রবিবার | ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:১৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
অপুষ্টি আর দারিদ্রতা ঢাকতে সরকার আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান আওড়ায় : তপন মল্লিক চৌধুরী দোহলী মানে অশোকবৃক্ষ, তা থেকেই দোল ও হোলি : অসিত দাস সিনেমা প্রেমীদের হোলির গান : রিঙ্কি সামন্ত দোলের আগের দিনের চাঁচর নিয়ে চাঁচাছোলা কথা : অসিত দাস খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত সিঙেরকোণ-এর রাধাকান্ত এখনও এখানে ব্যাচেলর : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত বাজারে ভেজাল ওষুধের রমরমা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘কুড়কুড়ে ছাতুতে’ ক্যানসার নিকেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বোলপুর কি সত্যিই বলিপুর : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন অসুখী রাজকন্যাদের লড়াইয়ের গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বিশ্ব থেকে ক্যানসারকে নির্মূল করতে গবেষণায় একের পর এক সাফল্য রূপায়ণের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কল্পনার ডানায় বাস্তবের রূপকথা : পুরুষোত্তম সিংহ হাইকোর্টের রায়ে ভাবাদিঘীতে তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরুর নির্দেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমছে, সঙ্কটে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল : তপন মল্লিক চৌধুরী ফল্গু নদীর তীরে একটি ছোট শহর এই বুদ্ধগয়া : বিজয় চৌধুরী শাহিস্নান নয়, আদতে কথাটি ছিল সহিস্নান : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ভূতের গল্পো ‘হোমস্টে’ রহস্য ঘেরা বলিউডের নক্ষত্রপতন : রিঙ্কি সামন্ত বাঁকুড়ার দু-দিন ব্যাপী দেশীয় বীজ মেলায় দেশজ বীজের অভূতপূর্ব সম্ভার পেজফোর-এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ২০২৫ এত গুণী একজন মানুষ কত আটপৌরে : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সরস্বতীর উৎস সন্ধানে : অসিত দাস ‘সব মরণ নয় সমান’ সৃজনশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে যথোচিত মর্যাদায় স্মরণ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সিপিএম-এর রাজ্য সম্মেলন, তরুণ প্রজন্মের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে খামতি রয়েছে দলে : তপন মল্লিক চৌধুরী প্রথম পাঠ — মার্কসবাদের বিশ্বভ্রমণ : সন্দীপন চক্রবর্তী বঙ্গবিভূষণ কাশীকান্ত মৈত্র স্মারকগ্রন্থ : ড. দীপাঞ্জন দে ‘খানাকুল বাঁচাও’ দাবিতে সরব খানাকুল-সহ গোটা আরামবাগের মানুষ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

অপুষ্টি আর দারিদ্রতা ঢাকতে সরকার আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান আওড়ায় : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ৪০ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

দেশের দারিদ্র ও অপুষ্টি নিয়ে অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী সরকারের নীতিকেই স্পষ্টভাবে দায়ী করেন। তাঁদের বক্তব্য, দেশের অবনতিশীল অবস্থার পরেও সরকার তা নিয়ে আদৌ চিন্তিত বলে মনে হয়না। বিশেষ করে গত এক দশকে সরকারের নীতির কারণে দরিদ্র সমাজ তীব্র অপুষ্টির মুখোমুখি এবং ভারতীয় সমাজের সবচেয়ে অপুষ্টির শিকার আদিবাসীরা। এ পর্যন্ত সরকারি তথ্য জানাচ্ছে যে ভারতের ৪৭ লক্ষ আদিবাসী শিশু তীব্র পুষ্টির ঘাটতিতে ভুগছে যা তাদের বেঁচে থাকা থেকে বেড়ে ওঠা, স্কুলে যাওয়া, কর্মক্ষমতা এবং প্রাপ্তবয়স্কদের উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করছে। বস্তুতপক্ষে অপুষ্টি এবং দারিদ্র্য দুটি বিষয়ই একই মুদ্রার দুটি দিক। যেসব অঞ্চলে দারিদ্র্যতা রয়েছে সেখানে পুষ্টির অভাব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। অর্থনীতিবিদ এবং সমাজকর্মীদের বক্তব্য, উন্নয়ন সম্পর্কে সরকারের ধারণা সম্পূর্ণ আলাদা। বিশেষ করে এই সরকার উন্নয়ন বলতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বোঝে। কিন্তু উন্নয়নের অর্থ কি কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি? উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মধ্যে ফারাক বিরাট। উন্নয়ন বলতে একটি দেশের কেবলমাত্র মাথাপিছু আয় বা জিডিপি বৃদ্ধি বোঝায় না, একইসঙ্গে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গণতন্ত্র, সামাজিক নিরাপত্তার উন্নতি বোঝায়।

সুস্থ থাকার জন্য আমরা খাদ্য থেকে পাই শক্তি এবং পুষ্টি, কিন্তু যদি যথেষ্ট পুষ্টির উপাদান, যেমন প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এবং মিনারেলস না পাই, তাহলে আমরা অপুষ্টিতে ভুগতে পারি। অনেক দিন ধরে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সুষম খাদ্যের অভাবের কারণে, শিশু এবং মহিলাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যার কারণে তারা একাধিক রোগের শিকার হয়। শিশু এবং মহিলাদের বেশিরভাগ রোগের মূলে রয়েছে অপুষ্টি। মহিলাদের রক্তাল্পতা বা বা শিশুদের রিকেট রোগ এমনকি অন্ধত্বের হওয়ার যথেষ্ট কারণ ঘটে। এইসব রোগ জন্মের সময় বা তার আগেই শুরু হয় এবং ছ’মাস থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিণতি হল অর্থনৈতিক ক্ষতি। অপুষ্টি মানুষের উৎপাদনশীলতা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হ্রাস করে যা জিডিপি ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে। যেহেতু উপজাতিরা প্রয়োজনীয় পরিষেবার জন্য সরকারের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, তাই পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরিষেবার জন্য তাদের প্রতি সরকারের দায়িত্ব অনেক বেশি। কিন্তু আদিবাসীরা অনেক দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় এবং অঙ্গনওয়াড়িগুলি সেইভাবে গড়ে না ওঠায় পুষ্টির সমস্যা রয়েই গিয়েছে। এছাড়া জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘাটতি বিরাট হওয়ায় রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাব থেকে যায়।

জাতীয় কর্মসূচি থেকে অপুষ্টি এবং ভিটামিন বি-১২-র অভাবে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের উপর দুটি পৃথক গবেষণার একটিতে দেখা গিয়েছে যে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের শরীরে আয়রন এবং ফলিক অ্যাসিডের তুলনায় ভিটামিন বি-১২ না থাকায় তারা রক্তাল্পতার কারণে অপুষ্টিতে ভোগা শুরু করে। অন্য একটি গবেষণায় একই কারণ ছাড়াও “ইনফ্যান্টাইল ট্রেমার সিনড্রোম” নামে একটি নতুন অপুষ্টির উদ্ভব হয়েছে। এর ফলে রক্তের অভাবের পাশাপাশি শিশুর মানসিক বিকাশও বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণত ছ’মাস বয়সের পরে বুকের দুধের সঙ্গে পরিপূরক খাবার না পাওয়া শিশুদের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে। অন্যান্য গবেষণা অনুসারে, শিশুদের অপুষ্টির প্রধান কারণ হল ভিটামিন বি-১২-র অভাব।

পর্যাপ্ত খাদ্যের অধিকার আমাদের সংবিধানের ২১ এবং ৪৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখের অর্থ সরকার সমস্ত নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে বাধ্য। অনুচ্ছেদ ৪৭ এও বলে যে রাষ্ট্রের কর্তব্য হল নাগরিকদের পুষ্টির স্তর এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালানো। কিন্তু সরকার তা কতটা করেছে? বর্তমান সরকার তো কেবল অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পরিসংখ্যান দেয়। করোনা বা লকডাউনের সময় সরকারের আচরণ ছিল ভারতের জনকল্যাণ আইনের সাংবিধানিক কাঠামোর সম্পূর্ণ বিপরীত। রাষ্ট্রীয় নীতিমালার যেসব নির্দেশিকা- নাগরিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত থেকে শুরু করে করে সমস্ত নাগরিককে সমান জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা, উন্নত জীবনযাত্রা এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সুযোগ একইসঙ্গে দুর্বল শ্রেণীর মানুষের শিক্ষা ও অর্থনৈতিক স্বার্থকে উৎসাহিত করা। কিন্তু বাস্তবে জনকল্যাণের নীতিমালা নিয়ে সরকারের কোনো সক্রিয়তা নেই। যে কারণে উন্নয়ন মডেল খুব সীমিত জনসংখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে আছে, তার কারণে বৈষম্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশ্বের ৮৬ কোটি মানুষ অনাহারের শিকার, যার মধ্যে ২১ কোটি মানুষ ভারতের। দেশের ৪০ শতাংশ শিশু এবং ৫০ শতাংশ যুবক অপুষ্টিতে ভুগছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ১.৫৩ লক্ষ শিশু ভিক্ষা করে। ভারতে প্রতি আধ ঘন্টায় একজন কৃষক আত্মহত্যা করে। দেশে প্রায় ৬০ কোটি কুইন্টাল খাদ্যশস্য গুদামে থাকে এবং দরিদ্রের খাদ্যশস্যের চাহিদা মাত্র এক কোটি কুইন্টালে পূরণ করা সম্ভব। পাশাপাশি যেখানে দরিদ্ররা দুবেলা খাবার এবং তাদের সন্তানদের ওষুধের জন্য সংগ্রাম করছে, সেখানে ইতিমধ্যেই কিছু ধনীর সম্পদ ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ ২০০৩ সালে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল যে ‘ক্ষুধা থেকে মুক্ত থাকার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার’। সংবিধান সরকারকে এমন নীতি তৈরির নির্দেশ দিয়েছে যাতে প্রতিটি নাগরিকের জীবিকার সমান অধিকার থাকে এবং রাষ্ট্র তার নাগরিকদের পুষ্টি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতির চেষ্টা করে।

‘সবকা-সাথ, সবকা-বিকাশ’-এর বাস্তবতা হল দারিদ্রতা ও অপুষ্টিতে ১৬৬টি দেশের তালিকায় ভারতের স্থান ১১৭তম, যেখানে পাকিস্তান ১৩৪তম স্থানে রয়েছে। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০৭টি দেশের মধ্যে ভারত ৯৪তম স্থানে রয়েছে। ১০৭টি দেশের মধ্যে, অপুষ্টির দিক থেকে মাত্র ১৩টি দেশকে ভারতের চেয়ে খারাপ দেখানো হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের ১৪ শতাংশ জনসংখ্যা অপুষ্টিতে ভোগে এবং শিশুদের মধ্যে খর্বাকৃতির হার ৩৭.৪ শতাংশ। প্রতিবেদনে এও বলা হয় যে, ভারতে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১.০৪ মিলিয়ন শিশুর মৃত্যুর মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই অপুষ্টির কারণে ঘটে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন