১৯৫৩ সাল। রেঙ্গুনে বসেছে এশিয়াব্যাপী এক চতুর্দেশীয় ফুটবল প্রতিযোগীতার আসর। দিনটা ছিলো ২৩ শে অক্টোবর। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। আগের দিন সকালে বেশ বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রার পারদ নেমে গিয়েছিলো বেশ কিছুটা। পাকিস্তান দল ম্যাচের আগের রাত্রেই তাদের প্রথম একাদশ জানিয়ে দেয়।কিন্তু ভারতীয় ম্যানেজমেন্ট ম্যাচ শুরুর পাঁচ ঘন্টা আগে অবধিও তাদের প্রথম একাদশ জানায়নি। বৃষ্টিস্নাত আউট সাং স্টেডিয়ামের নরম ঘাসে মাঠে নামলো ভারত ও পাকিস্তানের ফুটবল দল।পাকিস্তানের সবাই বুট পরিহিত। কিন্তু ভারতের অধিনায়ক শৈলেন মান্না সমেত তিনজন খেলোয়াড় ব্যতীত সবাই মাঠে নেমেছেন নগ্নপদে। ভারতীয় দলে তখনও আমেদ খান-ভেঙ্কটেশের জমানা। কিন্তু ম্যাচের সময় বয়ে গেলেও কিছুতেই আর গোল হয়না। বেশ কিছুক্ষণ পর, ম্যাচ শেষ হতে যখন এগারো মিনিট বাকী, তখন ভারতের তরুণতম রাইট ইন গোল করে এগিয়ে দেন ভারতকে।ভারত ম্যাচটা জেতে ১-০ গোলে। প্রতিযোগীতার প্রথম ম্যাচে জয়লাভের খবর প্রকাশ হয় পরের দিনের ‘যুগান্তর’ সহ বেশ কিছু পত্রিকায়। ম্যাচের নায়ক হয়ে ওঠেন ভারতের নবাগত রাইট ইন, যিনি পরবর্তীকালে সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলে রেকর্ড গড়বেন অলিম্পিকে,হয়ে উঠবেন এশিয়ার অন্যতম সফল স্ট্রাইকার — নেভিল ডি’সুজা।
দুইবছর পরে, তখন সময়টা ১৯৫৫ সাল। সেইবারে চতুর্দেশীয় ফুটবল প্রতিযোগীতাটির আসর বসেছিলো ঢাকা শহরে ডিসেম্বর মাসে। ২৪ শে ডিসেম্বর তারিখে প্রতিযোগীতার ফাইনালে আবারও মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত-পাকিস্তান।সেই ম্যাচে ভারতের হয়ে গোলকিপারের গ্লাভস পরেছিলেন সনৎ শেঠ।অধিনায়ক আজিজুদ্দিনের সাথে লতিফ মিলে তৈরি করা ভারতের রক্ষণভাগ ছিলো তখন যথেষ্ট মজবুত।পাকিস্তান পূর্ণ উদ্যম নিয়ে খেলা শুরু করলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের সেই উদ্যম ভেঙে যায়। ততদিনে ভারতের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়ে গেছে রাইট উইং প্রদীপ ব্যানার্জির। প্রথম হাফে তাঁর একটি দূরপাল্লার শট গোলপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।প্রথমার্ধের ত্রয়োদশ মিনিটে জ্বলে উঠলেন আগের বর্মা ম্যাচে আহত লেফট ইন পুরান বাহাদুর। তাঁর ব্যাকপাশ থেকে গোল করে যান প্রদীপ ব্যানার্জি। এরপরে পুরান বাহাদুরকে খোঁড়াতেও দেখা যায়। কিন্তু এর ঠিক ছয় মিনিট পরেই আবারও পুরান বাহাদুরের ম্যাজিক। তাঁর অসামান্য লবের নাগাল পেয়ে যান ভারতের সেই বিশ্বাসযোগ্য রাইট ইন কাম স্ট্রাইকার নেভিল ডিসুজা এবং খুব সহজেই পাক গোলরক্ষক জাফর আলিকে পরাস্ত করেন তিনি। তাঁর গোলে ভারত এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে পাকিস্তানের তাজ ফকরি এক গোল শোধ করবার পর পাকিস্তান ফুটবল দল ভারতের রক্ষণ সীমানায় একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকেন।কিন্তু সেই ম্যাচে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন সনৎ শেঠ। রেফারি ম্যাচশেষের বাঁশি বাজাতেই উল্লাসে ফেটে পড়লো ভারতীয় দল। ম্যাচটির দর্শকসংখ্যা ছিলো প্রায় পঞ্চাশ হাজার, যার বেশীরভাগই ছিলো পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে। চতুর্দেশীয় ফুটবল প্রতিযোগীতায় (কলম্বো কাপ) আবারও চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। আর এই কলম্বো কাপের ১৯৫৩ ও ১৯৫৫ সালের আসরে ভারত-পাকিস্তান ডুয়েলের নায়ক হয়ে রয়ে গেলেন সেসময়ের এশিয়াখ্যাত এই ফরোয়ার্ড — নেভিল ডিসুজা।
১৯৫৫ এর এই কলম্বো কাপেরই দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রহ্মদেশের মুখোমুখি হয়েছিলো ভারতীয় দল। এই ম্যাচেই অভিষেক হয় প্রদীপ ব্যানার্জির (১৯৫৫ এর ২০শে ডিসেম্বর)। ম্যাচটিতে ভারত জয়ী হয় ৫-২ গোলে যার মধ্যে দুটি গোল ছিলো ডেবিউট্যান্ট প্রদীপ ব্যানার্জির, একটি হাফব্যাক কেম্পিয়ার, আর বাকি দুই গোল করে যান ভারতের সেন্টার ফরোয়ার্ড সেই নেভিল ডিসুজা। নেভিল ডিসুজাকে নিয়ে লিখতে গেলে যে টুর্নামেন্টকে বাদ দেওয়া যাবেনা সেটি হলো ১৯৫৬ এর মেলবোর্ন অলিম্পিক। তবে এই অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের খেলতে যাওয়া নিয়ে একটি ঘটনা আছে। এর আগের দুই অলিম্পিকে (১৯৪৮ ও ১৯৫২) যথাক্রমে ফ্রান্সের কাছে ১-২ গোলে ও যুগোশ্লাভিয়ার কাছে ১-১০ গোলে পরাজিত হওয়ায় ভারতীয় ফেডারেশন ৫৬’ এর মেলবোর্ন অলিম্পিকে টিম পাঠানোয় খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু ১৯৫৬ এর জুন মাসে চীনা দল ভারতে আসে কিছু প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে। তারা তিনটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলে যথাক্রমে মোহনবাগান, মহামেডান স্পোর্টিং আর আইএফএ একাদশের বিরুদ্ধে। প্রথম দুই ম্যাচে বড়ো ব্যবধানে জয়লাভ করলেও শেষ ম্যাচে আইএফএ একাদশের কাছে ০-৩ গোলে পর্যুদস্ত হয় চীনা দল। শোনা যায় এই ঘটনায় যথেষ্ট উদ্দীপ্ত হয়েছিলো ফেডারেশন আর এর ফলে মেলবোর্নে টিম পাঠাতেও রাজি হয়ে যায় তারা। ভাগ্যিস টিমটা পাঠিয়েছিলো ফেডারেশন, নইলে কি আর অমন ইতিহাস রচিত হতো কোনোদিন!
১৯৫৬ এর ১লা ডিসেম্বর অলিম্পিক প্রতিযোগীতায় মেলবোর্নের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় ভারত। সবাইকে চমকে দিয়ে ভারত এই অলিম্পিকে খেলেছিলো ৩-২-৫ ছকে, মাঝেমাঝে কোচ রহিম সাহেব সেটিকে আবার বদলে দিচ্ছিলেন ৪-২-৪ ছকে। রহিম সাহেবের এই স্ট্র্যাটেজি তখন নন্দিত হয়েছে অনেক জায়গায়। বলা বাহুল্য, এই স্ট্র্যাটেজিতে নেভিল ডিসুজা মাঝেমধ্যে উইথড্রয়াল স্ট্রাইকার পজিশনে নেমে আসতেন যে পজিশন আবিষ্কার করে ঠিক দুইবছর আগের ৫৪’-এর বিশ্বকাপে তাক লাগিয়েছিলেন হাঙ্গেরির সোনার দলের কোচ গুস্তাভ সেবেস। সেবেসের দলে এই পজিশনে খেলতেন হিদেকুটি। ভাবতেই অবাক লাগে সেইযুগের পরিপ্রেক্ষিতে ঠিক কতটা আধুনিক আর বিশ্বফুটবলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিলো রহিম সাহেবের ভারতীয় ফুটবল। যাই হোক প্রসঙ্গে ফিরে আসি, ম্যাচের তখন সবে নয় মিনিট, অধিনায়ক সমর ব্যানার্জির শট বারে লেগে ফিরে এলে রিবাউন্ড শটে বল জালে ঢুকিয়ে দেন নেভিল ডিসুজা (১-০)। এর ঠিক আট মিনিট পরে অস্ট্রেলিয়ার সেন্টার ফরোয়ার্ড মারো গোল পরিশোধ করে দেন (১-১)। বিরতির ঠিক ১২ মিনিট আগে প্রদীপ ব্যানার্জির সেন্টার ধরতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান গোলকিপার আর গোলের গন্ধে ওঁত পেতে থাকা শিকারীর মতো সেই বল জালে ঠেলে দেন আবারও সেই নেভিল ডিসুজা (২-১)। তিন মিনিট পর মারো আবার গোল পরিশোধ করে দেন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে (২-২)। দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হলো। দ্বিতীয়ার্ধের একটা সময় কানাইয়ান বল কাটিয়ে অনেক দূর চলে এসে অজি গোলকিপারকে প্রায় কাটিয়েই ফেলেছিলেন, কিন্তু এইসময় বল কিছুটা অন্যত্র চলে যায়। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন নেভিল। ঠিকরে বেরিয়ে এসে সেই বল গোলে ঢুকিয়ে দেন নেভিল ডিসুজা (৩-২)। …..হ্যাট্রিক! তাও অলিম্পিকের মতো বড়ো আসরে। এরপরে আর গোল শোধ করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। বরং খেলা শেষ হবার দশ মিনিট আগে সমর ব্যানার্জির পাশ থেকে বল পেয়ে প্রায় পঁচিশ গজ দৌড়ে গোল করে যান কিট্টু (৪-২)। ভারত, অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দলকে দুরমুশ করে দেয় ৪-২ গোলে। ভারতের ফুটবল ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা বিভাময়, ঐতিহ্যবাহী, গর্বের জয় হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় এই জয়কে। আর এই জয়ের অবিসংবাদিত নায়ক সেই নেভিল ডিসুজা… কোথায় হারিয়ে গেলেন তিনি ফুটবলের স্মৃতি থেকে? এর উত্তর হয়তো আজ প্রায় পঁয়ষট্টি বছর পর খুঁজতে যাওয়াটা অবান্তর।
এই অলিম্পিকের পরের ম্যাচে ভারত মুখোমুখি হয় যুগোশ্লাভিয়ার। যুগোশ্লাভিয়া ছিলো গত অলিম্পিকের রানার আপ, যথেষ্ট শক্তিশালী টিম ছিলো তাদের। এই ম্যাচে ভারতের দুই উইং প্রদীপ ব্যানার্জি আর বলরামের ক্রমাগত আক্রমণে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলো যুগোশ্লাভিয়া। ইনসাইড ফরোয়ার্ড কিট্টুও ছিলেন চমৎকার ফর্মে কিন্তু নেভিল ডিসুজা এদিন ছিলেন কিঞ্চিৎ নিষ্প্রভ। অবশ্য ম্যাচের প্রথম পনেরো মিনিট যুগোশ্লাভিয়া ভারতকে যথেষ্ট চাপে রেখেছিলো। প্রথমার্ধের শেষ দশ মিনিট ভারত বেশ কয়েকটা আক্রমণ করে। এই সময় কিট্টু সুন্দরভাবে বল সাজিয়ে দেন ডিসুজাকে, ডিসুজার শট বারের উপর দিয়ে চলে যায়। এরপর দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হয়। দ্বিতীয়ার্ধের তখন সবে সাত মিনিট। বল পেয়ে যান নেভিল, আর তারপরেই সারাম্যাচে নিষ্প্রভ নেভিল জ্বলে উঠলেন ক্ষণিকের জন্য, বিদ্যুৎবেগে দুজনকে কাটিয়ে বল ঠেলে দেন গোলে (১-০)। যুগোশ্লাভিয়ার বিরুদ্ধে এগিয়ে যায় ভারত। এই ব্যবধান যদি ভারত ধরে রাখতে পারতো তাহলে কি হতো ভাবলেই এখন গা শিউরে ওঠে। কিন্তু বিধি বাম। নেভিলের গোলের ঠিক দুমিনিট পরেই প্যাপেক গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান (১-১)। গোলশোধের পরেই যুগোশ্লাভিয়া ক্রমশ প্রাধান্য বিস্তার করে। আর পরের পনেরো মিনিটের মধ্যে যুগোশ্লাভিয়া তিনটি গোল করে দেয় যার মধ্যে একটি গোল আবার ভারতের সালামের আত্মঘাতী গোল (৪-১)। ভারত যুগোশ্লাভিয়ার কাছে হেরে যায় ৪-১ গোলে, কিন্তু নেভিল, কেম্পিয়া, বলরাম, পিকের খেলা বিশ্বের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন করে তুলে ধরে ভারতীয় পতাকা আর এই ম্যাচেও গোল করে উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন নেভিল ডিসুজা। আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া, ভারতের কাছে ৪-২ গোলে পরাস্ত হবার পর থেকেই রিম্যাচের দাবি জানাচ্ছিলো অজি ফুটবল দল, তারা যেন কিছুতেই মানতে পারছিলোনা ভারতের কাছে তাদের পরাজয়। সেই রিম্যাচ আয়োজিত হয়েছিলো সিডনিতে, ১৯৫৬ এর ১২ই ডিসেম্বর, আর সেখানে অস্ট্রেলিয়াকে ৭-১ দুরমুশ করে ভারত। ওই ম্যাচেও স্বমহিমায় আলোরণ ফেলেছিলেন নেভিল ডিসুজা, করেছিলেন জোড়াগোল।
পিটার থঙ্গরাজ একবার বলেছিলেন, বক্সে নেভিল বল পেলে সেখানে কেউই থাকতোনা যিনি তাঁকে আটকাতে পারেন। নেভিল ডিসুজার স্ত্রী লিরা ডিসুজা একবার বলেছিলেন —”অত বড় একটা ঘটনা ঘটিয়েছিল নেভিল (প্রসঙ্গে অলিম্পিকে ফুটবল হ্যাট্রিক)৷ কিন্তু ওই ম্যাচ নিয়ে কোনও দিন গল্প করতে, বড়াই করতে দেখিনি৷ বললেই বলত, ও সব নিয়ে ভেবে কী হবে৷ ছেড়ে দাও৷ তবে খেলা খুব ভালোবাসতেন৷ যেখানেই ফুটবল হত, ছোট টুর্নামেন্ট হলেও ছুটে যেত নেভিল৷ বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাত৷” নেভিল ডিসুজার আরেকটা আশ্চর্য প্রতিভা ছিলো, সেটা হলো তিনি ছিলেন অসাধারণ ইংরেজি গানের গাইয়ে। অলিম্পিকের সময় তাঁর ইংরেজি গান ছিলো ভারতীয় দলের রিফ্রেশ হবার অন্যতম মাধ্যম, তখন তো আর পার্টি ফার্টি ছিলোনা! ভাবতেই অবাক লাগে যে স্ট্রাইকারের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখা উচিত ছিলো ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসে সেই নামকে আদ্যোপান্ত ভুলে যাওয়া হয়েছিলো ২০০৯ সালে অলিম্পিয়ানদের সম্বর্ধনা দেবার সময়। ২০১৬ সালের একটি সংবাদপত্রিকায় পড়েছিলাম, একদিন নাকি আশি বছর বয়সী লিরা ডিসুজাকে (প্রয়াত নেভিল ডিসুজার স্ত্রী) টানা দাঁড়িয়েও থাকতে হয়েছিলো ব্যাঙ্কের লাইনে। ভারতের ফুটবল ফেডারেশন, ভারতীয় ফুটবলের স্মৃতিসংরক্ষণ তো দূরে থাক, খ্যাতনামা ফুটবলারদের পরিবারের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতাই দেখায়নি, ঠিক যেমনটা দেখায়নি নেভিল ডিসুজার মতো পঞ্চাশ দশকের আরও অনেক খ্যাতনামা ফুটবলারদের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে।
তাই তাদের তথ্যগ্রহণের ক্ষেত্রে একমাত্র সম্বল কিছু জীর্ণ সংবাদপত্রের ঠিকানা। একসময়ের এশিয়াখ্যাত স্ট্রাইকার নেভিল ডিসুজা ১৯৫৬-এর মেলবোর্ন অলিম্পিকের পর আর কোনো ম্যাচ খেলেছিলেন কিনা সেই তথ্য আমি পাইনি, যদি নাও খেলে থাকেন তথাপি কেনোই বা তাঁর ফুটবল কেরিয়ার এতো স্বল্প সময়ের জন্য সীমাবদ্ধ থাকলো সেই প্রশ্নও রয়ে যায় বইকি। পুরোনো পত্রিকা ঘেঁটে নেভিল ডিসুজার খেলা কিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচ শুধু তুলে ধরলাম আপনাদের কাছে, কিন্তু ডিসুজার ব্যাপ্তি ছড়িয়ে আছে আরও সুদূরে। গোয়ার আসগাও গ্রাম থেকে আসা এক হকিপাগল ছেলে কিভাবে হয়ে উঠলো তৎকালীন এশিয়ান ফুটবলের অন্যতম ফরোয়ার্ড, তা হয়তো অজানাই রয়ে যাবে উত্তরপ্রজন্মের কাছে। ঘুমিয়ে আছে ফেডারেশন, ঘুমিয়ে আছে ভারতীয় ফুটবল, তাই হয়তো এতো বছর পরেও প্রাসঙ্গিক থাকে মান্না দের কলি — ‘গোয়ানিজ ডিসুজা ঘুমিয়ে আছে যে আজ কবরে’….. আমাদের স্মৃতিতে সত্যিই যে ঘুমিয়ে আছেন সেকালের দাপুটে ফরোয়ার্ড!
কেউ তো মনে রাখুক, কলকাতা ময়দানে না খেলেও প্রায় সত্তর বছর আগে ভারত তথা এশিয়াব্যাপী দীপ্তি ছড়িয়েছিলেন এক স্ট্রাইকার…. হিজ নেম ওয়াজ নেভিল।
তথ্যঋণ:- যুগান্তর আর্কাইভ অনলাইন পোর্টাল