বৃহস্পতিবার | ৪ঠা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৫৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
ওকাম্পো আর রবীন্দ্রনাথ : কিছু অশ্রুত গুঞ্জন (দ্বিতীয় পর্ব) : অভিজিৎ রায় হুগলির খানাকুল থানাকে দুটি করার দাবিতে সরব এলাকার বাসিন্দারা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা নামের ব্যুৎপত্তি, নতুন আলোকপাত : অসিত দাস আবার সেই হাথরস! এবার স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলেবাবা : তপন মল্লিক চৌধুরী সন্ন্যাসী ও সুন্দরী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ-এর ছোটগল্প ‘একটা পিস্তল ও ডুমুর গাছ’ ওকাম্পো আর রবীন্দ্রনাথ : কিছু অশ্রুত গুঞ্জন (প্রথম পর্ব) : অভিজিৎ রায় সুলেখা সান্ন্যাল-এর ছোটগল্প ‘ঘেন্না’ সুখীমানুষদের দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ডাইরি (শেষ পর্ব) : নন্দিনী অধিকারী শোভারাম বসাকের লবণের ব্যবসা : অসিত দাস রাখাইনে সংঘাত ও সেন্টমার্টিন পরিস্থিতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন খেলার মাঠ থেকে চেম্বারে : রিঙ্কি সামন্ত ছড়া কি শিশুসাহিত্য? : লুৎফর রহমান রিটন কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠা দিবস ও ডা: বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মজয়ন্তী পালন : দীপাঞ্জন দে সুখীমানুষদের দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ডাইরি (তৃতীয় পর্ব) : নন্দিনী অধিকারী বেগম রোকেয়ার রচনায় লোকজ জীবন অভিজ্ঞতা (শেষ পর্ব) : গীতা দাস সুখীমানুষদের দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ডাইরি (দ্বিতীয় পর্ব) : নন্দিনী অধিকারী বেগম রোকেয়ার রচনায় লোকজ জীবন অভিজ্ঞতা (চতুর্থ পর্ব) : গীতা দাস সাবঅলটার্ন দৃষ্টিতে কলকাতার লবণচিহ্ন : অসিত দাস মোদীকে চাপে রাখতে নীতীশ-নায়ডুর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা দাবি : তপন মল্লিক চৌধুরী সুখীমানুষদের দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ডাইরি (প্রথম পর্ব) : নন্দিনী অধিকারী বাঁধে ইঁদুরের তৈরি গর্ত দিয়ে ঢোকে বন্যার জল চলছে সংস্কারের কাজ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বেগম রোকেয়ার রচনায় লোকজ জীবন অভিজ্ঞতা (তৃতীয় পর্ব) : গীতা দাস কবি সঞ্জীব প্রামাণিক, আবহমান বাংলা কবিতার পথে হেঁটে-যাওয়া এক কবিতাভিক্ষুক : অমৃতাভ দে সৌমেন দেবনাথ-এর ছোটগল্প ‘বিলাসী’ বেগম রোকেয়ার রচনায় লোকজ জীবন অভিজ্ঞতা (দ্বিতীয় পর্ব) : গীতা দাস সাত্যকি হালদার-এর ‘ছোটগল্প’ কাজলদিঘি ডায়েটে আনতে হবে কয়েক টুকরো নারকেল তাহলেই কেল্লাফতে : রিঙ্কি সামন্ত বাতাসে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও বৃহৎ শিল্প গড়ে তুলতে বাঁশগাছের কদর বাড়ছে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বেগম রোকেয়ার রচনায় লোকজ জীবন অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব) : গীতা দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই জগন্নাথদেবের শুভ স্নানযাত্রার আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

সুখীমানুষদের দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ডাইরি (তৃতীয় পর্ব) : নন্দিনী অধিকারী

নন্দিনী অধিকারী / ২২৩ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪

আমাদের ষোলো জনের ছোট্ট দলটি যেন মিনি ভারতবর্ষ। আসাম থেকে তামিলনাড়ু অবধি তার বিস্তার। কুর্গের কফিবাগানের মেয়ে সোনার সঙ্গে রাঁচির মঞ্জু মহানন্দে শপিং করে। কট্টর নিরামিষাশী গুজরাটি মেয়ে শীতল চকলেট আর জ্যাম খেতেও ভয় পায়, “নন্দিনী ইস মে আন্ডা নেহি হ্যায় না?” এই সফরে আমার রুমি পরমা। গতবছর কেনিয়া বেড়াতে গিয়ে আলাপ। আমার ভাঙাচোরা ইংরিজিতে তাপ্পী লাগাতে, ইওরো-ক্রোণা-টাকার গরমিলে পরমাই ভরসা।

দুপুরে দুটি ভাত ডাল খাওয়াতে আমাদের ট্যুর ম্যানেজার বিরাজ নিয়ে যায় ভারতীয় রেস্তোরাঁয়। অনেকটা পথ উজিয়ে। মহারাজা, কৃষ্ণা, রঙ্গোলী এমনি সব নামের হোটেলে পাকিস্তানি, বাংলাদেশি এবং আমাদের কোলকাতার লোক বেশ ব্যবসা করছে।

সেইসব রেস্তোরাঁয় তন্দুরি রুটি, নান আর বাটার চিকেন ভালোবেসে খেতে আসে ওদেশের মানুষ। তন্দুরি রুটি, নান, কুলচার প্রেমে অনেকেই বাড়িতে তন্দুর কিনে ফেলেছে।

আমাদের রাতের খাবার আর ব্রেকফাস্টে হোটেলই ভরসা। সেসব ঢালাও আয়োজনের অধিকাংশ পদ অজানা। খাবারের নামের ট্যাগ লাগানো আছে তাদের ভাষায়। ফলে ভয়ে ভয়ে রাজপ্রাসাদের গুপী বাঘার মত চেনা খাবারই আমরা প্লেটে তুলে নিয়েছি। রঙচঙে বিদেশী পদ বেশিরভাগ বিস্বাদ লেগেছে আমাদের দেশী রসনায়। তবে কেক, পাই, কুকিজ, মুস আর চকলেটে ডুবে ছিলাম ক’দিন। ভালোবাসার ছাঁচে গড়া আলুটিকিয়াও দেখলাম দেশি বিদেশি সবার পছন্দ। গোরা মানুষগুলো আমাদের মতই আলুভক্ত।

সুইডেনের মিড সামার ডে’র উৎসবে নাকি নতুন আলুর পদ রাখতেই হয়। সঙ্গে নানারকম বেরী। জুন মাসে সবথেকে লম্বা গরমের দিনটা পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সুইডিশ পরিবারের সবাই আঞ্চলিক পোশাক পরে একসঙ্গে নাচে গায়। লম্বা লাঠি বা মে-পোলের সঙ্গে লাগানো থাকে নানা রঙের রিবন। সেই রিবন ধরে চলে — সুইডেন মানে আমার এতদিন ধারণা, বড় লোকেদের সুন্দর দেশ। ছোটোবেলার টেনিস হিরো বিয়র্ন বর্গ। মাম্মা মিয়া খ্যাত আব্বা মিউজিকাল ব্যান্ড আর নোবেল প্রাইজ। দেশটার সঙ্গে সামান্য পরিচয়ের পর তার ওড়না ধীরে ধীরে সরল।

বাসে নরওয়ে থেকে সুইডেন যেতে রাস্তার ধারে ধারে দেখছি সবুজের উদার বিস্তৃতি। বাড়িঘর কম। বার্চ আর পাইন গাছেরা তাই সানন্দে বেড়ে উঠেছে। সত্তর শতাংশ অরণ্যে ঢাকা সুইডেন শান্তি ভালোবাসে। বিশ্ব রাজনীতিতে তার নিরপেক্ষতার ঐতিহ্য বেশ পুরনো। ইউরোপে সুইডেনকে একসময় শরণার্থীদের অন্যতম আশ্রয়দাতা বলে মনে করা হত।

রবিবার ছুটির দিনে স্টকহোমের রাস্তায় সেদিন ট্রাফিক জ্যাম। ঘর ছেড়ে সবাই বাইরে। স্টকহোমের নির্মল আকাশে, বন্দরে, জাহাজে, বাড়িঘরে সাজো সাজো রব। যেন রঙ মিলান্তি খেলায় মেতেছে গোটা শহর। সাদা, কালো, খয়েরি ঝুপসি লোমের আদুরে ল্যাপডগরাও বেড়াতে বেরিয়েছে তাদের কেয়ার গিভারের সঙ্গে।

এই দেশগুলোতে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার একটা ট্রেনিং হয়ে যায়। তবে সুইডেন এর এক কাঠি ওপরে। সমস্ত বর্জ্য পদার্থ থেকে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। রিসাইক্লিংয়ের নতুন দরজা খুলে দিয়েছে সুইডেন। নিজের আবর্জনা যথেষ্ট নয় বলে প্রতিবেশী নরওয়ে থেকে তারা আবর্জনা কেনে। আমাদের দেশটা কাছাকাছি হলে সবটাই পাঠিয়ে দিতাম, ফ্রীতে।

স্টকহোমের ভ্রমণসূচীতে আমাদের প্রথম দ্রষ্টব্য ছিল বিখ্যাত বাসা মিউজিয়াম। ১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে ৬৯ মিটার লম্বা ভাইকিংদের যুদ্ধ জাহাজটি স্টকহোম বন্দর থেকে রওনা হয়ে মাঝ সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিল। ৩৩৩ বছর পরে ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে অনেক কসরত করে প্রায় অবিকৃত অবস্থায় সেটি উদ্ধার করা হয়। অপূর্ব সুন্দর সূক্ষ্ম কারুকার্য করা বিশাল জাহাজটি যথেষ্ট দৃষ্টিনন্দন। তার উদ্ধারকার্য ততটাই চমকপ্রদ। এই ঘটনা কোনো মুভির আকার নিয়েছে কিনা জানা নেই। তেমনটি হলে টাইটানিকের থেকে তার গুরুত্ব কম হবে না।

বাসার থেকেও মহৎ, এক অনন্য অনুভূতি আমাদের জন্যে অপেক্ষা করেছিল। স্টকহোমের নোবেল মিউজিয়াম। সমস্ত নোবেল বিজেতাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো সেই মিউজিয়াম। আমরা খুঁজে খুঁজে বার করলাম দালাই লামার চশমা, ইউসুফ মালালার শাল, অমর্ত্য সেনের একটি সংস্কৃত বই, সর্বোপরি রবিঠাকুরের হাতে লেখা একটি নোটবুক। স্টকহোম শহরে সেদিন শাড়িপরা সম্ভবতঃ একমাত্র এই বাঙালিনী ভাবাবেগে তার চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি ।

পরমার উৎসাহে আমরা দুজন গিয়েছিলাম স্টকহোমের ডাউন টাউনের আব্বা মিউজিয়ামে। সেখানে বাজছে আব্বার জনপ্রিয় গান, ফ্যানেদের জন্যে সাজানো নানা স্যুভেনির।

সেই যাত্রায় আমাদের প্রাইভেট ট্যাক্সির চালকটি ছিল সোমালিয়ার। যদিও মুলুক ছেড়ে অনেককাল এখানেই আছে। সংসার পেতেছে। সন্তানরাও বড় হচ্ছে সুইডেনেই। ভদ্রলোক খুব আলাপী। কোভিডের আগে মাত্র দু-তিন দিনের জন্যে ব্যাঙ্গালোর গিয়ে সে উচ্ছ্বসিত। বারবার সেখানকার মানুষের ব্যবহার, ক্লাইমেটের প্রশংসা করছিল। তার ছেলেটিকে ইঞ্জিনীয়ারিং পড়াতে সে ব্যাঙ্গালোরেই পাঠাতে চায়।

গাড়ি চালাতে চালাতেই সে এক অদ্ভুত গল্প বলল। আমেরিকান এক ভদ্রলোক স্টকহোম পৌঁছে তার ট্যাক্সিতেই শহর পরিক্রমা করছিল। এদিক ওদিক ঘুরছিল। একদিন অনুরোধ করল স্টকহোমের উডল্যান্ড কবরখানায় নিয়ে যেতে। সেটি নাকি বড় সুন্দর একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার। ট্যাক্সিচালকটির সেখানে যাবার দুর্ভাগ্য অথবা সৌভাগ্য কখনো হয় নি। সে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে ছিল বেড়াতে এসে কেউ এমন জায়গায় যায়? হোক না সে বিখ্যাত স্থান।

আমেরিকান পর্যটকটি একটু চুপ করে থেকে বলেছিল, ওখানে তার কোনো প্রিয়জন শুয়ে আছে। এ দেশ ছেড়ে চলে যাবার আগে কবরে শায়িত সেই মানুষটিকে একবার শেষ শ্রদ্ধা সে জানিয়ে যাবে।

পৃথিবীর কোন প্রান্তে কার মাটি কেনা থাকে কেউ বলতে পারে না! আমরা মিছেই আমার দেশ, তোমার দেশ বলে ঝগড়া করে মরি! (ক্রমশ)


আপনার মতামত লিখুন :

6 responses to “সুখীমানুষদের দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ডাইরি (তৃতীয় পর্ব) : নন্দিনী অধিকারী”

  1. Monika Nandi says:

    Tomar lekhaar ei kotha ta amar khub mone dhoreche – amra parle sob aborjonar free te pathie debo Sweden e .
    Japan er eto extra money je tara without interest o loan dey. R amra parbo free te aborjona supply korte .

  2. Shrobona Mukherjee says:

    Ki darun lekha gulo tomar

  3. Nandini Adhikari says:

    হা হা একশ শতাংশ সত্যি কথা

  4. Anuj Saha says:

    সুন্দর বর্ণনা, পরবর্তী অধ্যায়ের অপেক্ষায়।

  5. Jaya Dey says:

    খুব খুব খুউব ভালো লাগলো…!!!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন