শনিবার | ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৩৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (তৃতীয় পর্ব) : অভিজিৎ রায় নানা পরিচয়ে গৌরী আইয়ুব : গোলাম মুরশিদ হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (দ্বিতীয় পর্ব) : অভিজিৎ রায় কেন বারবার মণিপুরে আগুন জ্বলে আর রক্ত ঝড়ে : তপন মল্লিক চৌধুরী শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (শেষ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (প্রথম পর্ব) : অভিজিৎ রায় শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (ষষ্ঠ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (পঞ্চম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ? : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (চতুর্থ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার শতবর্ষে সঙ্গীতের ‘জাদুকর’ সলিল চৌধুরী : সন্দীপন বিশ্বাস সাজানো বাগান, প্রায় পঞ্চাশ : অমর মিত্র শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (তৃতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (একাদশ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার খাদ্যদ্রব্যের লাগামছাড়া দামে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের : তপন মল্লিক চৌধুরী মিয়ানমারের সীমান্ত ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (দ্বিতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (দশম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বুদ্ধদেব গুহ-র ছোটগল্প ‘পহেলি পেয়ার’ ‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (প্রথম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (নবম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘তোমার নাম’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (অষ্টম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘হাওয়া-বদল’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার প্রবোধিনী একাদশী ও হলদিয়ায় ইসকন মন্দির : রিঙ্কি সামন্ত সেনিয়া-মাইহার ঘরানার শুদ্ধতম প্রতিনিধি অন্নপূর্ণা খাঁ : আবদুশ শাকুর
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

দন্তরুচি কৌমুদী : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ১১১১ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২

“দাঁত নাকি মানুষের চেয়েও অপরাধপ্রবণ। সারা জীবনে অনেক পাপ কাজ করে। পাঁঠা চিবোয়, মুরগির ঠ্যাং ভাঙে, মাছের জীবন নাশ করে। দাঁতের সব কাজই হল নাশকতামূলক। একটাও গঠনমূলক কাজের দৃষ্টান্ত নেই। সারা জীবন খিঁচিয়ে গেল, চিবিয়ে গেল, কামড়ে গেল। পাপের বেতন কী? মৃত্যু। তাই মানুষের আগেই তার দাঁত পড়ে”।

বড়মামা সিরিজ-এ এমনটাই লিখেছেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। কথাগুলি নেহাতই রসিকতা হলেও এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে যুগ যুগান্তর ধরে সেই উপদেশবাণী যা গুরুজনেরা শুনিয়ে আসছেন — ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝা উচিৎ।’

দাঁতের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু এ উপদেশ মান্য করি ক’জন! ফলস্বরূপ দাঁতের সমস্যার শিকার হয় কমবেশি সকলেই। সুস্থ, সুন্দর দাঁত কেবল সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, সুস্থভাবে বেঁচে থাকতেও সাহায্য করে। এমনকি বেশ কিছু জটিল রোগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ।

ছোটোবেলায় মা বলতো, ‘ভালো করে ব্রাশ কর নাহলে দাঁতে পোকা হবে।’ আসলে দাঁতে পোকা বলে কোন বস্তু নেই যেটা আছে সেটা হলো এক দুষ্টু জীবাণু। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বিশেষত মিষ্টি, চকলেট, কেক, পেস্ট্রি ইত্যাদি খাবার দাঁতের সঙ্গে সেঁটে থাকে, যা আমরা সবসময় বুঝতেই পারি না। এই জাতীয় চটচটে খাবার জীবাণুর সঙ্গে মিশে যায়। মুখের ভেতর তৈরি হয় একপ্রকার অ্যাসিড যা দাঁতের এনামেলকে (উপরের স্তর) ক্ষতিগ্রস্ত করে। এনামেলের ক্ষয়ের পর দাঁতে গর্ত তৈরি হয়। এই গর্ত গভীর হয়ে পাল্পে (দাঁতের তৃতীয় স্তর) পৌঁছায়। সেখানে জীবাণুর হানা হলেই শুরু হয় দাঁতের যন্ত্রণা। তাই ‘রসগোল্লা দিবস’-এ রস চিপে দুটি তুলতুলে রসগোল্লা খাবার পর মুখ ধুতে ভুলবেন না।

অতীতে দাঁতের কোন সমস্যা নিয়ে রোগী চিকিৎসকের কাছে এলে প্রথমে তা ওষুধ দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হতো। কিন্তু তা না সম্ভব হলে দাঁত তুলে ফেলাই ছিল একমাত্র পথ। আর সেই শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য দেওয়া হতো কৃত্রিম দাঁত। এই কৃত্রিম দাঁত নিয়ে ভোগান্তির একটা গল্প বলি।

আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন সারা জীবন ভুগেছেন ভয়ংকর দাঁতের সমস্যায়। ২২ বছর বয়স থেকে তাঁর দাঁত পড়া শুরু হয়। তিনি যখন প্রেসিডেন্ট হন তখন তাঁর মাত্র একটি দাঁত অবশিষ্ট ছিলো। তার জীবদ্দশায়, সেগুলি প্রতিস্থাপন করার জন্য কমপক্ষে চার সেট দাঁত তৈরি হয়েছিল। তাঁর লেখা ডায়েরীতে নিয়মিত দাঁতে ব্যথা এবং দাঁত হারানোর মতো সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জর্জ ওয়াশিংটন মনে করতেন আখরোট ফাটানোর জন্য তার দাঁতের ক্ষতি হয়েছে।

কিন্তু আধুনিক ইতিহাসবিদরা মনে করেন যে মার্কারি (আই) ক্লোরাইড (ক্যালোমেল), যা ওয়াশিংটনকে গুটিবসন্তের চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়েছিল, সম্ভবত সেটি তাঁর দাঁতের ক্ষতির জন্য অবদান রেখেছিল।

মধ্যযুগ থেকে পশ্চিমা বিশ্বের দরিদ্ররা অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে দাঁত বিক্রি করে আসছিল এবং এই দাঁতগুলো নকল দাঁত তৈরির জন্য ব্যবহার করা হতো। ১৭৮৪ সালের মে মাসে, ওয়াশিংটন বেশ কিছু অজ্ঞাতনামা ক্রীতদাসকে ১২২ শিলিং প্রদান করে মোট নয়টি দাঁত কিনেছিলেন। কিন্ত ক্রীতদাসদের কাছ থেকে পাওয়া দাঁত ব্যবহার করা তার কাছে অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এরপর তিনি দন্তচিকিৎসক জন গ্রিনউড দ্বারা তৈরি হাতির দাঁত, পিতল এবং সোনার তৈরি বিশেষ দাঁতের সেট পরে তিনি অফিসিয়াল শপথ নেন। শোনা যায় এই নকল দাঁত কাজ না করায় শেষে এলম গাছের কাঠ দিয়ে ‘নকল দাঁত’ তৈরী করে তাঁর মুখে লাগানো হয়। যদিও তিনি দাঁত সংক্রান্ত কোনো সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি, মারা গিয়েছিলেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে।

কথায় বলে, ‘দাঁত গেল তো আঁত গেল’ অর্থাৎ ফোকলা দাঁতে উদরপূর্তির সুখ নেই। বর্তমানে নকল দাঁত কিন্ত আসলের চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে। বিগত দুই দশকে দাঁত মাড়ি ও মুখগহ্বরের চিকিৎসায় আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে। এমনকি দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। সমস্যা হলেই দন্ত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অতি অবশ্যই নিন।

আজ শিশুদিবস। ছোট বাচ্চাদের দুধের দাঁত পরে গেলে আমরা বড়রা হাল্কা চালে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করি, ‘তোর দাঁত কই, ইঁদুরে নিয়ে পালিয়ে গেছে?…’ অতি সাধারণ এই প্রশ্ন শিশুমনকে কতটা বিদ্ধ করে তা আমরা বুঝে উঠতেই পারি না। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্লিনিকাল পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সামনের পাটির দুধের দাঁত পড়ে যাওয়ার ঘটনা রক্তাক্ত করে শিশু মনকে।

ছ-বছর বয়স থেকে দুধের দাঁত পড়তে শুরু করে কিন্তু নানা কারণে সময়ের আগেও পড়ে যায় দুধের দাঁত। সেই সময় শিশুরা প্রবল মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে যায়। তারা দেখে বন্ধুদের দাঁত আছে, তাদের দাঁত নেই। গত দুবছর কোভিডের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় এই সমস্যা আরো বেড়ে গেছে। ওই বয়সে দাঁত পড়ে যাওয়াকে নিয়ে মজা করলে ছোট্টগুলো সত্যি সত্যি ধরে নেয় যে তাকে বোধহয় সারা জীবনই কুরূপ হয়ে কাটাতে হবে। এর ফলে মনের উপর চাপ বাড়তে থাকে।

অ্যাডোলেসেন্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ছোটদের দাঁত নিয়েই রসিকতা কিন্তু আদতে ‘বডি সেমিং’ যা বড়রা বোঝেই না এবং এক্ষেত্রে বেশিরভাগ দায়ী অভিভাবকের উদাসীনতা। বড়দের বোঝা উচিত, ছোটবেলার মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরে তার ছাপ পড়বে ভবিষ্যতের পথে। পরিবার তো বটেই শিক্ষকদেরও এই নিয়ে যত্নবান হওয়া জরুরি।

যাইহোক, চিবানো ছাড়াও সুখী গৃহকোণের প্রথম টেকনিকই হলো স্বামী বা স্ত্রীর মুখে মুখে তর্ক না করে ‘দাঁতে দাঁত চেপে’ নিজের রাগকে সংযত রাখা। কেননা কথা আর রাগ হলো কুরুক্ষেত্রের মশলা। তবে হ্যাঁ, অষ্টপ্রহর রাগ চিবিয়ে চিবিয়ে রাখলেও, মাঝে মাঝে টুথপিক দিয়ে দাঁত খুঁচিয়ে টুকরো টাকরা ফেলে দেওয়া দরকার নয়তো….।

Source: Various sources have been referred to for information.


আপনার মতামত লিখুন :

5 responses to “দন্তরুচি কৌমুদী : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Pallab dey says:

    অসাধারণ তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট👏👏👏

  2. Soumen Roy Chowdhury says:

    দন্ত বিষয়ক এত তথ্য অজানা ছিলো.. আলোকপাত করবার জন্য ধন্যবাদ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন