মঙ্গলবার | ৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ২:০১
Logo
এই মুহূর্তে ::
নীলমণি ঠাকুরের মেছুয়া-যাত্রা, একটি ঐতিহাসিক পুনর্নির্মাণ : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দ্বিতীয় পর্ব) : আবদুশ শাকুর কাদের প্রশ্রয়ে বাংলাদেশের জঙ্গিরা বাংলার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রসাহিত্যে কবিয়াল ও কবির লড়াই : অসিত দাস নকল দাঁতের আসল গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (প্রথম পর্ব) : আবদুশ শাকুর মুর্শিদাবাদের কৃষি ঐতিহ্য : অনুপম পাল নক্সী কাঁথায় বোনা জসীমউদ্দীনের বাল্যজীবন : মনোজিৎকুমার দাস পঞ্চানন কুশারীর জাহাজী গানই কি কবির লড়াইয়ের মূল উৎস : অসিত দাস দিব্যেন্দু পালিত-এর ছোটগল্প ‘ঝালমুড়ি’ নকশালবাড়ি আন্দোলন ও বাংলা কবিতা : কার্তিক কুমার মণ্ডল নিঃসঙ্গ ও একাকিত্বের আখ্যান : পুরুষোত্তম সিংহ ভিয়েতনামের গল্প (পঞ্চম পর্ব) : বিজয়া দেব অন্তরের আলো জ্বালাতেই কল্পতরু উৎসব : সন্দীপন বিশ্বাস কল্পতরু — এক উত্তরণের দিন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চলচ্চিত্র উৎসবে পানাজি থেকে কলকাতা (শেষ পর্ব) : সায়র ব্যানার্জী ফেলে আসা বছরে দেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া না ঝড় : তপন মল্লিক চৌধুরী কার্ল মার্কসের পরিজন, পরিকর (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোয়ানিতা ম্যালে-র ছোটগল্প ‘নাইট জব’ অনুবাদ মনোজিৎকুমার দাস দেশজ ফসলের বীজকে কৃষির মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে নদিয়া বইমেলা মুখপত্র : দীপাঞ্জন দে চলচ্চিত্র মহোৎসবে পানাজি থেকে কলকাতা (প্রথম পর্ব) : সায়র ব্যানার্জী শৌনক দত্ত-র ছোটগল্প ‘গুডবাই মাষ্টার’ হেলান রামকৃষ্ণ শিশু বিতানের রজত জয়ন্তী বর্ষপূর্তি উৎসব পালিত হল মহাসমারোহে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কার্ল মার্কসের পরিজন, পরিকর (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জীবনানন্দ দাশের স্বপ্নের নদী ধানসিঁড়ি আজও আছে কিন্তু মৃতপ্রায় : মনোজিৎকুমার দাস মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-এর ছোটগল্প ‘শঠে শাঠ্যং’ যথোচিত মর্যাদায় পালিত হল খানাকুলের রূপকার শান্তিমোহন রায়ের জন্মদিন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় আবার দেখা যদি হলো সখা প্রাণের মাঝে আয় — নেতাজী নগর বিদ্যামন্দিরের পুনর্মিলন : সুশান্ত দাস মোদি বনাম মনমোহন: ইতিহাস বারবার এই বিশ্লেষণ করবে : সন্দীপন বিশ্বাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই ২০২৫ ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

রবীন্দ্রসাহিত্যে কবিয়াল ও কবির লড়াই : অসিত দাস

অসিত দাস / ৬৪ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৫

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সাহিত্যে কবিগানকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি এক জায়গায় লিখেছেন, তিনি যদি দরিদ্রের ঘরে জন্ম নিতেন তবে তাঁকে হয়তো কবিগানের দলে নাম লেখাতে হত।

তাঁর বিভিন্ন রচনায় ‘কবির লড়াই’ কথাটি ব্যবহার করেছেন। যেমন, বিচিত্রার ২৯ নম্বর কবিতার অংশ বিশেষ —

“মাঘের বনে

আমের কত বোল ধরল,

কত পড়ল ঝরে;

ফাল্গুনে ফুটল পলাশ,

গাছতলার মাটি দিল ছেয়ে

চৈত্রের রৌদ্রে আর সর্ষের খেতে

কবির লড়াই লাগল যেন

মাঠে আর আকাশে।

আমার সেই আটকে-পড়া দিনটির গায়ে

কোনো ঋতুর কোনো তুলির

চিহ্ন লাগেনি।”

জাপানযাত্রীতে কবি লিখেছেন ‘কবির লড়াই’ শব্দবন্ধটি —

“হোলির রাত্রে হিন্দুস্থানি দরোয়ানদের খচমচির মতো বাতাসের লয়টা ক্রমেই দ্রুত হয়ে উঠল। জলের উপর সূর্যাস্তের আলপনা-আঁকা আসনটি আচ্ছন্ন ক’রে নীলাম্বরীর ঘোমটা-পরা সন্ধ্যা এসে বসল। আকাশে তখনো মেঘ নেই, আকাশসমুদ্রের ফেনার মতোই ছায়াপথ জ্বল্‌জ্বল্‌ করতে লাগল।

ডেকের উপর বিছানা করে যখন শুলুম তখন বাতাসে এবং জলে বেশ একটা কবির লড়াই চলছে; একদিকে সোঁ সোঁ শব্দে তান লাগিয়েছে, আর-একদিকে ছল্‌ ছল্‌ শব্দে জবাব দিচ্ছে, কিন্তু ঝড়ের পালা বলে মনে হল না। আকাশের তারাদের সঙ্গে চোখোচোখি করে কখন এক সময়ে চোখ বুঝে এল।

রাত্রে স্বপ্ন দেখলুম, আমি যেন মৃত্যু সম্বন্ধে কোনো একটি বেদমন্ত্র আবৃত্তি করে সেইটে কাকে বুঝিয়ে বলছি। আশ্চর্য তার রচনা, যেন একটা বিপুল আর্তস্বরের মতো, অথচ তার মধ্যে মরণের একটা বিরাট বৈরাগ্য আছে। এই মন্ত্রের মাঝখানে জেগে উঠে দেখি, আকাশ এবং জল তখন উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। সমুদ্র চামুণ্ডার মতো ফেনার জিব মেলে প্রচণ্ড অট্টহাস্যে নৃত্য করছে।”

সাহিত্যসমালোচনা শীর্ষক রচনায় কবিগুরু লিখেছেন কবির লড়াই শব্দবন্ধ। একটি বাক্যের শুরুতেই আছে কবির লড়াই। তারপর পাঁচালি, তর্জা।

“আমাদের সংস্কৃতিসাহিত্যেও এই বিকৃতি অনেক দেখা গিয়েছে। যখন সংস্কৃতসাহিত্যে সাধনার দৈন্য এসেছিল তখন কাব্যে তার পরিচয় ফুটে উঠেছে। বর্তমান কালের আরম্ভে কবির লড়াই, পাঁচালি, তর্জা প্রভৃতিতে সাহিত্যের যে-বিকার দেখা দিয়েছিল সেগুলিতে বীর্যবান জাতির প্রবল উন্নতির বা মহৎ আকাঙ্ক্ষার পরিচয় নেই। তার ভিতর অত্যন্ত পঙ্কিলতা আছে। সমাজের পথযাত্রার পাথেয় হচ্ছে উৎকর্ষের জন্যে আকাঙ্ক্ষা। জীবনের মধ্যে ব্যবহারে তার প্রকাশ খণ্ডিত হয়ে যায় বলেই মনে তার জন্যে যে-আকাঙ্ক্ষা আছে তাকে রত্নের মতো সাহিত্যের বহুমূল্য কৌটোর মধ্যে রেখে দিই— তাকে সংসারযাত্রায় ব্যক্ত সত্যের চেয়ে সম্পূর্ণতর করে উপলব্ধি করি। এই আকাঙ্ক্ষা যতক্ষণ মহৎ থাকে এবং এই আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ যতক্ষণ লোকের কাছে মূল্য পায়, ততক্ষণ সে জাতির মধ্যে যতই দোষ থাক্, তার বিনাশ নেই। য়ুরোপীয় জাতির ভিতর যে-অস্বাস্থ্য রয়েছে তার প্রতিকারও তাদের মধ্যে আছে। যেখানে স্বাস্থ্যের প্রবলতা সেখানে রোগও আপাতত প্রবল হয়ে দেখা দেয়। কিন্তু, তৎসত্ত্বেও মানুষ বাঁচে। দুর্বল শরীরে তার প্রকাশ হলে সে মরে।”

শেষের কবিতা উপন্যাসেও আছে কবির লড়াই-এর প্রয়োগ-

“রবি ঠাকুর কেবল চলে যাবার কথাই বলে, রয়ে যাবার গান গাইতে জানে না। বন্যা, কবি কি বলে যে, আমরাও দুজন যেদিন ওই দরজায় ঘা দেব, দরজা খুলবে না?”

‘মিনতি রাখো, মিতা, আজ সকালে কবির লড়াই তুলো না। তুমি কি ভাবছ প্রথম দিন থেকেই আমি জানতে পারি নি যে, তুমিই নিবারণ চক্রবর্তী? কিন্তু তোমার ওই কবিতার মধ্যে এখনই আমাদের ভালোবাসার সমাধি তৈরি করতে শুরু ক’রো না, অন্তত তার মরার জন্যে অপেক্ষা ক’রো।’

অমিত আজ নানা বাজে কথা বলে ভিতরের কোন্‌ একটা উদ্বেগকে চাপা দিতে চায়, লাবণ্য তা বুঝেছিল।”

লোকসাহিত্যের অন্তর্গত ‘কবি-সংগীত’ প্রবন্ধে সরাসরি কবির লড়াই লেখেননি। লিখেছেন,’কবির দলের গান’। তিনি লিখেছেন-

“আমরা সাধারণ এবং সমগ্রভাবে কবির দলের গানের সমালোচনা করিয়াছি। স্থানে স্থানে সে-সকল গানের মধ্যে সৌন্দর্য এবং ভাবের উচ্চতাও আছে— কিন্তু মোটের উপর এই গানগুলির মধ্যে ক্ষণস্থায়িত্ব, রসের জলীয়তা, এবং কাব্যকলার প্রতি অবহেলাই লক্ষিত হয়— এবং সেরূপ হইবার প্রধান কারণ, এই গানগুলি ক্ষণিক উত্তেজনার জন্য উপস্থিতমতো রচিত।

তথাপি এই নষ্টপরমায়ু কবির-দলের গান আমাদের সাহিত্য এবং সমাজের ইতিহাসের একটি অঙ্গ,— এবং ইংরেজ-রাজ্যের অভ্যুদয়ে যে আধুনিক সাহিত্য রাজসভা ত্যাগ করিয়া পৌরজনসভায় আতিথ্য গ্রহণ করিয়াছে এই গানগুলি তাহারই প্রথম পথপ্রদর্শক।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন