শনিবার | ২২শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:১৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলাভাষার নেচিতে ‘ময়ান’ ও ‘শাহিস্নান’-এর হিড়িক : অসিত দাস একটু একটু করে মারা যাচ্ছে বাংলা ভাষা : দিলীপ মজুমদার রাজ্যে এই প্রথম হিমঘরগুলিতে প্রান্তিক চাষিরা ৩০ শতাংশ আলু রাখতে পারবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সামরিক জান্তার চার বছর — মিয়ানমার পরিস্থিতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ১৯ ফেব্রুয়ারি ও স্বামীজির স্মৃতিবিজড়িত আলমবাজার মঠ (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চাষিদের বাঁচাতে রাজ্যের সরাসরি ফসল কেনার দাওয়াই গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার মোদীর মিডিয়া ব্যস্ত কুম্ভের মৃত্যুমিছিল ঢাকতে : তপন মল্লিক চৌধুরী রেডিওকে আরো শ্রুতিমধুর করে তুলেছিলো আমিন সায়ানী : রিঙ্কি সামন্ত গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি চুঁচুড়ার সুগন্ধ্যায় : অসিত দাস প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি — মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : সুমিত ভট্টাচার্য মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়, মিথ এবং ডিকনস্ট্রাকশন : অসিত দাস মহাকুম্ভ ও কয়েকটি প্রশ্ন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব কাশীকান্ত মৈত্রের জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন : ড. দীপাঞ্জন দে অমৃতের সন্ধানে মাঘী পূর্ণিমায় শাহীস্নান : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

একটু একটু করে মারা যাচ্ছে বাংলা ভাষা : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ৫৫ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ভাষা মরণশীল। উদ্ভিদ ও প্রাণীর মতো তারও মৃত্যু হয়। ব্রিটিশ ভাষাবিদ ডেভিড স্ট্যানলি বলেছেন যে পৃথিবীতে প্রতি দু’সপ্তাহে একটি করে ভাষার মৃত্যু হচ্ছে। ভাষার মৃত্যুতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেছেন জার্মান ভাষাতত্ত্ববিদ হান্স জুরগেন স্যাশে। তাঁর মতে এখন পৃথিবীতে ৬/৭ হাজার ভাষা আছে, আগামী শতকে সেটা অর্ধেক হয়ে যাবে। আমাদের ভারতেও ৭০০-র মতো ভাষা ছিল। কিন্তু গিসারি, ওয়াডারি, গোল্লা, হলদি, মারচি, পাইরি, কাটাগির মতো ৬০০টি ভাষা মরে ভূত হয়ে গেছে। যে সব ভাষার আর ব্যবহার হয় না, তাদের আমরা মৃতভাষা বলি। যেমন আমাদের সংস্কৃত ভাষা। দেবতারা আছেন কি না,. তাঁরা সংস্কৃত ভাষায় কথা বলতেন কি না আমরা জানি না। কিন্তু সংস্কৃতকে ‘দেবভাষা’ বলার রেওয়াজ আছে। দেব-দ্বিজে ভক্তিমান বিজেপি সরকার সংস্কৃত ভাষাকে বাঁচিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। কৃত্রিমভাবে কিছুকাল হয়তো বাঁচিয়ে রাখতে পারেন, যেমন আই সি ইউতে রোগীদের কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়। কিন্তু শেষ পর্ষন্ত ব্যর্থ হবেন। ভাষা যেন ভাইরাস। ভাইরাস নিজে জীবন্ত নয় (লিভিং ডেড) কিন্তু প্রাণীর শরীরে ঢুকে সে জীবন্ত হয়। ভাষা তেমনি মানুষের ব্যবহারে জীবন্ত হয়।

আমাদের বাংলা ভাষার শরীরে ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে মৃত্যুর লক্ষণ। বাঙালি ছেলেমেয়ের কাছে এই ভাষা যেন ব্রাত্য হয়ে উঠছে। কেন? কেউ কেউ অর্থনীতি ও জীবিকার কথা বলেন। অস্বীকার করা যাবে না। ১৯৮৬ সালে তদানীন্তন সরকারের ভাষানীতি একটা ভুল বার্তা দিয়েছিল। তারই ফলে ব্যাঙের ছাতার মতো ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় গজিয়ে উঠতে লাগল। জীবিকার অজুহাতে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের ইংরেজিমাধ্যমে দিতে লাগলেন। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মদতে হিন্দির আগ্রাসন চলতে লাগল। কলে-কারখানায়, অফিসে-আদালতে, ব্যাঙ্কে-রেলে বাড়তে লাগল হিন্দিভাষী মানুষের ভিড়। দাপটে চলে হিন্দি চলচ্চিত্র। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে, ফেসবুকে, চ্যাটিংএ বাংলা ভাষার খিচুড়ি চলে। বাংলা বাক্যবন্ধে ঢুকে যায় ইংরেজি ও হিন্দি শব্দ ও বাক্যাংশ। এ কথা ঠিক যে বিদেশি শব্দ গ্রহণ করে ভাষা সমৃদ্ধ হয়। বাংলা ভাষায় বহু আরবি-ফারসি-ইংরেজি শব্দ ঢুকে গেছে। বাংলা সেগুলি আত্মীকরণ করে নিয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে যত খুশি, যেমন খুশি বিদেশি শব্দে বাংলাকে ভারাক্রান্ত করা যাবে।

বিশ্বায়ন এসে জোর ধাক্কা দিল বাংলাকে। বিস্তৃত হল ইংরেজির আধিপত্য। বিশ্বে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি অনেক আগে থেকেই সুবিধাজনক স্থানে ছিল। পৃথিবীর ১০২টি দেশের সরকারি ভাষা ইংরেজি, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় তার আধিপত্য, ওয়েবসাইটে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষায় তার ব্যবহার বিস্তৃত। সুতরাং বিশ্বায়নে ইংরেজি প্রাধান্য পাবেই। এই প্রসঙ্গে মার্কিন লেখক আর. ডব্লু, এর্মাসন বলেছেন, ‘The English language is the sea which receives tributaries from every region under heaven’ .

বাংলা ভাষায় অনেক মহৎ সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে। ভারতবর্ষের অন্যান্য আঞ্চলিকভাষায় এত সাহিত্য সম্ভার নেই। তবুও মনে রাখতে হবে রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কথা। বাংলা ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য এবং বাংলা একটি আঞ্চলিক ভাষা। রাষ্ট্রভাষা হবার যোগ্যতা বাংলার আছে কি না সে প্রশ্ন আজ অবান্তর। স্বয়ং ভাষাচার্য সুনীতি চাটুজ্জে মশায় বলেছিলেন ভারতের রাষ্ট্রভাষা হবার যোগ্যতা হিন্দির আছে। এই সীমাবদ্ধাতার মধ্যেও বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার আমাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মাতব্বরেরা তার কিছুই প্রায় করছেন না। সেই না করার তালিকাটা এই রকমের :

ক] স্কুল-কলেজে বাংলা ভাষাচর্চার গাম্ভীর্য ও গুরুত্ব দেওয়া হয় না,

খ] বাংলা ভাষাচর্চার ব্যাপারে শিক্ষকদের চেয়ে অভিভাবকদের দায়িত্ব অনেক বেশি। অথচ তাঁদের কেউ সচেতনভাবে আবার কেউবা অচেতনভাবে সে দায়িত্ব এড়িয়ে চলেন। (ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের ব্যঙ্গাত্মক ছড়াটা প্রসঙ্গত মনে পড়ে)

গ] প্রশাসনিক কাজকর্মে, পোস্ট অফিস-ব্যাঙ্ক-রেল ইত্যাদিতে বাংলার ব্যবহারের ব্যাপারে আশ্চর্য অনীহা কাজ করে,

ঘ] বাংলা বই, বাংলা গান, বাংলা চলচ্চিত্র ব্যবহারেও কোন বাধ্যবাধকতা নেই,

ঙ] জীবকার সূত্রে যেসব ভিন্ন প্রদেশবাসী বাংলায় আসেন তাঁদের বাংলাশিক্ষা ও বাংলা বলারও কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

এই যে নেই-নেই তালিকা, সেটা চলতে থাকলে বাংলা ভাষার মৃত্যু কেউ ঠেকাতে পারবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন