রবিবার কলকাতার প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গর্জে উঠল দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ। সম্মেলনে মুখ্য বিষয় ছিল সম্প্রতি যাদবপুর কাণ্ডে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে। এদিন স্পষ্ট ভাষায় পূর্ণেন্দু বসু বলেন, যাদবপুর কাণ্ডে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে । আমরা চাই স্বাভাবিক হোক। বৃহত্তর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলছে। এটা বন্ধ করতে হবে। অধ্যাপক দীপঙ্কর দে জানান, এ রাজ্যের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যা চলছে, সেই অবস্থা থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে আসতে হবে। শিক্ষার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অযথা নাক গলাচ্ছে। ফলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি তৈরি হচ্ছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অনন্যা চক্রবর্তী সম্মেলনে বলেন, যাদবপুরের ঘটনায় আমি লজ্জিত ও ব্যথিত। মনে রাখতে হবে মুক্তমনা মানে স্বৈরাচারী নয়। এছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত প্রদীপ্ত গুহঠাকুরতা, শিল্পী সৈকত মিত্র, সুশান রায়, বর্ণালী মুখোপাধ্যায়, পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়, রন্তিদেব সেনগুপ্ত-র মতো বিশিষ্টজনেরা যাদবপুরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বলেন, বাংলার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এখানকার ছাত্রছাত্রীদের উন্নয়নের স্বার্থে ও গবেষণার স্বার্থে। আবার শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক।
প্রসঙ্গত, এদিন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের পক্ষ থেকে গর্জে ওঠেন ডাঃ সিদ্ধার্থ গুপ্ত, সোমা চক্রবর্তী, রাহুল চক্রবর্তী, বিভান ঘোষ প্রমুখ। এঁরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ছাত্রছাত্রীরা আমাদের ঘরের সন্তান। তারা অছাত্রীসুলভ আচরণ করলে মানা যায় না। অনভিপ্রেত অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত স্বাভাবিক হোক। হুমকি ও পাল্টা হুমকির মধ্য দিয়ে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভায় বাম-অতিবাম পড়ুয়াদের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আক্রান্ত হতে হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। যেতে হয় এসএসকেএমে। ভাঙা হয়েছে তাঁর গাড়ির কাচও। পড়ুয়াদের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছেন প্রাক্তন উপাচার্য তথা যাদবপুরের প্রবীণতম অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র। আক্রান্ত হয়েছে তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির অফিসও। রীতিমতো দুষ্কৃতীদের কায়দায় তাণ্ডব চালিয়ে অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। মন্ত্রীর গাড়ি থামাতে গিয়ে জখম হয়েছেন কয়েকজন পড়ুয়াও। তাঁদের মধ্যে একজনের আঘাত বেশ গুরুতর। এরপরই উত্তাল হয়ে ওঠে যাদবপুর। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। পথে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে গর্জে উঠল দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ। তারই ফলস্বরূপ এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন।