বৃহস্পতিবার | ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:২৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (দ্বিতীয় পর্ব) : অভিজিৎ রায় কেন বারবার মণিপুরে আগুন জ্বলে আর রক্ত ঝড়ে : তপন মল্লিক চৌধুরী শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (শেষ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (প্রথম পর্ব) : অভিজিৎ রায় শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (ষষ্ঠ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (পঞ্চম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ? : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (চতুর্থ পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার শতবর্ষে সঙ্গীতের ‘জাদুকর’ সলিল চৌধুরী : সন্দীপন বিশ্বাস সাজানো বাগান, প্রায় পঞ্চাশ : অমর মিত্র শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (তৃতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (একাদশ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার খাদ্যদ্রব্যের লাগামছাড়া দামে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের : তপন মল্লিক চৌধুরী মিয়ানমারের সীমান্ত ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (দ্বিতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (দশম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বুদ্ধদেব গুহ-র ছোটগল্প ‘পহেলি পেয়ার’ ‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (প্রথম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (নবম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘তোমার নাম’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (অষ্টম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘হাওয়া-বদল’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার প্রবোধিনী একাদশী ও হলদিয়ায় ইসকন মন্দির : রিঙ্কি সামন্ত সেনিয়া-মাইহার ঘরানার শুদ্ধতম প্রতিনিধি অন্নপূর্ণা খাঁ : আবদুশ শাকুর নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘শুভ লাভ’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কাজলদীঘি, ২২৭ নং কিস্তি

জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় / ২১৪৮ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০
kajaldighi

২২৭ নং কিস্তি

মিত্রা, ইসি, তনু তিনজনেই শরীর দুলিয়ে হেসে চলেছে।

কিছু বল। মিত্রা হাসতে হাসতে বললো।

মিত্রার দিকে কট কট করে তাকালাম।

মিত্রা তখনো হাসছে। বললো। দেখ, তুই তো কোনদিন সংসার করলি না। আমরা যেটুকু করি তার দামও দিলি না।

ছোটোমা মিত্রার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

দেখ ছোটোমা সব কিছুতে সাক্ষী আছে। জিজ্ঞাসা কর। মিত্রা একবার আমার মুখের দিকে তাকায় একবার ছোটোমার মুখের দিকে তাকায়।

রুমাদি, বোনপোকে কিছু বুঝছেন। অনিমেষদা তাকাল মাসীমনির দিকে।

ঝেড়ে কাসো না। এতো বুজুং বাজুং দেওয়ার কি আছে। আমি বললাম।

রাগ করছিস কেন।

কোথায় রাগ করলাম।

আমি কি বলতে চাইছি তুই তো ধরে ফেলেছিস।

না। আমার এতো বুদ্ধি নেই। তাহলে সংসারটা ভালো করে করতাম। আমি নিরেট।

বাবা তোর রাগও আছে দেখছি। মিত্রা গাল ফুললো।

বিধানদা, অনিমেষদা হাসছে। মাসীমনি, বৌদি ফিক ফিক করছে।

তুমিও পার। বৌদি বললো।

সুতপা তোমাকে না বলতে ও দুবার ভাববে। আমাকে না বলতে এক সেকেন্ড সময় নেবে না।

তাহলে বলতে যাচ্ছ কেন। অপেক্ষা করো।

লোভ। না বললে যদি ফসকে যায়। নিজেদের অস্তিত্বটা টিঁকিয়ে রাখতে হবে তো।

ধ্যুস চা পাওয়া যাবে না। আমি উঠে দাঁড়ালাম। জ্যেঠিমনি হাতটা চেপে ধরলো।

জ্যেঠিমনির মুখের দিকে তাকালাম। কি হলো?

বলেছিস তো, ছুটকি ঠিক এনে দেবে।

দাঁড়িয়ে কথা গিলছে।

তুই অর্ধেক পেটে রেখে কথা বলিস, তাই সকলের ইন্টারেস্ট বেড়ে যায়।

অনিমেষদারা ধান্দাবাজ শুধু নিয়ে যাবে, কিছু দেবে না।

এবার দেখলাম সোনাআন্টি, বড়োমা, ছোটোমাও হাসছে।

তোর কি চাই বল। আমি অনিমেষকে বলছি। জ্যেঠিমনি বললো।

তুমি পারবে না।

বস। বসে বল।

আমি আবার বসে পরলাম।

ইসি যা তো মা নীপাকে একটু বলে আয় বাইরে কয়েক কাপ চা দিতে। জ্যেঠিমনি বললো।

বলে দিয়েছি।

আমি ইসির দিকে তাকালাম।

আচ্ছা, কাছে গিয়ে না বললে কি বলা যায় না।

সব তোর মতো বুঝলি অনি। বিধানদা বললো।

তুমি থামো। মাসীমনি ধমকে উঠলো।

অনিমেষ তুমি কিছু নেবার কথা বলবে না। দেবার কথা বলবে। জ্যেঠিমনি বললো।

অনিমেষদা হাসছে।

আমি জ্যেঠিমনির মুখের দিকে তাকালাম।

বাবাঃ তুমিও দেখি এরই মধ্যে বেশ কথার মার প্যাঁচ শিখে গেছ।

জ্যেঠিমনি হাসছে।

তোর পাল্লায় পরে।

অনিমেষদার দিকে তাকালাম।

ভালই ফিট করেছ। মাসীমনি, জ্যেঠিমনি এরপর সোনা আন্টি ফুট কাটবে।

না বাবা আমি তোকে কিছু বলবো না। অজু বলবে। সোনা আন্টি বললো।

সবাই হাসছে।

তোমার তো আবার অজু শিখন্ডি আছে।

আছে না, ছিল।

ওই হলো।

দিদি ঠিক বলে তুই ভীষণ তেঁয়েটে।

দেখছো দেখছো শিঁড়ি বেয়ে কি সুন্দর উঠছো। এবার দিদির প্রবেশ ঘটলো। তারপর ছোটো।

আয়েষার সঙ্গে তোর কবে পরিচয় হলো। বড়োমা বললো।

এটা মূল কাহিনী নয়, উপকাহিনী।

মূল কাহিনীটা তুই বল।

ওই যে প্রবীরদা ফোন করেছিল। ফুসুর ফুসুর গুজুর গুজুর। তোমরা তো আমার আসার আগে একটা স্ট্র্যাটিজি তৈরি করে ফেলেছ। অনি এলেই ওকে এই ছকে বধ করবো।

সবাই হাসতে শুরু করেছে।

তুই সোজা ভাবে কিছু ভাবতে পারিস না? আন্টি বললো।

ভাববো কি করে, সবাই যে বাঁকা।

এবার তোর ট্রিটমেন্ট আমি করবো। অজু করবে না।

এই দায়িত্বটা কবে থেকে পেলে।

সোনাআন্টি আমার গলা জড়িয়ে ধরে হেসে ফেললো।

নেপলা বারান্দায় এসে দাঁড়াল। আমাকে ওই অবস্থায় দেখে ওখান থেকেই চেঁচাল।

অর্জুন, আন্টি দাদাকো জবরদস্ত পাকরা।

থাম। দেব মাথা ভেঙে। আপদ সব জুটেছে। বড়োমা খেঁকিয়ে উঠলো।

নেপলা হেসে চলেছে।

একে একে অর্জুন, বিনদ, আলতাফরা এসে দালানে ভিড় করলো। সূক্ষ্ম চোখে জায়গাটা জরিপ করে নিল।

ম্যাডাম একটা বোতল দাও না। নেপলা বললো।

মিত্রা দরজার দিকে এগোতেই নেপলা বলে উঠলো।

দাঁড়াও দাঁড়াও।

কি হলো?

নেপলা খামারের দিকে ফিরে তাকিয়ে ডাকল। সাগির।

বল। অন্ধকার থেকে শব্দ ভেসে এলো।

নীপাদির কাছে থেকে একটা বোতল নিয়ে আয়। পেছন দিক দিয়ে যা।

সাগিরের মুখ দেখতে পালাম না।

বিনদ, অর্জুন আমাকে এই অবস্থায় দেখে মুচকি মুচকি হাসছে।

বিনদ। অনিমেষদা বলে উঠলো।

হ্যাঁ দাদা।

অংশু কোথায়?

সুবীরদা, অংশুদা সামনের মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।

প্ল্যান প্রোগ্রাম হলো।

কিসের!

অনিমেষদা বিনদের দিকে তাকিয়ে হাসছে। অর্জুন বিনদের হাত চেপে ধরেছে।

একটু ঘুরতে গেছিলাম।

অন্ধকারে কি গ্রাম দেখলে?

অর্জুনের সঙ্গে গেছিলাম।

কোথায় ইনভেস্ট করতে চাইছো?

বিনদ একবার আমার মুখের দিকে একবার অনিমেষদার মুখের দিকে তাকাল।

অনিমেষদা এইভাবে সরাসরি ওকে ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বলতে পারে এটা ও ভাবে নি।

অনির দিকে তাকিয়ো না। অনি তোমাকে কোনও দিন হ্যাঁ বলবে না। আমাদের স্টেটের প্রয়োজন, আমরা তোমাকে ব্যবস্থা করে দেব।

দাদা পার্মিসন না দিলে কোন….।

দাদা যদি পার্মিসন না দেয়।

অন্য জায়গায় ইনভেস্ট করবো।

তাহলে আমাদের স্টেটের ক্ষতি। তুমি সেটা চাও।

দাদা ঝামেলা করতে বারন করেছে।

অনিমেষদা হাসছে।

আচ্ছা ওই পার্টটা যদি আমরা বুঝে নিই।

দাদা আগে দাদাভাই-এর কাজ এগিয়ে দিতে বলেছে, তারপর আমাদের কথা ভাববে।

এটাও শুরু করো না। তোমরা যে দাম বলেছ ওরা ছেড়ে দেবে বলেছে।

আমি সোনাআন্টির দিকে তাকালাম।

সোনাআন্টি আমার মুখের দিকে ইসারা করে হাসছে। ব্যাপারটা এরকম।

ওরা কথা বলছে বলতে দেনা তুই কেন মাথা গলাচ্ছিস।

অবতার আর ঝিনুক ও বাড়ির বারান্দা থেকে বেশ কয়েকটা চেয়ার আনল।

নীপা চা এনেছে। পেছনে সাগির জলের বোতল নিয়ে এসেছে।

বসো বসো তোমাদের সঙ্গে একটু গল্প করি।

অনিমেষদার কথা শুনে নেপলা জল খেতে খেতেই হেসে উঠলো।

আবার হে হে করে হাসে। বড়োমা খিঁচিয়ে উঠলো।

যতই তুমি ধমকাও। বিনদভাই দাদাকে প্রথম দেখছে। বুঝতে একটু সময় নেবে। ওকে সাহায্য করতে হবে।

কেন ও কি তোকে সাউকিরি করতে বলেছে।

মিত্রা এগিয়ে গেল। নীপাকে সাহায্য করতে।

বড়োমা। নীপা বললো।

এখন চা খেলে কখন খাবে।

বুঁচকিদের খাওয়া হয়েগেছে।

খাচ্ছে।

ওরা উঠুক। আফতাব কোথায়?

ওবাড়িতে ইসলামভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছে।

নাজমা।

দিদিভাইও আছে।

ওরা ও-বাড়িতে খাবে, না এ বাড়িতে?

ও-বাড়িতে।

তাহলে সবার জায়গা ও-বাড়িতে কর। দামিনীকে একবার ডাক তো।

মিত্রা আমার হাতে চায়ের কাপ দিল। সবার হাতেই চায়ের কাপ। অনিমেষদা কাপে চুমুক দিয়ে নীপার দিকে তাকাল।

বেশ কড়া করে করেছিস। সুরো কোথায় রে?

মাম্পি-মিকিকে খাওয়াচ্ছে।

ওরা এখনো ঘুমোয় নি?

তুমি ঘুমোও। যা শুরু করেছিল….।

সুরোকে একবার ডাক।

নীপা হাসছে।

অনিমেষদা আমার মুখের দিকে তাকাল।

লতিফ সাহেব আজ প্রবীরের সঙ্গে দেখা করেছিল।

আমি অনিমেষদার কথাটা গায়েই মাখলাম না। নিজের মনে কাপে চুমুক দিচ্ছি।

একটা আন্ডার স্ট্যান্ডিং-এ আসতে চাইছে। তুই যা বলবি তাইই মেনে নেবে।

অর্জুন, বিনদরা অনিমেষদার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে। আমি চুপচাপ।

বিধানবাবু, প্রবীরকে কথা দিয়েছে তোকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ব্যাপারটা যতটা সম্ভব মিট মাট করবার চেষ্টা করবে।

আমি চায়ের কাপে শেষ চুমুকটা দিয়ে মিত্রার দিকে কাপটা এগিয়ে দিলাম।

মিত্রা আমার হাত থেকে কাপটা নিল।

অনিমেষদা তোকে কিছু বলছে, শুনতে পাচ্ছিস। মিত্রা আমার চোখে চোখ রেখেছে।

আমাদের গ্রামের ভাষায় ছাগলকে কি বলে জানিস।

কি?

ছেলি।

মিত্রা ফিক করে মুখ টিপে হাসলো।

নেপলা, অর্জুন বিনদ আলতাফদের ট্রানস্লেট করছে।

দিদি সাবাধান। তনু হাসছে।

আমি তনুর দিকে তাকালাম।

খালি হ্যা হ্যা হি হি করা ছাড়া কি পার।

আমাকে বলছো কেন?

মিত্রার দিকে তাকালাম।

তুই কখনো ছাগলের তিনটে বাচ্চা হতে দেখেছিস।

দেখলে কি হবে, না দেখলে কি হবে, একটু বল শুনি।

দেখবি ছাগলের দুটো বাঁট। দুটো বাচ্চা দুটো বাঁট নিয়ে টানা টানি শুরু করলে তিন নম্বরটা কি খাবে?

মিত্রা ঠোঁট টিপে হাসছে।

তিনটে বাচ্চা হলে তৃতীয়টা দুধ পাবে না।

আমি কি ছাগল।

কেন, তাই বললাম?

তাহলে অনিমেষদা?

দামিনীমাসি বারান্দায় এসে দাঁড়াল।

এসেছো। মিত্রাকে ছাগলের গল্প বোঝাতে শুরু করেছে। বড়োমা বললো।

ধরে আচ্ছা করে দিতে পারছো না। দামিনীমাসি দাঁতে দাঁত চিপলো।

দামিনীমাসি অনিমেষদার দিকে তাকাল। আপনি কিছু বলতে পারছেন না?

কি বলবো বলো।

ওই জন্য সব মাথায় চরে বসেছে।

পিছলে বেরিয়ে যাচ্ছে। মিত্রা বললো।

আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম।

প্রবীরবাবু ফোন করেছিল। ওকে বহুবার ফোন করার চেষ্টা করেছে রিং বেজে যাচ্ছে ধরছে না।

দামিনীমাসির গলায় সেই ঝাঁজ। আমার সামনে এসে দাঁড়াল।

তোর ফোনটা দেখি।

ধমকাচ্ছ কেন।

তোর তেল মারা কথা বার করে দেব। তুই কি আমায় ইসলাম পেয়েছিস।

ফোনটা দিলেই শান্তি।

শান্তি তোর বার করাবো।

এই তো তুমি কোমড়ে কাপর বেঁধে ঝগড়া শুরু করে দিলে।

তুই আগে ফোনটা দে।

আমি হাসতে হাসতে পকেট থেকে ফোনটা বার করে দামিনী মাসির হাতে দিলাম।

মামনি তুই আমার ফোন থেকে লাস্ট যে নম্বরটা ডায়াল করেছি সেটা ডায়াল কর।

দামিনীমাসি মিত্রার হাতে নিজের ফোনটা দিল।

মিত্রা ডায়াল করলো।

সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে।

হুঁ রিং হচ্ছে। মিত্রা বললো।

দামিনীমাসি কট কট করে আমার দিকে তাকাল।

সিমটা কোন ফোনে গুঁজে রেখেছিস।

তোমার হাতে ফোনটা রয়েছে। খুলে দেখে নাও।

সব তো এখানে, অনাদির কাছে কাকে পাঠিয়েছিস?

তোমার কথা মাথায় ঢুকছে না।

ঢুকবে না তো। তোর খেলা আমি বুঝি না ভেবেছিস।

আমি হাসছি।

এই বিনদ। মাসি বাজখাঁই গলায় চেঁচিয়ে উঠলো।

হ্যাঁ মৌসি।

আলমকে অনাদির কাছে পাঠিয়েছিস কেন?

মুঝে সামাঝ নেহি আতা।

সব সামঝে দেব।

বিসওয়াস কি জিয়ে মৌসি।

নেপলা। মাসির গলা ধীরে ধীরে চড়ছে।

বলো মাসি।

শুভকে ভেতর থেকে ডেকে আন।

নেপলা দাঁড়াল না।

সাগির।

বলো।

কবিতা কোথায়?

ওবাড়ির বারান্দায় শুয়ে আছে।

বাসন্তী।

বলতে পারবো না।

কবিতা, বাসন্তী, ভিকি তিনটেকে ডেকে আন।

সাগির চলে গেল।

মাসী আমার মুখের দিকে তাকাল।

সাগরকে কতটা জায়গা নয়না, নম্রতার নামে লিখে দিতে বলেছিস?

সত্যি বলছি তোমার কথা মাথায় কিছু ঢুকছে না।

সব দিয়ে দিলে খাবে কি? সেই তো দিদির ঘারে এসে পড়বে।

ভেতর থেকে শুভরা সবাই বেরিয়ে এলো। ওবাড়ি থেকে ভিকি, বাসন্তী, কবিতা এলো। বারান্দা ভরে গেছে। শুভ এসে দামিনীমাসির পাশে দাঁড়াল। নম্রতা, অনিসা, অনিকা মাসির মুখের দিকে তাকিয়ে।

কিগো মাসি? কবিতা বললো।

তুই কার কাছ থেকে খবর পেয়েছিলি।

আমি তো চলে এয়েছি। মলিনাকে বুঝিয়ে এয়েছিলাম। তুই চালাস। আমি….।

ন’নম্বরের।

হ্যাঁ।

ও এর মধ্যে ভিড়লো কি করে!

অবতারকে জিজ্ঞাসা করো।

আমাকে টানছিস কেন? অবতার চেঁচিয়ে উঠলো।

মলিনাকে অনিদা চিনবে? কবিতা চেঁচাল।

গুরুজনরা এখানে বসে আছে। না হলে তোর পেট থেকে কিভাবে কথা বার করতে হয় আমি জানি।

নেপলা, সাগির হাসছে।

আন্টির জামাইটাও নম্বরি। তোর বউয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নেই ঠিক আছে। মেয়েটা কি বানের জলে ভেসে এসেছে। বৌকে লিখে দিতে অসুবিধে থাকলে মেয়ের নামে লিখে দে।

শেষ পর্যন্ত কি বলেছে।

টাকা চেয়েছিল।

তারপর।

বিনদ খবর পাঠিয়েছে। পাঁচটাকার জমি দশটাকায় কিনতে। এ কথা শুনলে কার বুকে বল থাকে বলো। টাকা নিয়ে সেই ছেলেটা বসে আছে। সেই জন্য প্রবীরদার কাছে লোক গেছলো।

মাসি চোখ ছোট ছোট করে একবার আমার দিকে একবার কবিতার দিকে তাকায়।

এই বুদ্ধিটা আবার বিনদকে চাঁদ দিয়েছে। কি শয়তান ভেবে দেখুন।

মাসি অনিমেষদার মুখের দিকে কপট গম্ভীর ভাবে তাকিয়ে।

এরকমভাবে একবার অনিদা অনাদিদাকে টাকা দিয়েছিল। সে অনেক টাকা। পরে অনিদা ডবল টাকা তুলে নিয়েছিল। আন্টির জামাই অনাদিদাকে কথাটা বলতেই অনাদিদা ধরে ফেলেছে। কবিতা বললো।

অনিমেষদা মুচকি মুচকি হাসছে।

এই ভিকি। দামিনীমাসি খ্যার খ্যারে গলায় চেঁচিয়ে উঠলো।

আমি কিছু করিনি দিদা বিশ্বাস করো।

ঠেসে এক থাপ্পর মারবো দাঁত কপাটি খুলে ফেলে দেব।

ওরা ঝিনুক আঙ্কেলের লোক। আমাকে বলেছিল পৌঁছে দিতে, আমার লোক গিয়ে পৌঁছে দিয়ে এসেছে।

সকলেই কম বেশি হাসা হাসি করছে।

ভিড়ের মধ্যে থেকে ঝিনুক ঠেলেঠুলে এগিয়ে এলো।

দাঁত বার করে দামিনীমসির দিকে তাকিয়ে হাসছে।

বোলো মৌসি আপ কেয়া জাননা চাহতে।

মাসি ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর থাকতে পারলো না।

উয় আদমি বহুত ঘাটিয়া থা। রূপিয়া ভি নেহি লেতা জাগা ভি লিখ নেহি দেতা। কেয়া কর সাঁকু। অর্জুন বোলা উসকো চমকা দে। কাম হো জায়েগা। আভি তক উয় সাইন নেহি কিয়া। কিঁউ। উয় জাগা উসকা বাপকা নেহি। ছট্টু ভি উয় জমিন পর রূপিয়া লাগায়া। আপ উসকো ফোন করকে পুছিয়ে। উসকা স্বর সব কই শুনা দিজিয়ে। আন্টি বিচ মে খাঁড়া হো কে সব কুছ গড়বড় কর দিয়া। নম্রতা উসকা বেটি নেহি থা? নয়না ভাবি উসকা বিবি নেহি থা? বোলো।

এই তুই চুপ করে বসে আছিস কেন?

দামিনীমাসি আমার মুখের দিকে তাকাল।

আমি আন্টির দিকে তাকিয়ে হাসলাম।

ছেরে দে।

কেন ছারবে? আঙ্কেল ছারলেও আমি ছারবো না। নম্রতা বলে উঠলো।

তোর ও সবে কি হবে রে। অনি যা বলে তাই কর। তাহলেই যথেষ্ট।

তুমি কতটুকু জানো। মা তোমাকে সব বলেছে নাকি।

তুই কি চাস?

ঝিনুক আঙ্কেল যা করেছে ঠিক করেছে। আমরা সবাই ঝিনুক আঙ্কেলকে সাপোর্ট করি।

দামিনীমাসি নম্রতার দিকে তাকাল।

তুমি বলো দিদা। বাবা যা দাম চেয়েছে তার থেকে আঙ্কেল বেশি দিতে চাইছে। তাতে ভয় কিসের।

ওই টাকাটা তোর বাপ হজম করতে পারবে না তাই ভয়। একুল ওকুল দুকুল যাবে।

সে তো এমনিও যাবে।

কি রকম!

আঙ্কেল দেবা আঙ্কেলের কাছ থেকে বকলমায় ওনার পার্টটা নিয়ে নিয়েছে।

তারমানে তো তোর বাপের….।

আপনি কিছু বুঝছেন। দামিনীমাসি তাকাল অনিমেষদার দিকে।

প্রবীর এই কথাটাই বললো। তাছাড়া দেবার কয়েকজন লোক মনে হয় কলকাতায় এসেছে। আলম না কার নাম বললে। তার দলবল তাদের বেধড়ক মেরেছে। তারা এখন সব হাসপাতালে।

মাসি বুবুনের মোবাইলে অনাদির নম্বর ব্লিঙ্ক করছে। মিত্রা বললো।

ওর হাতে দে। শুনি। মাসি বললো।

না শুনতে হবে না। আমি উঠে দাঁড়ালাম।

জ্যেঠিমনি আমার পাঞ্জাবী টেনে ধরলো।

তুই এখানে বোস।

এদের কথা শুনে কি হবে। এরা সব ছ্যাঁচড়া। কেরে কুরে নিলে আমি ভাল লোক।

কি বলে শোনা।

মিত্রা ফোনটা ভয়েস মুড করেই আমার হাতে দিল। অনাদি হ্যালো হ্যালো করছে।

বল।

থাকিস কোথায়?

খেতে বসেছিলাম। মুখে ভাত ছিল।

সবাই চুপচাপ হয়েগেল। পিন পরলে শব্দ হবে।

কেন এরকম করিস। অনাদির গলায় ন্যাকা ন্যাকা সুর।

তুই এমনভাবে কথা বলছিস, মনেহচ্ছে আমি তোর বিয়ে করা বউ।

তনু মুখে হাত চাপা দিয়ে বারান্দা থেকে নিচে নেমে গেল।

আমার টাকা লাগবে না। তোর কাগজে সাইন করে দিচ্ছি।

ওটা তোর ব্যাপার। অনুজবাবু যে ভাবে ইনস্ট্রাকসন দিয়েছিল সেইভাবে টাকা পাঠিয়েছি।

অনুজবাবু নিজের টুকু নিয়ে চলে গেছে।

বাকিটা তোরা হিসেব করে নে। যা চেয়েছিস তার থেকে বেশি পাঠিয়েছি।

আমরটা আমি করে দিচ্ছি। সাগরের দায়িত্ব নিতে পারবো না।

কেন?

ওর নাকি কাগজপত্র ব্যাঙ্কে আছে।

এতদিন তোকে বলে নি!

না।

প্রিয়দর্শিনীর কি হবে?

বিয়ে করেছি কবে, যে ভাববো।

ভেবে বলছিস?

ব্যবস্থা একটা করে নেব।

ওর মাল পত্র।

দেবা বুঝবে।

এখন আবার কাঞ্চনে ফিরে এসেছিস?

তুই টোঙা দিচ্ছিস।

না না। মেয়েটাকে দেখে কষ্ট হয়।

ফোন করেছিলাম কিছু বলে নি। তুই যা বলবি আমি শুনবো। বিশ্বাস কর আর কোনওদিন তোর কথার অবাধ্য হবো না।

সাগরকে দে।

নেই। ও লতিফকে পাঠিয়েছিল প্রবীরদার কাছে।

কেন?

বিধানদাকে বলে কেশটা মিটিয়ে নিতে।

কিভাবে।

ওর তো আর কিছু নেই। এই জায়গাটুকু নিয়ে….।

আমি ছাড়লেও অর্জুন, বিনদ ন্যান্সিকে ছাড়বে না।

অর্জুন ফোন করেছিল।

অর্জুনের মুখের দিকে তাকালাম। চোখ নামিয়ে নিল।

কখন।

ঘণ্টা খানেক আগে।

কি বলেছে।

কাল সকাল পর্যন্ত সময় দিয়েছে।

তোর পার্টটা সাইন করে দিয়ে টাকা নিয়ে নে। সাগরকে বল আমাকে এই নম্বরে ফোন করতে।

অনিমেষদাকে বলে আমার একটা ব্যবস্থা করে দে।

যে কেশ গুলো পেছনে নিয়ে বসে আছিস সেগুলোর কি হবে।

এই টাকা দিয়ে সেগুলো সাল্টাবো।

আগে নিজেকে পরিষ্কার কর। অনুজ কতো কমিসন নিল?

পাঁচ।

দেবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলি?

অনাদি চুপ করে রইলো।

কিরে চুপ করে রইলি।

করেছি।

তোকে খাবে বলছে?

আমি ওকে খাব। অনাদি ঝাঁজিয়ে উঠলো।

তুই এখনো সত্যি কথাটা গোপন করে রেখেছিস।

তুই বিশ্বাস কর অনি।

অনাদির গলাটা ভাড়ি হয়ে এলো। কথা বলছে না। ফোঁস ফোঁসানি আওয়াজ। বুঝলাম কাঁদছে।

কিরে।

বাবা আজ আমাকে বেজন্মার বাচ্চা বলেছে।

অন্যায়টা কি বলেছে।

মানুষ ভুল করলে কি তার কোনও ক্ষমা নেই।

তুই ভুল করিস নি। তুই ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিস। আজ থেকে মাস খানেক আগেকার কথা একটু ভাল করে মনে করার চেষ্টা কর।

আমি রাখছি। তোর পাঠান কাগজে সাইন করে দিচ্ছি।

আচ্ছা।

ফোনটা বন্ধ করে পকেটে রাখলাম।

অনিমেষদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। চোখ স্থির। কারুর মুখে কোনও কথা নেই।

আমি ভিড় করে থাকা মুখগুলোর ওপর একবার চোখ বোলালাম।

চলো রাত হলো এবার খেয়ে শুতে হবে।

আমি উঠে দাঁড়ালাম। অনিমেষদা নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে আমার হাতটা চেপে ধরলো। চোখে অনেক প্রশ্ন। বিধানদা, মাসিমনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।

খাওয়ার পরে আধঘণ্টা আমি বিধানবাবু তোর সঙ্গে বসবো।

কেন, বিশ্বাস হচ্ছে না।

এই মুহূর্তে বিশ্বাস করতে পারছি না।

তোমায় কে বোঝাল মাসীমনি না বিধানদা?

কেউ বোঝায় নি। তোর চোখমুখ বলছে।

কি জানতে চাও বলো। সবার সামনে বলছি।

না। সেখানে আমি তুই বিধানবাবু থাকবেন।

মাসীমনি?

রুমাদিকে প্রয়োজনে আমরা বলবো।

ডাক্তারদাদা।

সামন্তদা জানেন।

তোমরা যা জানতে চাইবে সে ঘটনা ঘটতে আরও সময় লাগবে।

পরিবেশ পরিস্থিতি তা বলছে না।

হাসলাম।

মিত্রা-তনুর মুখের দিকে তাকালাম। এক দৃষ্টে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। তনুর চোখ কুত কুত করছে। ভাবছে হয়তো অনি এতক্ষণ নিখুঁত অভিনয় করে গেল!

অনিমেষদা হয়তো আমার চোখের ভাষা বুঝতে পেরেছে।

মিত্রা-তনু ভাল আছে। তোকে না বুঝতে পেরে ওরা বরং দু-টোতে শান্তিতে আছে। ছিটে ফোঁটা যেটুকু দিস তাতেই ওরা খুশী।

আমার মনে হয় তুমি কোথাও ভুল করছো।

একটুও ভুল করছি না। রাজনীতি করে চুল পাকিয়ে ফেললাম। এটুকু বোঝার বয়স হয়েছে।

দেখো বড়োমা, ছোটোমা, জ্যেঠিমনি, আন্টি, বৌদি সকলে আমাকে ভুল বুঝছে।

এরা সকলে তোর ওপরটা দেখেছে। তোর ভেতরের ভেতরটা দেখে নি। সেখানে তুই কতটা হিংস্র এরা তার পরিচয় জানে না। দামিনী কিছুটা জানে। সেটুকু সম্বল করে তোকে বোঝার চেষ্টা করছি।

আমি অনিমেষদার চোখে চোখ রাখলাম।

একটা মানুষকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য তুই আঠারো বছর সময় নিয়েছিস। নট আ জোক।

ডাক্তারবাবু, রুমাদি আমাকে যথেষ্ট মানসিক সহায়তা দিয়েছে। আমি গেইজ করছি, আমাকে ব্যাপারটা জানতে হবে।

তোমার মতো মানুষের আমার সঙ্গে এইভাবে কথা বলা ঠিক হচ্ছে না। তাতে অনেকের মনে অনুসন্ধিৎসা আরও বেড়ে যাচ্ছে।

আমি পাত্তা দিই না। ওরা জলের মতো। যে পাত্রে রাখবে সেই পাত্রের আকার ধারণ করবে।

বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।

ঠিক আছে খাওয়ার পর তোমাদের সঙ্গে বসবো।

কথাটা বলে আমি বারান্দা থেকে খামারের দিকে পা বাড়াতেই, অনিমেষদা বলে উঠলো।

কোথায় যাচ্ছিস?

একটু বাইরে যাচ্ছি এখুনি চলে আসবো।

অনিমেষদার চোখে মুখে ছড়িয়ে পরলো অর্থপূর্ণ হাসি।

ঠিক আছে যা। একসঙ্গে খেতে বসবো।

পাঁচ মিনিট।

তোর কাছে পাঁচ মিনিট, পাঁচ ঘণ্টা, পাঁচ দিন, পাঁচ মাস, পাঁচ বছরের সংজ্ঞাটা শিখতে হবে।

আমি দাঁড়ালাম না। সোজা খামারে চলে এলাম। চারিদিকে আলো থৈ থৈ করছে।

বুঝলাম আমার পেছনে অনেক চোখ। হাজার পাওয়ারের বাতি জালিয়ে দেখার চেষ্টা করছে।

আলো থেকে অন্ধকারে নেমে এলাম।

অনিমেষদা এখন আমাকে প্রাণপনে আগলে রাখার চেষ্টা করছে। সঙ্গে বিধানদা, মাসীমনি। ওরা কিছুতেই আমাকে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে দেবে না। যা হওয়ার হয়ে গেছে। এবার একটা সুন্দর সহাবস্থান। আমি যে তা পারি না। আমারও যে নিজের কিছু কমিটমেন্ট আছে। আমার জীবনের আঠারটা বছর যারা নোংরামি করে কেড়ে নিয়েছে তাদের কেন ছারবো।

আমার জিনিষটা আমাকে বুঝে নিতে হবে। আমি তো কারুর জিনিষ গ্রাস করার চেষ্টা করি নি।

তাহলে এরকম হবে কেন।

তেঁতুল তলা পেরিয়ে সামনের খেতটায় দাঁড়িয়ে পাজামার দড়িটা খুললাম। বাথরুম সারতে সারতে নিজের কাজ গুছিয়ে নিলাম।

আবার অন্ধকার থেকে আলোর পথ ধরলাম।

খামারটা ফাঁকা। লাইট জ্বলছে। দূর থেকে দেখতে বেশ লাগছে।

সময় নষ্ট না করেই ফিরে এলাম।

খামার পেরিয়ে নতুন বাড়ির দিকে পা বারাতাই দেখলাম অনিসারা একসাথে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। আমাকে আসতে দেখে অনিকা এগিয়ে এল। বাধ্য হয়ে থমকে দাঁড়ালাম।

ওদের মুখগুলো একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম।

কিছু বলবি?

অনিকা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। কোনও কথা বলছে না।

বল।

তোমার মনটা ভাল নয়।

অনিকার নাকটা ধরে একটু নারিয়ে দিলাম।

দূর পাগলি।

আমি কোনও অন্যায় করেছি?

কে বলেছে?

কি জানি মনে হচ্ছে আমি কোনও অন্যায় করেছি।

দেখলাম সকলে আমাকে ঘিরে ধরে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।

না না তোরা কেউ অন্যায় করিস নি।

আমি হাসছি। শুভ আমার চোখে চোখ রেখেছে।

তোদের সকলকে দেখে আমার খুব ভাল লাগছে। তোদের বয়সটা যদি ফিরে পেতাম খুব এনজয় করতাম।

কেউ আমার কথার কোনও উত্তর দিল না।

সুজিত দাদাই-এর সঙ্গে প্রমোসনের ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলেছি। অনিসা বললো।

ভাল করেছিস। সুজিতদার সঙ্গে কথাই বলা হচ্ছে না।

আফু আঙ্কেল একটা বাজেট করে দিয়েছে।

আফতাবভাই-এর সঙ্গে সুজিতদার কথা হয়েছে।

হ্যাঁ। তুমি একটা অনুমতি দাও।

কি বল।

আমরা সবাই মিলে ঠিক করেছি পিকুদা টোটাল ব্যাপারটা সুজিতদাদাই-এর সঙ্গে কো অর্ডিনেট করবে।

যদি পারে করুক না, অসুবিধে কোথায়?

পিকুর দিকে তাকালাম।

কিরে পারবি তো?

পিকু কোনও কথা বললো না। মাথা নীচু করে নিল।

বাবা কোথায়?

তোমার সঙ্গে খেতে বসবে।

নম্রতাদি তোরটা বল। অনিসা তাকাল নম্রতার দিকে।

নম্রতা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।

কি হয়েছে বল?

বাবা ফোন করেছিল।

তোকে না মাকে?

দু-জনকে।

কি বলতে চাইছে?

বাবা আমাকে মাকে সঙ্গে নিয়ে লিমিটেড কোম্পানী করে ব্যবসাটা করতে চাইছে।

তোর কি মতামত?

ভেবে বলবো বলেছি।

মা।

না বলে দিয়েছে।

কেন?

মা বাবার সঙ্গে কোন রিলেসন রাখতে চায় না।

হাসলাম।

মা কি আবার বিয়ে করার ধান্দা করছে।

দেবো না পেটে একটা গুঁতো। অনিকা তেরে এলো। সব সময়….।

আমি ওর হাতটা চেপে ধরে হাসছি।

সবাই মুচকি মুচকি হাসছে। নম্রতার দিকে তাকালাম।

মা কি বলতে চায়।

তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায়।

দিদা জানে।

জানে।

অনিমেষদাদাই।

বলেছি।

তোকে নতুন করে কি বলবো বল।

তুমি আমার ওপর ছেরে দাও।

বাবাকে মেরে দিবি।

প্রয়োজন পরলে করতে হবে।

নম্রতাকে বুকে টেনে নিলাম।

বুকের আগুনটা এভাবে নষ্ট করিস না। সযত্নে তাকে গুছিয়ে রাখ। ভাল কাজে লাগা। প্রবলেম চাইল্ড। একটু সময় নে। দেখবি ঠিক পথ বেরিয়ে আসবে।

তুমি বলো। নম্রতার গলাটা ভাড়ি ভাড়ি।

এর পর ফোন করলে কোনও রেসপন্স করিস না। মাকেও বলিস ফোন করলে যেন রিসিভ না করে। মানুষটাকে ভেতর থেকে আঘাত কর। দেখবি তাতেই সে অর্ধমৃত হয়ে যাবে।

বুকের থেকে টেনে নিয়ে ওকে মুখো মুখি দাঁড় করালাম। কাঁধে হাত রাখলাম।

আমার দিকে তাকা।

নম্রতা মুখ তুললো।

অনেক দেরি হয়ে গেছে। তোর বাবারও কিছু অবলিগেসন আছে। নিজের জালে নিজে জড়িয়ে পড়েছে। এই ফাঁস থেকে বেরতে একটু সময় লাগবে। তোদের অপেক্ষা করতে হবে।

আবহমান কাল সেটা হতে পারে না। নম্রতা ঝাঁজিয়ে উঠলো।

আমাকে একটু ভাবতে দে।

তুমি তো ভেবে ঠিক কাজটাই করেছিলে।

কি করবো একটা ওয়েপনস কাজে লাগলো না। আর একটা ব্যবহার করবো।

বাবা তার নিজের সম্পত্তি না দিক দিদা-দাদু যে সম্পত্তি দিয়েছিলেন সেটা ফেরত দিক।

ওটা বেহাত হয়ে গেছে।

নম্রতা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে!

বকলমায়….?

হ্যাঁ।

আমি আইনি লড়াই লড়বো।

পেতে পেতে তুই বুড়ী হয়ে যাবি। তোর মা-বাবা দু’জনেই গত হয়ে যাবেন।

আমি ছারবো না।

আমি ছারতে বলি নি। আচ্ছা আফতাবভাইরা ফিরে যাক তারপর ভাববো।

কিরে আমরা সবাই বসে আছি। মিত্রা ও বাড়ির গেট থেকে চেঁচাল।

ঠিক আছে তোরা এখন শুয়ে পর।

আমি ওদের ছেরে এই বাড়িতে এলাম।

টেবিল চেয়ারের ব্যবস্থা থাকলেও নিচে টানা জায়গা পাতা হয়েছে। চিকনা, বাসু, নীপা, ভানু আজ পরিবেশনের দায়িত্ব নিয়েছে। বড়োমা, ছোটোমার দিকে একটা জায়গাও ফাঁকা নেই। অনিমেষদা, বিধনদার মাঝখানে একটা জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

বুঝলাম আজকে আমাকে ওখানে বসতে হবে।

ওই একই লাইনে দাদা, মল্লিকদা, ডাক্তারদাদা, ইকবালভাই, ইসলামভাই রয়েছে।

খুব কাছা কাছি অর্জুন, বিনদরা সারবদ্ধ ভাবে বসেছে।

আফতাবভাই, দিদি বড়োমাদের দিকে।

আবহাওয়াই বলে দিচ্ছে, খেতে খেতে কিছু আলোচনা হলেও হতে পারে।

কিগো বড়োমা আমি কোথায় বসবো?

ওখানে।

কেন?

অনিমেষ বলেছে।

তুমি মেনে নিলে।

আজকের দিনটা বোস, কাল থেকে বসতে হবে না।

মনে থাকে যেন।

কি করবো অনিমেষ বললো, তোর সঙ্গে কি দরকার আছে। ডাক্তারও তাল দিল।

তনু-মিত্রা হাসছে।

সুরো।

বলো।

মাম্পি-মিকি ঘুমিয়ে পড়েছে।

হ্যাঁ।

তোরা হাঁফ ছেরে বেঁচেছিস কি বল।

সুরো একবার আমার দিকে তাকাল। কোনও উত্তর দিল না।

পায়ে পায়ে নিজের জায়গায় এসে বসে পরলাম।

অনিমেষদা হাসছে।

খাওয়ার সময় ঝামেলা করবে না।

ঝামেলা আমি করছি।

ব্যাপারটা এরকম আমি করছি, তুমি থাবারি দিচ্ছ।

তাও না।

তাহলে কি?

অনিমেষদা চুপ করে রইলো।

দেখলাম একমাত্র মাসীমনি নিচে বসে নি। একটা চেয়ার আর টুলে বসেছে। চেয়ারে মাসীমনি বসেছে। টুলের ওপর খাবার দেওয়া হয়েছে। নীপা পাশে দাঁড়িয়ে।

খেতে খেতেই অনিমেষদা বললো।

বিনদ।

বলুন।

তোমাকে আমার মেয়ে সুরো কাল ফোন করেছিল।

হ্যাঁ।

কেন ফোন করেছিল তুমি জানতে।

জানতাম।

ওই ভদ্রলোককে তুমি চেনো।

আলাপ আছে।

আলম তোমার কাছে কতদিন আছে।

সাত বছর।

ছেলেটি কেমন।

আমার পার্মিসন ছাড়া কোনও কাজ করবে না।

তুমি তখন ঝিনুকের কথা শুনেছ।

আমিই ঝিনুককে বলেছি।

আমি খেতে খেতে একবার মুখ তুলে ওদের দিকে তাকালাম। জলের গ্লাসে চুমুক দিলাম।

অনিমেষদা আমার মুখের দিকে তাকাল। ঠোঁটে ফিন ফিনে হাসির রেখা।

আমিও হাসলাম।

আমি আবার খাবার থালায় মুখ গুঁজলাম।

তারমানে অনি তোমাকে ম্যাসেজ করেছিল।

হ্যাঁ।

নাগেশ।

নাগেশ খেতে খেতে মুখ তুলে তাকাল।

তনুর দিল্লীর বাড়িটা রেডি হয়েছে।

আর একটু বাকি আছে।

ওটাই এখন দিল্লীর অফিস হিসাবে ব্যবহার হবে।

হ্যাঁ।

শুধু আফতাবভাই-এর না টোটাল গ্রুপের।

নাগেশ হাসলো।

বলোনা, আমি ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। জানতে পারলে একটু শন্তি পাই।

দু-দিন পর আপনি সব জানতে পারবেন।

ঠিক। অনিকে তোমার থেকে আগে দেখেছি। তবু অনি আমার কাছে এখনো অচেনা।

নাগেশ-বনি দুজনেই হাসছে।

তুমি যেমন তোমার শ্বশুর মশাইকে ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছ, অংশুও তাই।

ওটা ওনার ফল্ট।

কই, মাস তিনেক আগেও এরকম অবস্থা ছিল না। তুমি তোমার শ্বশুর মশাই-এর সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। অংশুও আমাকে দু-চারটে কথা বলতো। তবে এতটা ম্যাচ্যুরিটি তখন ওর মধ্যে লক্ষ্য করি নি। তাই সেই ভাবে ওর কথার গুরুত্ব দিতাম না।

হঠাৎ কি হলো তোমরা দুজনে এতটা স্বাবলম্বী হয়ে পরলে। এটা অন্যায় কিছু নয়। তোমাদের প্রতি আমাদেরও কিছু আশা ভরসা আছে।

আমরা অন্যায় কিছু করলে আপনি প্রতিবাদ করুন।

একেবারে অনির কথাটা তুমি নিজের ঠোঁটে বসিয়ে নিলে।

অনিমেষদা নাগেশের দিকে তাকিয়ে আছে।

কি ভুল বললাম। আমাদের ভয় বলো টেনসন বলো ঠিক এই জায়গায়।

কেউ কোনও কথা বললো না। নিস্তব্ধে খেয়ে যাচ্ছে।

আচ্ছা অনির যদি কেউ খতি করতে চায়। তখন….।

অনিমেষদা কথাটা শেষ করতে পারলো না।

যা হবার একবার হয়ে গেছে। দ্বিতীয়বার সেই সুযোগ দেব না। এটুকু আপনাকে বলে রাখি, আমরা কেউ ইসলাম আঙ্কেল হবো না। হলেও প্যারালালি এই চেইনটা চলবে।

নিস্তব্ধ ঘরে অর্জুনের গলাটা গম গম করে উঠলো।

সবাই খাওয়া থামিয়ে মুখ তুলে তাকিয়েছে।

ধরো আমি যদি কোন খতি করি।

আপনি জীবিত থাকবেন। আপনার সমস্ত হ্যান্ডস অকেজো হয়ে যাবে।

ঘরের সবাই বিস্ময় চোখে অর্জুনের মুখের দিকে তাকিয়ে। অর্জুন এ কি কথা বললো! প্রত্যেকের চোখেই অবিশ্বাসের কাজল।

অফতাবভাই, দিদি পর্যন্ত অর্জুনের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে।

ধ্যান সে বাত কর। আফতাবভাই বললো।

অনিদাকো শরীরমে কই হাত লাগায়া তো উসকা শির গর্দান সে নেহি রহেগা। টুট জায়েগা।

অর্জুনের চোখে মুখে আগুন ছড়িয়ে পরছে।

আমি নিরুত্তাপ।

অর্জুন অনিমেষদার মুখের দিকে তাকিয়ে। স্থির চোখ কিছু পরার চেষ্টা করছে। অনিমেষদাও অর্জুনের মুখের দিকে তাকিয়ে।

অনিমেষদা মাথাটা হাল্কা করে দুলিয়ে বিধানদার মুখের দিকে তাকাল। হাসলো।

বিধানবাবু আপনার প্রশ্নের উত্তর পেলেন।

বিধানদা, মাসিমনির মুখের দিকে তাকাল।

সবাই নিস্তব্ধে খেয়ে যাচ্ছে।

আচ্ছা বিনদ, অনির যখন ওই অবস্থা তখন তুমি কোথায় ছিলে?

কলকাতায় ঘন ঘন এসেছি। এখানকার খবর নিয়েছি।

আর কিছু করো নি।

ওগুলো আপনাকে জানতে হবে না।

আলতাফ মাথা নীচু করে হেসে যাচ্ছে। অভিমন্যুরা কেউ মুখ তোলে না।

বিনদ একটু বিরিয়ানি আর চিকেন দিই। চিকনা বললো।

দাও। তুমি বলেছিলে টক দই খাওয়াবে।

রাতে খেও না। কাল খেও। সঙ্গে নিয়ে নেব।

দেখলাম তনু-মিত্রা একবার চিকনার দিকে তাকাল।

চিকনা প্রত্যেকের পাতে পাতে দিল। আমার দিকে তাকিয়ে বললো। তোকে একটু দিই।

না। বেশি খাওয়া হয়েগেছে।

আচ্ছা বিনদ তোমাকে সরাসরি একটা প্রশ্ন করবো?

বলুন।

তুমি সঠিক উত্তর দেবে।

এই মুহূর্তে আপনাকে একটাও মিথ্যে কথা বলবো না। এখানে যাঁরা বসে আছেন তাঁরা সবাই দাদার গুরুজন। দাদা আপনাদের যে ভাবে শ্রদ্ধা করে, আমরাও করি।

সাগরকে নিয়ে তোমরা কি ভাবছো।

শেষ আপডেট নেওয়ার পর এখনো কিছু ভাবি নি। তবে নয়নাভাবি যা বলেছেন তা মনে চলবো। জিনিসটা দাদার নয় ভাবির। দাদারও একই মত।

আমার কাছে অন্য খবর আছে।

যদি থেকে থাকে আমি জানি না। আলতাফ, অর্জুন জানে কিনা বলতে পারব না।

আলতাফ।

ওটা নিয়ে ভাববেন না। কথা দিলাম, আমরা কোনও নোংরা কাজ করবো না যাতে আপনাদের সম্মানহানি হয়। তবে জিনিষটা নম্রতা কিংবা ভাবিকে ফেরত দিতে হবে। এটা দাদার ইচ্ছে। দাদার ইচ্ছেটাকে আমরা সম্মান করি। দাদাকে কেউ অসম্মান করবে এটা সহ্য করতে পারব না।

অর্ক, অরিত্রকে চেন।

চিনি।

ওরা আজ কেন এখানে এসেছে জান।

জানি।

কি ব্যবস্থা করলে।

দাদা চুপচাপ থাকতে বলেছে। আফতাবভাই ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত কোনও কাজে হাত দিতে বারন করেছে।

তোমরা চুপচাপ আছো বলে তারা যদি মাথায় চেপে বসে।

সুকান্তদা এখন মিঃ মুখার্জীর রোল প্লে করছে।

বিধানদা সারাটা ঘরে আলোড়ন তুলে জোড়ে হেসে উঠলো।

দাদা, ডাক্তারদাদা, মাসীমনি, দামিনীমাসিও হাসছে।

অনিমেষদা একবার দাদাদের দিকে একবার বড়োমাদের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে।

সুতপা।

বৌদি অনিমেষদার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

ছেলের মন্ত্রী, গজ, ঘোঁড়া, নৌকর সন্ধান পাচ্ছ। কি সুন্দর ঘরটা গুছিয়েছে বলো। এখনো দুটো বড়ের সন্ধান পাচ্ছি না। দুটোই মন্ত্রীর ঘরের বড়ে।

ছোটোমারা সকলে অনিমেষদার মুখের দিকে তাকিয়ে।

দেখো প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকের কি সুন্দর স্বার্থ জড়িয়ে রেখেছে। কেউ কোনও বিবাদ করবে না। তোমার নিডটুকু যদি পূরণ হয় কেন তুমি খামকা বিবাদে জড়াবে।

বৌদি আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে।

তুমি রুমা আর সামন্তর আইকিউ-এর কথা ভাব। তুমি আমি এতটা তলিয়ে দেখেছি। বিধানদা বললো।

দামিনী ওকে কতটা বোঝে বলো। ডাক্তারদাদা বললো।

বোঝে বলেই তুমি আমি রুমা এতটা সময় নষ্ট করেছি। অমিতাভবাবু কিছু ক্লু দিয়েছেন নাহলে সত্যি সত্যি ওর রুট খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। বিধানদা বললেন।

ওর এই মিইয়ে যাওয়াটা কি ভীষণ বিপদজনক এবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। অনিমেষদা বললো।

ভালপাহাড়েও ও ঠিক এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। দামিনীমাসি বললো।

সেটা তুমি খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়েছিলে। বিধানদা বললেন।

এবার আপনি দিদির জামাইয়ের একটা ব্যবস্থা করুণ। না হলে ও সব্বনাশ করে ছারবে।

কেন তুমি বলছো।

তখন অনিমেষবাবু প্রশ্ন করতে মিহি সুরে কেমন বললো, যা ভাবছো ঘটতে সময় লাগবে।

অনিমেষ তুমি নিজে সাগরের সঙ্গে কথা বলো। তুমি যদি দায়িত্ব নিতে না পারো আমি কথা বলবো।

বিধানদা অনিমষদার দিকে তাকাল।

বিষয়টা নিয়ে রূপায়ণকে কথা বলতে বলেছি।

আমিনকে দায়িত্বটা দিলে কেমন হয়। ওর থ্রু দিয়েই সাগর আমাদের কাছে এসেছিল।

অনুপ বারন করেছে।

অনিমেষদা অর্জুনের দিকে তাকাল।

অর্জুন বাবা তোরা এই মুহূর্তে আর গন্ডগোল করিস না। প্রশাসনটা আমাদের চালাতে হয়। ঘরে বাইরে দু-দিকে চাপ। বছর খানেক একটু চুপ চাপ থাক। ইলেকসনটা হয়ে যাক, তারপর যা পারিস করিস। বাধা দেব না।

সবারই খাওয়া শেষের দিকে। আমি উঠে দাঁড়ালাম।

তুই কোথায় যাচ্ছিস? অনিমেষদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।

খাওয়াটা ঠিক জমলো না।

তুই আমার কাছে আয়। বড়োমা চেঁচিয়ে উঠলো।

এবার দাদা, ডাক্তারদাদা হেসে উঠলো।

এডিটর বড়ো সেন্সেটিভ জায়গায় ঘা পড়েছে। ডাক্তারদাদা বললো।

স্নেহ বড়ো বিষম বস্তু। দাদা বললো।

চুপ করো। বড়োমার গলায় সেই ঝাঁজ।

নিজেরা তো চব্বচষ্য গিললে। ওর পাতে যে সাজান রইল সেটা খেয়াল করেছ।

আমরা আছি দেখবে পাত পুরো পরিস্কার। তনু হিস হিসিয়ে উঠলো।

বড়োমা একবার তনুর মুখের দিকে কট কট করে তাকাল।

তনু, মিত্রাকে একবার কনুই দিয়ে খোঁচাল।

কারুর হাসি থেমে নেই।

আমি বড়োমা, ছোটোমা, জ্যেঠিমনি, বৌদি, আন্টির পাত থেকে এক গাল করে খেলাম।

তনু-মিত্রা হেসেই চলেছে।

ছুটকি আদর দেখছিস। ইসি বললো।

দামিনীমাসি, মাসীমনির কাছে এসে একটু খেয়ে বেরিয়ে এলাম।

অনিমেষদা পেছন থেকে চেঁচিয়ে উঠলো। আমরা কিন্তু তোর সঙ্গে বসবো।

(আবার আগামীকাল)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন