শনিবার | ৫ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৪৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (দ্বিতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ হুমায়ুন-এক স্মৃতি-এক আলাপ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সনজীদা যার সন্তান : শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ অবসর ঠেকাতেই মোদী হেডগেওয়ার ভবনে নতজানু : তপন মল্লিক চৌধুরী লিটল ম্যাগাজিনের আসরে শশাঙ্কশেখর অধিকারী : দিলীপ মজুমদার রাঁধুনীর বিস্ময় উন্মোচন — উপকারীতার জগৎ-সহ বাঙালির সম্পূর্ণ মশলা : রিঙ্কি সামন্ত রামনবমীর দোল : অসিত দাস মহারাষ্ট্রে নববর্ষের সূচনা ‘গুড়ি পড়বা’ : রিঙ্কি সামন্ত আরামবাগে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে আরাধনার মধ্য দিয়ে দিঘীর মেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘বিজ্ঞান অন্বেষক’ পত্রিকার ২২তম বর্ষ উদযাপন : ড. দীপাঞ্জন দে হিন্দিতে টালা মানে ‘অর্ধেক’, কলকাতার টালা ছিল আধাশহর : অসিত দাস আত্মশুদ্ধির একটি বিশেষ দিন চৈত্র অমাবস্যা : রিঙ্কি সামন্ত চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় : ড. দীপাঞ্জন দে রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল জৈব কৃষি বিপণন হাট অশোকবৃক্ষ, কালিদাসের কুমারসম্ভব থেকে অমর মিত্রর ধ্রুবপুত্র : অসিত দাস কৌতুকে হাসতে না পারলে কামড় তো লাগবেই : তপন মল্লিক চৌধুরী জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর ও রোহিঙ্গা সংকটে অগ্রগতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন এথেন্সের অ্যাগনোডাইস — ইতিহাসের প্রথম মহিলা চিকিৎসক : রিঙ্কি সামন্ত সন্‌জীদা খাতুন — আমার শিক্ষক : ড. মিল্টন বিশ্বাস হিমঘরগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ আলু মজুত, সস্তা হতে পারে বাজার দর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শিশুশিক্ষা : তারাপদ রায় জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ অন্নপূর্ণা পূজা ও বাসন্তী পূজার আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

নেতাজিনগর বিদ্যামন্দিরে ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ‘পেজ ফোর’

পেজফোর, বিশেষ প্রতিনিধি / ২২০ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫

২২ মার্চ। সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। টিপ টিপ বৃষ্টি। আশঙ্কা মনে। বিকেলের অনুষ্ঠান হবে তো! দিন কয়েক আগে এসেছিল অরিন্দম দাশগুপ্ত আর দীপাঞ্জন দাশ। ১৯৮৯ সালের ব্যাচ। আমাদের প্রাক্তন ছাত্র। তারা পুনর্মিলন উৎসব করতে চায়। যেতে হবে। তার কয়েকদিন বাদে কৌশিকের ফোন। কৌশিক চন্দ। আইনচর্চা করেত সে। তারপর বিচারক। আমার মনে ভেসে উঠল কতকাল আগের ছবি। বকুলগাছের তলায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে একাদশ শ্রেণির ছাত্র তরুণ কৌশিক। আমি তাকে নরমে-গরমে বকে যাচ্ছি। আজ সে অরিন্দম, দীপাঞ্জনের মতো যৌবন অতিক্রান্ত, সন্তানের পিতা। আমি মনে মনে তাদের বলছিলাম : ‘আমাদের দিকে তাকিয়ে তোরা তোদের মনে মনে বলছিস নিশ্চয়ই : আমিও তোমার মতো বুড়ো হবো/বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেবো কালীদহে বেনোজলে পার/আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের বিপুল ভাঁড়ার’।

কৌশিক, অরিন্দম, দীপাঞ্জনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিক্রম দাশগুপ্ত, সুবিত মজুমদার, আশিস ব্যানার্জী, দেবাশিস মজুমদার, মানস ভট্টাচার্য, সৌরভ গুহ ঠাকুরতা, মনীশ চক্রবর্তী, দেবাশিস মুখার্জী, শান্তনু রায়, দিবাকর সেন, সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জী, ত্রিদিব সেনগুপ্ত, প্রশান্ত রায়, সৌমিক দাস, পুলক বিশ্বাস। অল্প দিনের মধ্যে বিপুল আয়োজন করে ফেলেছে তারা। বিপুল অথচ সুশৃঙ্খল। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য ফুলের তোড়া, শাল, মেমেন্টো। সেই সঙ্গে রসনাতৃপ্তির আয়োজনটাও রসনালোভন। স্কুল প্রাঙ্গনের উপর শামিয়ানা, সুন্দর মঞ্চশয্যা। আমি ভাবছিলাম অকাল বর্ষণ এদের এই আয়োজন পণ্ড করে দেবে নাতো! ঈশ্বরে আমার তেমন বিশ্বাস নেই, কিন্তু প্রাক্তন ছাত্রদের এই আন্তরিক আয়োজন পণ্ড হয় যদি, তাহলে আমি ঈশ্বরকে ক্ষমা করব না।

ঠিক বিকেল চারটেতে অরিন্দমের ফোন। তখন বৃষ্টি থেমে গেছে। একটু রোদের আভা দেখা দিয়েছে। অরিন্দম বলল, তারা গাড়ি পাঠিয়েছে, ছাতা পার্কের কাছে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি। শুধু আমার জন্য নয়, প্রতিটি শিক্ষকের জন্য গাড়ি পাঠিয়েছে তারা। আমি আর মানিক মুখার্জী পাঁচটা নাগাদ পৌঁছে গেলাম নেতাজিনগর বিদ্যামন্দিরে। দেখি গেটের কাছে হন্তদন্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা দেবযানী দে। আমার মতো তিনিও মেদিনীপুরের ভূমিপুত্রী। তিনি অভিযোগ করে বললেন, ‘আপনার সঙ্গে আলাপ করব বলে আগে আপনাকে ফোন করেছি, আপনি আসেন নি। আজ কিন্তু আপনি এলেন।’ আমি বললাম, ‘এটা যে ছাত্রদের ডাক। আগে আমরা ছিলাম তাদের অভিভাবক, এখন তারাই যে আমাদের অভিভাবক। অভিভাবকের কথা না শুনে উপায় যে নেই।’

মঞ্চের ভেতরে ঢুকে দেখি জীবন্ত হয়ে উঠেছে অতীত। পুরানো দিনের গন্ধে ম ম করছে চারদিক। তিন যুগ আগের সহকর্মীরা হাজির সেখানে। মেয়ের হাত ধরে সেই বেলঘরিয়া থেকে এসেছেন বেশ অসুস্থ সুভাষ বসু। নিষেধ করেছিল মেয়ে। শোনেন নি। বলেছেন, ‘রাস্তায় যদি মরে যাই, যাব ; তবু যাব, যেতে হবেই।’ বিজয়গড় থেকে তাঁর মেয়ে নিয়ে নিয়ে এসেছে অঞ্জন চক্রবর্তীকে। খড়গপুর থেকে এসেছেন শান্তনু পাল। বর্ধমান থেকে এসেছেন প্রবীর সামন্ত। সুদূর নেপাল থেকে এসেছেন ‘বাহাদুর’ নামে পরিচিত শিক্ষাকর্মী হরিপ্রসাদ শর্মা। এসেছেন ভগীরথ জানা, বলাই দে, অভিজিৎ ব্যানার্জী, কাঞ্চন বসু, কল্যাণ মীরবর, সীমা ভাদুড়ী, তড়িৎ শঙ্কুয়া, সমীর দাস। চুপচাপ বসে নেই বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। লনে, টিচার্স রুমে, দোতলায় নানা কাজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রবীণ ও নবীন গুরুদাস বেরা, বিদ্যাসাগর আচার্য, অরবিন্দ মণ্ডল, অনুপম গায়েন, অলক দাস মহাপাত্র, দেবাঞ্জন দাস, মানস গাঙ্গুলী, কার্তিককুমার মণ্ডল, সুজাতা স্বর্ণকার, স্বপ্না ঘোষ, সুরেশ সরকার, সোমা সরকার, অপরাজিতা ব্যানার্জী, শুভাশিস ব্যানার্জী, সুশান্ত সরদার, বকুল সোরেন, সুদীপ্ত দত্ত, অর্ণব ভট্টাচার্য, সুবলচন্দ্র দাস, অভিজিৎ দাস, মামিন ভট্টাচার্য, নবনীতা গুপ্তা, অদিতি দাস, সুশান্ত দাস, তন্ময় সিনহা।

মঞ্চের একধারে টেবিলের উপর প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ দাসের ছবি। তাঁর ছেলে সুজনও আমাদের ছাত্র। তাকে দেখলাম ঘুরে বেড়াতে। আইনজীবী পল্লব কাঞ্জিলাল আর সঞ্জয় ভট্টাচার্যও আমন্ত্রিত। ঘোষক কৌশিকের ডাকে একে একে আসছেন প্রাক্তন শিক্ষকরা, অরবিন্দ দাসের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন, প্রাক্তন ছাত্রদের শ্রদ্ধা ও উপহার গ্রহণ করছেন তাঁরা, স্মৃতিচারণা করছেন। এভাবে অতীতের সৌরভে ভরে উঠছে চারদিক। নস্টালজিয়া। পুরানো সেই দুনের কথা সে কি ভোলা যায়!

সুশান্ত দাস আমাদের প্রাক্তন ছাত্র। এখন সে প্যারা টিচার। তার আরও একটা পরিচয় আছে। সে চিত্রশিল্পী। এবার ‘ পেজ ফোর’ পত্রিকার শারদ সংখ্যার প্রচ্ছদ এঁকেছে সে। কৌশিককে সে তার ছবি, ‘রাধাকথা কৃষ্ণকথা’ নামে একটা বই আর ‘পেজ ফোরে’র শারদ সংখ্যা উপহার দিতে চায়। আমি বলতে রাজি হয়ে গেল কৌশিক। সে তখন বিচারকের গাম্ভীর্য ত্যাগ করে ছত্রিশ বছর আগের জীবনে ফিরে গেছে। এভাবে ‘পেজ ফোর’ ঢুকে পড়ল ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায়। ফটোসহ প্রতিবেদন ছাপতেও রাজি হয়ে গেলেন তার উদার সম্পাদক জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমরা ফিরে এলাম অনেকটা জীবনীশক্তি নিয়ে। তার মানে আরও কিছুকাল বাঁচার রসদ। ফেরার সময় মনে পড়ছিল জীবনানন্দ। আমাদের আনন্দের অবকাশ বেশি নয়। ঠিক। তবু এটাও ঠিক যে দুঃখ বিপদ মৃত্যুকে জয় করার মন্ত্র মানুষই জানে। সে যখন বিবাদ ও বিরোধ ভুলে স্বার্থবদ্ধ জীবনের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে, তখনই সে জয় করে মৃত্যুকে। আমাদের ঠাকুর বলেছেন : ‘আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া, বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া।’

লেখক প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নেতাজীনগর হাইস্কুল


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন


Statcounter Statcounter