মঙ্গলবার | ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:৫৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
লোকসংস্কৃতিবিদ আশুতোষ ভট্টাচার্য ও তাঁর চিঠি : দিলীপ মজুমদার নববর্ষের সাদর সম্ভাষণ : শিবরাম চক্রবর্তী নববর্ষ গ্রাম থেকে নগরে : শিহাব শাহরিয়ার ফিরে আসছে কলের গান : ফজলুল কবির সিন্ধুসভ্যতার ফলকে খোদিত ইউনিকর্ন আসলে একশৃঙ্গ হরিণ : অসিত দাস একটু রসুন, রসুনের কথা শুনুন : রিঙ্কি সামন্ত ১২ বছর পর আরামবাগে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্বের সয়লা উৎসব জমজমাট : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কোনিয়াকদের সঙ্গে দু’দিন : নন্দিনী অধিকারী স্বচ্ছ মসলিনের অধরা ব্যুৎপত্তি : অসিত দাস বাড়বে গরম, চোখের নানান সমস্যা থেকে সাবধান : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী আঠালো মাটি ফুঁড়ে জন্মানো শৈশব : আনন্দগোপাল হালদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

যে-জন ছবি আঁকে আনমনে …

পেজ ফোর, বিশেষ প্রতিনিধি / ১৯২ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২

কবির অনুভুতি, ‘এ মনে বসত করে কয়জনা, মন জানে না…’। জীবন যতদিন থাকবে, যুগের চেহারা যা-ই হোক না কেন, আত্মার সংকট কে ঠেকাবে? যন্ত্র সভ্যতা দেহ তথা ইন্দ্রিয়কে ভোগ বা দুর্ভোগ প্রচুর পরিমাণে দেবে, কিন্তু মন! মনটা যাবে কোথায়! বিশেষত নারী মন? সে তো অর্ধেক আকাশ। অন্তবিহিণ। রূপকথা-কল্পনা-কষ্ট! এবং অবশ্যই কিছুটা অস্পষ্ট। সে যে মানে না মানা। ইচ্ছে ডানার ওপর ভর করে নিষেধের গণ্ডীটা পেরিয়ে উড়ে যেতে চায় বারবার। যেখানে “তোমার-আমার” কোনো কথা থাকে না, কথা থাকে না “কোথাও থামার”, দুঃখ নেই যেখানে — নেই সুখ, খোঁজবার কোনো দায়। শুধু প্রয়োজন থাকে একটু একা বসে ভাববার, বাঁচার মতো বাঁচার উপায়।

এই ‘বাঁচার মতো বাঁচতে গিয়ে’ই ‘আমার আমি’ খুজে পায় স্বতন্ত্র। এই স্বতন্ত্র আলাদা করে এক জনের সঙ্গে অপর জনের যাপন প্রণালী।

আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় একজন মহিলার সাধারণ হয়েও অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প। হ্যাঁ, গল্পই বলব। তথাকথিত প্রশিক্ষণ না থাকার পরেও একজন কী ভাবে হাতে রং-তুলি তুলে মনের ক্যানভাসে ফুঁটিয়ে তোলেন নীল আকাশে উড়ে চলা পাখির গান বা সুরের দোলে দদ্যুল্যমান হওয়া সদ্য প্রস্ফুটিত ফুলের গন্ধ — তাই জানাবো। কী ভাবছেন? গান বা গন্ধ ছবিতে আঁকা যায় নাকি! যায় বইকী। যদি ছবি কবিতা হয়ে ঝড়ে পড়ে বা ছবিতে প্রাণস্থাপন হয়!

পূর্বা ঘোষাল। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। আমাদের প্রিয় রিঙ্কুদি এমন-ই একজন শিল্পী, যিনি ক্যানভাসে প্রাণ-প্রতিষ্ঠা করেন। কোনো প্রত্যাশায় নয়, শুধু নিজে ভালো থাকতে তাঁর হাতে তুলি, ছুঁচ, রং-সহ একাধিক শিল্প-সামগ্রী। হাতের সামনে যা পান, তার মধ্যেই মনের মাধুরী মিশিয়ে ফুটিয়ে তোলেন নানা শিল্প। সেটি ফেলে দেওয়া কোনো কাগজের বক্সে-ই হোক বা ছেঁড়া কোনো কাপড়ের টুকরোর মধ্যেই হোক না কেন। কোনো কিছুই তাঁর কাছে অপাঙক্তেয় নয়। আজকের রি-সাইক্লিং বা পুন-প্রতিষ্ঠার জগতে এটি একটা অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য মানসিকতা।

পিতার বদলির চাকুরির সূত্রে ছোটবেলা তাঁর কেটেছে একাধিক গ্রাম-মফঃস্বলে। ফলে নিঃস্বর্গ প্রকৃতির সৌন্দর্য তাঁর মনের মণিকোঠায় শৈশব থেকেই স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে নিজের মতো করে। খুব কম বয়সেই নিজের পছন্দের পাত্রের সঙ্গে পাড়ি দেন শ্বশুরবাড়ি। অজানা জায়গায় এসেও পারিপার্শ্বিক মানুষজন তাঁর এই শিল্প-যাপনকে উৎসাহ দেন বলে জানালেন শিল্পী নিজেই। তারপর দুটি মেয়ে (বড়ো তনুস্মিতা ঘোষাল, ছোট তেজস্মিতা ঘোষাল) আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। বিশেষ করে ছোটো মেয়ের (তেজস্মিতা ঘোষাল) মধ্যে একটা সময় খুঁজে পান নিজেকে। কারণ তাঁর ছোটো মেয়েও যে তাঁর মতো শিল্প প্রতিভার অধিকারী। রিঙ্কুদি গল্পের ছলে বলছিল, ‘আমার ছোটো মেয়েকে স্কুলের প্রজেক্ট করতে সাহায্য করার সময় আবার নিজেকে খুঁজে পাই নতুন করে। কোন অপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে শিল্প ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের মানসিকতা প্রায় এক লেভেলে যেত। এছাড়া আমার স্বামী, বড়ো মেয়ে, শাশুড়িমা — সকলেই নানা রকম শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে আমাকে উৎসাহিত করেছেন। কাছের মানুষদের নিজের হাতে তৈরি করা নানা রকম জিনিস যেমন, গ্লাস পেন্টিং, গ্রিটিংস কার্ড, কাগজের তৈরি ফুল বা ফুলদানী — ইত্যাদি জিনিস দিতে খুব পছন্দ করি। বিশেষ করে এই সব জিনিসগুলি যদি উক্ত ব্যক্তির পছন্দ হয় তাহলে যে অপার্থিব আনন্দ পাই তা বলে বোঝাতে পারব না।’

পেশায় তিনি শিক্ষিকা। শহরের এক নামী স্কুলে কচি-কাঁচাদের মধ্যে সারাক্ষণ ডুবে থাকেন তিনি। পাশাপাশি শিশুদের মন রং দিয়ে রাঙিয়ে তোলেন। তাঁর সোনার-কাঠি রূপোর কাঠির ছোঁয়ায় শিশুরাও শিল্প-সচেতন হয়ে ওঠে। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজে হাতে আলপনা দেওয়া বা কলিগের ক্লাস-রুটিনে শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তোলা তাঁর নিত্য কর্ম। তবে এক-কথায় প্রচার বিমুখ তিনি। বৃহৎ জগতে নিজের নাম নিয়ে বা শিল্প-প্রতিভার জন্য পরিচিতি নিয়ে একদমই ভাবিত নয়। আজকের ফেসবুকের জগতে, যেখানে নিজের ফ্লেম তৈরি করতে অনবরত প্রয়াস চালাচ্ছে মানুষ — সেই দৌড়ে একদমই অংশ নিতে চান না রিঙ্কুদি। নিজের ছবি পাঠাতে ভালোবাসেন দুই মেয়ে বা খুব কাছের আত্মীয়দের। নিজের বাবা এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প-বোধ তাঁকে নাড়া দেয়। নিজেই বলছিলেন, ‘আমি রাজনীতি-জগতের মানুষ নই। রাজনীতি নিয়ে খুব একটা আগ্রহীও নই। কিন্তু আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে আঁকা, গান রচনা, কবিতা রচনা, নানা বাদ্যযন্ত্রে সুর তোলা — ইত্যাদি গুণগুলি আমাকে আকৃষ্ট করে।’

পরিবারের সঙ্গে একান্ত সময় কাটাতে ভালোবাসেন সমুদ্র সৈকতে। কোনো নামী শিল্পীর আর্টগ্যালারি দেখার থেকে অনেক বেশি পছন্দ করেন বইমেলায় বা গ্রামের কোনো মেলায় নিজের মনে বসে কোনো অনামী শিল্পীর আর্টপেপারে নিমগ্ন হয়ে তুলির টান দেখতে। দুই কন্যা শহরের বাইরে কাজের সূত্রে থাকায় এখন দিনের অনেকটা সময় তাঁর কাটে দুই পোষ্যকে নিয়ে। তাঁর অমায়িক হাসি, সুন্দর ব্যবহার — কম সময়েই অনেককে আপন করে নিতে সক্ষম। জানতে চেয়েছিলাম, নিজের ছবি নিয়ে প্রদর্শনী করতে চান না? উত্তরে জানালেন, ‘সুযোগ পাচ্ছি কই?’

সত্যি এটা ভাববার বিষয়, আমাদের শহরে আনাচে-কানাচে এমন অনেক মণি-মুক্ত সম শিল্পী ছড়িয়ে আছেন, যাঁরা প্রচার বিমুখ, নিজেকে প্রচারের আলোয় আনতে চান না। কিন্তু উল্টো দিক থেকে এটাও ভাববার বিষয় যদি তাঁদের শিল্প সকলের সামনে আসে, তাহলে হয়তো আমরা অর্থাৎ সাধারণ শিল্প-প্রেমীরা উপকৃত হব। এর জন্য দরকার শিল্পী ও শিল্প-প্রেমী উভয়েরই একটু এগিয়ে আসা। পৃথিবীর সবকিছুই অর্থমূল্যে বিচার করা যায় না। অনেক শিল্পীই তাঁর শিল্পকে পণ্যে রূপান্তরিত করতে চান না। কিন্তু শিল্পপ্রিয় মানুষদের কাছে পৌঁছাবার জন্য অনেক সময় সেই সুযোগও তৈরি হয় না। অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘পেজফোরনিউজ’ সেই চেষ্টাই করছে। ‘পেজফোরনিউজ’ পোর্টাল চাইছে এইরকম অনেক সুপ্ত প্রতিভাকে পাঠকের সামনে তুলে আনতে ও শিল্প-শিল্পী এবং দর্শকের মধ্যে এক সুদৃঢ় মেলবন্ধন তৈরী করতে। এর ফলে মানুষের মনের রসদ আমরা জোগাতে পারবো বলে প্রত্যাশা রাখি।

ছবি : তনুস্মিতা ঘোষাল


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন