মঙ্গলবার | ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৩১
Logo
এই মুহূর্তে ::
ত্র্যম্বকেশ্বর দর্শনে মোক্ষলাভ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কুম্ভমেলায় ধর্মীয় অভিজ্ঞতার থেকে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেশি : তপন মল্লিক চৌধুরী রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন ৭ লক্ষ টন ছাড়াবে, কমবে অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘হিড়িক’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি অধরা, আমার আলোকপাত : অসিত দাস বিজয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-র ছোটগল্প ‘শিকড়ের টান’ বাংলাভাষার নেচিতে ‘ময়ান’ ও ‘শাহিস্নান’-এর হিড়িক : অসিত দাস একটু একটু করে মারা যাচ্ছে বাংলা ভাষা : দিলীপ মজুমদার রাজ্যে এই প্রথম হিমঘরগুলিতে প্রান্তিক চাষিরা ৩০ শতাংশ আলু রাখতে পারবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সামরিক জান্তার চার বছর — মিয়ানমার পরিস্থিতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ১৯ ফেব্রুয়ারি ও স্বামীজির স্মৃতিবিজড়িত আলমবাজার মঠ (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চাষিদের বাঁচাতে রাজ্যের সরাসরি ফসল কেনার দাওয়াই গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার মোদীর মিডিয়া ব্যস্ত কুম্ভের মৃত্যুমিছিল ঢাকতে : তপন মল্লিক চৌধুরী রেডিওকে আরো শ্রুতিমধুর করে তুলেছিলো আমিন সায়ানী : রিঙ্কি সামন্ত গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি চুঁচুড়ার সুগন্ধ্যায় : অসিত দাস প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি — মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : সুমিত ভট্টাচার্য মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়, মিথ এবং ডিকনস্ট্রাকশন : অসিত দাস মহাকুম্ভ ও কয়েকটি প্রশ্ন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব কাশীকান্ত মৈত্রের জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন : ড. দীপাঞ্জন দে অমৃতের সন্ধানে মাঘী পূর্ণিমায় শাহীস্নান : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বেঁচে থাকুক বেণী পুতুল নাচ

পেজ ফোর, বিশেষ প্রতিনিধি / ১৪৪০ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১

পুতুল নাচ ভারতের এক জনপ্রিয় ও প্রাচীন ফোক পারফর্মেন্স। ঋক বেদ থেকে শুরু করে কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে আমরা এই পুতুল নাচের উল্লেখ পাচ্ছি। এই পুতুলের পা নেই। হাতে দস্তানা বা ঘাগরা পরে আঙুলের নাড়াচাড়ায় দুটি পুতুলের কথোপকথন, নাচ, গান, ঝগড়া সবকিছু ফুটিয়ে তোলেন বেণী পুতুল শিল্পীরা। অতীতে এরা গ্রামে গ্রামে পুতুল বিক্রি করে বেড়াতেন। এখনও গ্রাম ও শহরের বহু মানুষ ঘরের দেওয়ালে বেণী পুতুল সাজিয়ে রাখেন। সেদিক থেকে বিচার করলে এই পুতুল একটা চমৎকার ঘর সাজানোর জিনিসও বটে।

আঙুল ও হাতের কারসাজিতে পুতুল নাচানোর সঙ্গে সঙ্গে শিল্পীরা “ও খেঁদি নাচবি খেঁদি রসের বিনোদিয়া” জাতীয় নানা ধরণের গান করেন এরা। তরজা জাতীয় গান ও নাটকীয় সংলাপ এই পুতুল নাচের বৈশিষ্ট্য।

পুতুলের মাথা ও হাত একটা বাঁশের লাঠির মাথার ওপরে থাকে। লাঠির নীচে থাকে ছিদ্র, সেই ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সুতোর সাহায্যে এরা পুতুল নাচান। পুতুল নাচাতে তারা মূলত ব্যবহার করেন মধ্যমা ও বুড়ো আঙুল। বেণী পুতুল তৈরি হয় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে। তালের আঁটি ও মাটি দিয়ে তৈরি হয় মুখ। শিল্পীদের হাতে বাধা থাকে ঘুঙুর। সেই ঘুঙুর বাজিয়ে শিল্পীরা গান করেন। পুতুলের চরিত্র অনুযায়ী সাজপোশাক তৈরি হয়। বেণী পুতুল লোকপ্রযুক্তির একটা বড় উদাহরণ। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত অরবিন্দ ঘড়াই বেণী পুতুল নাচের এক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশভাগের আগে বাংলাদেশের বগুড়া এবং রাজশাহী জেলায় এই পুতুলের উদ্ভব। এরপর এই শিল্পীরা ছড়িয়ে পড়েন নদীয়ার রাণাঘাটে, সুন্দরবন এলাকায় এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও তমলুক অঞ্চলে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু গ্রামে একসময় এই পুতুল নাচের শিল্পীদের দেখা পাওয়া যেত। এখন এরা মূলত থাকেন পূর্ব মেদিনীপুরের মুগবেরিয়ার রাধাপুর, বাতেন্দা, ভূপতিনগরের পদ্মতামুলি, ভগবানপুরের খেজুরিয়া, বাসুদেববেড়িয়া, রসুলপুর, বৃন্দাবনচক এবং ঘোলাবার গ্রামে একসময় বহু বেণী পুতুল শিল্পী বাস করলেও এখন তাদের অনেকে অন্য জীবিকায় সরে গেছেন। পদ্মতামুলি গ্রামে এখনও এই শিল্পীরা সক্রিয়। পদ্মতামুলির বেণী পুতুল শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন বসন্ত কুমার ঘড়াই, শ্রীমন্ত ঘড়াই, পরশুরাম ঘড়াই, রামকৃষ্ণ ঘড়াই, অরবিন্দ ঘড়াই, অমল ঘড়াই, সুচিত্রা ঘড়াই এবং প্রতীক ঘড়াই প্রমুখ শিল্পীরা। এরা এখনও এই পুতুল নাচ দেখান। পদ্মতামুলি বেণী পুতুল শিল্পীদের গ্রাম হিসেবে পরিচিত।

পদবী বলছে এরা হাড়ি সম্প্রদায়ের মানুষ। দলিত সম্প্রদায়ের এই মানুষরা থাকেন হরিজন পল্লীতে। এদের অনেকেই আগে ছিলেন পালকি বেহারা। একসময় এই গ্রামে ৭০/৮০টি পরিবার এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দারিদ্র এবং কাজের সুযোগ না থাকায় অনেকে পেশা ছেড়েছেন। সুযোগ পেলেই আবার তারা এই পুতুল নাচে ফিরতে চান। অভাবের তাড়নায় শিল্পীদের অনেকেই এখন ছুতোর মিস্ত্রী, দিনমজুর, রিকশ চালানোর কাজ করেন। এই গ্রামের সেরা শিল্পী বসন্ত কুমার ঘড়াইয়েরও রয়েছে একটা মুদির দোকান।

বেণী পুতুলের একটা বৈশিস্ট্য হল, এর মবিলিটি বা পরিবহণ যোগ্যতা। যেকোন জায়গায়, যেকোন পরিবেশে খোলা আকাশের নিচে এই গ্লাভ পাপেটের শিল্পীরা অনুষ্ঠান করেন। সারা পৃথিবীতেই এই পাপেট খুব জনপ্রিয়। নাটক, বিজ্ঞাপন, প্রচার, রিয়্যালিটি শো সব জায়গায় বেণী পুতুলের ব্যবহার বাড়লেও এখানে স্রেফ ভাবনা ও উদ্যোগের অভাবে এই পুতুল নাচ বিপন্ন।

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বেণী পুতুল শিল্পীরা এখন অনেকটা রড পাপেটের স্টাইলে ছোট ছোট নাটক দেখাচ্ছেন। তাদের পুরনো তাৎক্ষণিক সংলাপ রচনা ও গান বাধার দক্ষতা চর্চার অভাবে কমছে। গ্রাম্য সংলাপে জায়গা নিয়েছে প্রসেনজিৎ- ঋতুপর্ণার ঝগড়া। স্থানীয় লোকশিল্পীরা এই পুতুল নাচ নিয়ে জীবিকা করতে চান কিন্তু তারা কীভাবে এগোবেন, কীভাবেই বা অবিকৃত থাকবে এই পুতুল নাচ সেটা একটা বড় সমস্যা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন