রবিবার | ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:০৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
চর্যাপদে সমাজচিত্র : নুরুল আমিন রোকন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দশম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুর ও তৎকালীন বঙ্গসংস্কৃতি : অসিত দাস দধি সংক্রান্তি ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (নবম পর্ব) : আবদুশ শাকুর সপ্তাহে একদিন উপবাস করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো : অনুপম পাল অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত’র ভাষা : ড. হান্স্ হার্ডার সবগুলো গল্পেই বিজয়ার নিজস্ব সিগনেচার স্টাইলের ছাপ রয়েছে : ড. শ্যামলী কর ভাওয়াল কচুর কচকচানি : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (অষ্টম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুরের উইল ও দ্বারকানাথের ধনপ্রাপ্তি : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (সপ্তম পর্ব) : আবদুশ শাকুর যে শিক্ষকের অভাবে ‘বিবেক’ জাগ্রত হয় না : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস সসীমকুমার বাড়ৈ-এর ছোটগল্প ‘ঋতুমতী হওয়ার প্রার্থনা’ সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতিফলনে সিনেমা : সায়র ব্যানার্জী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

স্বাধীনতা সংগ্রামে আরামবাগের গান্ধী প্রফুল্ল চন্দ্র সেন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ১৭৯ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৪

আরামবাগ মহকুমার স্বাধীনতা সংগ্রামের যাকে প্রাণপুরুষ বলা হয় তিনি হলেন প্রফুল্ল চন্দ্র সেন। আরামবাগের মানুষ তাঁকে আরামবাগের গান্ধী আখ্যা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, প্রফুল্লবাবু এক সময়ে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। তাঁর জন্ম অধুনা পূর্ব বাংলার খুলনা জেলার সেনহাটিতে। তাঁর পিতার নাম গোপাল চন্দ্র সেন এবং মাতা নগেন্দ্র বালা দেবী। গোপাল চন্দ্র প্রযুক্তিবিদ হিসেবে সরকারি চাকরি গ্রহণ করেছিলেন। তার কর্মস্থল ছিল বিহার ও উত্তর প্রদেশ। সেই কারণে সেখানে প্রফুল্ল চন্দ্র সেনের শৈশব এবং ছাত্র জীবন শুরু হয়। সেখানে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করার পর তিনি কলকাতায় স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হলেন। মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বিএসসি পাশ করার পর তার চার্টার্ড একাউন্ট হওয়ার ইচ্ছে ছিল। বিলেত যাওয়ার সব ঠিকঠাক এমন কি জাহাজের টিকিট পর্যন্ত কাটা হয়ে গেছে এমন সময় সারা বাংলাদেশ জুড়ে ধ্বনিত হলো স্বদেশী আন্দোলনের ডাক। সবকিছু ছেড়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন দেশের কাজে।  তখন অর্থাৎ ১৯২১ সালে হুগলিতে একটি জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে, নাম হুগলী বিদ্যামন্দির। তার বাল্যবন্ধু রবি পাতিল ছিলেন হুগলি জেলা কংগ্রেস কমিটির প্রথম সম্পাদক। তিনি তাকে হুগলি বিদ্যামন্দিরে ডেকে পাঠালেন। শুরু হল প্রফুল্ল চন্দ্রের নতুন জীবন। অধ্যাপক জ্যোতিষ চন্দ্র ঘোষ, উপপতি মজুমদার, নগেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়,  বিনয় কৃষ্ণ মোদক তখন সেখানে থাকতেন। কবি কাজী নজরুল ইসলামও মাঝেমধ্যে এসে সেখানে বাস করতেন।

উল্লেখ্য, ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের জুন মাস। গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলন এবং খিলাফত আন্দোলন সফল করার জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে সভা সমিতি করা হচ্ছে। শ্রীরামপুর ও সদর মহকুমায় কমিটি তৈরি হয়েছে কিন্তু আরামবাগে কিছু হয়নি। আরামবাগ অত্যন্ত দূরবর্তী এলাকা, রাস্তাঘাটের যোগাযোগ নেই। তারকেশ্বর থেকে হাঁটা পথে যাতায়াত করতে হয়। তাই সেখানে তখনও সংগঠন করা যায়নি। কর্তাব্যক্তিরা জনে জনে জিজ্ঞেস করছেন কে আরামবাগে যাবে ? আরামবাগের নাম শুনেই হুগলী বিদ্যা মন্দিরের  স্বেচ্ছাসেবকরা আঁতকে উঠলেন। প্রফুল্ল সেন কিন্তু এক কথাতেই সাগ্রহে রাজি হয়ে গেলেন এবং তিনি পরের দিনই যাত্রা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেদিনের তার সেই সিদ্ধান্তই যেন আরামবাগ মহাকুমার কপালে রাজটিকার মতো জ্বলজ্বল করে উঠলো। কারণ এর পরই এক সময় আরামবাগ মহকুমার ডোঙ্গলে এসে তিনি স্বদেশী কেন্দ্র স্থাপন করেন। আরামবাগ মহকুমাই কালক্রমে হুগলি জেলার আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়।

উল্লেখ করা যেতে পারে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে হুগলি বিদ্যামন্দিরে একটা চিঠি এলো আরামবাগের ডোঙ্গল থেকে। বেচারাম ভট্টাচার্য লিখেছেন — সেখানে ভয়ানক বন্যা হয়ে গেছে। বড় ডোঙ্গলেই সাতজন লোক মারা গেছে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোনো সরকারি সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না, প্রফুল্ল সেন যেন সেখানে চলে আসেন। চিঠি পাওয়া মাত্রই হুগলিতে একটি ত্রাণ কমিটি গঠন করে ত্রাণ সামগ্রী জোগাড় করে উদ্ধারকারী দল নিয়ে সেখানে চললেন প্রফুল্লচন্দ্র। সেখানকার মানুষকে একেবারে আপন করে নিতে পারলেন তিনি। এরপর প্রফুল্ল চন্দ্র সেন আর হুগলি ফিরে গেলেন না। সেখানেই তিনি বসবাস শুরু করলেন স্বদেশী সঙ্গীদের নিয়ে। গান্ধীজীর নির্দেশমতো দুয়াদণ্ড, ঘোষপুর নকুন্ডা প্রভৃতি এলাকায় চরকা কেন্দ্র খোলা হল। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি এই ডোঙ্গলকে কেন্দ্র করেই হুগলি জেলার কংগ্রেস সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। ইতিমধ্যে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। প্রফুল্ল চন্দ্র সেনের সঙ্গী হিসেবে আসা সাগর লাল হাজরা পরলোকগমন করেছেন। তার স্মৃতিতে ডোঙ্গলের গান্ধী আশ্রমের নাম দেওয়া হয়েছে সাগর কুটির। পরবর্তীকালে এই সাগর কুটিরকে কেন্দ্র করে প্রফুল্লচন্দ্র সেন, অতুল্য ঘোষ ও বিজয় মোদকের নেতৃত্বে সারা হুগলি জেলায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে।

উল্লেখ্য, সেই সময় আরামবাগ মহকুমা অত্যন্ত দুর্গম আশ্বাস্থ্যকর এবং অনুন্নত এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। তখন হুগলি থেকে কেউ আরামবাগে আসতেই চাইতেন না। প্রফুল্ল চন্দ্রের হাত ধরেই সবদিক থেকে আরামবাগের উন্নয়ন শুরু হয়। রাজা রামমোহন রায়ের জন্মভূমি ও শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্মভূমি আরামবাগকে প্রথম সম্মান জানিয়েছিলেন প্রফুল্ল চন্দ্র সেন। পরবর্তীকালে আরামবাগ মহকুমাকে কেন্দ্র করে এক সময় হুগলি জেলার স্বাধীনতা আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল প্রফুল্ল চন্দ্র সেনের নেতৃত্বে। স্বাধীনতার পর ১৯৪৮ সালে অসামরিক ও পরে খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর অনাড়ম্বর জীবনযাত্রা, রাজনৈতিক সততা ও নিখাদ দেশপ্রেম আজও অনুপ্রাণিত করে আরামবাগের মানুষকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন