মঙ্গলবার | ১লা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৪০
Logo
এই মুহূর্তে ::
রামনবমীর দোল : অসিত দাস মহারাষ্ট্রে নববর্ষের সূচনা ‘গুড়ি পড়বা’ : রিঙ্কি সামন্ত আরামবাগে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে আরাধনার মধ্য দিয়ে দিঘীর মেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘বিজ্ঞান অন্বেষক’ পত্রিকার ২২তম বর্ষ উদযাপন : ড. দীপাঞ্জন দে হিন্দিতে টালা মানে ‘অর্ধেক’, কলকাতার টালা ছিল আধাশহর : অসিত দাস আত্মশুদ্ধির একটি বিশেষ দিন চৈত্র অমাবস্যা : রিঙ্কি সামন্ত চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় : ড. দীপাঞ্জন দে রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল জৈব কৃষি বিপণন হাট অশোকবৃক্ষ, কালিদাসের কুমারসম্ভব থেকে অমর মিত্রর ধ্রুবপুত্র : অসিত দাস কৌতুকে হাসতে না পারলে কামড় তো লাগবেই : তপন মল্লিক চৌধুরী জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর ও রোহিঙ্গা সংকটে অগ্রগতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন এথেন্সের অ্যাগনোডাইস — ইতিহাসের প্রথম মহিলা চিকিৎসক : রিঙ্কি সামন্ত সন্‌জীদা খাতুন — আমার শিক্ষক : ড. মিল্টন বিশ্বাস হিমঘরগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ আলু মজুত, সস্তা হতে পারে বাজার দর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শিশুশিক্ষা : তারাপদ রায় জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘শোলে’র পঞ্চাশ বছর : সন্দীপন বিশ্বাস বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ইতিহাস পালটাতে চায় : তপন মল্লিক চৌধুরী অশোক সম্পর্কে দু-চারটে কথা যা আমি জানি : অসিত দাস চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস প্রাণগৌরাঙ্গের প্রিয় পঞ্চব্যঞ্জন : রিঙ্কি সামন্ত
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

হিন্দিতে টালা মানে ‘অর্ধেক’, কলকাতার টালা ছিল আধাশহর : অসিত দাস

অসিত দাস / ৯৬ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫

পলাশি যুদ্ধের পর কলকাতা তথা বঙ্গে ব্রিটিশদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ভীষণভাবে বৃদ্ধি পায়। বঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করল। ইংরেজদের সঙ্গে বাঙালি এবং অন্যান্য জাতির লোকজন প্রচুর কাজকর্ম শুরু করলেন। গোটা অঞ্চলে কর্মসংস্থানের জোয়ার এল। মানুষ বাড়ায় স্থান সংকুলানের জন্য লোকজন ছড়িয়ে পড়ল আশপাশের অন্যান্য গ্রামে। কোম্পানি মোট ৫৫টি গ্রামকে শহরতলির স্বীকৃতি দিল। নাম রাখল ‘এস্টেট অব পঞ্চান্ন গ্রাম’। এটাই তথাকথিত ডিহি পঞ্চান্নগ্রাম।

গোবিন্দপুর, কলকাতা ও সুতানুটি-এই তিনটি গ্রামকে চক্রাকারে ঘিরে ছিল ওই ৫৫টি গ্রাম। উত্তরে গঙ্গার ধারে ডিহি সিঁথি থেকে শুরু করে চিৎপুর। তারপর পূর্ব দিকে এগিয়ে এবং দক্ষিণ দিকে ঘুরে বাগজোলা, দক্ষিণ পাইকপাড়া, উল্টোডাঙা, বাহির-সিমলা, শুঁড়া, কুলিয়া, শিয়ালদহ, এন্টালি, তপসিয়া, শ্রীরামপুর, চক্রবেড়িয়া, ভবানীপুর হয়ে মনোহরপুর (যাকে এখন আমরা মনোহরপুকুর বলে থাকি) হয়ে আদিগঙ্গার ধারে এই ৫৫টি গ্রাম শেষ হয়েছে।

যে এলাকাগুলির নাম বলা হল, সেগুলি ছিল এক একটা ডিহি, অর্থাৎ রাজস্ব সংগ্রহের কেন্দ্র। প্রত্যেকটি ডিহির অধীনে ছিল একাধিক গ্রাম। ডিহি চিৎপুরের মধ্যে ছিল চারটি গ্রাম — চিৎপুর, বীরপাড়া, টালা এবং কেলেদা। কেলেদার পরবর্তীকালে নাম হয় কালিন্দী। টালা কখনওই পুরনো কলকাতার অঙ্গ ছিল না। ছিল পুরনো কলকাতার শহরতলির সদস্য। ফলে টালা কখনওই বর্ধিষ্ণু ছিল না। কিন্তু এই টালাতে অষ্টাদশ শতকে বড় বড় জমিদার বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরাট বসতবাড়ি ও বাগানবাড়ি ছিল।

পলাশির যুদ্ধের পরই টালার নাম পাওয়া গিয়েছিল। অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিকে বা তারও আগে টালার নাম শোনা গিয়েছে। প্রাচীন গ্রামবাংলায় ‘তালা’ বলে অনেক গ্রাম রয়েছে। যেমন কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের পূর্বপুরুষরা সাগরদাঁড়ির আগে যশোরের তালা গ্রামে থাকতেন। ‘তালা’ নামের অর্থ যেখানে অনেক তালগাছ রয়েছে। সেখান থেকে তালা শব্দটি উঠে এসেছে। ইংরেজি উচ্চরণের ঠেলায় তালা শব্দটি নাকি টালা হয়ে গিয়েছে।

এহ বাহ্য! আসলে আমাদের নাম-গবেষকরা নতুন কিছু চিন্তা করতে ভয় পান। তাই তাঁরা অন্য কোনও ভাষায় টালা শব্দটির কোনও অর্থ হয় কিনা তা জানার চেষ্টা করেননি। পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজদের মদতে মিরজাফর কলকাতায় আসেন রাজ্য শাসন করার জন্যে। আলিপুর নামটি তাঁর নাম থেকেই এসেছে বলে একটি মত আছে। তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গ হিসেবে প্রচুর সংখ্যক হিন্দি ও উর্দুভাষী লোক কলকাতায় আসেন। তাঁদের মুখেই হিন্দি টালা শব্দটি কলকাতায় আসে। হিন্দিতে টালা শব্দটির মানে অর্ধেক বা আধখানা। পাইকপাড়ায় থাকত রাজাজমিদারদের পাইকবরকন্দাজরা। টালায় থাকত মানে মর্যাদায় তাদের অর্ধেক নীচের লোকজন। যেমন লেঠেল, ধোপা, সান্ত্রী, ডাকহরকরা। মিলিটারির সিভিক কর্মীদের মত। তাই টালাগ্রাম বা টালাপাড়া মানে বোঝাত অর্ধেক গুরুত্বের পাইকসহায়ক লোকজনের বসবাসের জায়গা।

আবার টালা বলতে আধাশহরকেও বোঝাত। প্রকৃত কলকাতার বাইরে অবস্থানের জন্যে টালা ছিল আধাশহর, আধাগ্রাম। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে টালা নামে গ্রাম আছে। টালাগাঁও আছে উত্তরপ্রদেশে। এগুলি সবই আধাশহর, আধাগ্রাম। তাই আধাশহর, আধাগ্রাম, মফসসল জনপদকেও টালা নামে চিহ্নিত করা হত।

টালা ট্যাঙ্ক তৈরির সময় অনেকগুলি পুকুর বোজাতে হয়েছিল। টালা তখন প্রকৃতপক্ষে আধাশহর, আধাগ্রাম। পলাশির যুদ্ধের পরে হিন্দিভাষী জনগণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায় কলকাতায়। তারাই পাইকপাড়া সন্নিহিত আধাশহর, মফসসল এই জায়গাটিকে টালা বা টালামহল্লা বলে ডাকতে শুরু করে। আগে নাকি অনেক লোক টালা না বলে টালাপাড়াও বলত। ‘বনস্পতির বৈঠক’ উপন্যাসে সাহিত্যিক প্রবোধকুমার সান্যাল টালাপাড়া লিখেছেন। জানি না এখনও কোনও প্রবীণ লোক টালাপাড়া বলে ডাকেন কিনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন