বুধবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৩২
Logo
এই মুহূর্তে ::
অক্ষয়তৃতীয়া, নাকি দিদিতৃতীয়া : অসিত দাস আরএসএস-বিজেপি, ধর্মের তাস ও মমতার তৃণমূল : দিলীপ মজুমদার সাবিত্রি রায় — ভুলে যাওয়া তারার খোঁজে… : স্বর্ণাভা কাঁড়ার ছ’দশক পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত বা সাময়িক অকার্যকর হওয়া নিয়ে প্রশ্ন : তপন মল্লিক চৌধুরী বিস্মৃতপ্রায় বঙ্গের এক গণিতবিদ : রিঙ্কি সামন্ত অসুখবেলার পাণ্ডুলিপি : পুরুষোত্তম সিংহ বাবু-ইংরেজি আর সাহেবি বাংলা : মাহবুব আলম সিন্ধুসভ্যতার ফলক ও সিলে হরিণের শিং-বিশিষ্ট ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি : অসিত দাস বৈশাখ মাসে কৃষ্ণপক্ষে শ্রীশ্রীবরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত সিন্ধুসভ্যতার লিপি যে প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার অকাট্য প্রমাণ : অসিত দাস বাঙালির মায়াকাজল সোনার কেল্লা : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ট্যাটু এখন ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ : রিঙ্কি সামন্ত ফের আমেদাবাদে হিন্দুত্ববাদীদের অন্য ধর্মের উপর হামলা : তপন মল্লিক চৌধুরী লোকসংস্কৃতিবিদ আশুতোষ ভট্টাচার্য ও তাঁর চিঠি : দিলীপ মজুমদার নববর্ষের সাদর সম্ভাষণ : শিবরাম চক্রবর্তী নববর্ষ গ্রাম থেকে নগরে : শিহাব শাহরিয়ার ফিরে আসছে কলের গান : ফজলুল কবির সিন্ধুসভ্যতার ফলকে খোদিত ইউনিকর্ন আসলে একশৃঙ্গ হরিণ : অসিত দাস একটু রসুন, রসুনের কথা শুনুন : রিঙ্কি সামন্ত ১২ বছর পর আরামবাগে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্বের সয়লা উৎসব জমজমাট : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কোনিয়াকদের সঙ্গে দু’দিন : নন্দিনী অধিকারী স্বচ্ছ মসলিনের অধরা ব্যুৎপত্তি : অসিত দাস বাড়বে গরম, চোখের নানান সমস্যা থেকে সাবধান : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী আঠালো মাটি ফুঁড়ে জন্মানো শৈশব : আনন্দগোপাল হালদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

অক্ষয়তৃতীয়া, নাকি দিদিতৃতীয়া : অসিত দাস

অসিত দাস / ৫৮ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

ড. সত্যনারায়ণ দাশের লেখা ‘বাংলায় দ্রাবিড় শব্দ’ বইটিতে আছে, কন্নড় আর তেলুগু ভাষায় ‘অক্কয়’ মানে দিদি। যেমন লক্ষ্মী হল গণেশের অক্কয়। তামিলে আবার ‘অক্কা’ মানে মা। ‘অক্কয়তৃতীয়া’ হল মাতৃসম দিদি লক্ষ্মীর সঙ্গে গণেশের একত্রে পুজো।অপভ্রংশে এটাই আমাদের কাছে অক্ষয়তৃতীয়া। এ-দিনের পুণ্যতিথিতে অনেক দোকানদার হালখাতা করেন।

যদিও অভিধানে অক্ষয়তৃতীয়া এন্ট্রিতে পাই, — “সত্যযুগের প্রথম দিন। এই তিথিতে গঙ্গা মর্ত্যে অবতরণ করেছিল, দানধ্যানে পুণ্য হয়, অক্ষয়কীর্তি, অক্ষয়পরমায়ু হয় লোকে।”

অভিধানের যুক্তির বাইরে আমার চিন্তাটি সাবঅলটার্ন গোত্রের। যদিও আমার আরাধ্য দেবী গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক নন, আমার আরাধ্য দেবতা এদেশে সাবঅলটার্ন স্টাডিজের জনক রণজিৎ গুহ।

প্রচলিত মতের বাইরে কোনও বিকল্প মতের কথা বললে বঙ্গীয় বিদ্বজ্জনসমাজ ভিরমি খায়। নানা রকম বক্রোক্তি ও কটূক্তি ভেসে আসে। তবু আমি নাচার।

অধিকন্তু দ্বিতীয় একটি বিকল্প সূত্রের সন্ধান দিচ্ছি।

রাবণের এক পুত্রের নাম অক্ষয়। রাক্ষসসেনাপতি এই ষোড়শবর্ষীয় কিশোর ছিল মহাবীর। রাবণ তাকে অশোকবনে পাঠিয়েছিল হনুমানকে অশোকবটিকা নষ্ট করার অপরাধে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে। হনুমানের হাতে অক্ষয় বধ হয়। তার মৃত্যু দিয়েই লঙ্কার পতন শুরু। রাবণের মৃত্যু দিয়ে তার শেষ হয়। হনুমানকে যথেষ্ট লড়তে হয়েছিল তাকে মারতে। অক্ষয়তৃতীয়া তার নাম থেকেই এসেছে বললে সত্যের অপলাপ হবে না। অনার্য লঙ্কাসাম্রাজ্যের পতনের শুরু যাকে দিয়ে, তার হত্যা আর্যসমাজের কাছে উৎসবের দিন তো হবেই।

রামায়ণ-মহাভারত-পুরাণ থেকে অনেক হিন্দুউৎসব এসেছে। বিজয়াদশমী, দীপাবলী, রামনবমী, দশেরা, জন্মাষ্টমী, ভীষ্মাষ্টমী ইত্যাদি। অক্ষয়তৃতীয়াও তাই রামায়ণোদ্ভূত বললে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।

আসলে অক্ষয়তৃতীয়ার উৎপত্তি নিয়ে পণ্ডিতরা এত কথা বলেছেন যে, বিভ্রান্তি জাগবেই মনে। সত্যযুগের প্রথমদিন নাকি এটি। কেউ কেউ বলেন ত্রেতাযুগের। ভগীরথের গঙ্গাকে মর্ত্যে আনয়নের দিন নাকি এটি। পরশুরামের জন্মদিন, চন্দনযাত্রা শুরুর দিন, মা অন্নপূর্ণার আবির্ভাবের দিন। ধরিত্রীপূজার দিন। কুবেরের মহাদেবের কাছে বরপ্রাপ্তির দিন। বৈভবলক্ষ্মীর পূজা শুরুর দিন। ব্যাসদেব ও গণেশকর্তৃক মহাভারত রচনা শুরুর দিন। বিষ্ণু-মহালক্ষ্মীর পূজার দিন, লক্ষ্মীগণেশের পূজার দিন। দানধ্যানের দিন। স্বর্ণসঞ্চয়ের দিন। আরও কত কী। মানুষ বিভ্রান্ত তো হবেই।

এবার একটু ব্যাকরণের কথা বলি। অক্ষয়তৃতীয়ায় অক্ষয় শব্দটিকে যে অর্থে ধরা হয়, তাতে এটি বিশেষণ পদ। কিন্তু আমাদের পূজাপার্বণের দিনগুলিতে সবই নামবাচক বিশেষ্যের পর তিথি যোগ করা হয়েছে। বিজয়াদশমী, রামনবমী, বুধাষ্টমী, ভীষ্ম-অষ্টমী, জামাইষষ্ঠী, — সবই বিশেষ্যের পরে তিথি যোগ করে। অক্ষয় মানে ক্ষয়হীন বা বিনাশহীন ধরা হয়, তাই বিশেষণ পদ। তাই খটকা লাগবেই।

অক্ষয়তৃতীয়া দ্রাবিড় সংস্কৃতি থেকে সনাতন হিন্দু সংস্কৃতিতে এসেছে কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। মনসা-চণ্ডী-বনদুর্গা-ঘটলক্ষ্মী-বাসলী-শ্মশানকালী-ইতু-কৃষিজীবী শিব প্রমুখ দেবদেবী যদি দ্রাবিড় সংস্কৃতি থেকে আসতে পারে, অক্ষয়তৃতীয়া না আসার কিছু নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন