শুক্রবার | ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১১:২৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (দ্বিতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ হুমায়ুন-এক স্মৃতি-এক আলাপ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সনজীদা যার সন্তান : শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ অবসর ঠেকাতেই মোদী হেডগেওয়ার ভবনে নতজানু : তপন মল্লিক চৌধুরী লিটল ম্যাগাজিনের আসরে শশাঙ্কশেখর অধিকারী : দিলীপ মজুমদার রাঁধুনীর বিস্ময় উন্মোচন — উপকারীতার জগৎ-সহ বাঙালির সম্পূর্ণ মশলা : রিঙ্কি সামন্ত রামনবমীর দোল : অসিত দাস মহারাষ্ট্রে নববর্ষের সূচনা ‘গুড়ি পড়বা’ : রিঙ্কি সামন্ত আরামবাগে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে আরাধনার মধ্য দিয়ে দিঘীর মেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘বিজ্ঞান অন্বেষক’ পত্রিকার ২২তম বর্ষ উদযাপন : ড. দীপাঞ্জন দে হিন্দিতে টালা মানে ‘অর্ধেক’, কলকাতার টালা ছিল আধাশহর : অসিত দাস আত্মশুদ্ধির একটি বিশেষ দিন চৈত্র অমাবস্যা : রিঙ্কি সামন্ত চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় : ড. দীপাঞ্জন দে রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল জৈব কৃষি বিপণন হাট অশোকবৃক্ষ, কালিদাসের কুমারসম্ভব থেকে অমর মিত্রর ধ্রুবপুত্র : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ অন্নপূর্ণা পূজা ও বাসন্তী পূজার আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ

জমিল সৈয়দ / ৮৭ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫

ললিতগিরি

সন্ধ্যাবেলায় কটকের হোটেলে বসে বিভিন্ন Car rental agency-তে ফোন করতে লাগলাম। বললাম, কাল সকালে ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি ঘুরতে যাবো, গাড়ি চাই, শুধু দুটি দাবি— টুরিস্ট-ফ্রেণ্ডলি ড্রাইভার ও ভালো এসি।

সবাই বলতে থাকল, ললিতগিরি-রত্নগিরি ঠিক আছে। কিন্তু স্যার উদয়গিরি তো অন্যদিকে, ভুবনেশ্বরে, উদয়গিরি-খণ্ডগিরি!!! … বুঝলাম, এদেরকে নিয়ে আমার চলবে না। আমি ভুবনেশ্বরের উদয়গিরি নয়, যেতে চাইছি জাজপুর জেলার উদয়গিরি।

সবশেষে ফোন করলাম স্ম্রুতি প্রকাশ ঢল সামন্ত-কে। সে প্রথমবারেই বুঝতে পারলো আমি কোথায় যেতে চাই। আমি বললাম, উদয়গিরি কোথায় তা বুঝতে পারছ তো? স্ম্রুতি বললো, হ্যাঁ, জাজপুরে!

পরদিন সকাল পৌনে ৯টায় এসে গেল বাহন। ড্রাইভার দিপু খুব ভদ্র ছেলে। সে অতিরিক্ত উৎসাহী হয়ে আমাদেরকে নিয়ে গেল ছাতিয়াবট মন্দিরে, সেই মন্দির হলো পুরীর জগন্নাথদেবের দ্বিতীয় গৃহ। … কিন্তু সেখান থেকে পত্রপাঠ বিদায় নিয়ে চললাম ললিতগিরি।

১৮৬৯ সালে, জাজপুরের সাব ডিভিশনাল অফিসার চন্দ্রশেখর ব্যানার্জি উদয়গিরি এবং ললিতগিরি পরিদর্শন করেছিলেন এবং এই দুটি স্থানে অপূর্ব বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল জার্নালে তাঁর আবিষ্কারের একটি প্রাণবন্ত বিবরণ দিয়েছিলেন যা প্রত্নতাত্ত্বিক, ইতিহাসবিদ এবং বৌদ্ধ পণ্ডিতদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছিল।

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এখানে পাহাড়ের নিচে ঢিবি এবং ইট-পাথর ও বিভিন্ন স্থাপত্যের টুকরো ছড়িয়ে থাকা ব্যতিত আর কিছুই ছিলো না। জাজপুরে এবার এসডিও হয়ে আসেন মনোমোহন চক্রবর্তী যিনি ১৯০৬ সালে কলকাতার বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ারে রত্নগিরি, ললিতগিরি এবং উদয়গিরির বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ নিয়ে একটি লেখায় পণ্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

১৯২৭-২৮ সালে, কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরের রমাপ্রসাদ চন্দ ললিতগিরিতে এসেছিলেন জাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য কিছু ভাস্কর্য সংগ্রহ করতে।

ওড়িশা হিস্টোরিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি শ্রী বীরেন্দ্রনাথ রায়ের অনুরোধে কলকাতার বিখ্যাত পুরাতত্ত্ববিদ হারাণচন্দ্র চাকলাদার এবং নির্মলকুমার বসু ১৯২৮ সালে অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেন এবং চিত্রসহ একটি সম্পূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

১৯৬০-৬১ সালে, ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ ললিতগিরি এলাকার আশেপাশে ছড়ানো ভাস্কর্যগুলিকে সংগ্রহ করতে উদ্যোগী হয়। তবে ঢিবিটি খনন করা হয়নি। উৎকল ইউনিভার্সিটি ১৯৭৭ সালে পাহাড়ের দক্ষিণ ঢালে একটি ছোট আকারের খননকার্য পরিচালনা করে এবং বিপুল সংখ্যক স্তূপের বেসমেন্টের অবশিষ্টাংশ উন্মোচিত করে।

১৯৮৫ সালে খননের জন্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইণ্ডিয়ার ভুবনেশ্বর সার্কেল দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিল। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে পাহাড়ের বিভিন্ন টিলায় পরপর ছয়টি সেশন জুড়ে খননের ফলে বৌদ্ধ স্থাপনার একটি বিশাল কমপ্লেক্স আবিষ্কার করা হয়েছে যা ওড়িশায় এখন পর্যন্ত বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম বৌদ্ধ সাইট। এটি কটক জেলার মধ্যেই পড়ে।

পাথরে খোদাই করা অসংখ্য শিলালিপি রয়েছে। খুঁজে পাওয়া গেছে পাত্র এবং সিলমোহর — যা খ্রিস্টপূর্বাব্দ তিন থেকে দুই শতাব্দীর সময়কালের সাইটের সাংস্কৃতিক অনুক্রম দেয়। খ্রিস্টীয় ১৪-১৫ শতক পর্যন্ত এই সাইটের উল্লেখযোগ্য চরিত্রটি মৌর্য যুগ থেকে গজপতি রাজাদের যুগ হয়ে মোগলদের উড়িষ্যায় আবির্ভাব পর্যন্ত ঐতিহাসিক কালের পুরো পরিসরকে জুড়ে রয়েছে। এই সাইটে বৌদ্ধ বসতি স্থাপনের সমস্ত চিহ্ন রয়েছে, যেমন উপাসনালয়, বিভিন্ন ভবন বা মঠ কমপ্লেক্স-সহ আবাসিক এলাকা এবং চারটি বিশাল স্তূপ এবং চৈত্য। পাথরে খোদাই করা অসংখ্য শিলালিপি রয়েছে, মৃৎশিল্পের টুকরো, এবং সিল আবিষ্কৃত হয়েছে যা খ্রিস্টপূর্ব ৩য়-২য় শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় ১৪শ-১৫শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী স্থানের সাংস্কৃতিক ক্রম নির্দেশ করে।

খননকার্যের ফলে যা পাওয়া গেছে, তাতে সবচেয়ে বিস্ময়ের জিনিস হলো, বুদ্ধের দেহাবশেষ! এবং বুদ্ধের দাঁত।

ললিতগিরিতে একটি ঢিবি খননের সময় ছোট স্তূপের আকারে নকশা করা তিন সেট কাস্কেট পাওয়া গেছে। এই তিনটির মধ্যে দুটিতে একটি হাড়ের টুকরো আকারে দেহাবশেষ রয়েছে। সংরক্ষণের পদ্ধতি ভারি অদ্ভুত। প্রথমটি স্তূপের আকারে নকশাকৃত খাণ্ডালাইট পাথর দিয়ে তৈরি যা দুটি পাথরের টুকরো দিয়ে তৈরি। দ্বিতীয়টি স্টেটাইট ক্যাসকেটের ভিতরে রৌপ্য পাত্র রয়েছে এবং যখন রৌপ্য পাত্রটি খোলা হয়েছিল, তখন একটি সোনার কাসকেট সংরক্ষিত দেখতে পাওয়া যায় এবং সোনার পাত্রের ভিতরে সোনার ফয়েল দিয়ে বাঁধা পবিত্র নিদর্শন পাওয়া যায়। এটি ভগবান বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে বিশ্বাস করা হয়। [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন