মঙ্গলবার | ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:৫৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
মাটির গন্ধমাখা লোকগানে সতেজতার সন্ধানী অমর পাল : রিঙ্কি সামন্ত কোটিপতি সাংসদরাই কি সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি : তপন মল্লিক চৌধুরী বাহের দ্যাশের লোকসংস্কৃতি ও লোকসঙ্গীত নানা বৈচিত্র্যে বৈচিত্র্যময় : মনোজিৎকুমার দাস আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (শেষ পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী মোদি ম্যাজিক ছিল কিন্তু সে ম্যাজিক ফিকে হয়ে গেছে : দিলীপ মজুমদার সুশান্ত দাসের ‘প্রকৃতিগাথা’ : দিলীপ মজুমদার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রহনযোগ্যতা ও আরাকান আর্মি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন কেদারনাথ-বদ্রীনাথ ভ্রমণ : প্রকৃতি আর ঈশ্বর যখন একটি বিন্দুতে মিশে যায়… : অমৃতাভ দে আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (তৃতীয় পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী বসিরহাটে নুনের হাট, শ্যামবাজার নুনের বাজার : অসিত দাস মুর্শিদাবাদের আমকথা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত জেন অস্টিন নারী স্বাধীনতার অন্যতম পথিকৃৎ : মনোজিৎকুমার দাস ইসবার ইন্ডিয়া জোটকা সরকার, আমরা একাই একশো — মমতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (শেষ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন মুর্শিদাবাদের আমকথা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (দ্বিতীয় পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী নজরুল ও মধুপুর (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ কবি কুসুমকুমারী দাশ ও পরাবাস্তবতার কবি জীবনানন্দ : বিজয়া দেব হুগলির লোকসভা ভোটে গ্রামীন এলাকায় ১৭১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (সপ্তদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (প্রথম পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী নজরুল ও মধুপুর (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (ষোড়শ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আলাউদ্দিন অল আজাদ-এর ছোটগল্প ‘আমাকে একটি ফুল দাও’ ধর্ম আর সাম্প্রদায়িকতাকে বিজেপি বড্ড বেশি জরুরি করে ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী লোকগীতি ঘাটু গান আজ অবলুপ্তির পথে : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (পঞ্চদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন হাসান আজিজুল হক-এর ছোটগল্প ‘স্বপ্নেরা দারুণ হিংস্র’ বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বেদেদের বৈচিত্র্যময় জীবনযাপনের কথা : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (চতুর্দশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই অক্ষয় তৃতীয়া-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল : সুশীল চৌধুরী (৭১ নং কিস্তি), অনুবাদ : বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৩০১ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল ১৬৫০-১৭২০, উইথ স্পেশাল রেফারেন্স টু দ্য ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি

অষ্টম অধ্যায়

একটি জীবনবৃত্তান্ত (রিজিউমে)

বাংলায় শাসন করতে আসা সুবাদারদের ভাগ্য ফেরানোর কাহিনী থেকে আমরা আন্দাজ করতে পারি যে কী ধরণের লুঠ চলেছে এই অঞ্চলে। বাঙলার প্রত্যেকজন নবাব বাংলা থেকে বিপুল পরিমান অর্থ লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে। স্যর জে এন সরকার জানিয়েছেন, শায়েস্তা খান দশ বছরে ৯ কোটি টাকা, খান জাহান বাহাদুর খান এক বছরে দু-কোটি টাকা, আজিমুশ্বান ৯ বছরে ৮ কোটি টাকা বাংলা থেকে লুটে নিয়ে গিয়েছেন তাদের শাসনামলে (জে এন সরকার, প্রাগুক্ত, খণ্ড ২, ৪১৩)। এর থেকে বোঝা যায় বাংলা থেকে কি পরিমান লুঠ হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলও বাংলা থেকে বিপুল পরিমান অর্থ লুঠ করেছে। ফলে বাংলা থেকে বিপুল রপ্তানি এবং বাংলায় বিপুল পরিমান রূপো আসা সত্ত্বেও সাধারণ দামস্তরে তার কোনও প্রভাব পড়ে নি এবং খাদ্যপণ্যের দামও খুব একটা বাড়ে নি এবং অন্য উপকূল এলাকার থেকেও দাম অনেক কম ছিল। কিন্তু খাদ্যের দাম কম থাকলেও একদিকে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং অন্যদিকে পণ্য কেনার তীব্র প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও সাধারণ কারিগর বা তাঁতির জাগতিক অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন ঘটে নি এবং এই বিষয় নিয়ে আমরা কয়েক স্তবক আগেই আলোচনা করেছি। ইওরোপিয় কোম্পানি যে পরিমান রূপো আনত তা যথাসম্ভব তৃণমূলস্তরের কারিগরদের হাতে পৌঁছত না, উদ্বৃত্ত যেটি তৈরি হত তা মূলত সীমাবদ্ধ থাকত ওপরতলার এক শ্রেণীর মানুষ, দালাল-মধ্যশ্রেণী-ব্যবসায়ীদের কাছে।

শেষ অবদি বলা যায়, বাংলায় যে কৃষি নির্ভর অর্থনীতি ছিল, তার বিপুল বাণিজ্যিকরণ ঘটেছিল। কিছু কৃষিপণ্যের ইওরোপিয় চাহিদা এবং বিদেশি কোম্পানিগুলির দ্বারা সেগুলি সংগ্রহ করার উদ্যমে কৃষির বাজারী করণ এবং বাণিজ্যিকরণ উভয়ই বিপুলভাবে বৃদ্ধি পায়। তিনটি মূল রপ্তানিপণ্য, সুতি, রেশম এবং সোরার উৎপাদন বৃদ্ধি ঘটে মূলত ইওরোপিয় কোম্পানিগুলির চাহিদার কারণেই। এখন এই পণ্যগুলির চাহিদা বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়। ফলে এটা আমরা আন্দাজ করতেই পারি, যদিও সংখ্যা দিয়ে এটির পরিমান বিচার করা যাবে না, ইওরোপিয় বাণিজ্য বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীকরণের উদ্যম সৃষ্টি হয় এবং দক্ষ নজরদারিতে বাণিজ্যিক শস্যের চাষের এলাকার এবং তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে রপ্তানির পরিমান বাড়ে সে পদ্ধতি পরের সময়ে আরও বেশি করে উজ্জ্বল হয়ে প্রতিভাত হবে। তবুও বলব, ইওরোপিয় কোম্পানিগুলির ব্যবসা বৃদ্ধির যে প্রভাব বাংলার অর্থনীতিতে পড়েছিল, তাকে উন্নয়ণের প্রবণতা বলা ঠিক হবে না, বরং এটি বাঙলার পরম্পরার প্রান্তিক এলাকায় একটুখানি আঁচড় কাটতে পেরেছিল মাত্র।

সপ্তদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙলার খাদ্যদ্রব্যের বাজার দর — মুরল্যান্ডের তত্ত্ব খণ্ডন

মুরল্যান্ডের তত্ত্ব (ডবলিউ এইচ মুরল্যান্ড, ফ্রম আকবর টু আওরঙ্গজেব, ১৭৮-৮২) সপ্তদশ শতকের হুগলীর বাজার দর ভারতীয় উপকূল এবং অন্যান্য এলাকার বাজার দরের সঙ্গে তুলনীয়, সেটি খণ্ডনের সময় এসেছে ডাচ এবং ব্রিটিশ মহাফেজখানাগুলিতে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিপুল নথিপত্র থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল তথ্যভাণ্ডারের আলোকে। এই যে বিশাল তথ্যভাণ্ডার আমাদের হাতে আছে, সেখান থেকে নিঃসন্দেহে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, সে সময়ের বাঙলার খাদ্যদ্রব্যের বাজার দর বেশ কম ছিল — এবং ভারতীয় অন্যান্য উপকূল এলাকার তুলনায় তো যথেষ্টই কম ছিল।

মুরল্যান্ডের বক্তব্য ছিল ১৬৫০ অবদি বাঙলার বাজার দর অন্যান্য উপকূল এলাকার তুলনায় অচিন্ত্যনীয়ভাবে কম ছিল। এই অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের কারণ তিনি বর্ননা করতে গিয়ে তিনি দেখিয়েছেন, এর আগের সময়ে অন্যান্য উপকূল অঞ্চলে যত পরিমান রূপো আসত, তখন বাংলায় রূপোর আমদানি প্রায় হতই না বলা চলে, তাই রূপোর কম দামের সঙ্গে বাজার দরও কম ছিল। তার পরেই, সপ্তদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ইওরোপিয়রা বাংলায় ব্যবসা করতে এসে বাঙলার ব্যবসার ক্ষেত্র বাড়ালে বাঙলার বাজার দর অন্যান্য এলাকার বাজার দর অনুযায়ী উন্নীত হয়।

এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার কারণ হল ১৬৫০ সালে বাঙলার জনৈক কুঠিয়ালের মন্তব্য। তিনি লিখেছিলেন, বাঙলার পণ্য ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় প্রায় অর্ধেকের কম দামে মেলে। কিন্তু এই ব্যক্তিই আবার ১৬৫৮তে লেখেন খাদ্যদ্রব্যের দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। কুঠিয়ালের অভিযোগ মেনে নিয়ে মুরল্যাণ্ড লিখলেন, এই সময়ে ইওরোপিয়রা বিপুল পরিমানে দামি ধাতু বাংলায় এনে ব্যবসাবাণিজ্য বৃদ্ধি ঘটাচ্ছিল; তার মতে এই ঘটনার প্রভাব পড়েছে বাজার দর বৃদ্ধিতে। বাংলায় কেন রূপোর অপ্রাপ্যতা ছিল, সেটা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলছেন, এর আগের সময় বাঙলার রাজস্ব রূপোয় নেওয়া হত, এবং এই রূপো দিল্লির মুঘল দরবারে সিক্কা রূপি হিসেবে রাজস্ব মেটাতে প্রায় সবই চলে যেত। তাই এই সময়ে বাঙলার বাণিজ্য দরুণ যে পরিমান রূপো বাংলায় আসত এবং থাকত তার পরিমান বাঙলার বাজার দরকে বাড়াবার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র যথেষ্ট ছিল না কারণ রূপো বাংলায় স্বাভাবিকভাবে খুবই দামি ছিল, অন্যভাষায় বাজার দর খুবই শস্তা ছিল।

ইওরোপিয় রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ার জন্যে হঠাতই বাংলায় বিপুল পরিমান রূপো প্রবেশ করতে থাকে, এবং এটির পরিমান এতই বেশি ছিল যে, এই ধাতু বাংলায় বিপুল মুদ্রা অবস্থায় পরিবর্তন ঘটায়। তিনি বলছেন এই যে বিপুল রূপোর কম বাজারদরওয়ালা বাংলায় প্রবেশ ঘটল, ঠিক তার জন্যে এতদিন যে রূপোর অপ্রাপ্যতার জন্যে যে বাজার দর মুখ লুকিয়েছিল, সেটি হঠাৎ উচ্ছল হয়ে বাংলার বাজার দরকে উপকূলীয় বাজার দরের সমান করে দিল। এই উপপাদ্যকে প্রমান করার জন্যে লিখছেন এই সময়ের (অর্থাৎ ১৬৫০-এর আগে) বাংলা দশটি দেশে চাল পাঠাত, যারা এই পরিমান করমণ্ডল থেকে আনিয়ে নিতে পারত (কিন্তু তারা শস্তার দেশ বাংলা থেকে আনায় — অনুবাদক)।

কিন্তু আমাদের হাতে যথেষ্ট প্রমান আছে, যা দিয়ে আমরা প্রমান করিয়ে দেখাতে পারি, বাংলার খাদ্যদ্রব্যের বাজার দর কোনও দিনই সর্বভারতীয় উপকূল এলাকার বাজার দরের সঙ্গে এক হয় নি। মূরল্যান্ডের তত্ত্বটি দাঁড়িয়ে আছে মাত্র একজন কুঠিয়ালের লেখা মন্তব্যের ভিত্তিতে, আমাদের হাতে আছে ভারতের বিভিন্ন এলাকার বাজার দরের সমীক্ষা, যা দিয়ে নির্ভুলভাবে প্রমান করা যায় বিভিন্ন উপকূল এলাকার বাজার দরের তুলনায় বাংলার বাজার দর যথেষ্ট কম ছিল। ১৬৯৮তে বম্বের কুঠিয়াল লিখছেন, বাংলার শ্রমের মূল্য খুবই কম, তার কারণ আমাদের সঙ্গে বাংলায় খাদ্যদ্রব্যের বাজার দরের বিপুল পার্থক্য (ওসি, ২২ মে, ১৬৯৮, ৬৫৬৬ সংখ্যা, ৫৪)। ১৭০২-তে কোর্ট অব ডিরেক্টর লিখছে, বাংলার সঙ্গে মাদ্রাজের বিনিয়োগের পার্থক্যের অন্যতম প্রধান কারন হল, পণ্যগুলির বাজার দরের পার্থক্য (ডিবি, ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৭০৯, ৯৬ খণ্ড, ৪৩৪)। ১৭১১তে সেই একই কর্তারা লিখলেন, ফোর্ট (মাদ্রাজ)-এর তুলনায় বে(বাংলা) অঞ্চলের পণ্যের বাজার দর অনেক কম। বে-তে যেটা একটাকা ফোর্টে সেটা এক প্যাগোডা (১ প্যাগোডা সমান ৩.৫টাকা মোটামুটি, সূত্র ডিবি, ২৮ ডিসে, ১৭১১, ৯৭ খণ্ড, ৪৬১)। (চলবে)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন