মঙ্গলবার | ১৫ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:৫৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (দ্বিতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ হুমায়ুন-এক স্মৃতি-এক আলাপ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সনজীদা যার সন্তান : শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ অবসর ঠেকাতেই মোদী হেডগেওয়ার ভবনে নতজানু : তপন মল্লিক চৌধুরী লিটল ম্যাগাজিনের আসরে শশাঙ্কশেখর অধিকারী : দিলীপ মজুমদার রাঁধুনীর বিস্ময় উন্মোচন — উপকারীতার জগৎ-সহ বাঙালির সম্পূর্ণ মশলা : রিঙ্কি সামন্ত রামনবমীর দোল : অসিত দাস মহারাষ্ট্রে নববর্ষের সূচনা ‘গুড়ি পড়বা’ : রিঙ্কি সামন্ত আরামবাগে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে আরাধনার মধ্য দিয়ে দিঘীর মেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘বিজ্ঞান অন্বেষক’ পত্রিকার ২২তম বর্ষ উদযাপন : ড. দীপাঞ্জন দে
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ অন্নপূর্ণা পূজা ও বাসন্তী পূজার আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল : সুশীল চৌধুরী (৬৭ নং কিস্তি), অনুবাদ : বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৭৯৭ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল ১৬৫০-১৭২০, উইথ স্পেশাল রেফারেন্স টু দ্য ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি

সপ্তম অধ্যায়

বাঙলার ব্যবসা জগতে কোম্পানি

ব্যক্তিগত এবং ইন্টারলোপারদের ব্যবসা

ইন্টারলোপারদের ব্যবসা যাতে বন্ধ করা যায় সে লক্ষে কোম্পানি নানান রকম পদক্ষেপ করতে শুরু করে। কোম্পানির হাতে যখন অর্থ কম থাকে এবং বিনিয়োগের চক্র সম্পূর্ণ হয়, তখনও তারা ব্যবসায়িদের থেকে পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নিত (ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, বালেশ্বর, খণ্ড ১, ডায়েরি, ১৫ ডিসে ১৬৮৫; ডিবি, ২৮ এপ্রিল, ১৬৯৩, ৯২ খণ্ড, ২৬৮)। স্থানীয় প্রশাসন যাতে ইন্টারলোপারদের ব্যবসা করতে বাধা দেয়, সেই কাজটি সুকৌশলে করার জন্যে কোম্পানি বাঙলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ীকে অর্থ অগ্রিম দিত। ১৬৯৩তে লন্ডনের কর্তারা ব্যবসায়ী মথুরাদাসকে এই খাতে চার থেকে ৫ হাজার পাউন্ড দিতে বলে যাতে সে তার বন্ধুদের কাজে লাগিয়ে ইন্টারলোপারদের বাঙলার ব্যবসার পরিকল্পনা বানচাল করে দিতে সমর্থ হয় (ডিবি, ২৮ এপ্রিল, ১৬৯৩, খণ্ড ৯২, ২৮৬)। এছাড়াও কোম্পানি সরাসরি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে, কখনো কখনো হুমকি দিয়ে বাংলায় ইন্টারলোপারদের নানান পদক্ষেপ, স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবহার করে কিভাবে আটকাতে পারে তারও যোগ্য পরামর্শ দিয়েছে। টমাস পিট আর ক্যাচপোল (catchpole) ৫০০ টনের একটি ইন্টারলোপার জাহাজ সেগিমোর (segimore) নিয়ে ১৬৯৩-এর নভেম্বরে প্রবেশ করলে, কোম্পানি হুগলীর গভর্ণর ক্যাপটেন ডোরিলকে তার কাছে পাঠিয়ে জানাল পিট একজন ইন্টারলোপার, সে বাংলায় এর আগে এসেছিল। এবারে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হল। স্থানীয় প্রশাসন যদি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং সেই জন্যে যদি কোম্পানির ব্যবসার ক্ষতি হয়, তাহলে আমরা ইন্টারলোপারদের সঙ্গে আরেকটি যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত থাকলাম এবং সেই যুদ্ধ বাংলার একটি জায়গায় সীমিত থাকবে না (ওসি, ৪ নভে, ১৬৯৩, ৫৮৮৬ সংখ্যা, চিঠি সংখ্যা ৪৩, ৫০ খণ্ড)। তবে ১৬৯৩এর সনদ প্রকাশের পর ইন্টারলোপারদের কাজ অনেকটা কমে যায়। ১৬৯৪তে কর্তারা লিখলেন, প্রখ্যাত ইন্টারলোপারদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি, তাদের দুটো জাহাজ এখনো বিদেশে আছে …সেগুলি আমাদের নতুন স্টক হিসেবে যোগ হবে এবং আমাদের আশা তাদের সঙ্গে যে লড়াই ঝগড়া চলছিল সে সব শেষ হবে (ডিবি, ৩ জানু, ১৬৯৪, ৯২ খণ্ড, ৩১৬)। এরপর থেকে ইন্টারলোপারদের ব্যবসা অনেক কমে যায়, কিন্তু একেবারেই ধ্বংস করে ফেলা যায় নি(১৬৯৭তে একটি ইন্টারলোপিং জাহাজ বাংলায় আসে, কিন্তু ততদিনে ব্রিটিশরা বাংলায় ইন্টারলোপারদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করার জন্যে নবাবের পরওয়ানা জোগাড় করে, তারপরে ইন্টারলোপাররা ফরাসীদের থেকে পণ্য কিনতে শুরু করে, দেখুন ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, কলকাতা, খণ্ড ৬, অংশ ১, ৫৪)।

অষ্টম অধ্যায়

একটি জীবনবৃত্তান্ত (রিজিউমে)

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাঙলার ব্যবসার প্রধানতম উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ এবং ইওরোপিয় বাজারের জন্যে পণ্য সরবরাহ করা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল না বাঙলার মোটা কাপড় পুর্বভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের জন্যে কিনে তাদের সঙ্গে মশলার বিনিময় বাণিজ্য করা, যে কাজের জন্যে ডাচ আর ব্রিটিশ পূর্ব ভারতের উপকূলে এসে প্রথম কুঠি স্থাপন করে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম যুগের ব্যবসার পণ্য মূলত ছিল বাঙলার সোরা, চিনি এবং রেশম। কিন্তু ব্যবসায় যত দিন গড়াতে থাকে তত তারা মূলত কোরা রেশম এবং সুতির কাপড়ের ওপর বেশি নজর দিতে শুরু করে। সপ্তদশ শতকের আটের দশক থেকে শুরু করে, কোম্পানির বাঙলার ব্যবসায় টুকরো কাপড়ের পরিমান এবং মূল্য ক্রমশ বেড়েছে। প্রথম যুগে কোম্পানির বাংলা বিনিয়োগ খুব বেশি ছিল না এবং সে বিনিয়োগ কয়েক হাজার পাউণ্ডের ওপরে ওঠে নি। কিন্তু ক্রমশঃ বিনিয়োগের পরিমান বাড়তে থাকে, আমরা যে সময় নিয়ে আলোচনা করছি সেই সময়ের শেষের দিকে কোম্পানির বিনিয়োগ গড়ে ২ লক্ষ পাউণ্ডে পৌঁছায়। সপ্তদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের একটা বড় সময়ে বাঙলার ব্যবসা মাদ্রাজ এবং সুরাটের তুলনায় খুবই অনুজ্জ্বল ছিল। কিন্তু শতাব্দ শেষের দিকে এবং অষ্টাদশ শতকের প্রথম দুই দশকে কোম্পানির ব্যবসাজালে বাঙলার ব্যবসা ক্রমশঃ গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠতে থাকে এবং পরিমানে আর মূল্যমানে মাদ্রাজ আর সুরাটের ব্যবসাকে ছাপিয়ে যেতে থাকে। কোম্পানির কুঠিয়ালদের ভাষায় বাঙলার ব্যবসা ছিল কোম্পানির বাগানে সব থেকে সুন্দর ফুল এবং কোম্পানির মুকুটে সুন্দরতম রত্ন। সপ্তদশ শতকের শেষের দিকে এক ব্রিটিশ কুঠিয়াল লিখলেন ভারতের সব কটা ব্রিটিশ সেটেলমেন্টের মধ্যে বাংলা হল সব থেকে গুরুত্বপুর্ণ সেটলমেন্ট (বিএম, এডি ম্যানু, ৩৪,১২৩, ৪০এ; ডিবি, ২ কুলাই, ১৬৮৪, ৯০ খণ্ড, ৩৩০’ রাওল এ, ২৫৭, ২৫৪)।

বাংলায় ব্যবসা শুরু করার প্রথম সময় থেকেই, এবং সমগ্র সময়জুড়ে কোম্পানিকে বহু বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে – চলতি/নগদ পুঁজির অভাব, প্রশাসনিক লোভ, কোম্পানির আমলাদের ব্যক্তিগত ব্যবসা, ইন্টারলোপারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ খাড়া করা এবং যুদ্ধ। এই বিপুল বাধা সত্ত্বেও কোম্পানি বাংলায় বিশাল পরিমান ব্যবসা চালিয়ে এসেছে। আমরা যে সময় ধরে আলোচনা করছি, সেই সময়জুড়ে কোম্পানির অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ সমস্যা ছিল নগদ পুঁজির অভাব, যে সময়া তারা স্থানীয় পুঁজির/ধারের বাজার থেকে বিপুলাকার ধার করে মেটাতে চেষ্টা করেছে। এছাড়াও অন্যান্য ইওরোপিয়র যেমন ডাচেদের থেকেও ইওরোপে প্রদানযোগ্য বিল এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এবং আন্তঃএশিয় ব্যবসার লাভ আর পণ্যপরিবহন করার মাধ্যমে আংশিক বিনিয়োগযোগ্য অর্থ যোগাড় করেছে। বাংলায় কোম্পানির আমদানিকরা ইওরোপিয় পণের বাজার ছিলই না বলা চলে। ফলে তাকে বাঙলার ব্যবসার পুঁজি জোগাড় করতে হয়েছে রূপো বা দামি ধাতুর মুদ্রা আমদানির মাধ্যমে। আমাদের আলোচ্য সময়ে দামি ধাতু ছিল কোম্পানির আমদানি মূল্যের মোট অংশের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশের অংশিদার। প্রথম যুগে  দামি ধাতুর মধ্যে সোনা আমদানি ছিল মুখ্য, কিন্তু পরের দিকে সোনাকে প্রতিস্থাপন করতে থাকে রূপো, কারণ বাঙলার অর্থনীতিতে রূপোর বিপুল প্রাধান্য ছিল। কারণ বাংলার মুদ্রা মূলত রূপো নির্ভর ছিল আর বাঙলার রাজস্ব দিল্লির তোষাখানায় যেত সিক্কা রূপি মার্ফত। সোনার চাহিদা খুবই কম ছিল, মূলত অবাণিজ্যিক নানান কাজে যেমন সম্পদ ধরে রাখা বা ধনীদের নানান কাজে শনার ব্যবসার ছাড়া ব্যাপ্তভাবে সোনার ব্যবহার ছিলই না বলা যায়। বাংলা সুবায় সোনার ক্ষিদে ছিল না।

অর্থনৈতিক বাধাবন্ধ ছাড়াও বাংলায় কোম্পানিকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। অবশ্য এটাও বলা দরকার, এর ফলে শুধু যে ইওরোপিয় কোম্পানিগুলির কাজ করতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তাই নয়, সামগ্রিকভাবে বাঙলার অর্থনীতির, উতপাদন বৃদ্ধি ক্ষতিস্রস্ত হয়েছিল, যার ফলে উতপাদকের সামগ্রিক গুণগত মান এবং ভোগের  পরিমান বৃদ্ধি পায় নি। ভারতের অন্যান্য অংশের মত বাংলায় রাজস্বতোলার আধিকারিকদের বদলির চাকরির ফলে, শুধু রাজস্ব তোলার কাজটুকু মন দিয়ে করা ছাড়া বাঙলার সার্বিক উন্নতির, বিশেষ করে জনগণের আর্থিক উন্নতির দিকে কোনও প্রশাসকের নজর ছিল না। জোর দিয়ে বলা দরকার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের থেকে আধিকারিকদের বেআইনি আর্থ দাবি করা আদতে সপ্তদশ শতকের প্রশাসনের স্বাভাবিক চরিত্র ছিল। শাসক শ্রেণীর মাথারা বাণিজ্য বিশেষ করে বিশেষ কিছু পণ্য বাণিজ্য একচেটিয়া অধিকার নিজেদের হাতে রাখার পাশাপাশি, রাজদারি, সওদাওইখাস, ফারমিশ ব্যবস্থা আর শুল্ক আদায়ের বিস্তৃতি (এই সময় শুল্ক চৌকির সংখ্যা ৮ থেকে বাড়িয়ে ২২টা করা হয় (ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, মিসনিয়াস, ১৮ ফেবরুয়ারি, ১৭০১, খণ্ড ৩এ, ৪২০)) এবং মুসলমান অমুসলমানেদের মধ্যে আলাদা আলাদা শুল্ক ব্যবস্থা ব্যবসা এবং সামগ্রিক উতপাদনের পরিমানের ওপর প্রভাব ফেলেছিল। ফলে এই সময়ে ব্যবসা বাণিজ্যের পরিমান বৃদ্ধির বদলে এগুলির ওপর খারাপ প্রভাব পড়েছিল।

বহুপ্রকার আমলাতান্ত্রিক শোষণের মুখে প’ড়ে কোম্পানি, প্রশাসনের থেকে নানান ধরণের নিশান এবং ফরমান জোগাড় করে একেচেটিয়া পক্ষপাতমূলক বাণিজ্যাধিকার কায়েম করেছিল। কিন্তু তাদের দাবি ছিল তারা বছরে ৩০০০ টাকার বিনিময়ে কেন্দ্রিয় ফরমান পেয়েছিল। এই দাবিটা সম্পূর্ণ মিথ, এর কোনও আইনি বা প্রশাসনিক বৈধতা ছিল না। এই সুযোগ-সুবিধেগুলো প্রশাসনিক সুবাদারদের উতকোচ দিয়ে সংগ্রহ করা হত, যিনি সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় নিশান বা পরওয়ানা ইত্যাদি নির্দিষ্ট সুবিধার বিনিময়ে জারি করতেন। ১৭১৭ সালে বাংলায় ব্যবসা করার জন্যে কোম্পানি  শুল্কমুক্ত ব্যবসা করার অধিকার লাভ করল। এবার থেকে তাদের আর বাৎসরিক ৩০০০ টাকা দিতে হল না। কিন্তু মাঝেমধ্যেই নিশান, পরওয়ানা এবং ফরমানের বৈধতা এবং তার ব্যাখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্থানীয় শুল্ক দপ্তরের আমলারা বহু সময়ে কোম্পানির ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। কোম্পানি আর স্থানীয় আধিকারিকদের মধ্যে বিতর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, পরস্পরের ব্যবসার স্বার্থে আঘাত লাগা কারণ বহু সময় উভয়ে উভয়ের প্রতিযোগী হিসেবে অবতীর্ণ হতেন। আমরা যে সময়কাল নিয়ে আলোচনা করছি, সেই সময় জুড়ে নানান স্থানীয় ক্ষমতাবান দেশিয় এবং বৈদেশিক, উভয় ব্যবসায় জড়িয়ে থাকতেন এবং সুবার বেশ কিছু ক্ষেত্রে একচেটিয়া ব্যবসা বলবত করার চেষতা করতেন যা কোম্পানির স্বার্থবিরোধী ছিল। (চলবে)


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন