বৃহস্পতিবার | ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:৫৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
মা দুর্গার মহাস্নান পর্ব : রিঙ্কি সামন্ত কোষ্টিয়া গ্রামের শীট বাড়ির দুর্গাপুজো : কমল ব্যানার্জী অয়দিপাউস : রিমি মুৎসুদ্দি পোড়খাওয়া সাধারণ মানুষের জীবনকথা : হরিশংকর জলদাস সাজসজ্জার পুজো : নন্দিনী অধিকারী আঠেরো শতকে কলকাতার ভেড়া যেত অস্ট্রেলিয়ায় : অসিত দাস জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (অষ্টম পর্ব) : বিজয়া দেব হরিয়ানায় হ্যাট্রিক করলেও উপত্যকার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয়ে গান্ধী জয়ন্তী : দীপাঞ্জন দে পটের পাড়ায় মাজরামুড়ায় : রঞ্জন সেন একটি ড্যান্স হাঙ্গামা : শৈলেন সরকার গুণের রাজা পানিফল, দুর্গা পুজোর নৈবেদ্যে অপরিহার্য : রিঙ্কি সামন্ত স্কুল পালিয়ে কী রবীন্দ্রনাথ হওয়া যায়? : সাইফুর রহমান পুজোয় বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় পরিষেবার মান উন্নত করতে বিদ্যুৎ দপ্তরের তৎপরতা তুঙ্গে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় গানের ভিতর দিয়ে দেখা পুজোর ভুবনখানি : সন্দীপন বিশ্বাস নবদুর্গা নবরাত্রি : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সাদা কালোয় কুমোরটুলি : বিজয় চৌধুরী জেল খাটাদের পুজো, মাইক আসছে মাইক, ছুটছে গ্রাম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কাশ্মীর নির্বাচনে বিপুল সাড়ার নেপথ্যে কি ৩৭০ বিলোপের জবাব : তপন মল্লিক চৌধুরী তর্পণের তাৎপর্য : সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় মহালয়ার চন্ডীপাঠ মন্ত্র, মহিষাসুরমর্দিনী স্তোত্র : বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র পেজফোর-এর শারদোৎসব বিশেষ সংখ্যা ২০২৪ সুকুমার রায় মানেই শৈশব ও কৈশোর : রিঙ্কি সামন্ত অমৃতা প্রীতম-এর অনুবাদ গল্প ‘বুনোফুল’ মিল অমিলের মানিক ও মার্কেজ : রাজু আলাউদ্দিন কলকাতা ছিল একসময় ভেড়াদের শহর : অসিত দাস নিরাপদর পদযাত্রা ও শিমূলগাছ : বিজয়া দেব তোলা বন্দ্যো মা : নন্দিনী অধিকারী বাংলার নবজাগরণ ও মুসলমান সমাজ : দেবাশিস শেঠ সৌরভ হোসেন-এর ছোটগল্প ‘সালাম’
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই মহাষষ্ঠীর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কোষ্টিয়া গ্রামের শীট বাড়ির দুর্গাপুজো : কমল ব্যানার্জী

কমল ব্যানার্জী / ২৩ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

কোষ্টিয়া, নারাহ, সানবান্ধা, বিকনা, জানবেদিয়া, মানকানালি আর পুরন্দরপুর নিয়ে বাঁকুড়ার দু নম্বর ব্লক।

সেখানকার কোষ্টিয়া গ্রামে প্রায় দু’শো বছর ধরে চলে আসছে শীট পরিবারর দুর্গাপুজো। এই পরিবারের উথানের কাহিনী বেশ আকর্ষনীয় – মেষপালক থেকে বড়লোক হওয়ার গল্প। পরিবারের আদি পুরুষ সার্থক শীটের আদি বাড়ী ছিল বেলিয়াতোরের কাছে বনগ্রামে। নিতান্তই সাধারন চাষি পরিবার, তাই বাড়তি উপার্জনের জন্য মেষপালকের কাজও করতেন সার্থক শীট। এইরকমই একদিন তিনি মেষ চড়তে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সেইসময় তিনি স্বপ্ন দেখেন মা দুর্গা তাকে দুর্গা পুজো করার কথা বলছেন। ঘুম ভেঙে গেলে কি ভাবে পুজো করবেন সেই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরলেন। যাই হোক, মায়ের আদেশ অমান্য না করে একটি চালা তৈরি করে তিনি মা দুর্গার পুজো শুরু করেন।

এরপরই সার্থক শীটের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন সার্থক শীট। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে একের পর এক জমিদারি ক্রয় করেন, মালিক হয়ে ওঠেন কয়েক হাজার হেক্টর বনভূমির। অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় পর তিনি বনগ্রাম ছেড়ে কোষ্টিয়াতে চলে আসেন। আড়ম্বর করে মায়ের পুজো শুরু করেন। জমিদার বাড়ির পাশেই তৈরি হয় বিশাল নাট মন্দির সাথে বিষ্ণু আর দুর্গা মন্দির, যা আজও সেই ফেলে আসা সময়কে মনে করিয়ে দেয়। শীট পরিবার মাহিষ্য সম্প্রদায় ভুক্ত। পরিবারের পুজো বৈষ্ণব মতে অনুষ্ঠিত হয়। তাই বলিদান নিষিদ্ধ। পুজোতে বেশ কয়েকটি ব্যতিক্রমী প্রথা রয়েছে। সপ্তমী ও অষ্টমীর দিন নিরামিষ ভোগ আর নবমীতে আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। এ পরিবারের পুজোর আর একটি বিশেষত্ব ছিল, পুজোকে কেন্দ্র করে দিনেরবেলায় যাত্রা অনুষ্ঠান। এই দিনের বেলার যাত্রার পিছনে রয়েছে এক অন্যরকম কাহিনী৷

তখনকার দিনে চারিদিকে বনে জঙ্গলে ঘের ছিল এই কোষ্টিয়া গ্রাম৷ প্রায়ই লেগে থাকত বুনো হাতির উপদ্রব৷ তাই বিভিন্ন গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে আসা প্রজারা যাতে দিনের আলো থাকতে থাকতেই বাড়ি ফিরতে পারে, তার জন্যই ছিল এই ব্যবস্থা৷ তবে এখন আর যাত্রাপালা হয় না জানালেন শীট পরিবারের সদস্য মৃনাল কান্তি শীট। এই পুজোকে কেন্দ্র করে আগে সকলকে মায়ের ভোগ প্রসাদ খাওয়ানো হতো৷ ষোলটি গ্রাম থেকে প্রজারা আসতেন। এখন জমিদারি প্রথা আর নেই, অনেক সম্পত্তি সরকারের হাতে চলে গিয়েছে। পুজোও হারিয়েছে আগের জৌলুস৷ তবে আজও গ্রাম ছাড়াও বাইরে থেকে মানুষ ছুটে আসে এই পুজো উপভোগ করতে৷ পুজোর চারটে দিন আনন্দে মেতে উঠেন তারা। শীটেদের বতর্মানে শাখা প্রশাখা নিয়ে আটত্রিশটি পরিবার। সকলেই এই মহাপুজাতে অংশ গ্রহন করেন। জানালেন পরিবারের আর এক সদস্য। “দেবতার জন্য নির্দিষ্ট কোন দেবোত্তর সম্পত্তি না থাকলেও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বেশকিছু সম্পত্তি থেকে পুজোর খরচ উঠে আসে। আর গ্রামের মানুষজনতো আছেনই। এ তো শীট বাড়ির পুজো নয়, এ গ্রামের মানুষের আবেগ” — গর্বভরে জানালেন মৃনাল শীট মশাই।

প্রথা মেনে পুজোর পুরাহিত আসেন পিড়িরাবনি গ্রাম থেকে দুজন আর প্রতাপপুর থেকে একজন।সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত জ্বলে অক্ষয় প্রদীপ। রুজির টানে যারা গ্রামের বাইরে থাকেন পুজোর সময় প্রতিবছর তারা গ্রামে ফেরেন শীট বাড়ির পুজোয় অংশ নিতে। দশমীর দিন বিদায়ের আগে মা কে পান্তা ভাত আর চ্যাং মাছ ভোগ দেওয়া হয়। ঘট বির্সজনের পর শুরু হয় সিঁদুর খেলা আর সব শেষে মা কে কাঁধে করে নিয়ে স্থানীয় নির্দিষ্ট পুকুরে বিসর্জন। সব শেষে শান্তির জল ছেটানোর মধ্যে দিয়ে পুজোর সমাপ্তি। সন্ধ্যায় আশেপাশের গ্রামের শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন