বুধবার | ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:০৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত বাজারে ভেজাল ওষুধের রমরমা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘কুড়কুড়ে ছাতুতে’ ক্যানসার নিকেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বোলপুর কি সত্যিই বলিপুর : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন অসুখী রাজকন্যাদের লড়াইয়ের গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বিশ্ব থেকে ক্যানসারকে নির্মূল করতে গবেষণায় একের পর এক সাফল্য রূপায়ণের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কল্পনার ডানায় বাস্তবের রূপকথা : পুরুষোত্তম সিংহ হাইকোর্টের রায়ে ভাবাদিঘীতে তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরুর নির্দেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমছে, সঙ্কটে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল : তপন মল্লিক চৌধুরী ফল্গু নদীর তীরে একটি ছোট শহর এই বুদ্ধগয়া : বিজয় চৌধুরী শাহিস্নান নয়, আদতে কথাটি ছিল সহিস্নান : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ভূতের গল্পো ‘হোমস্টে’ রহস্য ঘেরা বলিউডের নক্ষত্রপতন : রিঙ্কি সামন্ত বাঁকুড়ার দু-দিন ব্যাপী দেশীয় বীজ মেলায় দেশজ বীজের অভূতপূর্ব সম্ভার পেজফোর-এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ২০২৫ এত গুণী একজন মানুষ কত আটপৌরে : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সরস্বতীর উৎস সন্ধানে : অসিত দাস ‘সব মরণ নয় সমান’ সৃজনশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে যথোচিত মর্যাদায় স্মরণ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সিপিএম-এর রাজ্য সম্মেলন, তরুণ প্রজন্মের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে খামতি রয়েছে দলে : তপন মল্লিক চৌধুরী প্রথম পাঠ — মার্কসবাদের বিশ্বভ্রমণ : সন্দীপন চক্রবর্তী বঙ্গবিভূষণ কাশীকান্ত মৈত্র স্মারকগ্রন্থ : ড. দীপাঞ্জন দে ‘খানাকুল বাঁচাও’ দাবিতে সরব খানাকুল-সহ গোটা আরামবাগের মানুষ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় হরি হরের কথা এবং বীরভূমের রায়পুরে বুড়োনাথের বিয়ে : রিঙ্কি সামন্ত ত্র্যম্বকেশ্বর দর্শনে মোক্ষলাভ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কুম্ভমেলায় ধর্মীয় অভিজ্ঞতার থেকে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেশি : তপন মল্লিক চৌধুরী রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন ৭ লক্ষ টন ছাড়াবে, কমবে অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘হিড়িক’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি অধরা, আমার আলোকপাত : অসিত দাস বিজয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-র ছোটগল্প ‘শিকড়ের টান’
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ৪২৯ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

‘দক্ষিণী’। বেহালা-ঠাকুরপুকুর অঞ্চলের সাহিত্যসংস্কৃতি চর্চার একটি কেন্দ্র। সাহিত্যের নামে তাঁরা নিছক বিনোদনকে আসর জমাতে দেন না। হালকা বিনোদনের এই প্রমত্ত যুগেও ‘দক্ষিণী’তে চলে গুরুগম্ভীর আলোচনার আসর। বক্তার বক্তৃতার পরে শুরু হয় প্রশ্নোত্তরের পালা। এলাকার গুণীজনকে জানান সংবর্ধনা জানান তাঁরা। এই বছর সংবর্ধনা জানানোর জন্য তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন সাইকেলদাদাকে। এই সাইকেলদাদা আবার ‘দুর্বার কলম’ নামে একটি পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশ করে চলেছেন প্রায় দুই যুগ। নিরবচ্ছিন্ন ভাবে। গত ১০ নভেম্বর সেই সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু বারিক, স্বপন মুখোপাধ্যায়, অসিত ঘোষ, সুকল্যাণ মজুমদার, অন্নপূর্ণা ঘোষ, সমরেন্দ্র মণ্ডল, প্রভাত রায়, সুতপা আচার্য প্রমুখেরা। বাৎসরিক সারস্বত সম্মাননা প্রদানের সঙ্গে ছিল স্মারক বক্তৃতা ‘বাংলা সংবাদপত্রে সাহিত্য’। সেই স্মারক বক্তৃতা দেন সাংবাদিক স্নেহাশিস সুর।

কিন্তু সাইকেলদাদাটি কে ?

সাইকেলদাদা হলেন সরকারপুলের অধিবাসী অমর নস্কর। এই সাইকেলে তিনি চষে বেড়ান বজবজ থেকে বেহালা, ঠাকুরপুকুর থেকে নিউ আলিপুর। পত্রিকা প্রকাশ করা তাঁর নেশা, বইমেলা সংগঠিত করা তাঁর নেশা, মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করা তাঁর নেশা। পেশা? না, তেমন কিছু নেই। তাই সংসার না চলতে চলতে কোনরকম ভাবে চলে। স্ত্রীটি সর্বংসহা। চালিয়ে নেন। দুটি ছেলে। দুই বউমা। এখন ছেলেরা চাকরি-বাকরি করে। অল্প একটু হাল ফিরেছে সংসারের। বিশেষ করে ছোটবউমার বাস্তববুদ্ধি আর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব সামাল দিচ্ছে সব।

আরও ভালো চলত ‘দুর্বার কলম’। পত্রিকা চালাতে গেলে একটু ধরাধরি করতে হয়। ক্ষমতার বৃত্তে থাকেন যাঁরা, তাঁদের একটু তেল দিতে হয়। বত্রিশ পাটি বিকশিত করে হাঁ হুঁ করতে হয়। নস্করবাবু তা করবেন না। আপোষ তাঁর স্বভাবে নেই। তিনি আজন্ম প্রতিষ্ঠানবিরোধী। সেই নজরুল ইসলামের ‘দেখিয়া শুনিয়া খেপিয়া গিয়াছি তাই যাহা আসে কই মুখে’। বিভিন্ন দলের মেজো-সেজো-ছোট নেতারা নানা সময় ধমকেছেন তাঁকে। থ্রেট কালচার। যা সব সময়েই ছিল নানান বেশে। বেশ কিছু বিশেষ সংখ্যা করেছেন তিনি। সেগুলির বিক্রয়যোগ্যতা আছে। সেদিকে সম্পাদকের হুঁশ নেই কোন। পতিরামের স্টলে সব বই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। পয়সা আনবার তাগিদ নেই।

সব সময় প্রাণের হিল্লোলে মশগুল। সব সময়ে মুখে হাসি। সব সময়ে এগিয়ে চলা। কথা বলতে ভালোবাসা। সাইকেলের প্যাডেলে চাপ। বজবজ থেকে বেহালা। সেই মানুষটার গলার স্বর হঠাৎ বন্ধ হয়ে যেতে লাগল। এ বছরের গোড়ার দিকে। আমার একটু সন্দেহ হল। দুর্গাদার কথা মনে করে। কবি দুর্গাদাস সরকার। তাঁরও এ রকম হয়েছিল। তারপর ধরা পড়ল ক্যানসার। আমার সন্দেহ সত্য হয়ে গেল। হ্যাঁ, ক্যানসারই। অমর নস্করের গলায় ক্যানসার হয়েছে। বেশ গুরুতর স্টেজ।

ক্যানসার। এই চারটি শব্দ শুনলে মানুষ মরার আগেই মরতে শুরু করে। সাপের কামড়ের মতো। শরীরে বিষের প্রতিক্রিয়া শুরু হবার আগেই প্রবল আতঙ্কে মানুষ এগিয়ে যায় মৃত্যুর দিকে। নস্করবাবু বিন্দাস। ‘সব ঠিক হয়ে যাবে’। মুম্বাই নিয়ে যাবার জেদ করলাম আমরা। সায় দিল ছেলে আর ছেলের বউ। সেখানে একের পর এক কেমো দেওয়া হল। মুম্বাই থেকে পত্রিকার কাজ করে যাচ্ছেন। ছড়া লিখছেন। অভিজ্ঞতার কথা লিখছেন। মাঝে মাঝে বেরিয়ে পড়ে দেখে নিচ্ছেন মুম্বাই-এর এদিক-ওদিক।

মৃত্যুদূত সামনে এসে দাঁড়িয়েছে বলে আমি ভয়ে মরছি। আর তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন মৃত্যুদূতের দিকে। ফিরে এলেন কলকাতায়। প্রায় চার মাস বাদে। চিত্তরঞ্জনে রেডিয়েশন হল। ১৪টা কেমো, ৩০ টা রেডিয়েশন। ভাবা যায়! শেষ হতেই আবার সাইকেল নিয়ে টো টো। আমার মেয়ে একদিন তাঁকে বকল খুব। ঘুরে বেড়াবার জন্য। আমার স্ত্রী বলল, এসবেই মন ভালো থাকবে তাঁর।

এই এসে গেল মনের কথা। মনে পড়ে গেল বিবেকানন্দের কথা — মানব মনের শক্তির কোন সীমা নেই। সান্দ্রা লেভিরা তো ক্যানসার আক্রান্তদের মনের শক্তি নিয়ে গবেষণা করে বলেছেন যার মনের শক্তি আছে, সে জয় করতে পারে ক্যানসারকে।

অমর নস্কর জয় করেছেন ক্যানসার। স্তব্ধ করে দিতে পেরছেন মৃত্যুর বিকৃত মুখব্যাদানকে। আর সেই ক্যানসারজয়ীকে সম্মানিত করল ‘দক্ষিণী’। স্বপনবাবু, অসিতবাবু, শুভেন্দুবাবুদের ধন্যবাদ।


আপনার মতামত লিখুন :

5 responses to “‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার”

  1. Swapan Mukhopadhyay says:

    দিলীপদার অসাধারণ বিশ্লেষণাত্মক বাস্তব ও সত্য প্রতিবেদন সাংবাদিক ও ছড়াকার, অদম্য প্রাণশক্তির অধিকারী অমর নস্করকে সাধারণ মানুষের সামনে মেলে ধরতে সহায়ক হয়েছে। দক্ষিণী সাহিত্য শিল্প সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের সারস্বত সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে দিলীপ দার দৃঢ় ও স্পষ্ট বক্তব্য আরো বিস্তৃত পরিসরে শ্রদ্ধেয় অমর নস্কর মহাশয়কে যথাযথ চিত্রায়িত করেছে। আমাদের ক্ষুদ্র কিন্তু আন্তরিক আয়োজন দিলীপদার উপস্থিতিতে পূর্ণতা পেয়েছে।

  2. অমর নস্কর ও তাঁর দুর্বার কলমের সঙ্গে আমার পরিচিতি ও অন্তরঙ্গতা বলতে গেলে তার সূচনা পর্ব থেকেই।আমি তখন পর্ণশ্রীর বাসিন্দা।এক সকালে তিনি তাঁর অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী সাইকেলের ঘন্টি বাজিয়ে এলেন আমার অবিন্যস্ত ডেরায়।এরপর থেকে প্রায় রোজ সকালে নিয়ম করে।দেখলাম ও জানলাম কী অবিশ্বাস্য যত্ন,শ্রম আর ভালোবাসায় একক চেষ্টায় পত্রিকাটি তিনি বের করে চলেছেন।অমর তখন বেহালা বইমেলা সংগঠনের প্রধান পরিকল্পক ও স্বভাবজাত শ্রমে তাকে পূর্ণতা দেবার চেষ্টায় নিমগ্ন। উচ্চশিক্ষিত সমাজে প্রতিষ্ঠিত বাঙালি ভদ্রলোকের একটা প্রধান কাজ হল তাঁদের চেয়ে বিদ্যাবত্তায়,আর্থিক কোলিন্যে সমাজে যারা একটু পেছনে তাঁদের যথার্থ মূল্য না দিয়ে তাঁর শ্রমকে আত্মসাৎ করা।বইমেলাতে ও তাই ঘটল,সম্পাদকের প্রতিবেদন পাঠে ও অমরের ডাক পড়ল না।তিনি অবশ্য কুছ পরোয়া নেই মনোভাবের মানুষ। বইমেলা সর্বাঙ্গ সুন্দর করে তোলার কাজে তিনি স্বেচ্ছা বলি প্রদত্ত্ব।আমার পর্ণশ্রীর বাস উঠল। অমরবাবুর
    সঙ্গে যোগাযোগ ক্রমে ছিন্ন হয়ে গেল।তবে হঠাৎ কোথাও দেখা হলে ওঁর আন্তরিকতার খাঁটি স্বাদ টুকু মনেপ্রাণে গ্রহণ করি।আমি তাঁর অনুরক্ত গুণগ্রাহী। ভবিষ্যত হীন একটি স্থানীয় পাক্ষিক ট্যবলয়েডের জন্য জীবন জীবিকা তুচ্ছ করা সহজ কোনো কাজ নয়।আমি তাঁর অনুরক্ত গুণগ্রাহী। তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিবৃত্তে নতুন নতুন পালক সংযোজিত হতে থাকুক।স্থায়ী আরোগ্য নিয়ে তাঁর একক লড়াইয়ের জীবন দীর্ঘতম হোক।প্রণব বিশ্বাস

    মস


  3. dilIp majumdar says:

    এতদিন বাদে আমাদের পুরোনো বন্ধু প্রণব বিশ্বাসের একটা স্পর্শ পাওয়া গেল । সেটাও আবার অমর নস্করের মাধ্যমে । ভালো লাগল , ভালো লাগল। —দিলীপ মজুমদার

  4. Churamoni Hati says:

    দীর্ঘ দিন মনের ভেতর হাঁসফাঁস করা এলোমেলো শব্দ গুলো ; যখন বুদ্ধিদৃপ্ত মস্তিস্কের ছোঁয়ায় ; কলমের ডোগায় মুক্তি পায়…

    প্রণাম |

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন