শুক্রবার | ২৫শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:২৬
Logo
এই মুহূর্তে ::
সিন্ধুসভ্যতার ফলক ও সিলে হরিণের শিং-বিশিষ্ট ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি : অসিত দাস বৈশাখ মাসে কৃষ্ণপক্ষে শ্রীশ্রীবরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত সিন্ধুসভ্যতার লিপি যে প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার অকাট্য প্রমাণ : অসিত দাস বাঙালির মায়াকাজল সোনার কেল্লা : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ট্যাটু এখন ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ : রিঙ্কি সামন্ত ফের আমেদাবাদে হিন্দুত্ববাদীদের অন্য ধর্মের উপর হামলা : তপন মল্লিক চৌধুরী লোকসংস্কৃতিবিদ আশুতোষ ভট্টাচার্য ও তাঁর চিঠি : দিলীপ মজুমদার নববর্ষের সাদর সম্ভাষণ : শিবরাম চক্রবর্তী নববর্ষ গ্রাম থেকে নগরে : শিহাব শাহরিয়ার ফিরে আসছে কলের গান : ফজলুল কবির সিন্ধুসভ্যতার ফলকে খোদিত ইউনিকর্ন আসলে একশৃঙ্গ হরিণ : অসিত দাস একটু রসুন, রসুনের কথা শুনুন : রিঙ্কি সামন্ত ১২ বছর পর আরামবাগে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্বের সয়লা উৎসব জমজমাট : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কোনিয়াকদের সঙ্গে দু’দিন : নন্দিনী অধিকারী স্বচ্ছ মসলিনের অধরা ব্যুৎপত্তি : অসিত দাস বাড়বে গরম, চোখের নানান সমস্যা থেকে সাবধান : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী আঠালো মাটি ফুঁড়ে জন্মানো শৈশব : আনন্দগোপাল হালদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

সাম্প্রতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের সাংবাদিক সম্মেলন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ১৮ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

মঙ্গলবার দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের সাংবাদিক সম্মেলন কলকাতার প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হল। এদিন রাজ্যের সাম্প্রতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গণমঞ্চের প্রতিনিধিরা তাঁদের মূল্যবান মতামত তুলে ধরেন। গণমঞ্চের বক্তাদের মুখ্য আবেদন ছিল গত কয়েক মাস ধরেই আমরা লক্ষ করছি, বিজেপি, আরএসএস এবং সংঘ পরিবারের বিভিন্ন শাখা সংগঠন এই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তেজক করে তুলতে চাইছে। চাইছে, রাজ্যের সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করে হিন্দু মুসলমানে দাঙ্গা বাধিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে। বিজেপি সংঘের এটা অতি পরিচিত একটি ঘৃণ্য রাজনৈতিক কৌশল। এর আগেও আমরা দেখেছি, বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনের প্রাক্কালে সাম্প্রদায়িক বিভাজন করে সংঘ পরিবার ফায়দা লুটতে চেয়েছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রাজ্যেও সেই একই খেলা খেলতে নেমেছে সংঘ পরিবার। বাংলা এবং বাঙালিকে আর্থিক দিক থেকে নানাভাবে বঞ্চিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ তারা দিচ্ছে না। বিভিন্ন প্রকল্পে নানা মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ অর্থ আটকে রাখছে। রাজ্যপালের মাধ্যমে অবাঞ্ছিত ভাবে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এতদসত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত এই রাজ্যে ক্ষমতা অধরাই রয়ে গিয়েছে সংঘ পরিবারের। শেষ পর্যন্ত বাঁকা পথে ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় মরিয়া সংঘ পরিবার। এরা এখন ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। গত কয়েক মাসে এই রাজ্যে বিজেপি নেতাদের আচার আচরণ এবং কথাবার্তা লক্ষ করলেই বোঝা যাবে, কী পরিমাণে প্রতিদিন তাঁরা সাম্প্রদায়িক প্ররোচনা দিয়ে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগে মালদহ জেলার মোথাবাড়িতে একটি অবাঞ্ছিত এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে কেন্দ্র কারে যেভাবে রং চড়িয়ে বিজেপি নেতারা প্ররোচনামূলক বক্তব্য রাখতে শুরু করেছিলেন, তাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটার আশঙ্কা ছিল।

প্রসঙ্গত, এদিন উপস্থিত ছিলেন পূর্ণেন্দু বসু, সমীর পূততুণ্ড, রন্তিদেব সেনগুপ্ত, পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ণালী মুখোপাধ্যায়, সুমন ভট্টাচার্য, সৈকত মিত্র, দেবজ্যোতি বোস প্রমুখ। বক্তারা সমালোচনা করে বলেন, আমরা রাজ্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ দেব যে, তাদের দ্রুত সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। স্থানীয় মানুষও বিজেপি নেতাদের উসকানিতে কর্ণপাত না করে সম্প্রীতি বজায় রাখতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। সেই সময় বারবার রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব পক্ষকে যখন সংযত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে, তখন সকলে সেই অনুরোধে সাড়া দিলেও বিজেপি নেতারা তা শোনেননি। তাঁরা উসকানির রাজনীতি জারি রেখেছেন। এই রাজ্যের বিরোধী বিজেপি দলনেতা প্রকাশ্যে বলেছেন, ক্ষমতায় এলে তাঁরা মুসলমান বিধায়কদের চ্যাংদোলা করে বিধানসভার বাইরে ফেলে দেবেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি, তিনি ইউনিয়ন সরকারের একজন মন্ত্রীও বটে, নিয়মিত রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সম্পর্কে কটূক্তি করে গিয়েছেন। হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার মতো প্ররোচনামূলক কথাও বলেছেন। আমরা অবাক হয়েছি এই ভেবে যে, সাংবিধানিক পদে থাকা সত্ত্বেও এই ধরনের কথা এঁরা বলেন কিভাবে। এই বছর রামনবমী উৎসবের প্রাক্কালেও সংঘ পরিবারের উসকানি আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন যথেষ্ট সতর্ক ছিল এবার। রামনবমী উৎসবে কোনো অবাঞ্ছিত ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য আগাম ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছিল প্রশাসন। তদুপরি রামনবমীর দিন এই রাজ্যের মুসলমান সমাজের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অনেক জায়গাতেই রামনবমীর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের তারা জল মিষ্টি বিতরণ করেছেন। সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়ে তুলেছেন। ফলে সংঘ পরিবারের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কৌশল মাঠে মারা গিয়েছে।

সম্প্রতি ইউনিয়ন সরকার অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক ওয়াকফ বিল সংসদে রাতের অন্ধকারে পাশ করিয়ে তাকে সংশোধিত ওয়াকফ আইনে পরিণত করেছে। এই অগণতান্ত্রিক আইনের বিরুদ্ধে দেশের সব ধর্মের, সব বর্ণের, সব শ্রেণির গণতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন মানুষ গর্জে উঠেছেন। এই আইন বাতিলের দাবি করেছেন। এই আইন যে শুধু সংখ্যালঘু মুসলিম সমাজের ন্যায্য অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করেছে তা নয়, এই আইন সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকারের উপরও কুঠারাঘাত করেছে। ইতিমধ্যেই এই আইনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন অংশে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। অগণতান্ত্রিক সংশোষিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছেন আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণা করে দিয়েছেন, সংশোধিত ওয়াকফ আইন এই রাজ্যে কার্যকর হবে না। রাজ্যের শাসক দলের সাংসদরা এই আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে। সুপ্রিম কোর্ট এই সংশোধিত ওয়াকফ আইনের তিনটি ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দিতে পারে এই সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। বিপাকে পড়ে ইউনিয়ন সরকারও কিছুটা পিছু হটেছে। এই পরিস্থিতিতে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলায় সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভের সুযোগ নিয়ে দুই জেলাতেই মিথ্যা ভুয়ো খবর ছড়িয়ে বিজেপি সংঘ পরিবার সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। হিংসা ছড়িয়েছে। তার ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাণহানির মতো কিছু দুঃখজনক ঘটনাও ঘটেছে। তবে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। অশান্তি অন্যত্র ছড়ায়নি। দুই জেলারই হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ দাঙ্গাকারীদের চিহ্নিত করেছেন। জনজীবন থেকেও বিচ্ছিন্ন করেছেন তাদের।

পরে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহের সাম্প্রতিক ঘটনা আবার সংঘ পরিবারের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে সামনে এনেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবার অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনার পিছনে বহিরাগতদের প্ররোচনা রয়েছে। তাঁর অভিযোগ যে মিথ্যা ছিল না, তা প্রমাণিত হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত যাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে তাদের ভিতর বেশির ভাগই স্থানীয় মানুষ নয়। স্থানীয় মানুষরাই অভিযোগ করেছেন, বাইরে থেকে লোক এসে গণ্ডগোল পাকিয়েছে। যারা ধরা পড়েছে, তাদের ভিতর স্থানীয় বিজেপি নেতারাও রয়েছে। স্থানীয় পুলিশ কর্মীদের ভিতর কেউ কেউ সংঘ পরিবারের সঙ্গে এই চক্রান্তে জড়িত ছিলেন। তাদেরও পুলিশ প্রশাসন চিহ্নিত করেছে। এরকম এক পুলিশ আধিকারিককে আটক করাও হয়েছে। পুলিশি তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে এক হাজারেরও বেশি ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে মিথ্যা খবর ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক খোদ ইউনিয়ন সরকারের মন্ত্রী এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও এই ধরনের জাল ভুয়ো খবর ফেসবুক থেকে ছড়িয়েছেন। আমরা মাননীয়া রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি করছি অবিলম্বে সুকান্ত মজুমদারকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করুন। রাজ্য প্রশাসনের কাছে দাবি করছি, অবিলম্বে তদন্ত করে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

মুখ্যমন্ত্রী আগেই অভিযোগ করেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীদের ঢুকিয়ে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলায় অশান্তি করা হয়েছে। সম্প্রতি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্যেও এই সত্য ধরা পড়েছে। সীমান্ত সামলানোর দায়িত্ব বিএসএফের। ইডি সিবিআইয়ের মতো বিএসএফও ইউনিয়ন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের অধীনে। বিএসএফের দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও কিভাবে বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা ঢুকে দুই জেলায় হাঙ্গামা বাঁধালো তার সুস্পষ্ট উত্তর অমিত শাহকেই দিতে হবে। আমাদের আশঙ্কা বাংলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার যে চক্রান্ত চলছে তার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বিএসএফ এরও একাংশ। মনে রাখতে হবে স্থানীয় মানুষরাই অভিযোগ করেছেন, মুর্শিদাবাদে বিএসএফের গুলিচালনাতেই মানুষের প্রাণ গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ এবং মালদহের ঘটনায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকার তীব্র নিন্দা না করে আমরা পারছি না। মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যখন বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে, এই মুহূর্তে ওই এলাকাগুলিতে গিয়ে কেউ নতুন করে প্ররোচনা ছড়াবেন না, সকলেই শান্ত এবং সংযত থাকুন, তখন রাজ্যপাল সেই আবেদনে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেননি। তিনি মালদহে চলে গিয়েছেন। মালদহের একটি ত্রাণ শিবিরে তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে সাময়িক উত্তেজনারও সৃষ্টি হয়েছে। কতখানি অবিবেচক হলে এই কাজ একজন রাজ্যপাল করতে পারেন। অবশ্য সিভি আনন্দ বোস কখনওই বিবেচকের মতো কাজ করেননি। তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, বাংলার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য যা যা করা দরকার সেসবই করে চলেছেন।

আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে এ-ও দাবি করি, সিভি আনন্দ বোসের মতো এমন একজন ব্যক্তিকে অবিলম্বে রাজ্যপালের পদ থেকে অপসারণ করা হোক। শুধু রাজ্যপাল কেন। কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন এবং মহিলা কমিশন, যারা আজ অবধি মণিপুরের হিংসাবিধ্বস্ত এলাকায় যাওয়ার সময় করে উঠতে পারে না, তারাও তড়িঘড়ি ছুটে এসেছে মালদহ মুর্শিদাবাদে। এই দুটি কমিশনই বিজেপি নিয়ন্ত্রিত। দুটি কমিশনেরই সদস্যপদে রয়েছেন বিজেপির নেতানেত্রীরা। এদের সঙ্গী হয়ে বিজেপির বিধায়কও এলাকায় ঘুরেছেন। কী উদ্দেশ্যে এরা এসেছেন তা ব্যাখ্যা না করে বললেও চলে। যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে তখন নতুন করে আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলাই যে রাজ্যপাল এবং এইসব কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশ্য ছিল তা-ও এখন পরিষ্কার। আসলে বিজেপি এবং সংঘ পরিবার চাইছে ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে এই রাজ্যে তুষের আগুনের মতো ধিকিধিকি সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বলতেই থাকুক। আমাদের অবাক করেছে হাইকোর্টের কয়েকজন মাননীয় বিচারপতির ভূমিকাও। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যখন এই অঞ্চলগুলিতে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার স্বার্থেই সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকেই আপাতত এখানে আসা থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে, তখন আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম হাইকোর্টের কোনো কোনো মাননীয় বিচারপতি ওইসব অঞ্চলে বিজেপি নেতাদের সফরের পক্ষে রায় দিয়ে দিচ্ছেন। মাননীয় বিচারপতিদের কাছে আমাদের একটিই প্রশ্ন, ওই নেতাদের সফরের পরে যদি আবার নতুন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তার দায় কে নেবেন? সেক্ষেত্রে আপনারাও কি পরোক্ষে দায়ী থাকবেন না?

বিচারপতিদের রায় নিয়ে আমাদের কিছু বলার অধিকার নেই। কিন্তু এটুকু অনুরোধ তো তাঁদের আমরা করতে পারি যে, এই ধরনের পরিস্থিতিতে রায় দেওয়ার আগে আর একবার বিবেচনা করুন। নয়তো পরে আপনাদের রায় নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। বিজেপি এবং সংঘ পরিবার নানাভাবে বাংলাকে, বাঙালিকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। তাদের সব রকম অপচেষ্টা বিফলে যাওয়ার পর এখন তারা এই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক তাস খেলতে চাইছে। যারাই এই ধরনের সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়, সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করতে চায় আমরা তাদের বিরোধিতা করি। এই ধরনের যেকোনো অপচেষ্টার নিন্দা করি আমরা। বাংলার মানুষের উপর আমাদের বিশ্বাস রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি অতীতের মতো এবারও বাংলার মানুষ বিজেপি এবং সংঘ পরিবারের এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবেন। প্রমাণ করে দেবেন, বাংলার মাটিতেই সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন