শনিবার | ২২শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:২৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলাভাষার নেচিতে ‘ময়ান’ ও ‘শাহিস্নান’-এর হিড়িক : অসিত দাস একটু একটু করে মারা যাচ্ছে বাংলা ভাষা : দিলীপ মজুমদার রাজ্যে এই প্রথম হিমঘরগুলিতে প্রান্তিক চাষিরা ৩০ শতাংশ আলু রাখতে পারবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সামরিক জান্তার চার বছর — মিয়ানমার পরিস্থিতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ১৯ ফেব্রুয়ারি ও স্বামীজির স্মৃতিবিজড়িত আলমবাজার মঠ (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চাষিদের বাঁচাতে রাজ্যের সরাসরি ফসল কেনার দাওয়াই গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার মোদীর মিডিয়া ব্যস্ত কুম্ভের মৃত্যুমিছিল ঢাকতে : তপন মল্লিক চৌধুরী রেডিওকে আরো শ্রুতিমধুর করে তুলেছিলো আমিন সায়ানী : রিঙ্কি সামন্ত গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি চুঁচুড়ার সুগন্ধ্যায় : অসিত দাস প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি — মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : সুমিত ভট্টাচার্য মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়, মিথ এবং ডিকনস্ট্রাকশন : অসিত দাস মহাকুম্ভ ও কয়েকটি প্রশ্ন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব কাশীকান্ত মৈত্রের জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন : ড. দীপাঞ্জন দে অমৃতের সন্ধানে মাঘী পূর্ণিমায় শাহীস্নান : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

দন্তরুচি কৌমুদী : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ১২৫২ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২

“দাঁত নাকি মানুষের চেয়েও অপরাধপ্রবণ। সারা জীবনে অনেক পাপ কাজ করে। পাঁঠা চিবোয়, মুরগির ঠ্যাং ভাঙে, মাছের জীবন নাশ করে। দাঁতের সব কাজই হল নাশকতামূলক। একটাও গঠনমূলক কাজের দৃষ্টান্ত নেই। সারা জীবন খিঁচিয়ে গেল, চিবিয়ে গেল, কামড়ে গেল। পাপের বেতন কী? মৃত্যু। তাই মানুষের আগেই তার দাঁত পড়ে”।

বড়মামা সিরিজ-এ এমনটাই লিখেছেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। কথাগুলি নেহাতই রসিকতা হলেও এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে যুগ যুগান্তর ধরে সেই উপদেশবাণী যা গুরুজনেরা শুনিয়ে আসছেন — ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝা উচিৎ।’

দাঁতের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু এ উপদেশ মান্য করি ক’জন! ফলস্বরূপ দাঁতের সমস্যার শিকার হয় কমবেশি সকলেই। সুস্থ, সুন্দর দাঁত কেবল সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, সুস্থভাবে বেঁচে থাকতেও সাহায্য করে। এমনকি বেশ কিছু জটিল রোগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ।

ছোটোবেলায় মা বলতো, ‘ভালো করে ব্রাশ কর নাহলে দাঁতে পোকা হবে।’ আসলে দাঁতে পোকা বলে কোন বস্তু নেই যেটা আছে সেটা হলো এক দুষ্টু জীবাণু। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বিশেষত মিষ্টি, চকলেট, কেক, পেস্ট্রি ইত্যাদি খাবার দাঁতের সঙ্গে সেঁটে থাকে, যা আমরা সবসময় বুঝতেই পারি না। এই জাতীয় চটচটে খাবার জীবাণুর সঙ্গে মিশে যায়। মুখের ভেতর তৈরি হয় একপ্রকার অ্যাসিড যা দাঁতের এনামেলকে (উপরের স্তর) ক্ষতিগ্রস্ত করে। এনামেলের ক্ষয়ের পর দাঁতে গর্ত তৈরি হয়। এই গর্ত গভীর হয়ে পাল্পে (দাঁতের তৃতীয় স্তর) পৌঁছায়। সেখানে জীবাণুর হানা হলেই শুরু হয় দাঁতের যন্ত্রণা। তাই ‘রসগোল্লা দিবস’-এ রস চিপে দুটি তুলতুলে রসগোল্লা খাবার পর মুখ ধুতে ভুলবেন না।

অতীতে দাঁতের কোন সমস্যা নিয়ে রোগী চিকিৎসকের কাছে এলে প্রথমে তা ওষুধ দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হতো। কিন্তু তা না সম্ভব হলে দাঁত তুলে ফেলাই ছিল একমাত্র পথ। আর সেই শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য দেওয়া হতো কৃত্রিম দাঁত। এই কৃত্রিম দাঁত নিয়ে ভোগান্তির একটা গল্প বলি।

আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন সারা জীবন ভুগেছেন ভয়ংকর দাঁতের সমস্যায়। ২২ বছর বয়স থেকে তাঁর দাঁত পড়া শুরু হয়। তিনি যখন প্রেসিডেন্ট হন তখন তাঁর মাত্র একটি দাঁত অবশিষ্ট ছিলো। তার জীবদ্দশায়, সেগুলি প্রতিস্থাপন করার জন্য কমপক্ষে চার সেট দাঁত তৈরি হয়েছিল। তাঁর লেখা ডায়েরীতে নিয়মিত দাঁতে ব্যথা এবং দাঁত হারানোর মতো সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জর্জ ওয়াশিংটন মনে করতেন আখরোট ফাটানোর জন্য তার দাঁতের ক্ষতি হয়েছে।

কিন্তু আধুনিক ইতিহাসবিদরা মনে করেন যে মার্কারি (আই) ক্লোরাইড (ক্যালোমেল), যা ওয়াশিংটনকে গুটিবসন্তের চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়েছিল, সম্ভবত সেটি তাঁর দাঁতের ক্ষতির জন্য অবদান রেখেছিল।

মধ্যযুগ থেকে পশ্চিমা বিশ্বের দরিদ্ররা অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে দাঁত বিক্রি করে আসছিল এবং এই দাঁতগুলো নকল দাঁত তৈরির জন্য ব্যবহার করা হতো। ১৭৮৪ সালের মে মাসে, ওয়াশিংটন বেশ কিছু অজ্ঞাতনামা ক্রীতদাসকে ১২২ শিলিং প্রদান করে মোট নয়টি দাঁত কিনেছিলেন। কিন্ত ক্রীতদাসদের কাছ থেকে পাওয়া দাঁত ব্যবহার করা তার কাছে অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এরপর তিনি দন্তচিকিৎসক জন গ্রিনউড দ্বারা তৈরি হাতির দাঁত, পিতল এবং সোনার তৈরি বিশেষ দাঁতের সেট পরে তিনি অফিসিয়াল শপথ নেন। শোনা যায় এই নকল দাঁত কাজ না করায় শেষে এলম গাছের কাঠ দিয়ে ‘নকল দাঁত’ তৈরী করে তাঁর মুখে লাগানো হয়। যদিও তিনি দাঁত সংক্রান্ত কোনো সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি, মারা গিয়েছিলেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে।

কথায় বলে, ‘দাঁত গেল তো আঁত গেল’ অর্থাৎ ফোকলা দাঁতে উদরপূর্তির সুখ নেই। বর্তমানে নকল দাঁত কিন্ত আসলের চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে। বিগত দুই দশকে দাঁত মাড়ি ও মুখগহ্বরের চিকিৎসায় আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে। এমনকি দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। সমস্যা হলেই দন্ত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অতি অবশ্যই নিন।

আজ শিশুদিবস। ছোট বাচ্চাদের দুধের দাঁত পরে গেলে আমরা বড়রা হাল্কা চালে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করি, ‘তোর দাঁত কই, ইঁদুরে নিয়ে পালিয়ে গেছে?…’ অতি সাধারণ এই প্রশ্ন শিশুমনকে কতটা বিদ্ধ করে তা আমরা বুঝে উঠতেই পারি না। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্লিনিকাল পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সামনের পাটির দুধের দাঁত পড়ে যাওয়ার ঘটনা রক্তাক্ত করে শিশু মনকে।

ছ-বছর বয়স থেকে দুধের দাঁত পড়তে শুরু করে কিন্তু নানা কারণে সময়ের আগেও পড়ে যায় দুধের দাঁত। সেই সময় শিশুরা প্রবল মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে যায়। তারা দেখে বন্ধুদের দাঁত আছে, তাদের দাঁত নেই। গত দুবছর কোভিডের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় এই সমস্যা আরো বেড়ে গেছে। ওই বয়সে দাঁত পড়ে যাওয়াকে নিয়ে মজা করলে ছোট্টগুলো সত্যি সত্যি ধরে নেয় যে তাকে বোধহয় সারা জীবনই কুরূপ হয়ে কাটাতে হবে। এর ফলে মনের উপর চাপ বাড়তে থাকে।

অ্যাডোলেসেন্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ছোটদের দাঁত নিয়েই রসিকতা কিন্তু আদতে ‘বডি সেমিং’ যা বড়রা বোঝেই না এবং এক্ষেত্রে বেশিরভাগ দায়ী অভিভাবকের উদাসীনতা। বড়দের বোঝা উচিত, ছোটবেলার মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরে তার ছাপ পড়বে ভবিষ্যতের পথে। পরিবার তো বটেই শিক্ষকদেরও এই নিয়ে যত্নবান হওয়া জরুরি।

যাইহোক, চিবানো ছাড়াও সুখী গৃহকোণের প্রথম টেকনিকই হলো স্বামী বা স্ত্রীর মুখে মুখে তর্ক না করে ‘দাঁতে দাঁত চেপে’ নিজের রাগকে সংযত রাখা। কেননা কথা আর রাগ হলো কুরুক্ষেত্রের মশলা। তবে হ্যাঁ, অষ্টপ্রহর রাগ চিবিয়ে চিবিয়ে রাখলেও, মাঝে মাঝে টুথপিক দিয়ে দাঁত খুঁচিয়ে টুকরো টাকরা ফেলে দেওয়া দরকার নয়তো….।

Source: Various sources have been referred to for information.


আপনার মতামত লিখুন :

5 responses to “দন্তরুচি কৌমুদী : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Pallab dey says:

    অসাধারণ তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট👏👏👏

  2. Soumen Roy Chowdhury says:

    দন্ত বিষয়ক এত তথ্য অজানা ছিলো.. আলোকপাত করবার জন্য ধন্যবাদ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন