মঙ্গলবার | ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:৫৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
বন্যায় পুনর্জীবন বেহুলার : রিঙ্কি সামন্ত গরানহাটা কি ছিল ভেড়ার হাট : অসিত দাস ডিভিসি-র ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ নাজেহাল, দায় কার : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সুধীর চক্রবর্তী মুক্তধারা ভাষণমালা : দীপাঞ্জন দে বোর্হেসের গোলকধাঁধা : অশ্রুকুমার সিকদার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের দুর্গোৎসব : রিঙ্কি সামন্ত মর্ত্যে দুর্গাপূজার সেকাল ও একাল : অসিত দাস বই-বাই : নবনীতা দেব সেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘প্রবাসী’ ম্যান মেড নয় ডিভিসি-র পরিকল্পনা আর রূপায়নে গলদ : তপন মল্লিক চৌধুরী রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে রাখাইনে সেইফ জোন তৈরি করা আবশ্যক : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ফলের নামটি পাকা কলা : রিঙ্কি সামন্ত বই-বাই : নবনীতা দেব সেন হেমচন্দ্র বাগচীর ১২০তম জন্মবর্ষ : দীপাঞ্জন দে নিম্ন চাপের অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত আরামবাগ : দেবাশিস শেঠ আরামবাগে ভয়াবহ বন্যা, দুর্যোগের পদধ্বনি, ক্ষোভ জনমানসে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন মেয়েদের ক্ষমতায়নের পক্ষেও আওয়াজ তুলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী কবি দেবদাস আচার্য-র কবিতাজগৎ — বহমান পৃথিবীর জীবনপ্রবাহ, চেতনাপ্রবাহ : অমৃতাভ দে মনসার নাম কেন ঢেলাফেলা : অসিত দাস ভোও.. ও ..ও.. কাট্টা…! ভো… কাট্টা…! : বিজয় চৌধুরী দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা : সন্দীপন বিশ্বাস নারীবেশী পুরুষ অভিনেতা শঙ্করকে সামাজিক ট্যাবুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় না : বিশ্বেন্দু নন্দ সাসারামের রোহতাসগড়, বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ : নন্দিনী অধিকারী জমিদার রবীন্দ্রনাথ : আহমাদ ইশতিয়াক আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর, এবারও অধরা রইলো আলোচনা : সুমিত ভট্টাচার্য জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (ষষ্ঠ পর্ব) : বিজয়া দেব চাষির দুঃখের ঘরে সাপের বাসা, আজও রেহাই নেই ছোবলের হাত থেকে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সল্টলেক তথা লবণহ্রদই কি কুচিনান : অসিত দাস পদ্মা বা পার্শ্বপরিবর্তনী একাদশী ব্রতকথা : রিঙ্কি সামন্ত জয়া মিত্র-র ছোটগল্প ‘ছক ভাঙার ছক’
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ কৌশিকী অমাবস্যার-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বিপজ্জনক কাফ সিরাপে মুখ পুড়লেও অবাধে চলছে ব্যবসা : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ৩৯২ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩

আমাদের দেশে তৈরি ওষুধ নিয়ে বহুবারই লজ্জায় মুখ ঢাকতে হয়েছে। গত সাত মাসে অন্তত তিনবার শুধুমাত্র এদেশে তৈরি কাফ সিরাপ নিয়েই গোটা দুনিয়ার মানুষকে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’। সাম্প্রতিক সময়ে অভিযোগ এসেছে উজবেকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে, তার আগে গাম্বিয়া থেকেও দূষিত কফ সিরাপ সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। এমন অভিযোগ স্বভাবতই দেশের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। কিন্তু তাতে কি, কয়েকদিন আগে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং মাইক্রোনেশিয়ায় বিক্রি হওয়া সিরাপগুলো সম্পর্কেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ সতর্ক করেছে। প্রসঙ্গত, বিগত পঞ্চাশ বছরের মধ্যে হরিয়ানার গুরুগ্রাম-সহ চেন্নাই, মুম্বাই, বিহার এবং জম্মুতে কাশির ওষুধে বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এত সব বিষক্রিয়ার ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রক বা দেশে ওষুধের গুণমান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) অনুসন্ধান চালিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে? যদি তাই হতো তাহলে নিশ্চয়ই অবস্থার পরিবর্তন হত। তার মানে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অথচ তাদেরই দেশের ওষুধ শিল্পের পরিচিতি রক্ষার্থেই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। বহু ক্ষেত্রে এমনটাও দেখা যায় যে ওষুধ বাজারজাত হওয়ার আগে ওষুধে ব্যবহৃত রাসায়নিক ঠিকমতো পরীক্ষাই করা হয়নি। আসলে বাজার থেকে সংক্রমিত ওষুধ সরিয়ে ফেলার উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া না থাকার ফলে বারেবারেই এ ধরণের ঘটনা ঘটে।

উজবেকিস্তান, গাম্বিয়া, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং মাইক্রোনেশিয়ার ক্ষেত্রেও ওষুধ রফতানি পর্ষদ ফার্মেক্সিল নিজেদের সাধু প্রতিপন্ন করতে প্রস্তুতকারক সংস্থাটির সদস্যপদ বাতিল করেছে এবং সংস্থাটির ওষুধ উৎপাদন আপাতত বন্ধ করেছে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতির জন্য এই পদক্ষেপ যে যথেষ্ট নয় তা তারা ভালই জানে। ওষুধ উৎপাদন থেকে সরবরাহ প্রতটি স্তরই যে অস্বচ্ছ সে সম্পর্কে সিডিএসসিও ওয়াকিবহাল। কিন্তু এরপরও কি ওষুধের লাইসেন্স ও পরীক্ষার প্রক্রিয়াগুলিই নিয়ম করে নজরদারি করা হবে? হবে না। কারণ, বহু অনুন্নত দেশ তাদের ওষুধের জোগানের জন্য ভারতের উপরে নির্ভরশীল। এবার প্রশ্ন অনুন্নত দেশগুলিতে ভারতের কাশির ওষুধ যে হারে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় দায়ী হল তারপরও কি জেনেরিক মেডিসিন তৈরির ক্ষেত্রে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় থাকবে, এরপরও কি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মঞ্চে ভারত নিজেকে শ্রেষ্ঠ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবে, নাকি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থাকবে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী গাম্বিয়ায় ৭০ এবং উজবেকিস্তানে ১৮ শিশুর মৃত্য হয়েছে ভারতে তৈরি কাশির সিরাপ গুয়াইফেনেসিন খেয়ে। ওই সিরাপে খুব বেশি মাত্রায় ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল ব্যবহৃত হয়েছিল। কেবল তাই নয়, সেগুলি মেডিক্যাল ফর্মুলেশনে ব্যবহারের আগে ঠিকমতো পরীক্ষা করা হয়নি। এই কাশির সিরাপটি তৈরি করেছে পঞ্জাবের সংস্থা কিউপি ফার্মাচেম লিমিটেড আর তা বাজারজাত করেছে হরিয়ানার সংস্থা ট্রিলিয়াম ফার্মা।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, ডাইইথিলিন গ্লাইসল কিংবা ইথিলিন গ্লাইসল প্রসাধনে ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিক দুটি শরীরের মধ্যে বিষক্রিয়ার মতো কাজ করে। শরীরের মধ্যে ঢুকে রাসায়নিক দুটি রেচনতন্ত্রের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে। এমনকি স্নায়ুকোষ এবং নিউরোট্রান্সমিটারেও চাপ সৃষ্টি করে। যা পরবর্তীতে কোমা এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। স্বাদে মিষ্টি এবং জলে অদ্রাব্য রাসায়নিক দুটির বিষক্রিয়ার জেরে পেটের তলদেশে ব্যথা, বমি, ডায়েরিয়া, প্রস্রাবে সমস্যা, মাথাব্যথা শুরু হয়। উল্লেখ্য, বুকব্যাথা ও কাশি বন্ধ করতে কাশির সিরাপে হাইড্রোকার্বন ব্যবহৃত হয়। অথচ হাইড্রোকার্বন একধরনের নারকোটিক, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কেবল তাই নয়, কফ সিরাপে ব্যবহৃত গুয়াইফেনেসিন, সিউডোএফিড্রিন, ট্রাইপোলিডিন, ডেক্সট্রো মেথরপেন ইত্যাদি স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক। কাশির সিরাপে সিউডোফিড্রিন,ডেক্সট্ররমিথোফরমিন এবং ট্রাইমিথোপ্রলিপ্রিন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় যার ফলে রক্ত চাপ বেড়ে যায়, ঝিমুনি আসে, ইউফোরিয়া সৃষ্টি হয় এবং শেষে ঘুম আসে।

ভারতের বিখ্যাত ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের তৈরি চারটি কাশির সিরাপ প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কোফ্যাক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, ম্যাকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে। তারা এই চারটি ওষুধের নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখেছে, এই সিরাপগুলিতে ক্ষতিকারক ডায়েথিলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন রয়েছে। যা ব্যবহারে শিশুরা গুরুতর অসুস্থ হতে পারে এমনকি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এরপরও কীভাবে আমাদের দেশে এই ধরণের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ওষুধ তৈরির ছাড়পত্র পায় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রক বা দেশে ওষুধের গুণমান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার চোখের সামনে দেদার বিপজ্জনক ওষুধের ব্যবসা চালিয়ে যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন