বুধবার | ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:৫১
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী শঙ্খ ঘোষ-এর ‘এখন সব অলীক’ নস্টালজিক অনুভূতি দিয়ে ঘেরা মায়াময় এক জগৎ : অমৃতাভ দে বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কালো গোঁসাইয়ের চিঠি — চিঠিকেন্দ্রীক স্মৃতির পুনর্জীবন : মোঃ তুষার উদ্দিন নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী সরস্বতীর বীণা কচ্ছপী ও গজকচ্ছপ বাঙালি বুদ্ধিজীবী : অসিত দাস মহাকুম্ভ উপলক্ষে এবার যে জনপ্লাবন দেখা যাচ্ছে, তা এককথায় অভূতপূর্ব : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ছোটগল্প ‘আখের রস’ নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সরস্বতী দিদিমণি’ মহাকুম্ভ থেকে মহাদুর্ঘটনা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা খুঁজছে মাটির নিরাপত্তা : রিঙ্কি সামন্ত জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বিদ্যাসাগরের প্রয়াণদিবস ও কলকাতার নিমতলাঘাট : অসিত দাস

অসিত দাস / ৪৬৮ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩

২০১৯-এর প্রথমদিকে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের স্ট্যাচু ভাঙচুরের ঘটনায় সাংস্কৃতিক মহলে বেশ শোরগোল পড়ে যায়। রাজনৈতিক চাপানউতোর চলতে থাকে। তখনই বিদ্যাসাগরকে নিয়ে নতুন করে পড়াশুনা শুরু করি। কলকাতায় বিদ্যাসাগর মারা গিয়েছিলেন বাদুড়বাগানের বাড়িতে। যকৃতের ক্যানসারে তাঁর মৃত্যু হয়।

কিন্তু বাঙালির মনে বদ্ধমূল ধারণা ছিল তিনি জীবনের শেষ আঠারো-কুড়ি বছর সাঁওতাল পরগনার জামতাড়ার কার্মাটাঁড়ে কাটান। দরিদ্র সাঁওতালদের মধ্যে সেবাকার্যে নিজেকে নিয়োজিত করেন। অনেকে তো আর এক পোঁচ রঙ চড়িয়ে তাঁর ওখানেই মৃত্যু ও শেষকৃত্যের কথা জানিয়েছেন। যে বইটি খুব কাজে লাগে তাঁর শেষের দিনগুলি বুঝতে সেটি হল সুবলচন্দ্র মিত্রর ‘Isvarchandra Vidyasagar, a story of his life and work’। এখানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁর মরদেহ নিয়ে শোভাযাত্রার ও নিমতলাঘাটে শেষকৃত্যের বিবরণ আছে। একটু উদ্ধৃতি দিলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না।

এছাড়া মানদা বসুর আত্মজীবনীতেও ১৮৯১-এর ২৯ জুলাই, ভোররাতে নিমতলাঘাটে তাঁর দাহকার্যের বিস্তৃত বিবরণ আছে। এই মানদা বসু ছিলেন পেশায় বারাঙ্গনা। প্রতিদিন প্রত্যূষে নিমতলাঘাটে স্নান করতে যেতেন। কিন্তু বাঙালিবাবুরা বিধবাবিবাহ প্রচলনের জন্যে তাঁর উপরে এতই রুষ্ট ছিলেন যে, তাঁর কলকাতা ত্যাগের কথা ও কার্মাটাঁড়ে আমৃত্যু নির্বাসনের কথা ফলাও করে রটিয়ে দিয়েছিলেন। বিহারীলাল চক্রবর্তী ও বিদ্যাসাগর ভ্রাতা শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন তাঁদের লেখা বিদ্যাসাগরের জীবনীতেও তাঁর নিমতলা শ্মশানঘাটে শেষকৃত্যের কথা লিখে গেছেন।

বিদ্যাসাগরের স্মৃতিফলক কেন নিমতলা মহাশ্মশানে নেই, তা নিয়ে আমার পোস্ট ছিল ফেসবুকেই। ৩ জুন ২০১৯-এ। গঙ্গা ও ভোলগা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে ১৮৯১-এ তাঁর মৃত্যুর পর থেকে। আমিই প্রথম দাবি তুলি স্মৃতিফলকের। কলকাতা পুরসভা, ভারতসভা তথা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আবক্ষমূর্তি ও স্মৃতিফলক বসে ২৯ জুলাই, ২০২০-তে। বিদ্যাসাগরের নিমতলা কানেকশন ছিল আগে থেকেই।

একটু ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায়, এই নিমতলা ঘাট একবার ইংরেজের গোঁয়ার্তুমিতে জায়গাছাড়া হতে চলেছিল ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি। গঙ্গার পাড়ে শবদাহ নিষিদ্ধ করছিল বৃটিশ প্রশাসন। নিমতলাঘাট ও কাশীপুর ঘাটকে পাঠানো হচ্ছিল আদিগঙ্গার তীরে। তখন কলকাতায় বিদ্বজ্জনেরা রুখে দাঁড়ান। বিদ্যাসাগর নিজে উদ্যোগী হলেন হিন্দুর পারলৌকিক ভাবাবেগে যাতে আঘাত না লাগে সেটা দেখতে। তিনি ডিরোজিওর ছাত্র প্রখ্যাত বাগ্মী রামগোপাল ঘোষের বাড়ি গেলেন। রামগোপাল ভিতরের ঘরে ছিলেন। বিদ্যাসাগর তাঁর মায়ে সঙ্গে দেখা করলেন। বললেন সমস্যার কথা। রামগোপালজননী ভেতরে গিয়ে ছেলেকে বললেন শ্মশান-উচ্ছেদ সংকটের কথা। রামগোপাল ঘোষ সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এসে বিদ্যাসাগরকে আশ্বস্ত করলেন, তিনি বক্তৃতা দেবেন। যথানির্দিষ্ট দিনে হলভর্তি সাহেব ও কলকাতার বিদগ্ধ পণ্ডিতদের সামনে রামগোপাল স্মরণীয় বক্তৃতা দিলেন। যুক্তির জাল বিস্তার করে সকলের কাছে প্রমাণ করলেন, হিন্দুদের পুনর্জন্মলাভের বিশ্বাসের মূলে আঘাত করা হবে, শ্মশান গঙ্গাতীর থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হলে। সকলে মানলেন তাঁর যুক্তি। নিমতলা থাকল নিমতলাতেই। উচ্ছেদপ্রক্রিয়া বন্ধ করা হল।

এই ঘটনা সম্ভব হত না, যদি না বিদ্যাসাগর সশরীরে রামগোপালের বাড়িতে হাজির হতেন। রামগোপাল ঘোষের নামে একটি স্মৃতিফলক নিমতলাঘাটের প্রাচীন দেওয়ালে এখনও দেখা যায়। এটা যেন প্রকারান্তরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সমাজসংস্কারক ভূমিকারই স্বীকৃতি। বিদ্যাসাগরের নিজেরও দাহ হয় এই নিমতলা ঘাটে ১৮৯১-এর ২৯ জুলাই। কিন্তু বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের কারও কারও মনে তাঁর কার্মাটাঁড়ের শেষের দিনগুলির কথাই গেড়ে বসে আছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন