তোমাদের ডাকে সাড়া দেবার দুটো কারণ বলে নিই। প্রথমত, পুরানো ছাত্রদের সঙ্গে মিলিত হতে পারব, মত বিনিময় করতে পারবে। দ্বিতীয় কারণটা ব্যক্তিগত। গত শতকের আশির দশকে বধূহত্যার ক্রমিক ঘটনা ঘটছিল। আমি সে ব্যাপারে কিছু ক্ষেত্রসমীক্ষা করেছিলাম, তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। তাই নিয়ে ‘বধূহত্যা’ নামে একটা বই লেখা হয়। আর জি কর কাণ্ডের দিন দুই পরে সেই বইএর প্রকাশক আমার বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি কথাপ্রসঙ্গে বললেন নারী নির্যাতন, ধর্ষণ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে। এর মধ্যে আমি অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছি, মধুমিতা পাণ্ডেসহ বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র পড়েছি। সে সব পড়ে আমার যে ধারণা হয়েছে, তা এই সভায় আমি পরিবেশন করতে পারব।
প্রথমেই বলে নিই যে, আমি কোন রাজনৈতিক নেতা বা অ্যাকটিভিস্ট নই। সুতরাং আগুনঝরানো প্রতিবাদ করতে পারব না আমি। আমার ভাষাও আবেগময় হবে না। কারণ আবেগ পরিশ্রুত না হলে বিচার হয় না। সেই যে ওয়ার্ডসওয়ার্থ বলেছেলেন ‘ইমোসন রিকালেকটেড ইন ট্রাংকুলিটি’। তোমরা তো আরও অনেকের মতো বিচার চাইছ। বিচার চাওয়ার আগে ঠাণ্ডা মাথায়, অনুত্তেজিতভাবে সমস্ত বিষয়টা পর্যালোচনা করতে হবে। অমর্ত্য সেনের ভাষায় ‘আর্গুমেনটেটিভ’ হতে হবে।
মানুষের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবে ভালো ও মন্দ, পাপ ও পুণ্য, দেবতা ও দানব সভ্যতার সমান বয়েসি। হয়তো বা এই বৈচিত্র্যটাই সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য। তা না হলে জীবন একঘেঁয়ে হত। ভালো-মন্দের পার্থক্য বোঝা যেত না। পৃথিবীর বিভিন্ন পুরাণ অনুসন্ধান করে দেখেছি সেখানে ধর্ষণ আছে, দেবতাদেরও বিকারগ্রস্ততা আছে। ইতিহাসে তো আছেই। রাজা-রাজড়ারা কোন রাজ্য জয় করে সেখানকার নারীদের নির্বিচারে ধর্ষণ করত। এই ধর্ষণের প্রতিবাদ তখনকার মানুষ তখনকারের মতো করেছে। মহাভারতের শান্তিপর্বে শ্বেতকেতুর গল্প নিশ্চয়ই তোমাদের জানা। তার মাকে ভোগ করার জন্য অন্য এক ব্রাহ্মণ নিয়ে যেতে চাইলে শ্বেতকেতু বাধা দেন।
ধর্ষণকে বিচার করতে হবে নারীর অধিকারের দিক থেকে। এ ঘটনা ঘটছে নারীর অসম্মতিতে। এ ঘটনা ঘটছে বলপূর্বক। কোন কোন সমাজবিজ্ঞানী এর পেছনে আমাদের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবকে দায়ি করেন। তা যদি হত, তাহলে পুরুষমাত্রেই ধর্ষক হত। মনোবিদরা বলবেন ধর্ষণ একটা রোগ, একটা মানসিক বিকার।
এবার আসি আর জি করের ঘটনায়। ১০ আগস্ট সংবাদ মাধ্যমে ঘটনাটি প্রকাশ পেতে শহরাঞ্চলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। এর আগে অন্য রাজ্যে তো বটেই, আমাদের রাজ্যেও একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ করেছে, কিন্তু সাধারণ মানুষ তো রাস্তায় নামে নি। কেন এমন হল? তখন আমার মনে হল রাজ্যের শাসক দলের কিছু ভুলভাল পদক্ষেপ, পুলিশের কিছু ত্রুটিপূর্ণ আচরণ এর জন্য দায়ী। তাছাড়া শাসকদলের খাদ্য-শিক্ষা-রেশন ইত্যাদি দুর্নীতি এই আন্দোলনে অনুঘটকের কাজ করেছে। তাহলে এটা কি মাও-জে-দঙের একটি স্ফুলিঙ্গ দাবানল সৃষ্টির মতো?
আচ্ছা এটা কি স্বতৎ-স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন? এই আন্দোলনের সঙ্গে রাজনীতির কোন যোগ নেই? রাত দখলের ডাক যিনি দিয়েছিলেন, সেই রিমঝিম সিংহ প্রেসিডেন্সির ছাত্রী ছিলেন। তাঁর সঙ্গীরা হয় প্রেসিডেন্সি অথবা যাদবপুরের। একটি চ্যানেলে তাঁর সাক্ষাৎকার শুনলাম। তিনি কার্ল মার্কসের ‘কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো’র ভাষায় বলছেন যে পুঁজিবাদী সমাজ নারীকে পণ্য বলে মনে করে। গতকাল তাঁদের একটি সমিতি গঠিত হয়েছে, দল গঠন করার কথাও হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত বাহ্যত তাঁরা আন্দোলনকে ‘অরাজনৈতিক’ বলছেন। সংবাদ মাধ্যম একে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ বলে প্রচার করছে। স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন কি সফল হতে পারে? আমাদের সামনে আছে সিপাহি বিদ্রোহ। মার্কস একে ভারতের প্রথম স্বাধীনতার যুদ্ধ বলেছিলেন। কিন্তু মজবুত সংগঠন, উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাবে এই আন্দোলন ব্যর্থ হয়; তা না হলে ১৮৫৭ তেই ইংরেজকে বিদায় নিতে হত। একই কথা প্যারী কমিউন সম্বন্ধে। ১৯৬৬ সালে আমাদের দেশে যে খাদ্য আন্দোলন হয়, সেটাও প্রথম দিকে স্বতঃস্ফূর্ত ছিল; কিন্তু বামদলগুলি তার নেতৃত্ব গ্রহণ করায় সে আন্দোলন সফল হয় এবং ক্ষমতায় আসে বামেরা। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনের পেছনে ছিল তৃণমূল দল। সে আন্দোলন সফল হয়, এবং ক্ষমতায় আসে তৃণমূল।
এই ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ আন্দোলনকে অসম্ভব প্রচারিত ও প্রসারিত করেছে সংবাদ মাধ্যম, টিভি চ্যানেল এবং ইউটিউবারেরা। ১০ আগস্ট থেকে এসবে বহু অনুমানপ্রসূত খবর প্রকাশিত হতে থাকে। তদন্তের আগেই তদন্ত করে ফেলেন সাংবাদিক, আধা সাংবাদিক ও ইউটিউবারেরা। এমন কি প্ল্যানচেটেও ধরা পড়ে যায় ধর্ষণ ও খুনের গতিবিধি। ঘন ঘন ব্রেকিং নিউজ প্রকাশিত হয়। এসবে যোগ দেন ‘সুশীল সমাজে’র কোন কোন প্রতিনিধি; প্রাক্তন গোয়েন্দা অফিসার, বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, অভিনেত্রী, সমাজসেবী। মনে হয় যেন আর জি করের ঘটনাটি পৃথিবীতে একমেবাদ্বিতীয়ম। মাননীয় রাষ্ট্রপতি অন্য সব ধর্ষণের ঘটনায় নির্বাক থাকলেও আর জি করের ঘটনায় মুখ খোলেন। যে নোয়াম চমস্কি হার্ট অ্যাটাকে শয্যাশায়ী, তিনিও নাকি আর জি করের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এই ঘটনায় ফেক নিউজ তার সমস্ত সীমা অতিক্রম করে গেছে।
১৪ আগস্ট রাত দখল করলেন মেয়েরা। দাবি করলেন ন্যায় বিচারের। জুনিয়র ডাক্তাররাও বসলেন আন্দোলনে। কিন্তু কে বিচার করবে? রাজ্যের পুলিশ? তাঁরা তো চটিচাটা। বামপন্থী এক আইনজীবী ও গৈরিক দলের এক মুণ্ডিতমস্তক আইনজীবী দাবি করলেন তদন্তভার দিতে হবে সিবি আইকে। যাঁরা যখন বিরোধী থাকেন, তাঁরা তখন সিবিআইকে আহ্বান করেন। রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যখন বিরোধী ছিলেন, তখন তিনিও সিবিআইকে চাইতেন। অথচ সকলেই জানেন সিবিআইএর সাফল্যের হার ২০% এর বেশি নয়। আমাদের রাজ্যের রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরি থেকে সন্দেশখালি, কোনটায় বিচার হয়েছে? সিবিআই-এর মতো আর এক মজা হল সুপ্রিম কোর্ট। এই সুপ্রিম কোর্টেই তো বিচার হয়েছিল বাবরি মসজিদ ভাঙার। মিলেছিল কি বিচার? আর একটা মজার জিনিস দেখছি। ইদানীং বামপন্থীরা বড় বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন আদালতের উপর। অথছ মার্কসবাদের মৌল কথা হল শ্রেণিবিভক্ত সমাজে গণতন্ত্রের কোন স্তম্ভই নিরপেক্ষ হতে পারে না।
সিবিআই-এর যে আঠারো মাসে বছর, এ কথা সকলেই জানেন। তাই আমার মনে হয় সিবিআইকে না দিয়ে ন্যায় বিচারের জন্য রাজ্য সরকারকে বাধ্য করার আন্দোলন ছিল সঠিক পথ। পদত্যাগ নয়, পদে রেখে পদে পদে কৈফিয়ৎ দাবি করলে রাজ্য সরকার একসময়ে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হতেন। সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়ায় প্রকারান্তরে রাজ্য সরকারের সুবিধাই করে দেওয়া হল। তবে ধর্ষণ ও খুনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে দুর্নীতি। একজন ‘সুশীল’ ডাক্তার তো বলে দিলেন, ধর্ষণ নয়, খুনই আসল উদ্দেশ্য। ধর্ষিতা মেয়েটি এসব দুর্নীতি জেনে ফেলেছিল বলে তাকে মরতে হল। খুব সাধারণ বুদ্ধিতেই এই বক্তব্য সারবান নয় বলেই মনে হয়। আর জি করে বহু ছাত্র-ছাত্রী আছেন, তার মধ্যে এই ছাত্রীটিই শুধু গোপন রহস্য জেনে গেলেন? আর সেই জন্যই তাঁকে খুন করা হল? দুর্নীতিগ্রস্ত খুনীরা কি এতটাই নির্বোধ যে, ধরা পড়ার যোলআনা সম্ভাবনা নিয়ে মেয়েটিকে আর জি কর ক্যাম্পাসেই খুন করলেন? আর একটা কথা। বলা হচ্ছে এই হাসপাতালে দীর্ঘদিন চলেছে নানা দুর্নীতির কারবার। সংবাদ মাধ্যমের চোখে তা ধরা পড়ল না কেন? এই তো মাত্র দুবছর আগে এক বৃহৎ সংবাদপত্র গোষ্ঠী ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ অধ্যক্ষের হাতে সেরা হাসপাতালের পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন। আজ যাঁর সম্পর্কে এত কলঙ্ক প্রকাশ পাচ্ছে, তার একটুও আভাস কি পুরস্কারদাতারা পান নি?
ধর্ষকের ফাঁসির দাবি উঠেছে। নাজেহাল মুখ্যমন্ত্রীও ফাঁসির দাবিতে এক বিল এনেছেন। এর আগের মুখ্যমন্ত্রীও ফাঁসির শাস্তি দিয়েছিলেন ধনঞ্জয়কে। কিন্তু তারপরে কি ধর্ষণ বন্ধ হয়েছে? অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছেন ফাঁসি কোন সমাধান নয়। কেন হচ্ছে ধর্ষণ, কেন বাড়ছে নারী নির্যাতন, তার সমাজতাত্ত্বিক গবেষণা কোথায়? ফরাসি দার্শনিক রুশোর কথা ভাবো। তিনি তাঁর ‘এমিল’ বইতে বলেছেন মানুষ জন্মগতভাবে অপরাধী নয়, সমাজ তাকে অপরাধী তৈরি করে। একালের রাজনীতি সেই সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। রাজনীতির দুর্বত্তায়ণের কথা আমরা বলি। লুম্পেন প্রলেটারিয়েটরা রাজনীতির আশ্রয়ে লালিত হয়। যে দল ক্ষমতায় থাকেন, সেই দলে ভিড়ে যায় তারা। ধর্ষক বা ধর্ষণের সহায়ক, ফৌজদারি মামলার আসামি সাংসদ বা বিধায়ক হয়ে ছড়ি ঘোরান। দরকার মতো এঁরাও দল বদল করেন। আর আমরা ভোটের সময় প্রার্থীকে দেখিনা, দলকে দেখি। একেই গণতন্ত্র বলে ঢক্কানিনাদ করা হয়। শাসক ও বিরোধী সকলের মুখে গণতন্ত্রের কথা। তাহলে গণতন্ত্রের কোন শত্রু নেই। ৪০% ভোট পেয়ে সরকার গড়ছে কোন দল। তার মানে ৬০% সে দলের পক্ষে নেই। তবু একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল, সরকার গড়ার অধিকার তার। এই গণতন্ত্র, আসলে দুর্বোধ্য গ্যাঁড়াকলতন্ত্র। সংখ্যাগরিষ্ঠ না হলে দলবদলুদের ডাকো। ব্যস।
আমরা এই নির্বাচন ও রাজনীতির সংস্কারের কথা ভাবি না, যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবার কথা ভাবি না। জেনেশুনে বিষ পান করি, তারপর চোখের জলে নাকের জলে হয়ে বিচার চাইতে বসি। এমতাবস্থায় রক্ষক তো ভক্ষক হবেই। তাই এ আমার এ তোমার পাপ।
এবার আসুন নিজেদের সামনে আমরা এক একটা আয়না মেলে ধরি। আত্মসমীক্ষা করলে ধরা পড়বেই যে পরবর্তী প্রজন্ম সম্বন্ধে আমরা উদাসীন। পিতা মাতা কি তাঁদের কর্তব্য পালন করেন? তাঁরা কি সন্তানের মনের গতিবিধি বুঝতে চেষ্টা করেন? শিক্ষক কি ছাত্রের মানসিক বিকাশে পথ দেখান? চিকিৎসক কি রোগীকে নিছক অর্থোপার্জনের উপায় বলে মনে করেন না? আইনজীবী কি অপরাধীর পক্ষ নিয়ে লড়ে যান না? তাহলে কোথায় নৈতিকতা? কোথায় সততা? আমরা কি প্রতিমূহূর্তে নীতিকে, মূল্যবোধকে ধর্ষণ করে যাচ্ছি না? বড় দুর্নীতি চোখে পড়ে। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ ছোটখাটো অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করে চলি, সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে ভয় পাই, এবং এর পরিপূর্ণ সুযোগ শাসক গ্রহণ করে। তাই আমাদের বলতেই হবে :
ওরে ভাই কার নিন্দা করো তুমি, মাথা করো নত/এ আমার এ তোমার পাপ [বলাকা, ৩৭ নং কবিতা]
রবীন্দ্রনাথ আজ থেকে ১০০ বছর আগে তাঁর ‘বিদ্যাসাগর চরিতে’ বাঙালির চরিত্র বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে যে কথা বলেছিলেন, তা আজও সমান সত্য হয়ে আছে :
‘আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না; যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না; যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না; ভূরিপরিমাণ বাক্য রচনা করিতে পারি, তিল পরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না; আমরা অহংকার দেখাইয়া পরিতৃপ্ত থাকি, যোগ্যতালাভের চেষ্টা করি না; আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের ত্রুটি লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি; পরের অনুকরণে আমাদের গর্ব, পরের অনুগ্রহে আমাদের সম্মান, পরের চক্ষে ধূলি নিক্ষেপ করিয়া আমাদের পলিটিক্স এবং নিজের বাকচাতুর্যে নিজের প্রতি ভক্তিবিহ্বল হইয়া উঠাই আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য। এই দুর্বল, ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কর্মহীন, দাম্ভিক, তার্কিক জাতির প্রতি বিদ্যাসাগরের এক সুগভীর ধিক্কার ছিল।
[৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, নেতাজিনগর বালক বিদ্যালয়, নেতাজি নগর বালিকা বিদ্যালয় ও নেতাজি নগর কলেজের প্রাক্তনীদের উদ্যোগে আর জি কর কাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় দিলীপ মজুমদারের বক্তব্য।]
এ.বর্বর ঘটনার পক্ষে বিপক্ষে রবীন্দ্রনাথ বা অন্য কাউকে উদ্ধৃত করে কোন লাভ হবে না। জনগন একটি নির্দিষ্ট দলকে ভোট দিয়েছে বলে সেই দলের
সরকারের দ্বারা সমর্থিত সমস্ত পাপের জন্য দায়ী? এইরকম অদ্ভুত যুক্তি থেকে হেড লাইন করা যায় –” এআমার পাপ, এ তোমার পাপ?” ভোট দেবার অনেক কারন থাকতে পারে। কিন্তু যুগে যুগে , অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আমজনতার ব্যাপক প্রতিবাদই ইতিহাস কে বদলে দেয়।
আমি অনেকদিন থেকে আপনার লেখার ভক্ত, কিন্তু বিশ্বাস করুন এত যুক্তিহীন, মানবতাবিরোধী , নির্বোধ লেখা আপনার কলম থেকে কোনোদিন বেরোতে দেখিনি।
ঠিক আজকের বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমজনতা সব ভয়, সব তথাকথিত লোভ, সব থ্রেট, সব মারকে অতিক্রম করে, পথে নেমে ,
, সময়ের দাবী মেনে , আমজনতা যা করছেন — তাকে সমর্থন না করলে পাপ করা হয়, অন্যায় করা হয়। এখানে দাঁড়িয়ে , অতীতে কে কি ভুল করেছে, অন্যায় করেছে –তার বিচার করতে যাওয়া হলো সব কিছু ঘুলিয়ে দেওয়ার সামিল।
ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে শ্রদ্ধা করে এসেছি, আগামী দিনেও করবো, কিন্তু এই.লেখার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত আপনর অবস্থান কে কোনমতেই সমর্থন করতে পারলাম না। ক্ষমা করবেন। ভালো থাকবেন।
পার্থপ্রতিম ঘোষ।
এ.বর্বর ঘটনার পক্ষে বিপক্ষে রবীন্দ্রনাথ বা অন্য কাউকে উদ্ধৃত করে কোন লাভ হবে না। জনগন একটি নির্দিষ্ট দলকে ভোট দিয়েছে বলে সেই দলের
সরকারের দ্বারা সমর্থিত সমস্ত পাপের জন্য দায়ী? এইরকম অদ্ভুত যুক্তি থেকে হেড লাইন করা যায় –” এআমার পাপ, এ তোমার পাপ?” ভোট দেবার অনেক কারন থাকতে পারে। কিন্তু যুগে যুগে , অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আমজনতার ব্যাপক প্রতিবাদই ইতিহাস কে বদলে দেয়।
আমি অনেকদিন থেকে আপনার লেখার ভক্ত, কিন্তু বিশ্বাস করুন এত যুক্তিহীন, মানবতাবিরোধী , নির্বোধ লেখা আপনার কলম থেকে কোনোদিন বেরোতে দেখিনি।
ঠিক আজকের বাস্তবতায় দাঁড়িয় সব ভয়, সব তথাকথিত লোভ, সব থ্রেট, সব মারকে অতিক্রম করে, পথে নেমে ,
, সময়ের দাবী মেনে , আমজনতা যা করছেন — তাকে সমর্থন না করলে পাপ করা হয়, অন্যায় করা হয়। এখানে দাঁড়িয়ে , অতীতে কে কি ভুল করেছে, অন্যায় করেছে –তার বিচার করতে যাওয়া হলো সব কিছু ঘুলিয়ে দেওয়ার সামিল।
ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে শ্রদ্ধা করে এসেছি, আগামী দিনেও করবো, কিন্তু এই.লেখার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত আপনর অবস্থান কে কোনমতেই সমর্থন করতে পারলাম না। ক্ষমা করবেন। ভালো থাকবেন।
পার্থপ্রতিম ঘোষ।
শ্রী দিলীপ মুখার্জি কে আভূমি প্রনাম জানাই। তিনি যে ভাবে সমষ্যার মূলে গিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। প্রকৃত উচ্চ মানের অগাধ জ্ঞানের পন্ডিত মানুষ তাই এই ভাবে বলতে পারেন। সারাদিন ধরে “we want justice” তো শুনি, এরকম বিশ্লেষণ বিরল। তাই আবার ও প্রনাম জানাই। কিছু অল্প শিক্ষিত,একটা রাজনৈতিক দলের সমর্থকসেখানে ছিলেন তারা বুঝতে না পেরে চিৎকার করে, ছিঃ
আপনার বক্তব্য সেদিন সামনে থেকে শুনেছি।
তখন ও আমার মনে হয়েছে আপনাকে বলেও ছিলাম এত বিস্তারিত আলোচনা এই ধরনের পথ সভায় অনেকের মনোসংযোগ নষ্ট হওয়ার কারণে অনুধাবন করতে অসুবিধার সৃষ্টি করে।
তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে সংসদীয় গণতন্ত্র কোন না কোনো সময় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেই আর এখন বোধ হয় তেমনি এক কঠিন সময়।
আপনার লেখাটি পড়ে মনে হল অনেক তাত্ত্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন ।এই বক্তব্য খন্ডন করা যায় না।আপনার সমর্থনে কোন আবেগের স্থান নেই, কিন্তু সমাজের দায় এড়িয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করা যায় না।
আর জি করের ঘটনাটি ঘটেছে কর্তব্যরত অবস্থায় ,সরকারি হাসপাতালে ।এই জন্য সমাজে এই ঘটনার প্রভাব অনেক গুণ বেশি।
সেই জন্য সকল মানুষের প্রতিবাদ এখন খুব প্রাসঙ্গিক, এক দিন নিশ্চিত পথ দেখাবে – আশা করি।