‘‘১৬ জুলাই(২০২৪) থেকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের বীর পুরুষরা কেউ মার খেয়েছেন, কেউ পালিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যদি দ্রুত সেনা মোতায়েন এবং কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত না নিতেন তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতো। ভাগ্যিস আমাদের একজন প্রধানমন্ত্রী আছেন যিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের মতো জনবিচ্ছিন্ন নন। বাস্তবতাকে উপলব্ধি করেন। সেনাবাহিনী মাঠে নামার পর পরিস্থিতি আস্তে আস্তে উন্নতি হতে শুরু করে। কিন্তু সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার নীলনকশা এখনো বহাল আছে। ষড়যন্ত্র থামেনি। বিরোধী পক্ষ এখন ভিন্ন কৌশলে। তারা সরকার ও আওয়ামী লীগের দুর্বলতাগুলোকে ধরে ফেলেছে।’’ (সৈয়দ বোরহান কবীর, খেলা শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৩১/৭/২০২৪)
সরকারের প্রচেষ্টা ও জননিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর তৎপরতার কারণে ৩১ জুলাই থেকে কারফিউ শিথিল করে পুরো অফিস টাইম কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। দেশের সর্বত্র মানুষ নিরাপদে চলাচল শুরু করেছে এবং ব্যবসায়ী কাজে গতি ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, বেসরকারি প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য মাঠে নেমে ধ্বংসলীলা ও মৃত্যুর মিছিলকে বন্ধ করার সক্ষমতা দেখিয়েছে সেনাবাহিনী। যেমন, নাশকতা ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ২০ জুলাই সন্ধ্যায় টার্গেট হিট না করে গুলি করেছে তারা, যেখানে হতাহত কেউ হয়নি। সেদিন কেবল জনজীবন ও জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করেছিল। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এ ধরনের অসংখ্য কাজ করতে হয়েছে তাদের। কারফিউ পরিস্থিতিতে দেশকে সচল রাখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস তাদের প্রটেকশনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছেছে। আসলে তারা ব্যাক-আপ ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে। এজন্য তাদের নিয়ে অপপ্রচার শুরু হলে প্রতিবাদে বলা হয়- সেনাবাহিনী দেশের সম্পদ। তারা জনগণের বন্ধু, দুর্যোগে জনগণের পাশে থাকাই তাদের বড় দায়িত্ব। তাদের স্লোগান-‘সমরে আমরা, শান্তিতে আমরা, সর্বত্র আমরা দেশের তরে ।’
বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালানো হয় বলে (২৮ জুলাই) উল্লেখ করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। ‘কিছু স্বার্থান্বেষী মহল’ এই অপপ্রচার চালায়। স্যোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো হয় যে, ‘সেনাবাহিনী হাজার হাজার মানুষ মারছে।’ স্বার্থান্বেষী মহলের এ-জাতীয় বিভ্রান্তিকর তথ্য ও সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করে। জনগণের স্বার্থে ও রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে আছে ও থাকবে। আইএসপিআর বলেছে, ‘দেশে-বিদেশে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করাই এই অপপ্রচারের মূল উদ্দেশ্য। সেনাবাহিনী দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে প্রচলিত আইনের আওতায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, দেশবাসীর জানমালের নিরাপত্তা ও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’ প্রকৃতপক্ষে দেশব্যাপী ক্রম অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জানমাল ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে ২০ জুলাই ভোর থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দ্রুত নৈরাজ্য প্রশমন করতে সাহায্য করে।
অর্থাৎ সেনাবাহিনীর শুভ কর্মতৎপরতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যে চেষ্টা নাশকতাকারীরা করেছিল তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। বরং সেনাবাহিনী মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করে এবং ধীরে ধীরে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে। ২০ জুলাই থেকে তারা কাউকে হয়রানি করেনি। কাউকে জিজ্ঞাসা করেনি কারফিউ পাশ নিয়ে। বরং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, বলেছে রাস্তা-ঘাট নিরাপদ।
আসলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদান বিশ্ব দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত। কারণ তারা পেশাগত কর্মকাণ্ড ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দেশ ও জাতির প্রতিটি প্রয়োজনে সর্বদা গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে। ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের মাধ্যমে বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্ববাসীর কাছে একটি আধুনিক ও সময়োপযোগী সুশৃঙ্খল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। সেনাবাহিনীকে আধুনিক, সুদক্ষ ও সময়োপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি নির্বাচনপূর্ব ও নির্বাচনকালীন এবং পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে পালন করে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সর্বদা সহযোগিতা করে আসছে। জাতিসংঘ মিশনে সেনাবাহিনীর অবদান সর্বজন স্বীকৃত এবং বিশ্ব দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত। জনৈক গবেষক লিখেছেন-‘‘দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বে এক আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত অঞ্চলে আর্তমানবতার সেবায় জানমাল রক্ষার জন্যে সেনাবাহিনী যে আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তা দেশবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়াও ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি রোধকল্পে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সিলেট-সহ (২০২৪ সালে) দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় আটকে পড়া অসংখ্য ব্যক্তিকে উদ্ধার, তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সেখানে বাঁধ নির্মাণে সহায়তা করে আরও ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সেনাবাহিনী। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম অনেক দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে জাপানের ভয়াবহ সুনামি ও ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা সে দেশে জরুরি সহায়তা প্রদানসহ শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার, চীন, মিশর, মালদ্বীপ ও হাইতিতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দক্ষতার সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলা করে বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে।’’ মনে রাখতে হবে, দেশের ক্রান্তিলগ্নে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ ও ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’- এর মাধ্যমে জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে যে কোনো জাতীয় সমস্যা মোকাবিলায় সেনাবাহিনী আপামর জনসাধারণের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে সুপরিচিতি পেয়েছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারির মধ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে সেনা সদস্যদের উপস্থিতি ও সহায়তার কারণে গণ-মনস্তত্ত্বে স্বস্তি এসেছিল। কারণ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশজুড়ে কাজ করায় আইন-শৃঙ্খলারও উন্নয়ন ঘটে। অন্যদিকে যাদেরকে নিযুক্ত করা হয়েছিল তারা প্রয়োজনে ও জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সেবা দিতে প্রস্তুত বলেই অনেক জায়গায় তাদের চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনা করতে দেখা গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেমন চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মী করোনা মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তেমনি সেনা সদস্যরা নিজের পরিবারকে পেছনে ফেলে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন। সেই সময়ের মতো ‘গণ-মনস্তত্ত্বে স্বস্তি’র বিষয়টি এবারও লক্ষ করা গেছে।
বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা ও কারফিউ জারির মধ্যে সেনাবাহিনী মাঠে থাকায় কেউ কেউ গুজবে বিশ্বাস করেছিল যে, সামরিক সরকার ক্ষমতা দখল করবে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা এবং সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা থাকে না। বর্তমান পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাছাড়া সংবিধান পরিপন্থী কোনো কাজ শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সেনাবাহিনী করে নি। দেশের চলমান সহিংসতায় বাহিনীগুলো নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারছে কিনা — সেটাই বরং দেখার বিষয়।
পত্রিকান্তরে লেখা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেয় এবং সর্বদা ভিন্নমতের প্রকাশকে উৎসাহিত করে। সরকারি চাকরিতে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতে বর্তমান সরকার বারবার ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। তবে, দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে একটি তৃতীয় পক্ষ এতে জড়িয়ে পড়ার কারণে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে তারা সহিংসতা এবং বিশৃঙ্খলা উসকে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করেছে। বিক্ষোভের সময় সংগঠিত সহিংসতা কোন সাধারণ ছাত্রের কাজ ছিল না বরং প্রশিক্ষিত ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা ছিল। সহিংসতা উসকে দেওয়া এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে তারা অনুপ্রবেশ করেছিল, যা জনগণের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করেছে। বাংলাদেশ সরকার চাকরির কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে প্রথম থেকেই স্বীকৃতি দিয়েছে। সরকার সংলাপ এবং নীতি সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের অভিযোগের সমাধান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, বিক্ষোভে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াত-ই-ইসলামী এবং এর ছাত্র সংগঠন, ইসলামী ছাত্র শিবির অনুপ্রবেশ করে দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিশীল করে তোলে। অস্থিরতা ও সহিংসতা উসকে দেওয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এই দলগুলোর। এই অনুপ্রবেশ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের মূল দাবি থেকে সরিয়ে দেয়নি, বরং তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ব্যাপক সহিংসতার দিকে পরিচালিত করেছে, যার ফলে জীবন ও সম্পদের মর্মান্তিক ক্ষতি হয়েছে। সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের প্রধান দায়িত্ব। সহিংসতা দূর করে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং মূল্যবান জীবন রক্ষার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সামরিক বাহিনী মোতায়েন ছিল একটি সময়পোযুক্ত পদক্ষেপ। সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল একটি জটিল ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি পরিচালনায় বেসামরিক প্রশাসনের সক্ষমতা জোরদার করার একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। বিক্ষোভের তীব্রতা এবং এর ফলে সহিংসতার কারণে বেসামরিক প্রশাসন উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল। সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল জনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা এবং বিক্ষোভকারীসহ সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সহায়তা করা। সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার উদ্দেশ্য ছিল পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে এবং সংলাপ ও আলোচনার জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। অস্থিরতার মূল কারণগুলোকে মোকাবিলা করার এবং একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানোর জন্য ছাত্র প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগের পথ প্রশস্ত করা। সরকার চায় স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে যা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করবে।
মূলত ঘটে যাওয়া অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতাময় দিনগুলোতে (১৮ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত) দেখা গেছে, কোটা দাবি’র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত ও অন্যান্য সরকার বিরোধীরা সহিংসতা করে জনগণের সম্পদ নষ্ট করেছে, হত্যায় লিপ্ত হয়েছে এবং র্যাব-পুলিশকে আক্রমণ করেছে। ফলে সাধারণ জনগণসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের জীবন বিপন্ন হতে দেখা গেছে। এহেন পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেনাসদস্যদের কিছু ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে এবং সবধরনের চেষ্টা না থাকলে আজকে এই স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতো না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হবে। আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত এবং যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় পারঙ্গম আমাদের সেনাবাহিনী সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেই সহিংসতা ও নাশকতায় দিশেহারা সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এখন অনেক ভালো অবস্থায় আছি আমরা। অবশ্য ‘‘সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার নীলনকশা এখনো বহাল আছে। ষড়যন্ত্র থামেনি। বিরোধী পক্ষ এখন ভিন্ন কৌশলে।’’ — একথার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হয় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনী আরো বেশ কিছুদিন অবস্থান করুক। শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে মহিমান্বিত করবে বলে-আমরা মনে করি।
লেখক : ড. মিল্টন বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু গবেষক, বিশিষ্ট লেখক, কবি, কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ এবং অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, email-drmiltonbiswas1971@gmail.com