শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৪৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাড়বে গরম, চোখের নানান সমস্যা থেকে সাবধান : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী আঠালো মাটি ফুঁড়ে জন্মানো শৈশব : আনন্দগোপাল হালদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

গোয়ার পুরনো রাজধানী ছিল ‘প্রাচ্যের রোম’ : নন্দিনী অধিকারী

নন্দিনী অধিকারী / ৪৭৭ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩

ভেলা গোয়া বা পুরনো গোয়াতে সেদিন রবিবারের অলস মেজাজ। আধডোবা জলে মোষেদের গা ভিজিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যেমন নিশ্চিন্ত অবসর! শৌখিন মেছুড়ের ফাতনায় চোখ রেখে বেলা পড়ে যাবার মতন সেখানে ঢিলেঢালা দিনচর্যা।

একমাত্র চার্চ অফ সেন্ট ফ্রান্সিস বা ব্যাসিলিকা অফ্ বম যীশাসের খ্যাতিতে ট্যুরিস্টের উপচে পড়া ভীড়। ছুটির দিনে এখনো সেখানে লম্বা লাইন।

একটা সময় গৌরবের মহিমায় গোয়ার পুরনো রাজধানী ছিল ‘প্রাচ্যের রোম’। বিজাপুরের সুলতান আদিল শাহকে ১৫১০ সালে হারিয়ে পাহাড় আর সমুদ্র ঘেরা সুন্দরী গোয়াকে অধিকার করে নিল পোর্তুগীজরা। মান্ডবী নদীর দক্ষিণ প্রান্তে তিসওয়াদি তালুকে বণিকের মানদন্ড রাজদন্ডরূপে প্রতিষ্ঠিত হল।

পুরনো রাজধানী বা ভেলা গোয়ার অলিগলিতে রয়ে গেছে সেই প্রাচীনত্বের অহংকার। ক্ষয়িষ্ণু ইঁটে তার নীরব দীর্ঘশ্বাস।

সেন্ট ফ্রান্সিস চার্চের বড় রাস্তা ছেড়ে আর একটু ভেতরে পাহাড়ের ওপর আকাশ ছুঁতে চাওয়া ভাঙাচোরা সেন্ট অগাস্টিন টাওয়ার দাঁড়িয়ে আছে। আশেপাশের ধ্বংসস্তূপে কোথাও ছিল চ্যাপেল, সন্ন্যাসিনীদের কনভেন্ট, পড়ুয়াদের লাইব্রেরী, মিশনারী সাধুসন্তদের সিমেট্রি। ভাঙা পাথরের সেই নিরালা নির্জনে আড়াল খোঁজে প্রেমিক জুটি। সেখানকার কবরে শুয়ে আছেন ভুলে যাওয়া কত মানুষ। তাঁদের স্মরণে আজ আর জ্বলেনা কোনো মোমবাতি ।

আর্চ অফ টাওয়ারের মাথায়, ধূপছায়ায় বসে আছেন সেই দুঃসাহসী মানুষটি। যাঁর নাম ভাস্কো ডা গামা। তাঁর হাতে খাপ খোলা তলোয়ার। তাঁকে পেরিয়ে মান্ডবী নদীর ফেরী। ওপারে দীওয়ার দ্বীপ। কোনোকালের সুন্দর নাম দ্বীপাবতী সে খুইয়ে ফেলেছে। হাজার বছর আগে দ্বীপাবতীর সপ্তকোটি তীর্থের পুকুরে স্নান করে গৃহদেবতার মন্দিরে পুজো দিত কদম্বরাজ পরিবারের রাজবধূ, রাজবালা। তাদের ভেজা পায়ের চরণচিহ্ন মুছে গেছে কবেই। মন্দির ভেঙেছে বিদেশী, বিধর্মীদের হাতে। ঘুঘু ডাকা দুপুরে সেখানে মনকেমনের ছবি। পাকা ধান কেটে নেওয়া হেমন্তের শূন্য ক্ষেতে এখন পাখিদের খুঁটে খাওয়া।

নদী পাড়ের কাদাজলে মাছ খোঁজে আরো দু’ পেয়ের দল। কাদাখোঁচা, ডাহুক, সিন্ধুসারস, বক। আকাশে সোনালী ডানার শঙ্খচিলের শ্যেন দৃষ্টি জমিতে। দ্বীপের চারধারকে সস্নেহে তার শেকড় দিয়ে আগলে রেখেছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য।

সেন্ট ম্যথায়িস গীর্জাঘরে রবিবারের প্রার্থনায় আসে গোমেজ, ফার্নান্ডেজ, রডরিগস দম্পতিরা। সাপ্তাহিক এই গেটটুগেদারের জন্যে উন্মুখ থাকে প্রৌঢ়, বৃদ্ধ মানুষগুলো। লিপস্টিক রাঙানো হাসিতে, নিভাঁজ শার্টপ্যান্টে তাঁদের সাবাথ ডে যাপন।

সপ্তাহের বাকি দিনগুলোয় সাজানো গোছানো, বাগানঘেরা বাংলোয় নিঃসঙ্গতার ছায়া। সামনে বড় দিনের পদধ্বনি। ছেলেমেয়ে, নাতিপুতি শেষ পর্যন্ত সেখানে এসে পৌঁছবে তো? নাহলে যে সব উৎসব বড় বিবর্ণ, নিরানন্দ।

গোমসের তালাবন্ধ ভিলা পড়ে আছে বিবাদিত সম্পত্তির তকমা এঁটে। জঙ্গল ঘিরেছে অ্যান্টনির কাসায়। বেঞ্জামিনের পরিত্যক্ত ভুতুড়ে বাড়ির ত্রিসীমানায় কেউ যায় না।

দ্বীপাবতীর হিন্দু তীর্থস্থান সপ্তকোটেশ্বর একদিন বিজাপুরের সুলতানের রোষে ভেঙে তছনছ হল। তাদের সে দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল পোর্তুগীজদের বিজয় অভিযানে। কাসা, চ্যাপেল, দুর্গ, পানশালা, চার্চ, বেকারী, কবরখানা, অফিস-কাছারীতে সেজে উঠল মান্ডবীর পশ্চিমতীরে গোয়ার রাজধানী। সে রাজধানীও একদিন প্লেগ আর কলেরার মহামারীতে পরিত্যক্ত হয়ে গুরুত্ব হারাল। ভেলা গোয়া পড়ে রইল স্মারক হয়ে। গোয়ার নতুন রাজধানী পানাজীতে ভীড় করল কেজো-অকেজো সব মানুষ। মান্ডবীর বুকে ভাসমান এই দীওয়ার দ্বীপের মত অনিশ্চিত হয়ে গেল ভেলা গোয়ার ভবিষ্যৎ।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন