শনিবার | ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:২৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দশম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুর ও তৎকালীন বঙ্গসংস্কৃতি : অসিত দাস দধি সংক্রান্তি ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (নবম পর্ব) : আবদুশ শাকুর সপ্তাহে একদিন উপবাস করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো : অনুপম পাল অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত’র ভাষা : ড. হান্স্ হার্ডার সবগুলো গল্পেই বিজয়ার নিজস্ব সিগনেচার স্টাইলের ছাপ রয়েছে : ড. শ্যামলী কর ভাওয়াল কচুর কচকচানি : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (অষ্টম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুরের উইল ও দ্বারকানাথের ধনপ্রাপ্তি : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (সপ্তম পর্ব) : আবদুশ শাকুর যে শিক্ষকের অভাবে ‘বিবেক’ জাগ্রত হয় না : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস সসীমকুমার বাড়ৈ-এর ছোটগল্প ‘ঋতুমতী হওয়ার প্রার্থনা’ সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতিফলনে সিনেমা : সায়র ব্যানার্জী নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সুও দুও ভাসে’
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল : সুশীল চৌধুরী (৭০ নং কিস্তি), অনুবাদ : বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৪৯৮ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল ১৬৫০-১৭২০, উইথ স্পেশাল রেফারেন্স টু দ্য ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি

অষ্টম অধ্যায়

একটি জীবনবৃত্তান্ত (রিজিউমে)

কিন্তু দাদন ব্যবস্থাকে নিয়ে কর্পোরেট কোম্পানিগুলি বাঙলার বাজারে বড়ভাবে কাজ করেছে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার দাদন ব্যবস্থা কিন্তু বেশ বহু পুরোনো একটি প্রথা। ইওরোপিয় কোম্পানিগুলি বাংলায় আসার আগে দেশিয় এবং পর্তুগিজ ব্যবসায়ীরা পছন্দের পণ্যের একটা নির্দিষ্ট দাম ঠিক করে সেই পণ্যের নির্দিষ্ট অগ্রিম দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমানে বরাত দিত মধ্যস্থকে। দেশিয় বণিক বা পর্তুগিজ ব্যবসায়ীরা মধ্যস্থদের কিন্তু নির্দিষ্ট আকারের নমুনা দিত না — অনেকটা নির্ভর করত মধ্যস্থদের পছন্দের ওপর। এবং এই কাঠামোটা বহুকাল চলে আসছিল। কিন্তু ডাচ, ব্রিটিশ, ফরাসি কর্পোরেট কোম্পানিগুলি অগ্রিম দেওয়ার আগে মধ্যস্থ বা উতপাদকেদের নির্দিষ্ট পণ্যের নমুনা দেখাত, দাম তৈরি হত, তারপরে তারা মধ্যস্থ বা উতপাদকেদের সঙ্গে চুক্তি করত। মধ্যস্থকে কাপড়ের নমুনা দেওয়া বাঙলার উৎপাদন এবং ব্যবসা ব্যবস্থাপনায় নতুন ভাবনা। কোম্পানিগুলি কাপড় প্রক্রিয়াকরণ করার — ব্লিচ করা বা রঙ করার জন্যে, কোরা রেশম গোটানোর/প্যাঁচানোর জন্যেও কাঠামো তৈরি করেছে, ইওরোপ থেকে নানান ধরণের কারিগর এনে স্থানীয় তাঁতিদের দক্ষতা বাড়াবার উদ্যম নিয়েছে এবং তারা যেটা চাইছে ঠিক সেটাই তারা কোরা রেশম, রেশম বা সুতি-রেশম মেশানো বা সুতির টুকরো কাপড়ের ওপর করিয়ে নিত। এই কাঠামোগুলি উৎপাদন ব্যবস্থার বিস্তৃতি ঘটিয়েছিল, যদিও এই ধারণাগুলি কোনোওটাই এক্কেবারেই এই অঞ্চলের উৎপাদন বা ব্যবসায়ীদের অজানা ছিল, বলা যায় না। কোম্পানিগুলি যখন এই ব্যবস্থাপনা তৈরি করছে তখন রাজকীয় কারখানাগুলিতে স্থানীয় বাজারকে বাদ দিয়েই এই কাজগুলি করা হচ্ছে। হয়ত এই কারখানাগুলিই ইওরোপিয়দের কাছে এই ব্যবস্থাপনা তৈরির নমুনা হিসেবে কাজ করেছে। আগেও বলেছি ভারতে এই ধরণের ব্যবস্থাপনা এই সময়েই ছিল, যদিও এই পদ্ধতিটা বহুধাব্যাপ্ত ছিল না।

বাঙলার নিজস্ব অর্থনীতির ওপর ইওরোপিয় কর্পোরেট কোম্পানিগুলির কী প্রভাব ফেলেছিল তার পরিমান আর আজ মাপন করা মুশকিল। আগে বলেছি, বিপুল রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির ফলে বাংলায় রূপোর আমদানি বিপুলাকারে বেড়েছিল। কিন্তু যেটা বলা হয়, এই বিপুল আমদানি হঠাত ঘটেছিল এবং এর প্রভাবে বাঙলার অর্থনীতিতে গভীরভাবে অনুভূত হয়েছিল (জে এন সরকার, প্রাগুক্ত, খণ্ড ২, ২১৭) — এই বাক্যটি ভিত্তিহীন। অস্বীকার করার উপায় নেই যে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ী, প্রধান দুটি ইওরোপিয় কোম্পানি বাদে অন্যান্য ইওরোপিয় কোম্পানির ব্যবসার পরিমান যৌথভাবে যথেষ্ট বড় ছিল না, কিন্তু ডাচ আর ব্রিটিশ, এই দুই কোম্পানি অষ্টাদশ শতকের প্রথম দুই দশকে বছরে গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকার পণ্য রপ্তানি করলেও, সপ্তদশ শতকের মাঝের দিকেও তাদের রপ্তানির মূল্য খুবই কম বললেও খুব বেশি বলা হয়। বাঙলার সে সময়ে রাজস্ব আদায় ছিল বছরে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার আশেপাশে। ফলে বছরে ৪৫ লক্ষ টাকার রপ্তানি মূল্য হিসেবে খুব কম ছিল না। বলা যায় ক্রমান্বয়ে রপ্তানি বৃদ্ধি এবং নিরন্তর রূপো আমদানির ফাইল, ইওরোপিয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে জুড়ে থাকা তাঁতি এবং কারিগরদের অবস্থার উন্নতি ঘটে। কিন্তু নানান সূত্র থেকে আমরা জানতে পারছি অধিকাংশ গরীব তাঁতি, বাঙলার উৎপাদন বৃদ্ধি ঘটার ফলে, বাজারে পাইকারি ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির পরেও গরীব থেকে গিয়েছিল। কুঠিয়ালদের চিঠি থেকে আমরা তাঁতিদের গরীবির উল্লেখ পাই — তাঁতিরা দীর্ঘ দিন কাজ ছাড়া বসে থাকতে পারে না, বা তারা দৈনন্দিন রোজগারের ওপরেই নির্ভরশীল অথবা এই ধরণের অভাবগ্রস্ত প্রজন্মই তাঁতি (ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, মালদা, খণ্ড ১, ডায়েরি, ২৫ অক্টোবর ১৬৮০; হোম মিসলেনি, খণ্ড ৮০৩, ৮৪-৮৫)। এইসব বক্তব্যে অতিশয়াক্তি থাকলেও তাঁতিদের গরীবিকে অস্বীকার করার উপায় নেই। আমাদের আন্দাজ মধ্যশ্রেণী ব্যবস্থাই অতিশয় দারিদ্রের জন্যে দায়ি। এছাড়া তাঁতিদের গরীবির কোনও ব্যাখ্যা করা মুশকিল। মধ্যশ্রেণীর ক্ষমতা এত বেশি ছিল যে তারা উতপাদক-কারিগর এবং কোম্পানি, উভয়ের কাছেই সফলভাবে দরকষাকষি করতে পারত (তিনি তাঁতিদের আপাত দারিদ্রের ধারণা কাউন্টার করেছেন ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইন বইতে — অনুবাদক)।

সেই সময়ের নানান তথ্য অনুসন্ধান করে প্রাথমিকভাবে মুরল্যান্ডের তত্ত্ব, হুগলীর সপ্তদশ শতাব্দের সময়ের বাজার দর ইন্ডিয়ান সিবোর্ড অঞ্চলের সঙ্গে তুলনীয় ছিল (ডবলিউ এইচ মুরল্যান্ড, ফ্রম আকবর টু আওরঙ্গজেব, ১৭৯-৮১, ২৯৮) অথবা স্যর যদুনাথ সরকারের ধারনা, মুদ্রার দাম এবং শ্রমের মূল্য সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তুঙ্গে উঠেছিল (জে এন সরকার, প্রাগুক্ত, খণ্ড ২, ২১৮-১৯) এই দুই সিদ্ধান্তকে মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। মুরল্যাণ্ডের বক্তব্য ছিল উপকূল এবং অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বাংলার ১৬৫০টি খাদ্যদ্রব্যের বাজার দর অত্যধিক বেশি ছিল কারণ উপকূল এবং অন্য এলাকার তুলনায় বাংলায় রুপোর আমদানি খুবই কম ছিল। ইওরোপিয় ব্যবসার দরুণ হঠাত বিপুল পরিমান রূপো আমদানির ঘটতে থাকে যে তার ধাক্কায় বাঙলার মুদ্রার অবস্থা ভারতের অন্যান্য উপকূল অঞ্চলের সমমানে চলে আসে।

এক দিকে মুরল্যাণ্ডের বয়ান — prices on the Hooghly in the second half of the seventeenth century were brought into line with those which prevailed elsewhere on the Indian seaboard’ অন্য দিকে স্যর যদুনাথ সরকারের বয়ান — money prices and money wages rose sharply in Bengal from the middle ofthe 17th century’ মধ্যে সামঞ্জস্য রাখা খুবই সমস্যার। মুরল্যান্ড বলছেন ১৬৫০ পর্যন্ত যেহেতু ভারতবর্ষের অন্য উপকূলীয় অঞ্চলের তুলনায় বাংলায় কম রূপো এসেছে তাই সেই সব অঞ্চলের তুলনায় বাংলার দৈনন্দিনভোগ্য সাধারণ পণ্যের দাম অস্বাভাবিক কম ছিল। এর পরের সময় বাংলায় বিপুল পরিমান রূপোর আবির্ভাবের দরুন বাংলার ভোগ্যপণ্যের দাম ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলের সংগে পাল্লা দিল।

আজ আমরা প্রমান করতে পারি, আমাদের আলোচ্য সময়ে বাংলার ভোগ্যপণ্যের দাম অন্য উপকূল অঞ্চলের দামের সমান কোনও দিনই ছিল না (সুশীলবাবু, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় আসার পর, তাদের আনা রূপোর আমদানির জন্যে বাংলা অঞ্চলের ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ার মোরল্যান্ডের তত্ত্বকে বাতিল করে একটা প্রবন্ধ লিখেছেন। সেই প্রবন্ধটা আমি বইটা অনুবাদ শেষে আক্ষরিক অনুবাদ করে দেব — অনুবাদক)। আমাদের আলোচ্য সময় জুড়ে বাঙলার খাদ্যদ্রব্যর মূল্য অন্যান্য এলাকার থেকে কম ছিল এবং বাংলা থেকে বহু পণ্য করমণ্ডল, সুরাটের মত বিভিন্ন উপকূল অঞ্চল এবং পুর্বভারতীয় দ্বীপপুঞ্জগুলিতেও রপ্তানি হত। বাঙলার বিপুল কৃষি উতপাদনশীলতা খাদ্যশস্যের কম দামের জন্যে দায়ি। বছরে ৫০ লক্ষ টাকার রূপো আমদানি সাধারণ সময়ে বাজারদরকে চড়িয়ে দিতে পারলেও, বিপুল কৃষি উতপাদকতার ফলে তার লক্ষ্যণীয় প্রভাব বাঙলার খাদ্যশস্যের দামের ওপর পড়ে নি। অনেকে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলায় আসা রূপোর একটা বড় অংশ পশ্চিম এবং উত্তরভারতে চলে যেত। এই সময় এই বিপুল পরিমাণে রূপো নিঃসরণ যে সে সময়ের বাস্তব ঘটনা, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। রাজস্বে পরিমান খুব একটা বাড়ে নি। বাংলায় ঠাঁই নেওয়া উত্তর আর পশ্চিম ভারতের ব্যবসাদারেরা বিপুল পরিমানে রূপো আগরা এবং দিল্লিতে পাঠিয়ে দিত। কোম্পানির তথ্য থেকে আজ আমরা মোটামুটিভাবে জানছি কি বিপুল পরিমান অর্থ বাংলা থেকে রাজস্বাদায়কারী এবং বদলির চাকরিকরা আমলারা উত্তরভারতে সরিয়েছিল। (চলবে)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন