রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:০৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
একটু রসুন, রসুনের কথা শুনুন : রিঙ্কি সামন্ত ১২ বছর পর আরামবাগে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্বের সয়লা উৎসব জমজমাট : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কোনিয়াকদের সঙ্গে দু’দিন : নন্দিনী অধিকারী স্বচ্ছ মসলিনের অধরা ব্যুৎপত্তি : অসিত দাস বাড়বে গরম, চোখের নানান সমস্যা থেকে সাবধান : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী আঠালো মাটি ফুঁড়ে জন্মানো শৈশব : আনন্দগোপাল হালদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

১২ বছর পর আরামবাগে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্বের সয়লা উৎসব জমজমাট : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ৪৭ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

১২ বছর পর আবার শোলার মালা হাতে অচেনা অজানা মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব। ঘরে ঘরে আত্মীয় স্বজনের ভিড়। হাজার হাজার মানুষের বন্ধুত্বের মেলবন্ধনে মুখর তিনটি গ্ৰাম। ১৯ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল আরামবাগের উত্তর বাদলকোনা, দক্ষিণ বাদলকোনা ও নির্ভয়পুর গ্ৰামে শুরু হয়েছে সই ও স্যাঙাত পাঠানোর প্রাচীন পর্ব। এক কথায় সয়েলা উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে মনসা পূজা, বাউল গান ও যাত্রাপালা শুরু হয়েছে। মূল লক্ষ্য একটাই অচেনা অজানার সঙ্গে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্ব পাতানোর সুযোগ। যা চিরকাল বন্ধুত্বের বন্ধনে অটুট থাকবে। এই প্রথা আজও চলে আসছে। তবে ১২ বছর অন্তর এই উৎসবকে ঘিরে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষায় থাকেন।

প্রসঙ্গত, সয়লা উৎসব বা সই স্যাঙাত উৎসব হল একটি সামাজিক অনুষ্ঠান যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ একে অপরের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। এই উৎসবে মেয়েরা “সই” (সখী) এবং ছেলেরা “স্যাঙাত” হিসাবে বন্ধুত্বের বন্ধন তৈরি করে। এই উৎসব আরামবাগ ছাড়াও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন গ্রামে ‘অনুষ্ঠিত হয়। বন্ধু পাঠানোর মূল মন্ত্র হল — ‘কথা দিলাম সুখে-দুঃখে পাশে থাকব’।

প্রায় ২৫০ বছর পরেও অম্লান আরামবাগের বন্ধু পাতানোর এই উৎসব। নিজের পছন্দমতো বন্ধু খুঁজে তাঁর সঙ্গে সই পাতান গ্রামের আট থেকে আশি। পছন্দের সাথী’র গলায় মালা পরিয়ে ডালা বদল করে লোকায়ত মন্ত্রের মাধ্যমে সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার শপথ নেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, আরামবাগের তিনটি গ্ৰামে স্থানীয়েরা একে বলেন ‘সয়লা উৎসব’। যে উৎসবে একে অপরের গলায় মালা পরিয়ে সই পাতিয়ে শপথ নেন দু’জন মানুষ। হাতে হাত রেখে প্রতিশ্রুতি দেন সুখে-দুঃখে, আনন্দে-বিষাদে, সব সময়ে একে অপরের পাশে থাকার। এখানে ১২ বছর অন্তর সয়লা উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রস্তুতি শুরু হয় এক মাস আগে। এক মাস ধরে গ্রামের সমস্ত মন্দিরে গিয়ে পান-সুপুরি দিয়ে দেবদেবীকে আমন্ত্রণ জানান গ্রামবাসীরা। সয়লা উৎসবের দিন শোভাযাত্রা করে গ্রামের সমস্ত দেবদেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় সয়লার মাঠে। সেখানে পুজোআচ্চার পর শুরু হয় বন্ধুত্ব পাতানোর উৎসব। নিজের পছন্দমতো বন্ধু খুঁজে তাঁর সঙ্গে সই পাতানো হয়। ‘পছন্দের সাথী’র গলায় মালা পরিয়ে ডালা বদল করে বিশেষ লোকায়ত মন্ত্রের সাহায্যে সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার শপথ নেন তাঁরা। শনিবার সয়লার মাঠে আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হল সেই উৎসব। দিনভর সই পাতানোর সেই উৎসব চলল। এখানকার বাসিন্দা জয়দেব সোম, রিক্তা পাল বলেন, “এই উৎসব আমাদের এলাকার প্রতিটি গামের কাছে গর্বের। আমরা এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করি।” আরও বলেন, “এই উৎসব এলেই জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পুরুষেরা পুরুষ বন্ধু এবং মহিলারা মহিলা বন্ধু খুঁজে সই পাতান। সেই সই সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার শপথ নেন। অনেকে পুরনো বন্ধুকেই সই পাতিয়ে ঝালিয়ে নেন বন্ধুত্ব।”

“উপরে খই, নিচে দই তুমি আমার জন্মের সই”। এভাবেই মুখরিত হল উৎসব প্রাঙ্গন। প্রতিবারের মতো এবারেও ‘সহেলা’ (সয়লা) মেলা বসেছে।

প্রসঙ্গত, মনসা পূজার মধ্য দিয়ে নিজেদের মধ্যে বন্ধন অটুট করার উৎসব এই ‘সহেলী’ বা ‘সহেলা’ বা চলতি কথায় ‘সয়লা’। এই “সই পাতানি” একসময় বাংলার অন্যতম সুন্দর উৎসব ছিল। শুধু মেয়েতে-মেয়েতে নয়, পুরুষে পুরুষেও সখ্য (স্যাঙাত) পাতানো হত। তাতে পরস্পরের সুখে দুঃখে আজীবন ভাগী হওয়ার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা হত। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া’য় থাকা ‘ফ্রেন্ড’-এর চেয়ে এ বন্ধুত্বের আয়ু অনেকগুণ বেশি। তাই সয়েলা উৎসব আজও আরামবাগে অটুট।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন