বুধবার | ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:০০
Logo
এই মুহূর্তে ::
শিশুশিক্ষা : তারাপদ রায় জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘শোলে’র পঞ্চাশ বছর : সন্দীপন বিশ্বাস বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ইতিহাস পালটাতে চায় : তপন মল্লিক চৌধুরী অশোক সম্পর্কে দু-চারটে কথা যা আমি জানি : অসিত দাস চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস প্রাণগৌরাঙ্গের প্রিয় পঞ্চব্যঞ্জন : রিঙ্কি সামন্ত ‘দ্য স্টোরিটেলার’ — শিল্প এবং বাজারের মধ্যে দ্বন্দ্ব : কল্পনা পান্ডে অপুষ্টি আর দারিদ্রতা ঢাকতে সরকার আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান আওড়ায় : তপন মল্লিক চৌধুরী দোহলী মানে অশোকবৃক্ষ, তা থেকেই দোল ও হোলি : অসিত দাস সিনেমা প্রেমীদের হোলির গান : রিঙ্কি সামন্ত দোলের আগের দিনের চাঁচর নিয়ে চাঁচাছোলা কথা : অসিত দাস খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত সিঙেরকোণ-এর রাধাকান্ত এখনও এখানে ব্যাচেলর : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত বাজারে ভেজাল ওষুধের রমরমা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘কুড়কুড়ে ছাতুতে’ ক্যানসার নিকেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বোলপুর কি সত্যিই বলিপুর : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন অসুখী রাজকন্যাদের লড়াইয়ের গল্প : রিঙ্কি সামন্ত
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বিদ্যাসাগরের প্রয়াণদিবস ও কলকাতার নিমতলাঘাট : অসিত দাস

অসিত দাস / ৪৮২ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩

২০১৯-এর প্রথমদিকে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের স্ট্যাচু ভাঙচুরের ঘটনায় সাংস্কৃতিক মহলে বেশ শোরগোল পড়ে যায়। রাজনৈতিক চাপানউতোর চলতে থাকে। তখনই বিদ্যাসাগরকে নিয়ে নতুন করে পড়াশুনা শুরু করি। কলকাতায় বিদ্যাসাগর মারা গিয়েছিলেন বাদুড়বাগানের বাড়িতে। যকৃতের ক্যানসারে তাঁর মৃত্যু হয়।

কিন্তু বাঙালির মনে বদ্ধমূল ধারণা ছিল তিনি জীবনের শেষ আঠারো-কুড়ি বছর সাঁওতাল পরগনার জামতাড়ার কার্মাটাঁড়ে কাটান। দরিদ্র সাঁওতালদের মধ্যে সেবাকার্যে নিজেকে নিয়োজিত করেন। অনেকে তো আর এক পোঁচ রঙ চড়িয়ে তাঁর ওখানেই মৃত্যু ও শেষকৃত্যের কথা জানিয়েছেন। যে বইটি খুব কাজে লাগে তাঁর শেষের দিনগুলি বুঝতে সেটি হল সুবলচন্দ্র মিত্রর ‘Isvarchandra Vidyasagar, a story of his life and work’। এখানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁর মরদেহ নিয়ে শোভাযাত্রার ও নিমতলাঘাটে শেষকৃত্যের বিবরণ আছে। একটু উদ্ধৃতি দিলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না।

এছাড়া মানদা বসুর আত্মজীবনীতেও ১৮৯১-এর ২৯ জুলাই, ভোররাতে নিমতলাঘাটে তাঁর দাহকার্যের বিস্তৃত বিবরণ আছে। এই মানদা বসু ছিলেন পেশায় বারাঙ্গনা। প্রতিদিন প্রত্যূষে নিমতলাঘাটে স্নান করতে যেতেন। কিন্তু বাঙালিবাবুরা বিধবাবিবাহ প্রচলনের জন্যে তাঁর উপরে এতই রুষ্ট ছিলেন যে, তাঁর কলকাতা ত্যাগের কথা ও কার্মাটাঁড়ে আমৃত্যু নির্বাসনের কথা ফলাও করে রটিয়ে দিয়েছিলেন। বিহারীলাল চক্রবর্তী ও বিদ্যাসাগর ভ্রাতা শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন তাঁদের লেখা বিদ্যাসাগরের জীবনীতেও তাঁর নিমতলা শ্মশানঘাটে শেষকৃত্যের কথা লিখে গেছেন।

বিদ্যাসাগরের স্মৃতিফলক কেন নিমতলা মহাশ্মশানে নেই, তা নিয়ে আমার পোস্ট ছিল ফেসবুকেই। ৩ জুন ২০১৯-এ। গঙ্গা ও ভোলগা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে ১৮৯১-এ তাঁর মৃত্যুর পর থেকে। আমিই প্রথম দাবি তুলি স্মৃতিফলকের। কলকাতা পুরসভা, ভারতসভা তথা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আবক্ষমূর্তি ও স্মৃতিফলক বসে ২৯ জুলাই, ২০২০-তে। বিদ্যাসাগরের নিমতলা কানেকশন ছিল আগে থেকেই।

একটু ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায়, এই নিমতলা ঘাট একবার ইংরেজের গোঁয়ার্তুমিতে জায়গাছাড়া হতে চলেছিল ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি। গঙ্গার পাড়ে শবদাহ নিষিদ্ধ করছিল বৃটিশ প্রশাসন। নিমতলাঘাট ও কাশীপুর ঘাটকে পাঠানো হচ্ছিল আদিগঙ্গার তীরে। তখন কলকাতায় বিদ্বজ্জনেরা রুখে দাঁড়ান। বিদ্যাসাগর নিজে উদ্যোগী হলেন হিন্দুর পারলৌকিক ভাবাবেগে যাতে আঘাত না লাগে সেটা দেখতে। তিনি ডিরোজিওর ছাত্র প্রখ্যাত বাগ্মী রামগোপাল ঘোষের বাড়ি গেলেন। রামগোপাল ভিতরের ঘরে ছিলেন। বিদ্যাসাগর তাঁর মায়ে সঙ্গে দেখা করলেন। বললেন সমস্যার কথা। রামগোপালজননী ভেতরে গিয়ে ছেলেকে বললেন শ্মশান-উচ্ছেদ সংকটের কথা। রামগোপাল ঘোষ সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এসে বিদ্যাসাগরকে আশ্বস্ত করলেন, তিনি বক্তৃতা দেবেন। যথানির্দিষ্ট দিনে হলভর্তি সাহেব ও কলকাতার বিদগ্ধ পণ্ডিতদের সামনে রামগোপাল স্মরণীয় বক্তৃতা দিলেন। যুক্তির জাল বিস্তার করে সকলের কাছে প্রমাণ করলেন, হিন্দুদের পুনর্জন্মলাভের বিশ্বাসের মূলে আঘাত করা হবে, শ্মশান গঙ্গাতীর থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হলে। সকলে মানলেন তাঁর যুক্তি। নিমতলা থাকল নিমতলাতেই। উচ্ছেদপ্রক্রিয়া বন্ধ করা হল।

এই ঘটনা সম্ভব হত না, যদি না বিদ্যাসাগর সশরীরে রামগোপালের বাড়িতে হাজির হতেন। রামগোপাল ঘোষের নামে একটি স্মৃতিফলক নিমতলাঘাটের প্রাচীন দেওয়ালে এখনও দেখা যায়। এটা যেন প্রকারান্তরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সমাজসংস্কারক ভূমিকারই স্বীকৃতি। বিদ্যাসাগরের নিজেরও দাহ হয় এই নিমতলা ঘাটে ১৮৯১-এর ২৯ জুলাই। কিন্তু বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের কারও কারও মনে তাঁর কার্মাটাঁড়ের শেষের দিনগুলির কথাই গেড়ে বসে আছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন