রবিবার | ২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৩৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন : শান্তা দেবী বাঙালি মুসলমান সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা : ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সিন্ধু সভ্যতার ভূখণ্ড মেলুহা-র সঙ্গে বাণিজ্যে মাগান দেশ : অসিত দাস তদন্তমূলক সাংবাদিকতা — প্রধান বিচারপতির কাছে খোলা চিঠি : দিলীপ মজুমদার হেমন্তকুমার সরকার ও নজরুল-স্মৃতিধন্য মদনমোহন কুটির : ড. দীপাঞ্জন দে রামমোহন — পুবের সূর্য পশ্চিমে অস্তাচলে গেলেও শেষ জীবনে পিছু ছাড়েনি বিতর্ক : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় মাওবাদী দমন না আদিবাসীদের জমি জঙ্গল কর্পোরেট হস্তান্তর : তপন মল্লিক চৌধুরী জৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষে শ্রী অপরা একাদশী মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত পর্যটন মানচিত্রে রামমোহনের জন্মভূমিতে উন্নয়ন না হওয়ায় জনমানসে ক্ষোভ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সংগীতে রবীন্দ্রনাথ : সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর গোয়ার সংস্কৃতিতে সুপারি ও কুলাগার কৃষিব্যবস্থা : অসিত দাস পুলওয়ামা থেকে পহেলগাঁও, চিয়ার লিডার এবং ফানুসের শব : দিলীপ মজুমদার ক্যের-সাংরী কথা : নন্দিনী অধিকারী সুপারি তথা গুবাক থেকেই এসেছে গোয়ার নাম : অসিত দাস রোনাল্ড রসের কাছে জব্দ ম্যালেরিয়া : রিঙ্কি সামন্ত রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ছে, কমবে অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় উনিশের উত্তরাধিকার : শ্যামলী কর কেট উইন্সলেটের অভিনয় দক্ষতা ও চ্যালেঞ্জিং ভূমিকার ৩টি চলচ্চিত্র : কল্পনা পান্ডে হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলা — আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংকট : সুব্রত কুমার দাস সিন্ধুসভ্যতার ভাষা যে ছিল প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার প্রমাণ মেলুহা তথা শস্যভাণ্ডার : অসিত দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (শেষ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস জাতিভিত্তিক জনগণনার বিজেপি রাজনীতি : তপন মল্লিক চৌধুরী গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তালশাঁসের চাহিদা : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (ষষ্ঠ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস ভারতের সংবিধান রচনার নেপথ্য কারিগর ও শিল্পীরা : দিলীপ মজুমদার চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (পঞ্চম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস আলোর পথযাত্রী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (চতুর্থ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস কন্নড় মেল্ল থেকেই সিন্ধুসভ্যতার ভূখণ্ডের প্রাচীন নাম মেলুহা : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ

জমিল সৈয়দ / ১৫৫ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫

ললিতগিরি

সন্ধ্যাবেলায় কটকের হোটেলে বসে বিভিন্ন Car rental agency-তে ফোন করতে লাগলাম। বললাম, কাল সকালে ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি ঘুরতে যাবো, গাড়ি চাই, শুধু দুটি দাবি— টুরিস্ট-ফ্রেণ্ডলি ড্রাইভার ও ভালো এসি।

সবাই বলতে থাকল, ললিতগিরি-রত্নগিরি ঠিক আছে। কিন্তু স্যার উদয়গিরি তো অন্যদিকে, ভুবনেশ্বরে, উদয়গিরি-খণ্ডগিরি!!! … বুঝলাম, এদেরকে নিয়ে আমার চলবে না। আমি ভুবনেশ্বরের উদয়গিরি নয়, যেতে চাইছি জাজপুর জেলার উদয়গিরি।

সবশেষে ফোন করলাম স্ম্রুতি প্রকাশ ঢল সামন্ত-কে। সে প্রথমবারেই বুঝতে পারলো আমি কোথায় যেতে চাই। আমি বললাম, উদয়গিরি কোথায় তা বুঝতে পারছ তো? স্ম্রুতি বললো, হ্যাঁ, জাজপুরে!

পরদিন সকাল পৌনে ৯টায় এসে গেল বাহন। ড্রাইভার দিপু খুব ভদ্র ছেলে। সে অতিরিক্ত উৎসাহী হয়ে আমাদেরকে নিয়ে গেল ছাতিয়াবট মন্দিরে, সেই মন্দির হলো পুরীর জগন্নাথদেবের দ্বিতীয় গৃহ। … কিন্তু সেখান থেকে পত্রপাঠ বিদায় নিয়ে চললাম ললিতগিরি।

১৮৬৯ সালে, জাজপুরের সাব ডিভিশনাল অফিসার চন্দ্রশেখর ব্যানার্জি উদয়গিরি এবং ললিতগিরি পরিদর্শন করেছিলেন এবং এই দুটি স্থানে অপূর্ব বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল জার্নালে তাঁর আবিষ্কারের একটি প্রাণবন্ত বিবরণ দিয়েছিলেন যা প্রত্নতাত্ত্বিক, ইতিহাসবিদ এবং বৌদ্ধ পণ্ডিতদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছিল।

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এখানে পাহাড়ের নিচে ঢিবি এবং ইট-পাথর ও বিভিন্ন স্থাপত্যের টুকরো ছড়িয়ে থাকা ব্যতিত আর কিছুই ছিলো না। জাজপুরে এবার এসডিও হয়ে আসেন মনোমোহন চক্রবর্তী যিনি ১৯০৬ সালে কলকাতার বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ারে রত্নগিরি, ললিতগিরি এবং উদয়গিরির বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ নিয়ে একটি লেখায় পণ্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

১৯২৭-২৮ সালে, কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরের রমাপ্রসাদ চন্দ ললিতগিরিতে এসেছিলেন জাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য কিছু ভাস্কর্য সংগ্রহ করতে।

ওড়িশা হিস্টোরিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি শ্রী বীরেন্দ্রনাথ রায়ের অনুরোধে কলকাতার বিখ্যাত পুরাতত্ত্ববিদ হারাণচন্দ্র চাকলাদার এবং নির্মলকুমার বসু ১৯২৮ সালে অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেন এবং চিত্রসহ একটি সম্পূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

১৯৬০-৬১ সালে, ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ ললিতগিরি এলাকার আশেপাশে ছড়ানো ভাস্কর্যগুলিকে সংগ্রহ করতে উদ্যোগী হয়। তবে ঢিবিটি খনন করা হয়নি। উৎকল ইউনিভার্সিটি ১৯৭৭ সালে পাহাড়ের দক্ষিণ ঢালে একটি ছোট আকারের খননকার্য পরিচালনা করে এবং বিপুল সংখ্যক স্তূপের বেসমেন্টের অবশিষ্টাংশ উন্মোচিত করে।

১৯৮৫ সালে খননের জন্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইণ্ডিয়ার ভুবনেশ্বর সার্কেল দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিল। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে পাহাড়ের বিভিন্ন টিলায় পরপর ছয়টি সেশন জুড়ে খননের ফলে বৌদ্ধ স্থাপনার একটি বিশাল কমপ্লেক্স আবিষ্কার করা হয়েছে যা ওড়িশায় এখন পর্যন্ত বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম বৌদ্ধ সাইট। এটি কটক জেলার মধ্যেই পড়ে।

পাথরে খোদাই করা অসংখ্য শিলালিপি রয়েছে। খুঁজে পাওয়া গেছে পাত্র এবং সিলমোহর — যা খ্রিস্টপূর্বাব্দ তিন থেকে দুই শতাব্দীর সময়কালের সাইটের সাংস্কৃতিক অনুক্রম দেয়। খ্রিস্টীয় ১৪-১৫ শতক পর্যন্ত এই সাইটের উল্লেখযোগ্য চরিত্রটি মৌর্য যুগ থেকে গজপতি রাজাদের যুগ হয়ে মোগলদের উড়িষ্যায় আবির্ভাব পর্যন্ত ঐতিহাসিক কালের পুরো পরিসরকে জুড়ে রয়েছে। এই সাইটে বৌদ্ধ বসতি স্থাপনের সমস্ত চিহ্ন রয়েছে, যেমন উপাসনালয়, বিভিন্ন ভবন বা মঠ কমপ্লেক্স-সহ আবাসিক এলাকা এবং চারটি বিশাল স্তূপ এবং চৈত্য। পাথরে খোদাই করা অসংখ্য শিলালিপি রয়েছে, মৃৎশিল্পের টুকরো, এবং সিল আবিষ্কৃত হয়েছে যা খ্রিস্টপূর্ব ৩য়-২য় শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় ১৪শ-১৫শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী স্থানের সাংস্কৃতিক ক্রম নির্দেশ করে।

খননকার্যের ফলে যা পাওয়া গেছে, তাতে সবচেয়ে বিস্ময়ের জিনিস হলো, বুদ্ধের দেহাবশেষ! এবং বুদ্ধের দাঁত।

ললিতগিরিতে একটি ঢিবি খননের সময় ছোট স্তূপের আকারে নকশা করা তিন সেট কাস্কেট পাওয়া গেছে। এই তিনটির মধ্যে দুটিতে একটি হাড়ের টুকরো আকারে দেহাবশেষ রয়েছে। সংরক্ষণের পদ্ধতি ভারি অদ্ভুত। প্রথমটি স্তূপের আকারে নকশাকৃত খাণ্ডালাইট পাথর দিয়ে তৈরি যা দুটি পাথরের টুকরো দিয়ে তৈরি। দ্বিতীয়টি স্টেটাইট ক্যাসকেটের ভিতরে রৌপ্য পাত্র রয়েছে এবং যখন রৌপ্য পাত্রটি খোলা হয়েছিল, তখন একটি সোনার কাসকেট সংরক্ষিত দেখতে পাওয়া যায় এবং সোনার পাত্রের ভিতরে সোনার ফয়েল দিয়ে বাঁধা পবিত্র নিদর্শন পাওয়া যায়। এটি ভগবান বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে বিশ্বাস করা হয়। [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন