রবিবার | ২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:২৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের অনবদ্য সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি : মনোজিৎকুমার দাস কঠোর শাস্তি হতে চলেছে নেহা সিং রাঠোরের : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন : শান্তা দেবী বাঙালি মুসলমান সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা : ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সিন্ধু সভ্যতার ভূখণ্ড মেলুহা-র সঙ্গে বাণিজ্যে মাগান দেশ : অসিত দাস তদন্তমূলক সাংবাদিকতা — প্রধান বিচারপতির কাছে খোলা চিঠি : দিলীপ মজুমদার হেমন্তকুমার সরকার ও নজরুল-স্মৃতিধন্য মদনমোহন কুটির : ড. দীপাঞ্জন দে রামমোহন — পুবের সূর্য পশ্চিমে অস্তাচলে গেলেও শেষ জীবনে পিছু ছাড়েনি বিতর্ক : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় মাওবাদী দমন না আদিবাসীদের জমি জঙ্গল কর্পোরেট হস্তান্তর : তপন মল্লিক চৌধুরী জৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষে শ্রী অপরা একাদশী মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত পর্যটন মানচিত্রে রামমোহনের জন্মভূমিতে উন্নয়ন না হওয়ায় জনমানসে ক্ষোভ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সংগীতে রবীন্দ্রনাথ : সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর গোয়ার সংস্কৃতিতে সুপারি ও কুলাগার কৃষিব্যবস্থা : অসিত দাস পুলওয়ামা থেকে পহেলগাঁও, চিয়ার লিডার এবং ফানুসের শব : দিলীপ মজুমদার ক্যের-সাংরী কথা : নন্দিনী অধিকারী সুপারি তথা গুবাক থেকেই এসেছে গোয়ার নাম : অসিত দাস রোনাল্ড রসের কাছে জব্দ ম্যালেরিয়া : রিঙ্কি সামন্ত রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ছে, কমবে অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় উনিশের উত্তরাধিকার : শ্যামলী কর কেট উইন্সলেটের অভিনয় দক্ষতা ও চ্যালেঞ্জিং ভূমিকার ৩টি চলচ্চিত্র : কল্পনা পান্ডে হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলা — আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংকট : সুব্রত কুমার দাস সিন্ধুসভ্যতার ভাষা যে ছিল প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার প্রমাণ মেলুহা তথা শস্যভাণ্ডার : অসিত দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (শেষ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস জাতিভিত্তিক জনগণনার বিজেপি রাজনীতি : তপন মল্লিক চৌধুরী গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তালশাঁসের চাহিদা : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (ষষ্ঠ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস ভারতের সংবিধান রচনার নেপথ্য কারিগর ও শিল্পীরা : দিলীপ মজুমদার চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (পঞ্চম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস আলোর পথযাত্রী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (চতুর্থ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

গরমে টমেটোর দাওয়াই : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ১২০০ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩

গরমে নাজেহাল অবস্থা বঙ্গবাসীর। আর এই গরমে ঘাম, হিট, স্ট্রোক, ঘামাচি, ডিহাইড্রেশন, অরুচি, অনিদ্রা, মাসল ক্র্যাম্প, স্কিন ট্যান ইত্যাদি নানান সমস্যা লেগে আছে প্রায় সকলের জীবনে। অতএব গরমে শরীর ঠান্ডা রাখা খুব জরুরী। আমাদের হাতের মুঠোয় আছে এর সমাধান। এই গরমে শরীরকে শীতল ও সতেজ রাখতে টমেটোর জুড়ি মেলা ভার।

টমেটো শুধু শরীরকে ঠান্ডা রাখে তাই নয় উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অস্টিওপোরোসিস, মাইগ্রেন, কনস্টিপেসান, বদহজম, অ্যালঝাইমার্স, ডিপ্রেশন, ইউরিনারি ট্রাক ইনফেকশন, ওবেসিটি, ইমপোটেন্সি, অ্যালকোহল ইনটক্সিফিকেশন, ইমিউনিটি বুস্টার, প্রদাহজনিত অসুস্থতা, ক্যান্সার প্রতিরোধের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে টমেটো বিশেষ কার্যকর।

খ্রিস্টীয় ৭০০ অব্দে অ্যাজটেক সভ্যতার অধিবাসীরা প্রথম টমেটোর চাষ শুরু করেন। এরপর মেক্সিকোতে স্পেন ইতালি দক্ষিণ আমেরিকা ব্রিটেন আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে, উত্তর আমেরিকা এবং ভারত প্রভৃতি এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই ফলের চাষ শুরু করা হয়। প্রাচীন ইউরোপিয়ানরা টমেটো কে বিষাক্ত ফল বলে মনে করতো এবং সেই সময় টমেটো কে বলা হতো ‘পয়জন অ্যাপেল। ‘আসলে সে সময় ইউরোপের অভিজাত ব্যক্তিরা যে প্লেটে খাবার খেত তা তৈরি হতো লেড বা সিসা দিয়ে। টমেটোর জৈব এসিডের সঙ্গে লেড রাসায়নিক বিক্রিয়া করে পয়জন বা বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতো। এজন্য মানুষের মনে ধারণা হয় টমেটো বিষাক্ত ফল। পরবর্তীকালে অন্যান্য পদার্থ দিয়ে তৈরি প্লেটে টমেটো খেয়ে শরীরে কোনো কুপ্রভাব না পরায়,এই ভুল ধারণার অবসান হয়।

এই ফল কাম সবজিটি প্রথম সাউথ আমেরিকাতে জন্মায়। খাদ্যযোগ্য বস্তু হিসেবে আবিস্কার করে মেক্সিকোর বাসিন্দারা। এরপর টমেটোর বিশেষ যাত্রা শুরু। ইটালির লোকেরা টমেটো কে বলে ‘গোল্ডেন অ্যাপেল।’ স্পেনে টমেটো কে কেন্দ্র করে ‘লা টোমাটিনা’র মত একটি উৎসব হয়। ফরাসিরা এটিকে পোমে ডি’আমোর (“প্রেম আপেল”) বলে ডাকে কারণ এটিতে কামোদ্দীপক বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। কিছু পণ্ডিত অবশ্য দাবি করেন যে, টমেটো কে প্রথমে বেগুনের নিকটাত্মীয় বলে মনে করা হতো। বেগুনকে পোমে দেস মুরস (“মুরের আপেল”) বলা হত কারণ এটি আরবদের একটি প্রিয় সবজি এবং পোমোডোরো এবং পোমে ডি’আমোর এই নামের অপভ্রংশ ঘটে সম্ভবত এই নামের চল।

লাল টুকটুকে এই ফলকে দেখতেও যেমন সুন্দর তেমনি কাজেও। আবহাওয়া অনুযায়ী টমেটো শুধু লাল রঙের হয় না হলুদ সবুজ এমনকি সোনালী রঙেরও হয়। টমেটোর জন্মানোর কোন নির্দিষ্ট সিজন নেই, বারোমাসই পাবেন। টমেটোর নিজেই একটি পদ তৈরি করতে পারে আবার অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে মিশে সেই পদের স্বাদ ও খাদ্যগুণ বাড়িয়ে তোলে।

টমেটো ফ্যাটবিহীন, ননস্টার্চি, লো-ক্যালোরি সাইট্রাস গ্রুপের অন্তর্গত একটি ফল যা কাঁচাতে স্যালাড জুস স্যান্ডউইচ হিসেবে বা আচার জেলি, চাটনি সস জাতীয় খাবার হিসেবে আবার আমিষ-নিরামিষ ডাল ঝোল তরকারি, দেশি-বিদেশি বহু রান্নাতে অপরিহার্য উপাদান।টমেটো ব্লাঞ্চ (অর্থাৎ গরম জলে দিয়ে তার থেকে তুলে ঠান্ডা জলে দিতে হয়) করে রান্না ব্যবহার করতে পারেন। তবে সরাসরি তেলে টমেটো না ভাজাই ভালো, এতে টমেটো র খাদ্যগুন অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। ছোট বা চেরি টমেটো স্যালাডে খেতে পারেন।

মজার কথা হল গরমের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অনেকেই নানা ধরনের সবজি ফলের কথা বলেন অথচ খুব সহজেই পাওয়া যায় টমেটোর কথা পড়ে থাকে অবহেলার তিমিরে। টমেটো তে ভিটামিন-এ, ই, সি, কে, ফলেট, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ডায়েটারি ফাইবার নায়াসিন, লাইকোপিন, পটাসিয়াম, বিটা ক্যারোটিন বর্তমান। টমেটোতে জলের পরিমাণ ৯৪%। তীব্র গরমে দেহ থেকে ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া জল ও ইলেকট্রোলাইসিস-এর ঘাটতি পূরণ করে টমেটো।

গরমে মাইগ্রেনের রোগীরা যন্ত্রণায় খুব কষ্ট পায়। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে টমেটোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্লোভিন বা ভিটামিন-বি টু থাকে যা ঘন ঘন মাইগ্রেনের ব্যথার হাত থেকে রক্ষা করে।

টমেটো-তে আছে ডায়েটারি ফাইবার যা টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে খুব ভালো কাজ করে। টাইপ টু ডায়াবেটিসেও টমেটো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। টমেটো-তে যে পটাশিয়াম থাকে তা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য থাকে।

টমেটো-তে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলিক এসিড থাকায় গর্ভাবস্থায় বেশ উপকারী। ফলিক এসিডের অভাবে শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্ট হতে পারে। এতে কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট মাত্রা কম থাকায় ডায়েটিং যারা করছেন, তারা নিশ্চিন্তে টমেটো জুস খেতে পারেন।

ত্বকের ট্যান দূর করতে টমেটো দারুন কার্যকর। যাদের ব্রণ প্রবণ ত্বক বা গরমে প্রচুর ঘামে ফুসকুড়ি, দাগ, অতিরিক্ত তেল ইত্যাদি সমস্যা থাকে তারা নিয়মিত টমেটো খেতে বা টমেটোর প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। আসলে টমেটোতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগ যেমন বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন-ই, সি ও লাইকোপেন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সব ধরণের ত্বকের যত্নে উপকারী। যাঁরা নিয়মিত টমেটো খান বা প্যাক ব্যবহার করতে পারেন তাদের সহজে ব্রণ, রিংকল হয় না।

অনেকেই ডিসকালারেশনে অর্থাৎ গাল দুটো স্বাভাবিক কপাল বা থুতনির কাছে রংটা অন্যরকম, সমস্যায় ভুগছেন তারা টমেটো খাওয়ার পাশাপাশি টমেটো র প্যাক মাখার হ্যাভিট করুন। সুর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব দূর করতে পারে টমেটোর রস।শীত গ্রীষ্ম বর্ষায় অয়েলি স্কিনে নানান সমস্যা দেখা যায়। টমেটো তে ভিটামিন এ থাকায়, এটি খেলে ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে। ত্বকের লোমকূপের ছিদ্র ছোট হয় নিয়মিত টমেটো ব্যবহারে।

টমেটো শুধু ত্বককে রক্ষা করে এমন নয়, চুলের ক্ষেত্রেও এটি ফলদায়ক। অতিরিক্ত গরমে ময়লা ঘাম চুলের গোড়ায় বসে নানা রকমের রোগ হয়। এছাড়া চড়া রোদেও চুলের বেশ ক্ষতি হয়। সুযোগ পেলেই সপ্তাহে একবার মাথায় টমেটো র কাথ লাগালে জীবাণু সংক্রমণ কম হবে, চুল রোদ জল সব সহ্য করার শক্তি পাবে।

এত উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার টমেটো একটি এসিডিক সবজি হওয়ায় অতিরিক্ত সেবানে গ্যাস্ট্রো এসোফাগিয়াল রিফ্লাক্স, GERD হতে পারে। ডায়রিয়া, গাউট আর্থরাইটিস, চুলকানি বা টমেটোয় এলার্জি থাকলে থাকলে টমেটো এভোয়েড করাই ভালো। অতিরিক্ত প্রসেসড বা প্রিজারভেটিভ টমেটো প্রোডাক্ট থেকে মুখের, পাকস্থলীর, অন্ন নালীতে ইরিটেশন হতে পারে। এমনকি স্কিনে rash, বমি ভাব, নার্ভের সমস্যাও হতে পারে।

টমেটো কে বিদেশে wolf Peach বলে ডাকা হয়। আসলে টমেটো গাছ হল নাইটশেড পরিবারভুক্ত। এই গাছ নেকড়েদের প্রিয় আর ডাইনীদেরও। জার্মান মিথে নানা ধরনের কাহিনী এ নিয়ে প্রচলিত আছে। তাই সাধু সাবধান! টমেটো কে অবহেলা করবেন না, বুঝে সুঝে এই সবজির সদ্ব্যবহার করুন–নাহলে বিপদ।


আপনার মতামত লিখুন :

2 responses to “গরমে টমেটোর দাওয়াই : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. শুভাশিস ঘোষ says:

    খুব ভাল লেখা

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন