতম প্রতিনিধি অন্নপূর্ণা খাঁ : আবদুশ শাকুর নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘শুভ লাভ’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কেদারনাথ-বদ্রীনাথ ভ্রমণ : প্রকৃতি আর ঈশ্বর যখন একটি বিন্দুতে মিশে যায়… : অমৃতাভ দে

অমৃতাভ দে / ৩০৪ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

“হিমালয়ের শৈলশিরে, গিরিনদীর তীরে তীরে অগণিত মনোহর মন্দির। কিন্তু কেদারতীর্থের ন্যায় প্রাকৃতিক শোভা আর কোথাও আছে কিনা জানি না। এই দুর্গম নিভৃত পর্বতাঞ্চলে এমন মনোমুগ্ধকর আবেষ্টনে কার কবিচিত্তে প্রথম মন্দির প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা জাগে ইতিহাসে তার প্রমাণ নেই। তবে জনপ্রবাদ আছে। মহাভারতীয় যুগের সেই প্রচলিত উপাখ্যান।

ধর্মক্ষেত্রে কুরুক্ষেত্রে পাণ্ডবগণ বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব গুরুজনের হত্যার পাপে মর্মান্তিক মানসিক পীড়া। পাপমুক্তির আশায় তীর্থে তীর্থে ঘোরেন। হিমালয়েও আসেন। দেবাদিদেব মহাদেবের দর্শন আকাঙ্ক্ষায় খুঁজতে থাকেন। এই কেদারভূমিতে তাঁর সন্ধানও মেলে। মহাদেবও পাণ্ডবদের এড়াবার জন্যে মহিষরূপে এইখানে মেদিনীমধ্যে আত্মগোপনের চেষ্ট করেন। বিপুল বিক্রমে ভীমসেন নাকি তাঁকে পিছন থেকে জাপটিয়ে ধরেন। পাণ্ডবগণ শিবের আরাধনা করেন, তাঁরই কৃপায় পাপমুক্তও হন।

সেই উপাখ্যানেরই সাক্ষ্য দেন কেদারনাথ। প্রথম মন্দির প্রতিষ্ঠাও করেন পাণ্ডবগণ। তাই মন্দিরের গায়ে পঞ্চপাণ্ডবের প্রতিকৃতি।

তারপর, হয়ত সেই মহাভারতীয় যুগ থেকেই শুরু হয় হিমালয়ের এই সুদুর্গম সুদূর তীর্থযাত্রা।

মন্দিরের ভিতরেও সেই কাহিনী পাষাণে রূপায়িত।

সেখানে আরাধ্য দেবতার প্রতীকও সেই মহিষেরই পশ্চাৎ অংশ। কালো এক শিলাখণ্ড। কেদারলিঙ্গ। রূপহীন, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আকারবিহীন। পঞ্চকেদারের প্রধান কেদার।

কেদারনাথে এই শিলাখণ্ডেরই পূজা হয়। পূজারী অরূপের রূপসজ্জা করেন। বসনভূষণ পুষ্পমালায় সাজান। ধূপদীপ জ্বলে। কাঁসর ঘণ্টা শিঙা বাজে। ব্যোম ব্যোম ধ্বনি ওঠে। সুগম্ভীর মধুর সুরে পূজামন্ত্র পাঠ চলে। ভক্ত যাত্রীর দল নিবিষ্ট মনে ধ্যান করেন। পূজাশেষে দুই বাহু মেলে কেদারনাথকে নিবিড় আলিঙ্গন করেন। মনে অপূর্ব শিহরণ জাগে। কেন জাগে, কী জাগে, — সেই এক পরম রহস্য। ”

উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের এই লেখাই বোধহয় আমাকে নিয়ে গিয়েছিল কেদার ধামে। কেদার যাব — এই ইচ্ছা সকলেরই থাকে।কেদারনাথ যাত্রার অভিজ্ঞতার বহু কাহিনী শুনে আসছি, পড়ে আসছি বহুদিন ধরেই।পরিচিত অনেকেই কেদারনাথ যাত্রার বিচিত্র অনুভূতির কথা বলেছে। আমি প্রকৃতিকে ভালবাসি,প্রকৃতি আমার কাছে ঈশ্বর। ঈশ্বরই প্রকৃতি। প্রকৃতিকে ভালোবেসেই আমাদের ভগবানের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা। কেদার-বদ্রি যাত্রা আমার জীবনের অন্যতম প্রাপ্তি। সবার ইচ্ছা পূরণ হয় না তাও জানি, নানান বাধা থামিয়ে দেয় অনেককেই। পথে নানান প্রতিকূলতা,আবহাওয়া পরিবর্তন থমকে দেয় কিন্তু শারীরিক মানসিক জোর পৌঁছে দেয় লক্ষে। কলকাতা থেকে দিল্লী হয়ে হরিদ্বার পৌঁছালাম আমরা। হরিদ্বার এর আগে আসিনি,স্বাভাবিকভাবে উৎসাহ ছিল প্রবল। রাতে গঙ্গার ঘাটে সময় কাটল অনেকক্ষণ। আরতি শেষে গঙ্গার ঘাটের ছবিটা পাল্টে যায়। রাত বাড়ে,ঘাটের রূপ বদলে যায়। ঘুরে ঘুরে দেখলাম মন্দিরগুলো।হেঁটে গেলাম সাঁকোর উপর দিয়ে।গঙ্গার বেগবান স্রোত এক দার্শনিক প্রজ্ঞা এনে দেয়। অনেকটাই রাত হয়ে গেল। পরের দিন আমরা বেরোবো ফাটার উদ্দেশ্যে। হরিদ্বার থেকে ঋষিকেশ,দেবপ্রয়াগ,শ্রীনগর, রুদ্রপ্রয়াগ, গুপ্তকাশি হয়ে আমরা যাব ফাটা।

ফাটাই পৌঁছাতে দেরি হলো অনেকটা তার ফলে সমস্যা কিছুটা বেড়ে গেল তার কারণ রাতেই আমাদের বের হতে হবে গৌরী কুন্ডের উদ্দেশ্যে। আসলে এবারের কেদার যাত্রায় মানুষের ভিড় বেড়েছে অনেক স্বাভাবিকভাবেই একটু আগে আগেই পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে গৌরী কুন্ডে। খুব দ্রুত রেডি হয়ে নিলাম মানসিক শক্তির প্রয়োজন কিন্তু পথ কিছুটা পথ এগুলিই সীতাপুর সেখানেই আমাদের বাস পার্কিং হবে সেখান থেকে কয় কিলোমিটার হেঁটে গৌরীকুন্ড যাবার জন্য ছোট গাড়ি লাইন শুরু তাই রাত দুটোর সময় বেরিয়ে পড়লাম হোটেল থেকে সঙ্গে অবশ্যই রেনকোট ছাতা জলের বোতল এবং ওষুধ। একটা গোটা দিনহাটা রাতে কেদারে থেকে পরদিন সকালে আবার গেদার ফেরার পথ ধরা মোট প্রায় 40 কিলোমিটার ওঠানামা সীতাপুর বোঝানো সঙ্গে সঙ্গেই মাথা ঘুরে গেল এক দৃশ্য দেখে। দীর্ঘ লাইন দেখে আমরা বিস্মিত হাজার হাজার মানুষ আমাদের পৌঁছানোর আগে থেকেই পার্কিং স্ট্যান্ডে অসংখ্য গাড়ি। এখান থেকে হেঁটে যেতে হবে শোন প্রয়াগ। শোন আগে চেকিং হবে তখন মানুষের ঢল লাইন উঠে গেছে পাহাড়ের অন্ধকারে রাত তিনটে থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত একই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে ছিলাম ভোর চারটা থেকে শুনেছিলাম ছোট গাড়ি ছাড়া শুরু হবে। কিন্তু কেন এত দেরি বুঝতে পারলাম না সকাল নটায় গাড়ি পেলাম প্রসঙ্গত বলে রাখি সোনপ্রয়াগে থাকার জায়গা যেহেতু কম তাই এখানে এসে থাকার চেষ্টা করে না সবাই। কিন্তু এখানে থেকে ভোরের গাড়ির জন্য লাইনে দাঁড়ানো ভালো, গৌরীকুণ্ড পৌঁছাতে কিন্তু সময় লাগে অল্পই। কিন্তু এত মানুষের ভিড়ে পুরো সিস্টেমটাই ব্রেক করেছিল গাড়ির এই সামান্য পথ সেজন্য অনেকেই হেঁটে চলেছিলেন পথের দৃশ্য মন কারা একপাশে পাহাড় অন্য পাশে পাহাড়ি নদীর বয়ে চলা। গৌরিকুন্ডের মূল ফটক থেকে হাঁটা শুরু করলাম সকাল দশটায়। তার আগে গরম চা অমলেট কিংবা ম্যাগি।

বুঝতে পারছি স্বপ্নের রাজ্যের প্রবেশ করতে চলেছি হৃদয়বীণায় অন্য এক সুর হর হর মহাদেব। থেকেই আপনি ঘোড়া নিতে পারেন টিকিট করে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ঘোড়া সংগ্রহ করে সবারই হতে হবে। ঘোড়ায় দ্রুত পৌছাতে পারবেন কিন্তু ঘোড়ায় চলার অভ্যাস না থাকলে যেটা হওয়ার সেটা হবে পতন অবসম্ভাবী এরকম দৃশ্যের সম্মুখীন হতে হবেই যাত্রাপথে। এরকম দৃশ্য সম্মুখীন হতে হবে। যাত্রাপথের প্রথম অংশটুকু বেশ কঠিন খাড়া সিঁড়ি ভাঙতে হবে দোকানপাট এখানে অনেক বেশি গৌরিকুন্ডে স্নান ছাড়ছেন অনেকেই উষ্ণ জলের কুন্ড শীতল আবহাওয়ায় শরীর উষ্ণ করে পূর্ণ স্নান আপনিও সেরে নিতে পারেন। কিছুটা এগোতেই চোখে পড়ল ঘোড়া সংগ্রহ করার নির্দিষ্ট জায়গা বড় লাইন ঘোড়া নিয়ে রওনা হচ্ছেন কেদারনাথের উদ্দেশ্যে আমি তো হেটে যাব পথকে ভালোবেসে এগিয়ে চলা পাহাড়ে সবুজের স্পর্শ লেগে রয়েছে। বৃষ্টি ভেজা পাহাড় প্রকৃতির অপরূপ ক্যানভাস।

জঙ্গল চটি ভীমবাল রামবারা লেন চলি হয়ে পৌছবেন এই জায়গাগুলিতে সাময়িক বিরতি নিতে হবে। যা শরবত ফল খেয়ে নিতে পারবেন এনার্জি খুবই প্রয়োজন চকলেট খেতে হবে জল যথেষ্ট খাওয়া দরকার। পুরো যাত্রা পথে মন্দাকিনী গল্প করতে করতে আপনার সঙ্গে সঙ্গে যাবে পাহাড় বন্ধু হয়ে পাশে থাকবে সম্পূর্ণ যাত্রাপথে ঘোরার চলাচল আপনার যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটবে আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে প্রয়োজনে অক্সিজেন ক্যান থাকলে ভালো হয়।এ পথে যেতে যেতে সত্যজিৎ রায়ের লেখা ‘এবার কাণ্ড কেদারনাথে’র সেই দৃশ্যটির কথা মনে পড়ছিল।সোজা রাস্তা পেয়ে লালমোহনবাবু তাঁর আবৃত্তি আরম্ভ করলেন —

“শহরের যত ক্লেদ, যত কোলাহল

ফেলি পিছে সহস্ৰ যোজন

দেখ চলে কত ভক্তজন

হিমগিরি বেষ্টিত এই তীর্থপথে

শুধু আজ নয়, সেই পুরাকাল হতে —

সাথে চলে মন্দাকিনী

অটল গাম্ভীর্য মাঝে ক্ষিপ্রা প্রবাহিনী–

তবে শুন এবে অভিজ্ঞের বাণী —

দেবদর্শন হয় জেনো বহু কষ্ট মানি’

গিরিগাত্রে শীর্ণপথে যাত্রী অগণন

প্রাণ যায় যদি হয় পদস্খলন,

তাও চলে অশ্বারোহী, চলে ডাণ্ডিবাহী,

যষ্টিধারী বৃদ্ধ দেখ তাঁরও ক্লান্তি নাহি

আছে শুধু অটল বিশ্বাস

সব ক্লান্তি হবে দূর, পূর্ণ হবে আশ

যাত্রা অন্তে বিরাজেন কেদারেশ্বর

সর্বগুণ সর্বশক্তিধর

মহাতীর্থে মহাপুণ্য হবে নিশ্চয়

উচ্চকণ্ঠে বল সবে — কেদারের জয়!”

রামওয়াড়া জায়গাটি বেশ জমজমাট। রামওয়াড়া থেকে দুটো রাস্তা ভাগ হয়ে গেছে।যে কোনো একটি পথ বেছে নিতে পারবেন। ঘোড়া যাবার পথটি কিছু সময়ের জন্য আলাদা হয়ে যায়, তারপর আবার আরেকটি জায়গায় গিয়ে পথ এক হয়ে যাবে। পথের ধারে রেলিংগুলো মজবুত নয় একদমই। দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছেই। সাবধানে এগোতে হবে। এ পথই জন্ম দেয় কবিতার পঙক্তি —

পাহাড় তার রূপ বদলায় রং বদলায়

ঝেঁপে বৃষ্টি নামে

অশান্ত বৃষ্টির ছাঁট চোখে মুখে লাগে

প্রকৃতির কাছে নিজেকে নিতান্ত ক্ষুদ্র মনে

উঁচু উঁচু পাহাড়কে পাশে রেখে

হেঁটে যাই কীসের টানে?

আঁকাবাঁকা পথে জলের স্রোত লিখে দেয় ঈশ্বরের সংলাপ…

উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘কেদারনাথ সেকাল ও একাল’ লেখাটির কথা মনে পড়ে গেল —

“রামওয়াড়া থেকে কেদারনাথ মাত্র তিন মাইলের একটু বেশি। কিন্তু, চড়াইও তিন হাজার ফুটের উপর। হিমালয় – পথে চলার অভ্যাস না থাকলে দেহের ও শ্বাসের একটু কষ্ট হওয়াই স্বাভাবিক। সব ক্লেশ হরণ করে — এ – পথটুকুর অপরূপ শোভা। গাছপালা ক্রমে শেষ হয়ে আসে। ছোট ছোট ঝোপঝাড়। নানা রঙের ফুল। শিলাখণ্ডগুলিরও বর্ণবিন্যাস। মন্দাকিনীর স্বচ্ছ জলের উচ্ছল ধারা। অপর পারের পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট গহ্বর। তারই ভিতর থেকে কলকল রবে জলের ধারা নামে, — নিকষ কালো গাই-এর সোনালী বাঁট থেকে যেন দুধ ঝরে, পাত্র ভরা সাদা ফেনা জমে, গড়িয়ে পড়ে। সারি সারি ধারা নেমে গিয়ে মেশে মন্দাকিনীতে। চারিপাশে মাথা — উঁচু পাহাড় — বরফের চূড়া। পাহাড়ের বা গা বেয়ে পথ ওঠে — এঁকে – বেঁকে। বহু উপরে দেখা যায় দেও – দর্শনের দু – একটা ঘর। যাত্রী চলে — দূর থেকে মনে হয় পিঁপড়ের সারি। উপর থেকে ফিরতি যাত্রী নামে তাড়াতাড়ি। মুখে তৃপ্তির হাসি। নীচে থেকে যাত্রী ওঠে অতি ধীরে। হাতের লাঠির উপর ভর দেয়। সশব্দে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। হাঁফ লাগে। খানিক দাঁড়ায়। ক্ষণিক বসে। চোখে মুখে করুণ চাহনি। ফিরতি পথের যাত্রীরা উৎসাহ দেয়। বলে, আর তো দূর নেই — এই তো চলে এলে! বোলো — কেদারনাথজী কী জয়!

নিস্তব্ধ পাহাড় যেন চমকে ওঠে। অবসন্ন যাত্রীর তন্দ্রা ছোটে। উৎসাহে এগিয়ে চলে। কে যেন অলক্ষ্যে হাত ধরে সস্নেহে নিয়ে চলেন। পথের পাশে ফুলেরা হাসে। নদীর স্রোত গান গায়। নীল আকাশে স্বর্গের আভাস দোলে।

দেও – দেখনী। অর্থাৎ, দেব – দর্শন।

পাহাড়ের মাথায় ছোট্ট চটি। কিন্তু যাত্রীর মনে সুগভীর স্বস্তি। চড়াইপথের পরিসমাপ্তি। যেন দীর্ঘপথের শেষে অদূরে ফুটে ওঠে আপন ঘরের বাতায়নে ক্ষীণ আলোকশিখা।

চটি ছেড়ে অল্প গিয়ে পাহাড়ের বাঁক। পথ ঘুরতেই সামনে যেন রঙ্গমঞ্চের যবনিকা ওঠে। সুমুখে আকাশ জুড়ে বিশাল তুষারশিখর। কেদারের গিরিশ্রেণী। ২২,৭৭০ ফুট। সূর্যের কিরণ বরফের চূড়ায় রূপার মুকুট পরায়। তিন দিক পাহাড়ে ঘেরা। নদীর উপত্যকা যেন ভস্মস্তূপে ছাওয়া। পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া শিলাখণ্ডের রাশি — debris। তারই মাঝে ছোট ছোট কয়েকটা ঘরবাড়ি, মন্দিরের চূড়া। পাশে ক্ষীণকায়া মন্দাকিনীর ধারা। মন যেন সেই দূর থেকে লুটিয়ে পড়ে মন্দিরের দ্বারদেশে। অবাক হয়ে যাত্রী দেখে। ভুলে যায় আপনাকে। এখন, যাত্রাশেষের তৃপ্তি নয়। নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার, অসীমের মাঝে হারিয়ে যাওয়ার সুগভীর আনন্দ।”

আমাদের কেদার পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। বেসক্যাম্পে পৌঁছানোর আগেই প্রকৃতি বদলে গেল। মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে আমাদের ঘিরে, তুষারশৃঙ্গে লুকোচুরি খেলতে শুরু করেছে মেঘ। তখনও আলো আকাশে। এখানে রাত নামে অনেকটা পরে। হর হর মহাদেব, হর হর মহাদেব …পথ যে শেষ হতে চায় না। কোথায় তুমি? আকাশের কত রং তখন। শান্ত অনুগত নীল সন্ধে নামে যেন। বৃষ্টি ভেজা শরীর নিয়ে এগিয়ে চলি। বেস ক্যাম্পে থাকার জন্য অনেক টেন্ট আছে। এখান থেকে মূল মন্দির অনেকটাই পথ। ডুলি কিংবা পিট্টু নিতে পারেন, ঘোড়া অনেক আগেই থেমে যাবে। হেলিপ্যাড থেকে মন্দিরে দূরত্ব বেশ কিছুটা। হেলিকপ্টারের ওঠা-নামা থেমে গেছে। এগিয়ে চলি। ওই তো দেখতে পেয়েছি মন্দিরের চূড়া … আলোয় সেজেছে চারপাশ।সিঁড়ির প্রথম ধাপে পৌঁছাতেই কেমন যেন হয়ে গেলাম!কেঁদে ফেলেছি। কেন জানিনা … কোথায় এলাম আমি! কীভাবে এলাম!

সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখছি যেন —

“কেদার পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের হয়ে গেল বিকেল সাড়ে পাঁচটা।তখনও যথেষ্ট আলো রয়েছে, চার দিকের পাহাড়ের চুড়োগুলোয় রোদ ঝলমল করছে।

এতক্ষণ চড়াই-এর পর হঠাৎ সামনে সমতল জমি দেখতে পেলে যে কেমন লাগে,তা লিখে বোঝাতে পারব না।এটুকু বলতে পারি যে,অবিশ্বাস আশ্বাস আনন্দ—সব যেন এক সঙ্গে মনের মধ্যে জেগে ওঠে, আর তার সঙ্গে কৃতজ্ঞতা মেশানো একটা অদ্ভুত শান্ত ভাব। সেটাই বোধহয় যাত্রীদের মনে আরও বেশি ভক্তি জাগিয়ে তোলে।

চারিদিকে সবাই পাথর — বাঁধানো জমিতে শুয়ে বসে দাঁড়িয়ে ‘জয় কেদার’ ‘জয় কেদার করছে, মন্দিরটা দাঁড়িয়ে রয়েছে তিন দিকে ঘেরা বরফের পাহাড়ের মধ্যে।”

মন্দিরের সন্ধ্যা আরতি চলছে। সব ক্লান্তি নিমেষে কোথায় যেন হারিয়ে গেল। অনেকটা সময় কাটলো মন্দির চত্বরে। পরের দিন খুব সকালে দর্শন সেরে আবার নিচে নামা তাই প্রচন্ড ঠান্ডায় গরম গরম খিচুড়ি খেয়ে শুয়ে পড়া মন্দিরের খুব কাছাকাছি একটি বিশ্রামাগারে। সকাল হতেই দৃশ্যপট পাল্টে গেল চোখের সামনে একি তুষারাবৃত শৃঙ্গ মনের ভিতর অদ্ভুত এক মাদকতা নিয়ে এলো। ছুটে চললাম কেদার দর্শনে। চারপাশ তখন এক অদ্ভুত মায়ায় ভরা। অসংখ্য ভক্তের ভিড় লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। বেশ কিছুটা সময় পরে প্রবেশ করলাম মন্দিরে। উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রয়েছেন আমার মনের ভিতর। বারবার তার লেখা চোখের সামনে ফুটে উঠছে। আমি যেন মিলি মিলিয়ে দেখছি।

“অন্তহীন যাত্রার প্রবাহ চলে।সত্য শিবসুন্দরের অমৃতময় প্রশান্ত রূপের সন্ধানে যাত্রী চলে চলে দলে দলে, ফিরে আসে বারে বারে — এই অমর অমরপুরীতে।”

উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের লেখাতেই পেয়েছি পঞ্চকেদারের পরিচয় —

“মহাভারতীয় যুগের এক মনোজ্ঞ উপাখ্যান পুরাণে পাওয়া যায়। কুরুক্ষেত্রযুদ্ধে পাণ্ডবগণ জয়ী হন। ধর্মের জয়, অধর্মের পরাজয়। কিন্তু, চাঁদেরও কলঙ্ক লাগে। জ্ঞাতি – বধের দুর্বহ বোঝার ভারে ও গভীর শোকে পঞ্চপাণ্ডব অধীর হন। প্রায়শ্চিত্ত করার উদ্দেশ্যে হিমালয়ে চলেন। সেখানে দেবাদিদেব মহাদেবের তপস্যা করেন। শিবও সহজে ধরা দিতে চান। না। পাহাড়ে পাহাড়ে লুকিয়ে বেড়ান। একদিন ভীমসেনা হঠাৎ দেখতে পেয়ে প্রায় ধরে ফেলেন। মহিষের রূপ ধারণ করে মহাদেবও ছুটে পালান। মেদিনী — মধ্যে প্রবেশ করেন। ভীমবেগে মধ্যম পাণ্ডবও পিছনের অংশ জাপটে ধরেন। এ সবই ঘটে হিমালয়ের কেদারখণ্ডে। বার মূল কেদারনাথে মহিষরূপী সেই শিবেরই পশ্চাৎ অংশ, নেপাল পশুপতিনাথে সম্মুখভাগ। মদমহেশ্বরে নাভি। তুঙ্গনাথে বাহু। রুদ্রনাথে মুখ। কল্পেশ্বরে জটা। গাড়োয়ালে অবস্থিত এই পাঁচটি তীর্থস্থানকে বলে — পঞ্চকেদার। পঞ্চপাণ্ডব এইসব স্থানে মহাদেবের আরাধনা-স্টেশ করে পাপমুক্ত হন ও শান্তিলাভ করেন।

এ যুগের যাত্রীরা অনেকেই হয়ত এই পাঁচকেদারের সন্ধান রাখেন না। সে-যুগে হিমালয়-দুহিতা পার্বতী নিজেও হয়ত জানতেন না। তাই বোধ করি মহাদেব মহাদেবীকে সেই তীর্থগুলির পরিচয় দেন :

কেদারং মধ্যমং তুঙ্গং তথা রুদ্রালয়ং প্রিয়ম্।

কল্পকং চ মহাদেবি সর্বপাপপ্ৰণাশনম্॥

হে মহাদেবি, কেদার (কেদারনাথ), মধ্যম (মধ্যমেশ্বর বা মদমহেশ্বর), তুঙ্গ (তুঙ্গনাথ), প্রিয় রুদ্রালয় (রুদ্রনাথ) ও কল্পক তীর্থ (কল্পেশ্বর বা কল্পনাথ) — সর্বপাপহর এই তীর্থগুলি। অতঃপর মহাদেব একে একে এই পঞ্চকেদারের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেন।

গাড়োয়ালবাসীরাও এখনও সেই পঞ্চকেদারের অস্তিত্ব দেখান।

অলকানন্দার (বিষ্ণুগঙ্গার) উপকূলে বদরীনাথ। মন্দাকিনীর তটে কেদারনাথ। অলকানন্দা ও মন্দাকিনীর সঙ্গম রুদ্রপ্রয়াগে। এই দুই নদীর প্রবাহ-পথের মধ্যবর্তী অঞ্চলে হিমালয়ের যে বিশাল গিরিশ্রেণী, তারই পাঁচটি উত্তুঙ্গ শিখরের পাদদেশে এই পঞ্চকেদারের পাঁচটি মন্দির। আজও সে সব স্থানে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মহান দীপ্তি, তেমনি ধ্যানগম্ভীর হিমাচলের শব্দলেশহীন নিবিড় প্রশান্তি।

হিমগিরি তুষার-রত্নবেদীতলে সাজানো যেন পূজার পঞ্চপ্রদীপের পাঁচটি উজ্জ্বল নিষ্কম্প শিখা।”

ফাটা থেকে আমরা চোপতা হয়ে বদ্রীনাথ যাব। চোপতা ভ্যালি দেখবার লোভ আসলে সামলাতে পারিনি। পথ অনেকটা। আগের দিনের ধকল শরীরকে ক্লান্ত করেছে খুব। কিন্তু মনের জোর ছিল প্রবল। সকলের উৎসাহ চরম। সকালে ফাটার রূপ দেখে মুগ্ধ। সারারাত ঠান্ডা ছিল খুব বেশি। দুটো রাত এখানে কেটেছে। তাই ভোরবেলা রৌদ্রোজ্জ্বল ফাটাকে রূপমতী বলে মনে হলো। এখান থেকে কেদারনাথ যাবার হেলিকপ্টার সার্ভিস পাবেন। পাহাড় ঘেরা ছোট্ট গ্রাম ফাটা, রুদ্রপ্রয়াগ জেলার অন্তর্গত। এখানে যে গেস্ট হাউসে আমরা ছিলাম সেই গেস্ট হাউস চালান একজন মহিলা। তাঁর ব্যবহার আমাদের ভালো লেগেছে, ‘জয় বদ্রীনাথ’ বলে রওনা দিলাম ফাটা থেকে। ফাটা থেকে চোপতা ভ্যালির পথ ভয়ংকর সুন্দর। সবুজ গালিচা পাতা উপত্যকা। চোপতায় যখন পৌঁছালাম তখন উপলব্ধি করলাম প্রকৃতি এত সুন্দর হতে পারে! দূরে বরফমোড়া পর্বতশৃঙ্গ। সবুজ উপত্যকায় যেন ঈশ্বর গল্প বিছিয়ে রেখেছেন। প্রণাম করি সৃষ্টিকর্তাকে। এখানে মেঘরোদ্দুরের খেলা দেখতে দেখতে হারিয়ে ফেলেছিলাম সমস্ত দুঃখকে। এখান থেকেই পঞ্চকেদারের অন্যতম রুদ্রনাথ ট্রেক শুরু হয়। রুদ্রনাথ থেকে চন্দ্রশীলা পর্যন্ত ট্রেক সম্পন্ন করেন অনেকেই। পরে কোনদিন আসা যাবে এই ভেবে রওনা দিলাম বদ্রীনাথ-এর উদ্দেশ্যে। বদ্রীনাথের পথে যেন মায়াবী ভাস্কর্য ছড়ানো আছে। পাহাড়ি নদীকে পাশে রেখে এগিয়ে চলা, গোবিন্দঘাট থেকে রাস্তা খুব খারাপ, তা জানতাম।প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে সাজিয়ে তোলা ঠিক হচ্ছে না।যোশীমঠ খুবই উল্লেখযোগ্য একটি জায়গা।পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে, রাস্তা তৈরি হচ্ছে পাহাড় কেটে। মনে হয়েছিল যেকোনো সময় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। পরবর্তী সময়ে হলও তা। যোশীমঠের প্রাকৃতিক বিপর্যয় আমাদের স্তম্ভিত করেছে। কপালে ভাঁজ ফেলেছে। উষ্ণতা বেড়েছে পাহাড়ে। পাথর কাটার ফলে ধ্বস নামছে পাহাড় জুড়ে। ধুলোর চাদর গায়ে জড়িয়ে নিচ্ছে সবুজ।

শরীর ক্রমশ ক্লান্ত হতে শুরু করল।পাহাড়ঘেরা বদ্রী পৌঁছাতে বিকেল হল। আমরা ছিলাম কেন্দ্রীয় সরকারের ইয়ুথ হোস্টেলে। বড়ো চমৎকার জায়গাটি। পাহাড়ের কোলের ভিতর যেন আমরা সবাই ঘর বাঁধলাম। বরফ আচ্ছাদিত পাহাড়ের গায়েও তখন বিকেলের পড়ন্ত রোদ্দুর লুকোচুরি খেলছে। নির্জন নিরালায় কাটিয়ে দেওয়া যায় আগামীজীবন। বেরিয়ে পড়লাম বদ্রীবিশাল দর্শনে। বেশ কিছুটা পথ হেঁটে যেতে হবে। কিছু সময় পরেই কানে এলো জলস্রোতের শব্দ। অলকানন্দা সুরমূর্চ্ছনা আপনাকে নিয়ে যাবে মন্দিরের কাছে।দূর থেকে মন্দির চোখে পড়তেই মন বলে উঠবে,’জয় বদ্রীনাথ,জয় বদ্রীনাথ’। আলোকমালায় সেজেছে মন্দির।মোহনীয় রূপ চোখকে প্রশান্তি দিল,মনে দিল শক্তি।কত মানুষের ভিড়, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর দর্শন পেলাম বদ্রীনাথের,তৃপ্ত হলো হৃদয়।শুরুতেই বলেছি আমার কাছে ঈশ্বরই প্রকৃতি, প্রকৃতিই ঈশ্বর। প্রকৃতির সৌন্দর্যের মধ্যে প্রাণের ঠাকুরকে পেলে মনে প্রশান্তি তো আসবেই।তারপর ফিরে আসা হোস্টেলের রুমে। তীব্র ঠান্ডায় তখন বেশ জুবুথুবু অবস্থা আমাদের। সকালবেলায় প্রকৃতির রূপ সবসময় অন্যরকম। বদ্রীনাথের সকাল চোখের সামনে তুলে ধরল প্রকৃতির মায়াময় ক্যানভাস।

বদ্রীনাথ থেকে সকাল সকাল রওনা দিলাম। এবারে মন কেমনের পালা। ফিরতে হবে নিজের ঘরে। পাহাড়ি পথের বাঁকে বাঁকে কত ইতিহাস, কত গল্প। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হবে আমাদের। হরিদ্বার পৌঁছাতে রাত হল। পরের দিন হরিদ্বারের গঙ্গার ঘাট আবারও একবার ঘুরে দেখা,কিছু কেনাকাটা। হরিদ্বারের প্যারা কিন্তু বিখ্যাত, খেতে ভুলবেন না। রাববি অবশ্যই খাবেন। গঙ্গারতি দেখলাম।হরিদ্বারের গঙ্গারতি বেনারসের থেকে একটু আলাদা। গঙ্গার ঘাটের এই দৃশ্য মন স্পর্শ করল। পরের দিন দিল্লি হয়ে ফিরে আসা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন