মঙ্গলবার | ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:০১
Logo
এই মুহূর্তে ::
দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা : সন্দীপন বিশ্বাস নারীবেশী পুরুষ অভিনেতা শঙ্করকে সামাজিক ট্যাবুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় না : বিশ্বেন্দু নন্দ সাসারামের রোহতাসগড়, বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ : নন্দিনী অধিকারী জমিদার রবীন্দ্রনাথ : আহমাদ ইশতিয়াক আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর, এবারও অধরা রইলো আলোচনা : সুমিত ভট্টাচার্য জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (ষষ্ঠ পর্ব) : বিজয়া দেব চাষির দুঃখের ঘরে সাপের বাসা, আজও রেহাই নেই ছোবলের হাত থেকে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সল্টলেক তথা লবণহ্রদই কি কুচিনান : অসিত দাস পদ্মা বা পার্শ্বপরিবর্তনী একাদশী ব্রতকথা : রিঙ্কি সামন্ত জয়া মিত্র-র ছোটগল্প ‘ছক ভাঙার ছক’ কত দিন বিনা চিকিৎসায় চলে যাবে অসুস্থ মানুষের প্রাণ? প্রশ্ন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের : সুমিত ভট্টাচার্য দেবী করন্দেশ্বরীর পূজো ঘিরে উৎসবের আমেজ মন্তেশ্বরের করন্দা : প্রবীর কুমার সামন্ত প্রেতবৈঠকে (প্ল্যানচেট) আত্মার আগমন : দিলীপ মজুমদার সংগীত সাধক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য : রিঙ্কি সামন্ত শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যের অন্দরে বাহিরে বিরাজমান সিণ্ডিকেট : তপন মল্লিক চৌধুরী কবিতা সিংহ-এর ছোটগল্প ‘পশ্চিম রণাঙ্গন আজ শান্ত’ কলকাতার আর্মেনিয়ান জনগোষ্ঠী : অসিত দাস মঙ্গলবারের মধ্যে কাজে ফিরুন — সুপ্রিম ধমক, উৎসবে ফিরুন — মমতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (পঞ্চম পর্ব) : বিজয়া দেব বিবিসির ইয়ংগেস্ট হেডমাস্টার বাবর আলী (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত হাঁসের ডিমের উৎপাদন বাড়াতে এগিয়ে এল রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় এ আমার এ তোমার পাপ : দিলীপ মজুমদার জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (চতুর্থ পর্ব) : বিজয়া দেব রোহিঙ্গা সংকট — ত্রান সহায়তা ও কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে কি তিলোত্তমা সুবিচার পাবে : তপন মল্লিক চৌধুরী বিবিসির ইয়ংগেস্ট হেডমাস্টার বাবর আলী (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত সময় হোক বা পরিস্থিতি, প্রণাম সব শিক্ষককেই : প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (তৃতীয় পর্ব) : বিজয়া দেব রোহিঙ্গা সংকটের সাত বছর — বাংলাদেশ ও মিয়ানমার পরিস্থিতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন রবিবাবুর নোবেল রহস্য : সাইফুর রহমান
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ কৌশিকী অমাবস্যার-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

যীশু খ্রিস্ট, মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি (প্রথম পর্ব) : লিখছেন ডা. ইন্দ্রনীল আইচ

ডা. ইন্দ্রনীল আইচ / ৫৫২ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০

আমার গুরু নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি আমাকে প্রায়ই বলেন, ‘আমরা লিখি মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য, মনের খোরাক জোগানোর জন্য—কোনরকম বিতর্ক তৈরী করবার জন্য নয়, কারও চরিত্রহানি করবার জন্য নয়। তুই যেসব টপিক নিয়ে লিখিস, সবসময় biased হওয়া থেকে সাবধান থাকবি। লেখায় logic রাখবি, কিন্তু সেই logic যেন illogical না হয়ে যায়। মনে রাখবি, লেখায় অত্যধিক দুঃসাহস দেখানো ঠিক নয়—সেটা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’ গুরুবাক্য সর্বদা বেদবাক্য। ওনার উপদেশ আমি সর্বদা মেনে চলার চেষ্টা করি।

এই লেখার শিরোনামে যে তিনটি বিশেষ দিনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে একরাশ বিতর্ক। এই বিতর্কই আমাকে আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে ধর্মগ্রন্থ এবং মহাকাব্য নিয়ে নতুন ভাবে ভাবনা চিন্তা করতে বাধ্য করেছিল এবং আমাদের দেশের উত্তরপ্রান্ত অবধি দৌড় করিয়েছিল—যার পরবর্তী ফলশ্রুতি আমার এখনকার প্রবন্ধগুলি। কিন্তু আমার সেই প্রথম অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে আমি কখনোই লিখিনি। কারণ, অকারণে বিতর্ক তৈরী করবার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। কিন্তু যে ঘটনাবলী নিয়ে প্রায় দু’হাজার বছর ধরে বহু বিতর্কের জন্ম দিয়ে এসেছে, আমার মতো একজন সামান্য লেখক তাতে আর কোন নতুন বিতর্ক সংযোজন করতে পারে? অতএব লিখতে শুরু করলাম।

প্রায় দু’ হাজার বছর আগে বেথেলহেমের আস্তাবলে কুমারী মেরী প্রসব করলেন এক দেবশিশুকে। সদ্যোজাতের নাম রাখা হলো যীশু। যীশুর জন্মের অব্যবহিত পরেই প্রাচ্য (পূর্ব বা east) দেশ থেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন তিনজন জ্ঞানী ব্যাক্তি (wise men বা magi)। রাজা হেরোডের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা বললেন, ‘আকাশের নক্ষত্র বিচার করে আমরা জানতে পেরেছি যে ঈশ্বরের সন্তান এবং ইহুদিদের ভাবী রাজা একটু আগে জন্মগ্রহণ করেছেন। আপনি কি বলতে পারেন, তিনি আপনার রাজ্যে ঠিক কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন?’ হেরোড বিরক্তি সহকারে উত্তর দিলেন, ‘না,  জানি না। তবে আপনারা যদি জানতে পারেন—অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।’ যাই হোক সেই তিনজন ব্যাক্তি যীশুকে খুঁজে পেলেন এবং তাঁকে উপহার দিয়ে পুনরায় নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন।

রাজা হেরোড পড়লেন মহা বিপদে। তিনি ইহুদীদের রাজা। নিয়ম অনুসারে তাঁর সন্তানদেরই ভবিষ্যতে রাজা হওয়ার কথা। কিন্তু এই তিনজন আবার একজন সদ্যোজাতের কথা বলছেন, যিনি কি না ভবিষ্যতে ইহুদীদের রাজা হবেন। তবে কি তাঁর সিংহাসন অসুরক্ষিত? হেরোড তাঁর সেনাবাহিনীকে আদেশ দিলেন, ‘বেথেলহেমের সমস্ত দুই বছরের কম বয়স্ক শিশুদের হত্যা করা হোক।’ সৈন্যরা রাজার আদেশ পালন করবার আগেই জোসেফ মেরী এবং যীশুকে নিয়ে পালিয়ে গেলেন মিশরে।

আমরা এখানে থামবো। বেথেলহেম অধুনা প্যালেস্টাইনে অবস্থিত। প্যালেস্টাইনের পূর্ব দিকে রয়েছে ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারত। কিন্তু আজ থেকে দু’হাজার বছর আগে ইরানের কিয়দাংশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারত—এই বিশাল ভূখণ্ডকে ভারতবর্ষ বলে অভিহিত করা হতো। সুতরাং বলা যেতেই পারে, সেই তিনজন জ্ঞানী ব্যাক্তি যারা কি না প্রাচ্য দেশ থেকে এসেছিলেন…তাঁরা প্রকৃতপক্ষে এসেছিলেন ইরাক কিংবা ভারত থেকে!

কিন্তু তাঁরা এলেন কেন? মেরী তো কোনো দেশের মহারানী ছিলেন না যে তাঁর সন্তানকে উপহার দেওয়ার জন্য তাঁদের এতো দূর থেকে ছুটে আসতে হবে। আপনি বলবেন, ‘কেন? তাঁরা তো আকাশের নক্ষত্র গণনা করে বুঝতে পেরেছিলেন যে যীশু জন্মগ্রহণ করেছেন।’ অবশ্যই আপনি ঠিক। কিন্তু এই নক্ষত্র গণনা করে তাঁরা এটা বুঝতে পারলেন যে যীশু বেথেলহেমে জন্মেছেন কিন্তু এটা বুঝতে পারলেন না যে বেথেলহেমের ঠিক কোথায় যীশু জন্মেছেন? এটা জানতে তাঁদের রাজা হেরোডের কাছেই আসতে হলো? না কি তাঁরা হেরোডকে চুপিসারে এই সংবাদ দিতে চেয়েছিলে— ‘তোমায় বধিবে যে…গোকুলে বাড়িছে সে’?

যীশু ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্রই ওই তিনজন এতো দূর থেকে সেখানে পৌঁছে গেলেন? এতো অবিশ্বাস্য টাইমিং! না কি অন্যত্র জন্মানো এক শিশুকে ওই তিনজন জ্ঞানী ব্যাক্তি চুপিসারে মেরীর কাছে পৌঁছে দিয়ে বলেছিলেন, ‘একে নিজের ছেলের মতো মানুষ করো।’ আপনি বলবেন, ‘অসম্ভব।’ আমি বলবো, ‘অবশ্যই সম্ভব। কারণ আমরা সবাই মহাকাব্যে বর্ণিত এক নায়ক চরিত্রের কথা জানি, কারাগারে জন্মগ্রহণ করা মাত্রই, প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টির মধ্যেও যাকে এক রাত্রের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল গোকুলে—নন্দ এবং যশোদা’র কোলে।’

কুমারী মেরী’র গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যীশু। কোনো কুমারীর গর্ভসঞ্চার হওয়া আজকের দিনেও মেয়েদের অপ্রীতিকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়। তাহলে যীশুর জীবনচরিত যারা লিখেছিলেন—সেই মার্ক, লিউক, ম্যাথিউ এবং জন কেন এই সত্যকে ঢাকা দিলেন না? কেন তাঁরা বললেন না, ‘জোসেফ এবং মেরী’র সন্তান ছিলেন যীশু’? না কি তাঁদের অবচেতন মনে এই চিন্তা কাজ করছিল… ‘কুমারী মায়ের সন্তান সর্বদা নায়কোচিত চরিত্র হন।’ আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহাকাব্যের রচয়িতা এবং সেই মহাকাব্যে বর্ণিত এক বিখ্যাত ধনুর্ধরের কথা? তাঁরাও ছিলেন কুমারী মায়ের সন্তান!

যীশুর জন্মের পর থেকে তেরো বছর বয়স অবধি ঘটনার কথা লিপিবদ্ধ আছে। তেরো বছর বয়স অবধি যীশু ধর্মালোচনা শুনতেন, বাবার সঙ্গে ছুতোর মিস্ত্রির কাজ করতেন। তিরিশ বছর বয়স থেকে তিনি নিজের অনুগামীদের কাছে ঈশ্বর সম্বন্ধে নিজের মতামত ব্যাখ্যা করতে থাকেন। কিন্তু তেরো বছর বয়স থেকে তিরিশ বছর বয়স পর্যন্ত যীশু কোথায় ছিলেন, কি করছিলেন—তা কারোর জানা নেই। নিউ টেস্টামেন্ট, মার্ক, লিউক, ম্যাথিউ এবং জনের ক্যানোনিক্যাল গসপেলস এই সময়ের ঘটনাবলীর ব্যাপারে নিশ্চুপ। কেন?

আজ এই পর্যন্তই থাক। কারণ এরপর চলে আসবে ক্রুসিফিকশন, রিসারেকসন, সাসপেন্ডেড অ্যানিমেশন, নিকোলাস নটোভিচ, স্বামী অভেদানন্দ, হেমিস গুম্ফা এবং রোজাবালের প্রসঙ্গ—সে অনেক বড় ব্যাপার। যদি আপনি এতো অবধি লেখা হজম করতে পারেন, যদি বিতর্কিত লেখার জন্য আইনের চোখে আমি দোষী সাব্যস্ত না হই, যদি আপনাদের আরো কিছু শুনবার ইচ্ছা থাকে, তাহলে এর পরবর্তী অংশ লিখবো কখনও না কখনও—নাহলে এই শিরোনামের লেখা এখানেই শেষ।

পুনশ্চ: বাঁকুড়া সন্মিলনী মেডিকেল কলেজে আমার এক সময়ের সহপাঠী ডা. সৌমেনকান্তি কুমার এবং আমার অত্যন্ত প্রিয় সিনিয়ার ডাঃ তমালকান্তি সেনগুপ্ত—এই দুজনের অনুরোধে এই লেখাটা লিখলাম। তমালদা—এই বিষয়টি নিয়ে হয়তো আমরা নিজেদের মধ্যে সবচাইতে বেশি আলোচনা করেছি—যদি আরো লিখি, চেষ্টা করবো নিজের সেরাটা দেওয়ার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন