শনিবার | ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:০৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস সসীমকুমার বাড়ৈ-এর ছোটগল্প ‘ঋতুমতী হওয়ার প্রার্থনা’ সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতিফলনে সিনেমা : সায়র ব্যানার্জী নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সুও দুও ভাসে’ বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (তৃতীয় পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভিয়েতনামের গল্প (ষষ্ঠ পর্ব) : বিজয়া দেব নীলমণি ঠাকুরের মেছুয়া-যাত্রা, একটি ঐতিহাসিক পুনর্নির্মাণ : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দ্বিতীয় পর্ব) : আবদুশ শাকুর কাদের প্রশ্রয়ে বাংলাদেশের জঙ্গিরা বাংলার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রসাহিত্যে কবিয়াল ও কবির লড়াই : অসিত দাস নকল দাঁতের আসল গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (প্রথম পর্ব) : আবদুশ শাকুর মুর্শিদাবাদের কৃষি ঐতিহ্য : অনুপম পাল নক্সী কাঁথায় বোনা জসীমউদ্দীনের বাল্যজীবন : মনোজিৎকুমার দাস পঞ্চানন কুশারীর জাহাজী গানই কি কবির লড়াইয়ের মূল উৎস : অসিত দাস দিব্যেন্দু পালিত-এর ছোটগল্প ‘ঝালমুড়ি’ নকশালবাড়ি আন্দোলন ও বাংলা কবিতা : কার্তিক কুমার মণ্ডল নিঃসঙ্গ ও একাকিত্বের আখ্যান : পুরুষোত্তম সিংহ ভিয়েতনামের গল্প (পঞ্চম পর্ব) : বিজয়া দেব অন্তরের আলো জ্বালাতেই কল্পতরু উৎসব : সন্দীপন বিশ্বাস কল্পতরু — এক উত্তরণের দিন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চলচ্চিত্র উৎসবে পানাজি থেকে কলকাতা (শেষ পর্ব) : সায়র ব্যানার্জী ফেলে আসা বছরে দেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া না ঝড় : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই ২০২৫ ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বিদ্যাসাগরের প্রয়াণদিবস ও কলকাতার নিমতলাঘাট : অসিত দাস

অসিত দাস / ৪৫৩ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩

২০১৯-এর প্রথমদিকে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের স্ট্যাচু ভাঙচুরের ঘটনায় সাংস্কৃতিক মহলে বেশ শোরগোল পড়ে যায়। রাজনৈতিক চাপানউতোর চলতে থাকে। তখনই বিদ্যাসাগরকে নিয়ে নতুন করে পড়াশুনা শুরু করি। কলকাতায় বিদ্যাসাগর মারা গিয়েছিলেন বাদুড়বাগানের বাড়িতে। যকৃতের ক্যানসারে তাঁর মৃত্যু হয়।

কিন্তু বাঙালির মনে বদ্ধমূল ধারণা ছিল তিনি জীবনের শেষ আঠারো-কুড়ি বছর সাঁওতাল পরগনার জামতাড়ার কার্মাটাঁড়ে কাটান। দরিদ্র সাঁওতালদের মধ্যে সেবাকার্যে নিজেকে নিয়োজিত করেন। অনেকে তো আর এক পোঁচ রঙ চড়িয়ে তাঁর ওখানেই মৃত্যু ও শেষকৃত্যের কথা জানিয়েছেন। যে বইটি খুব কাজে লাগে তাঁর শেষের দিনগুলি বুঝতে সেটি হল সুবলচন্দ্র মিত্রর ‘Isvarchandra Vidyasagar, a story of his life and work’। এখানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁর মরদেহ নিয়ে শোভাযাত্রার ও নিমতলাঘাটে শেষকৃত্যের বিবরণ আছে। একটু উদ্ধৃতি দিলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না।

এছাড়া মানদা বসুর আত্মজীবনীতেও ১৮৯১-এর ২৯ জুলাই, ভোররাতে নিমতলাঘাটে তাঁর দাহকার্যের বিস্তৃত বিবরণ আছে। এই মানদা বসু ছিলেন পেশায় বারাঙ্গনা। প্রতিদিন প্রত্যূষে নিমতলাঘাটে স্নান করতে যেতেন। কিন্তু বাঙালিবাবুরা বিধবাবিবাহ প্রচলনের জন্যে তাঁর উপরে এতই রুষ্ট ছিলেন যে, তাঁর কলকাতা ত্যাগের কথা ও কার্মাটাঁড়ে আমৃত্যু নির্বাসনের কথা ফলাও করে রটিয়ে দিয়েছিলেন। বিহারীলাল চক্রবর্তী ও বিদ্যাসাগর ভ্রাতা শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন তাঁদের লেখা বিদ্যাসাগরের জীবনীতেও তাঁর নিমতলা শ্মশানঘাটে শেষকৃত্যের কথা লিখে গেছেন।

বিদ্যাসাগরের স্মৃতিফলক কেন নিমতলা মহাশ্মশানে নেই, তা নিয়ে আমার পোস্ট ছিল ফেসবুকেই। ৩ জুন ২০১৯-এ। গঙ্গা ও ভোলগা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে ১৮৯১-এ তাঁর মৃত্যুর পর থেকে। আমিই প্রথম দাবি তুলি স্মৃতিফলকের। কলকাতা পুরসভা, ভারতসভা তথা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আবক্ষমূর্তি ও স্মৃতিফলক বসে ২৯ জুলাই, ২০২০-তে। বিদ্যাসাগরের নিমতলা কানেকশন ছিল আগে থেকেই।

একটু ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায়, এই নিমতলা ঘাট একবার ইংরেজের গোঁয়ার্তুমিতে জায়গাছাড়া হতে চলেছিল ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি। গঙ্গার পাড়ে শবদাহ নিষিদ্ধ করছিল বৃটিশ প্রশাসন। নিমতলাঘাট ও কাশীপুর ঘাটকে পাঠানো হচ্ছিল আদিগঙ্গার তীরে। তখন কলকাতায় বিদ্বজ্জনেরা রুখে দাঁড়ান। বিদ্যাসাগর নিজে উদ্যোগী হলেন হিন্দুর পারলৌকিক ভাবাবেগে যাতে আঘাত না লাগে সেটা দেখতে। তিনি ডিরোজিওর ছাত্র প্রখ্যাত বাগ্মী রামগোপাল ঘোষের বাড়ি গেলেন। রামগোপাল ভিতরের ঘরে ছিলেন। বিদ্যাসাগর তাঁর মায়ে সঙ্গে দেখা করলেন। বললেন সমস্যার কথা। রামগোপালজননী ভেতরে গিয়ে ছেলেকে বললেন শ্মশান-উচ্ছেদ সংকটের কথা। রামগোপাল ঘোষ সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এসে বিদ্যাসাগরকে আশ্বস্ত করলেন, তিনি বক্তৃতা দেবেন। যথানির্দিষ্ট দিনে হলভর্তি সাহেব ও কলকাতার বিদগ্ধ পণ্ডিতদের সামনে রামগোপাল স্মরণীয় বক্তৃতা দিলেন। যুক্তির জাল বিস্তার করে সকলের কাছে প্রমাণ করলেন, হিন্দুদের পুনর্জন্মলাভের বিশ্বাসের মূলে আঘাত করা হবে, শ্মশান গঙ্গাতীর থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হলে। সকলে মানলেন তাঁর যুক্তি। নিমতলা থাকল নিমতলাতেই। উচ্ছেদপ্রক্রিয়া বন্ধ করা হল।

এই ঘটনা সম্ভব হত না, যদি না বিদ্যাসাগর সশরীরে রামগোপালের বাড়িতে হাজির হতেন। রামগোপাল ঘোষের নামে একটি স্মৃতিফলক নিমতলাঘাটের প্রাচীন দেওয়ালে এখনও দেখা যায়। এটা যেন প্রকারান্তরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সমাজসংস্কারক ভূমিকারই স্বীকৃতি। বিদ্যাসাগরের নিজেরও দাহ হয় এই নিমতলা ঘাটে ১৮৯১-এর ২৯ জুলাই। কিন্তু বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের কারও কারও মনে তাঁর কার্মাটাঁড়ের শেষের দিনগুলির কথাই গেড়ে বসে আছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন