বুধবার | ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:৪৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (দ্বিতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ হুমায়ুন-এক স্মৃতি-এক আলাপ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সনজীদা যার সন্তান : শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ অবসর ঠেকাতেই মোদী হেডগেওয়ার ভবনে নতজানু : তপন মল্লিক চৌধুরী লিটল ম্যাগাজিনের আসরে শশাঙ্কশেখর অধিকারী : দিলীপ মজুমদার রাঁধুনীর বিস্ময় উন্মোচন — উপকারীতার জগৎ-সহ বাঙালির সম্পূর্ণ মশলা : রিঙ্কি সামন্ত রামনবমীর দোল : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ৫৬ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

এর আগে শাসকদল ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন দেখা গিয়েছিল। রাজ্য সংগীত হিসেবে তাঁরা নির্বাচন করেছিলেন ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’কে। তা নিয়েও বিতর্ক ছিল। এবার পয়লা বৈশাখ থেকে তাঁরা বাঙালিয়ানা ও বাঙালির অস্মিতা তুলে ধরার উপরে জোর দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্তর থেকে জেলা ও ব্লক স্তর পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা। বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য, তার লোকজ সংস্কৃতিকে তাঁরা প্রচার করতে চান। বহিরাগত সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে চান জনমত।

বিরোধীরা এর পেছনে রাজনীতির গন্ধ পেয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য ২০২৬-এর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। বাঙালির আবেগকে আকর্ষণ করে ভোটের বাক্স ভরিয়ে তুলতে চান তাঁরা। এই অভিযোগকে একেবারে অমূলক বলতে পারি না। কারণ এখানকার সব কিছুর পেছনে থেকে যায় রাজনৈতিক অভিপ্রায়।

কিন্তু বাঙালিয়ানা বা বাঙালি অস্মিতার প্রচারটা যে জরুরি, মুক্তবুদ্ধির মানুষ সে কথা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন। স্বীকার করবেন যে আজ বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি বিপন্নপ্রায়। বহিরাগত সংস্কৃতি যে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা একটু খোলা চোখে দেখলেই বোঝা যায়। ছটপুজো, গণেশপুজো, ধনতেরাস, গর্বাচভ এসবের প্রাবল্য বেড়েছে, ঘটা করে অস্ত্রহাতে নিয়ে পালিত হচ্ছে রামনবমী ; এখানকার কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসগুলিতে চাকুরির সূত্রে যাঁরা আসছেন তাঁদের ৯০ ভাগ অবাঙালি এবং তাঁরা শুধু হিন্দিতেই কথোপথন করেন।

চাপিয়ে দেওয়া যেমন হয়, তেমনি আমাদের প্রশাসক, শিক্ষিত মানুষ, গণমাধ্যমের অসচেতনতার ফলে বাংলা ভাষা ও বাঙালির ঐতিহ্য ক্রমশ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। যানবাহনের মাথার ওপরে, দোকানের সাইনবোর্ডে বাংলা লেখা চোখে পড়ে না। তরুণ শিক্ষার্থীর বাংলা না বলাটাকে প্রশ্রয় দিয়ে আত্মপ্রসাদ লাভ করেন অভিভাবকেরা। গণমাধ্যমে চর্চা হয় খিচুঢ়ি বাংলাভাষার। ভিন্ন প্রদেশবাসী যে সব মানুষ বাংলায় বাস করেন, তাঁদের বাংলা শেখা ও বাংলা বলার কোন বাধ্যবাধকতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় না। এমন কি আমাদের অনৈক্যের সুযোগে তাঁরা বাংলা ও বাঙালিকে অপদস্ত করে বসেন। বড়বাজার প্রভৃতি অঞ্চলে সে অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়েছে।

এ কথা ঠিক যে শিল্প-বাণিজ্যের প্রসারের সঙ্গে ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসারের একটা নিবিড় যোগ আছে। একদা ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালের সূত্রপাতে বাংলা-সহ প্রাচ্য ভাষা শেখার জন্য ইংরেজরা কলকাতায় যে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ খুলেছিলেন তার পেছনে ছিল বাণিজ্যের তাগিদ। বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক কারণেই জন্ম হয়েছে বাংলা গদ্যভাষার। কালক্রমে শিল্প-বাণিজ্যে নিদারুণ অধঃপতন হয়েছে বাঙালির। জীবিকার প্রয়োজনে শিক্ষিত বাঙালি ছেলেকে চলে যেতে হচ্ছে ভিন্ন প্রদেশে। শিল্প-বাণিজ্যে বাংলাকে উন্নত করার আন্দোলন করুন। রাজনৈতিক অভিসন্ধি বাদ দিয়ে সে আন্দোলন পরিচালিত হলে, নিশ্চয়ই তা সাফাল্য লাভ করবে।

কিন্তু একই সঙ্গে স্মরণ করুন বাঙালি জাতিসত্তাকে। স্মরণ করুন তার গৌরব ও ঐতিহ্যকে। জন্ম-মৃত্যু-শেষকৃত্য-বিবাহের আচারানুষ্ঠান-যৌন আচরণ-রক্ত ও আত্মীয় সম্পর্ক-খাদ্যাভ্যাস ও রন্ধনপ্রণালী-বংশগণনা-খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতি-লোককথা-লোকবিশ্বাস-সামাজিক সংস্কার-ধর্মীয় চিন্তাচেতনা-স্থাপত্য ও ভাস্কর্য এবং ভাষা নিয়ে তৈরি হয়েছে বাঙালি জাতিসত্তা। আমাদের এই শেকড়কে উপেক্ষা বা অস্বীকার করলে নিজেদেরকে ছিন্নমূল করা হবে। মনে রাখতে হবে বাঙালি তার দেহসৌষ্টবে ও সংস্কৃতিতে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভাজন রেখার আদর্শ মিশ্রিত রূপটি বহন করে চলেছে ; বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে মিশে আছে ককেশীয়, মোঙ্গলীয়, নিগ্রো, মেলানেশীয়, খমের, অস্ট্রলয়েড নরগোষ্ঠীর রক্ত। বাঙালির উদারতা, অসাম্প্রদায়িকতার কারণ হিসেবে এই রক্ত সংমিশ্রণের কথা বলা যায়। মানব প্রজ্ঞার বিবিধ ক্ষেত্রে বাঙালির অতুলনীয় অবদান। সম্ভবত ভারতের অন্য কোন প্রদেশে এত মনীষীর আবির্ভাব ঘটে নি। এসবইতো বাঙালি অস্মিতার উপাদান উপকরণ। বাংলার নতুন প্রজন্মকে সেই ঐতিহ্য সম্বন্ধে সচেতন করার ক্রমাগত প্রচার দরকার।

রাজনৈতিক ছুৎমার্গ বিসর্জন দিয়ে বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক কারবারী, বাঙালি বুদ্ধিজীবী, শিক্ষিত মানুষ, শাসক ও বিরোধী সকলেই যদি এই প্রচারে আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করেন, তাহলেই কাজের কাজ হবে।

২০২৫ নববর্ষ বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন