বৃহস্পতিবার | ২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:৪৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
পর্যটন মানচিত্রে রামমোহনের জন্মভূমিতে উন্নয়ন না হওয়ায় জনমানসে ক্ষোভ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সংগীতে রবীন্দ্রনাথ : সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর গোয়ার সংস্কৃতিতে সুপারি ও কুলাগার কৃষিব্যবস্থা : অসিত দাস পুলওয়ামা থেকে পহেলগাঁও, চিয়ার লিডার এবং ফানুসের শব : দিলীপ মজুমদার ক্যের-সাংরী কথা : নন্দিনী অধিকারী সুপারি তথা গুবাক থেকেই এসেছে গোয়ার নাম : অসিত দাস রোনাল্ড রসের কাছে জব্দ ম্যালেরিয়া : রিঙ্কি সামন্ত রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ছে, কমবে অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় উনিশের উত্তরাধিকার : শ্যামলী কর কেট উইন্সলেটের অভিনয় দক্ষতা ও চ্যালেঞ্জিং ভূমিকার ৩টি চলচ্চিত্র : কল্পনা পান্ডে হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলা — আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংকট : সুব্রত কুমার দাস সিন্ধুসভ্যতার ভাষা যে ছিল প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার প্রমাণ মেলুহা তথা শস্যভাণ্ডার : অসিত দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (শেষ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস জাতিভিত্তিক জনগণনার বিজেপি রাজনীতি : তপন মল্লিক চৌধুরী গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তালশাঁসের চাহিদা : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (ষষ্ঠ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস ভারতের সংবিধান রচনার নেপথ্য কারিগর ও শিল্পীরা : দিলীপ মজুমদার চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (পঞ্চম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস আলোর পথযাত্রী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (চতুর্থ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস কন্নড় মেল্ল থেকেই সিন্ধুসভ্যতার ভূখণ্ডের প্রাচীন নাম মেলুহা : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (তৃতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস লোকভুবন থেকে রাজনীতিভুবন : পুরুষোত্তম সিংহ চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (দ্বিতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত রবীন্দ্রনাথের ইরান যাত্রা : অভিজিৎ ব্যানার্জি ঠাকুরকে ঠাকুর না বানিয়ে আসুন একটু চেনার চেষ্টা করি : দিলীপ মজুমদার যুদ্ধ দারিদ্র কিংবা বেকারত্বের বিরুদ্ধে নয় তাই অশ্লীল উন্মত্ত উল্লাস : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

শ্রাদ্ধ মাহাত্ম্য ও অকালবোধন : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৪৩১ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শংকরপত্নী কৈলাসবাসিনী দেবী ভগবতী আর দুই সখি জয়া ও বিজয়ার সঙ্গে আলোচনায় নিমগ্ন। সখীরা তাঁকে একটি করে একেকটি বিষয়ে প্রশ্ন করছেন, দেবী তাঁর উত্তর দিয়ে চলেছেন। বৃহদ্ধর্মপুরাণে দেবী এবং তার সখীদের আলোচনা এইভাবে বর্ণিত রয়েছে।

শরৎকালে দেবী পক্ষের আগে ১৫ দিন ধরে চলে পিতৃপক্ষ। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পক্ষের পনেরো দিনকে শ্রাদ্ধপক্ষ অথবা মহালয়াপক্ষ বলা হয়। এই পনের দিন পূর্বপুরুষদের ও মুনিঋষিগনের স্মরণ-তর্পণ-এর দিন বলে পালন করা হয়। শ্রদ্ধা সহকারে যে অঞ্জলি প্রদান করা হয়, তাকেই শ্রাদ্ধ বলে। অর্থাৎ ‘শ্রদ্ধয়া ক্রিয়তে তৎ’। তখন আমরা পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে জলদান করি।

১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া অমাবস্যায় শেষ হবে। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা তিথি থেকে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথি হল পিতৃপক্ষের সময়। তারপরেই শুরু হয়ে যায় দেবীপক্ষ। শাস্ত্র মতে, পূর্বপুরুষরা এই সময়ে মর্ত্যে নেমে এসে তাঁদের বংশধরদের থেকে জল গ্রহণ করেন।

এই প্রসঙ্গে দেবী তাঁর সখীদ্বয় কে বললেন, “আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের তিথিগুলি পিতৃ পুরুষের কাছে পরম প্রীতিপদ। এই সময় তারা পিন্ডাদি কামনা করে থাকেন। তাই এই বিশেষ পক্ষে পার্বণবিধি মেনে শ্রাদ্ধকার্য করবে। যে ভক্ত শ্রাদ্ধকার্য সম্পন্ন করে তার প্রতি আমি বিশেষ তুষ্ট থাকি।

ভগবান বিষ্ণু যখন নিদ্রিত থাকেন তখন আমি জাগ্রত থাকি। যুদ্ধে, জলে ডুবে, অগ্নিদাহে বা উচ্চস্থান থেকে নীচে পড়ে গিয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের চতুর্দশীর দিন শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করবে। কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমীর দিন শাক দিয়ে, ত্রয়োদশীতে মধু ও পায়েস দিয়ে শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করলে আমি তুষ্ট হই। কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিকে তাই ‘যুগদ্যা’ তিথি বলে।”

দেবীশ্রাদ্ধ মাহাত্ম্য বর্ণনাকালে সখিদ্বয় শরৎকালে দেবীর পুজা বা অকালবোধন কিভাবে প্রচলিত হয় জানতে চায়। দেবী বলেন, — “অসুররাজ রাবণকে ধ্বংস করার জন্য ভগবান বিষ্ণু দশরথের পুত্র রাম রূপে জন্ম গ্রহণ করেন। রাবণ আমার পরম ভক্ত হওয়ায় স্বর্ণলঙ্কায় আমি লঙ্কেশ্বরীরূপে বিরাজ করি। এ অবস্থায় রাম কিভাবে রাবণ বধ করতে পারে! তাই আমার শরণাপন্ন হয়। তখন শিব কথা দেন, বানর যোনিতে হনুমান রূপে জন্ম গ্রহণ করে তাঁর সহায়তা করবেন। রাম যখন লঙ্কায় প্রবেশ করবেন, তখন আমি লঙ্কা ত্যাগ করবো।

রামের কাছে আদেশ লাভের পর পবনপুত্র পথে সিংহীকা নামে এক রাক্ষসী কে বধ করে লঙ্কায় প্রবেশ করলেন। ছয়দিন ধরে লঙ্কায় ঘুরে অবশেষে অশোকবনে সীতার দর্শন পেলেন। বৃক্ষের উপরে বসে দেখলেন, রাবণ সীতাকে প্রলুব্ধ করার নানান চেষ্টা করছেন এবং সীতা তাঁকে তিরস্কার করছেন। রাবনরাজা চলে যাওয়ার পর রামের অঙ্গুরীয় দর্শন করিয়ে রামের সংবাদ শোনালেন। সীতা আনন্দে হনুমানকে বললেন, এই মাসে তুমি আমাকে তাঁর কথা শোনালে বলে, এই মাসটি ‘শ্রাবণ’ মাস নামে খ্যাত হবে।

সীতাদেবী কে দর্শন করার পর লঙ্কা ভ্রমনে বেরিয়ে তেতুঁল বনের মধ্যে এক বিরাট মন্দির দেখলেন। মন্দিরের দ্বার খুলতেই দেখলেন চতুর্ভূজা, রুধিরবদনা শ্যামা মূর্তি অট্টহাস্যে নৃত্য করছেন। তাঁর চারিপাশে শ্বেত, পীত ইত্যাদি নানা রঙের অষ্ট যোগিনীও নৃত্যরতা তারা রাজা রাবণের গুণকীর্তনে মত্ত। হনুমান তাদের মাঝে একলাফে উপস্থিত হয়ে নিজের পরিচয় দিলেন। দেবী বললেন, তিনি দশভূজা, চন্ডরূপা হিমালয় দুহিতা। রাজা রাবণ ভক্তির মধ্যে তাকে বশ করে রেখেছে।”

দেবী হনুমানকে বললেন, “আমি জানি তুমি সাক্ষাৎ রুদ্র। রাবণ বধের জন্য বানররূপ ধারণ করেছ। সীতার অবমাননার জন্য ও পূর্বের সংকল্প অনুযায়ী আমি এখনই লঙ্কা ত্যাগ করবো। আমি বর দিচ্ছি শ্রীরাম রাবণ বধে সফল হবেন কিন্তু আমি তাঁকে সহায়তা করতে পারবো না। কারণ এখন দেবপুজার অকাল।

দক্ষিণায়নে অকাল বলেই রাবণের পূজায় আমি সাড়া দেবো না। অন্যথা এ পুজো উত্তরায়ণ এ হলে রাবণের পূজায় তুষ্ট হতেই হত এবং তাঁকে পরাজিত করার সাধ্য করোর হত না। এখন অকাল বলেই আমি রামকে জয়লাভের বরদান করতে পারলাম।”

দেবীর কথা শুনে হনুমান বললেন, স্বয়ং বিষ্ণু ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য রামরূপে অবতার হয়ে এসেছেন। তাঁর অকাল পূজোয় তুষ্ট হয়ে বরদান করতেই হবে। দেবী হনুমানকে বললেন, — “ব্রহ্মা অমাবস্যার দিন পিতৃলোক সৃষ্টি করেন। এইজন্য অমাবস্যায় লোকে পিতৃশ্রাদ্ধ দান করেন। রাম যখন এই নগরে প্রবেশ করবেন তখন কৃষ্ণপক্ষ। সেই অমাবস্যা পর্যন্ত পিতৃপক্ষ রূপে পরিগণিত হবে। তখন রাম যেন শ্রাদ্ধ কার্য সম্পন্ন করেন। তারপর শুক্ল পক্ষ শুরু হলে আমি অমৃত দৃষ্টির মাধ্যমে সমস্ত আহত বানরদের সুস্থ করে তুলবো।” এই বলে দেবী লঙ্কা ত্যাগ করলেন।

হনুমান সমগ্র লঙ্কা ছারখার করে অর্ঘরূপে দেবী চণ্ডীর পায়ে অর্পণ করলেন। শুরু হলো রাম-রাবণের যুদ্ধের প্রস্তুতি। দেবীর আদেশ মতো রাম অকালে দেবীকে উদ্বোধিত করলেন এবং পুজা করলেন। সেই পুজাই অকালবোধন নামে খ্যাত হলো।

শ্রাদ্ধ পরম্পরাকে টিকিয়ে রাখে ও সাংস্কৃতিক বংশধারাকেও জীবিত রাখে। প্রকৃতি দেহ হতে যা নিয়ে যায়, শ্রদ্ধাময় স্মরণ তাকে অমর করে রাখে। কালের ছোবল যার নাশ করেছে, কর্ম ও বিচার তাঁকে চিরজীবী করেছে। এমন কর্মবীরগণকে কৃতজ্ঞতা সহকারে পুজা করে এই দিনগুলিতে কৃতকৃত্য হওয়া উচিত।।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ডঃ পূর্বা সেনগুপ্তর লেখা এবং সংস্কৃতি পুজন।


আপনার মতামত লিখুন :

10 responses to “শ্রাদ্ধ মাহাত্ম্য ও অকালবোধন : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. মোহাম্মদ আল্লারাখা says:

    লেখাটি খুব সুন্দর। অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ।

  2. Pallab dey says:

    খুব ভালো লাগলো👏👏👏

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন