বৃহস্পতিবার | ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:০৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
নিম্ন চাপের অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত আরামবাগ : দেবাশিস শেঠ আরামবাগে ভয়াবহ বন্যা, দুর্যোগের পদধ্বনি, ক্ষোভ জনমানসে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন মেয়েদের ক্ষমতায়নের পক্ষেও আওয়াজ তুলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী কবি দেবদাস আচার্য-র কবিতাজগৎ — বহমান পৃথিবীর জীবনপ্রবাহ, চেতনাপ্রবাহ : অমৃতাভ দে মনসার নাম কেন ঢেলাফেলা : অসিত দাস ভোও.. ও ..ও.. কাট্টা…! ভো… কাট্টা…! : বিজয় চৌধুরী দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা : সন্দীপন বিশ্বাস নারীবেশী পুরুষ অভিনেতা শঙ্করকে সামাজিক ট্যাবুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় না : বিশ্বেন্দু নন্দ সাসারামের রোহতাসগড়, বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ : নন্দিনী অধিকারী জমিদার রবীন্দ্রনাথ : আহমাদ ইশতিয়াক আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর, এবারও অধরা রইলো আলোচনা : সুমিত ভট্টাচার্য জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (ষষ্ঠ পর্ব) : বিজয়া দেব চাষির দুঃখের ঘরে সাপের বাসা, আজও রেহাই নেই ছোবলের হাত থেকে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সল্টলেক তথা লবণহ্রদই কি কুচিনান : অসিত দাস পদ্মা বা পার্শ্বপরিবর্তনী একাদশী ব্রতকথা : রিঙ্কি সামন্ত জয়া মিত্র-র ছোটগল্প ‘ছক ভাঙার ছক’ কত দিন বিনা চিকিৎসায় চলে যাবে অসুস্থ মানুষের প্রাণ? প্রশ্ন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের : সুমিত ভট্টাচার্য দেবী করন্দেশ্বরীর পূজো ঘিরে উৎসবের আমেজ মন্তেশ্বরের করন্দা : প্রবীর কুমার সামন্ত প্রেতবৈঠকে (প্ল্যানচেট) আত্মার আগমন : দিলীপ মজুমদার সংগীত সাধক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য : রিঙ্কি সামন্ত শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যের অন্দরে বাহিরে বিরাজমান সিণ্ডিকেট : তপন মল্লিক চৌধুরী কবিতা সিংহ-এর ছোটগল্প ‘পশ্চিম রণাঙ্গন আজ শান্ত’ কলকাতার আর্মেনিয়ান জনগোষ্ঠী : অসিত দাস মঙ্গলবারের মধ্যে কাজে ফিরুন — সুপ্রিম ধমক, উৎসবে ফিরুন — মমতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (পঞ্চম পর্ব) : বিজয়া দেব বিবিসির ইয়ংগেস্ট হেডমাস্টার বাবর আলী (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত হাঁসের ডিমের উৎপাদন বাড়াতে এগিয়ে এল রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় এ আমার এ তোমার পাপ : দিলীপ মজুমদার জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (চতুর্থ পর্ব) : বিজয়া দেব রোহিঙ্গা সংকট — ত্রান সহায়তা ও কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ কৌশিকী অমাবস্যার-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

সাসারামের রোহতাসগড়, বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ : নন্দিনী অধিকারী

নন্দিনী অধিকারী / ২৩৫ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সাসারাম মানে বাবু জগজীবন রাম। পেছন ফিরে তাকালে ইতিহাস বইয়ের জ্ঞান, শের শাহ সুরির সমাধিস্থল। এছাড়া সাসারামের অন্য কোনো পরিচয় জানা ছিল না।

প্রথম দর্শনে শহরটার প্রতি মোটেই প্রেম জাগে না। যত্র তত্র পানের পিক, অপরিচ্ছন্নতা, গুটকাডলা হাতের তালু, চটকদার শাড়ি, গোয়াল — খাটালের দুর্গন্ধ মেজাজ বিগড়ে দেবার জন্যে আদর্শ। কিন্তু এক মনের ঘরে যেমন অনেকজনার বসতি, তেমনি এক জায়গার মধ্যেই থাকে অন্য অনেক চোরাগোপ্তা স্থান। তাকে শুধু চিনে নেবার অপেক্ষা।

শহর ছাড়তেই ধানের ক্ষেতে সবুজায়ন। ধানের বুকে সবে দুধ জমতে শুরু করেছে। তাই বোধহয় ধানগাছেরা “স্তনভারে ঈষৎ নম্র”। দূরে সবুজ পাহাড়ের গা বেয়ে ঝর্ণাদের মুক্তির আনন্দ। পথের ধারে ধারে প্রথম বাদলের নয়, শেষ বরষার কদম ফুল ফুটে আছে। যে দিকে চোখ যায়, আদিগন্ত সবুজের হাতছানি।

রোহতাস জেলার কৈমুর পাহাড়ের কোলে বসে আছেন দেবী তুতলা ভবানী। তুতলার সঙ্গে তোতলানোর কোনো সম্পর্ক নেই, স্থান-মাহাত্মে দেবীর এমন নামকরণ। দেবীর আরেকটি সুন্দর নাম সোনাক্ষী। দেবীদের অধিষ্ঠান বেশির ভাগ পাহাড়-পর্বতে। ইনিও বিরাজ করেন জঙ্গল-পর্বতের মাঝে। বর্ষায় দুটি পাহাড়ের মাঝখান থেকে নেমে আসা একটি ঝর্ণা পা ধুইয়ে দেয় দেবী সোনাক্ষীর। ছেলেপুলে কোলে কাঁখে নিয়ে অনেকটা চড়াই ভেঙে ভক্তের দল যাচ্ছে পুণ্যলোভে, ঝর্ণার আকর্ষণে। সদ্য জ্বর থেকে উঠে আমার আর গৌরীদির ভাদুরে রোদে পাহাড়ী পথে আর চড়ার ক্ষমতা ছিল না। আমরা গাছের ছায়ায় বসে বসে জঙ্গল নদী পাহাড় আর মানুষ দেখলাম।

কৈমুর পাহাড়ের বুক থেকে নেমে আসা ঝর্ণা উপত্যকায় নদী হয়ে বয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে নিয়ে বালি পাথর। সে নদী তিরতির করে চলে বিলীন হয়েছে সোন নদীর বুকে। সেই নদীর কাছে বসে থাকতে থাকতে মনে হল পাহাড় থেকে সগৌরবে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে এমনটি শান্ত হয়ে গেল কি করে? তারপরে সোনের বুকে তার অস্তিত্ব হারালো! একেই কি বলে বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ?

কৈমুর পাহাড়ের ধার ঘেঁষে চলতে চলতে পথ আমাদের পৌঁছে দিল রোহতাস গড়ে। দুর্গের ভাঙাচোরা বিশাল ফটকে কত গৌরবগাথা, পরাজয়ের বেদনা। কিংবদন্তি বলে, রহস্যে ঘেরা এই কেল্লা নাকি আদতে পৌরাণিক রাজা হরিশ্চন্দ্র পুত্র রোহিতাশ্বের। রোহিতাশ্ব লোকমুখে রোহতাস। ইতিহাস জানায়, এই দুর্গকে মহিমান্বিত করেছিলেন শের শাহ সুরি। দুর্গের ভিতর মসজিদ আছে। মন্দির ভি আছে। একা একা কখনো রাখালিনী বিজলী কিলাতে গেলে তার ডর লাগে। দুর্গের বাইরে সারি সারি ঘোড়াশাল, পিলখানা। বৃষ্টি পড়লে তার গায়-বাছরাদের সেখানে নিশ্চিন্ত আশ্রয়। কেল্লার সামনের মাঠে বর্ষায় সবুজ ঘাস লকলকিয়ে উঠেছে। এই চারণভূমি ছেড়ে নড়তেই চায় না রাখালিনী রাখালদের চারপেয়েরা।

দুর্গের হাতিশালে হাতি আর শোভা না দিলেও দুর্গের প্রধান দেউড়িতে দুটি সুন্দর অলঙ্কৃত হাতি। শের শাহের পর আকবরের সময় রাজা মানসিংহ এই কেল্লার দখল নিয়েছিলেন। তখন হয়তো আবার গমগমিয়ে উঠেছিল রোহতাসগড়। কেল্লার ভেতর মন্দিরের ঘন্টা বাজত। রাজস্থানী ঝরোখায় বাঈশাহদের হাসির লহর উঠত। শাহী দরবারে রাজপুত বীরদের মোজরীর আওয়াজ উঠত খসখস মচমচ। সেইসব স্মৃতি বুকে নিয়ে, বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে এখন ধ্বংসের দিন গুনছে রোহতাসগঢ়। সরকার, পর্যটক সবাই কেমন যেন উদাসীন এই ঐতিহ্যের প্রতি।

শুধু প্রকৃতি এখানে অকৃপণ। বর্ষার জলে সে আনন্দে সেজে উঠেছে দিকে দিকে। দুর্গাবতী জলপ্রপাত পাহাড়ের বুকে তৈরি করেছে গভীর গুহা। তাঁর নাম তেল্‌হার কুন্ড। কর্মনাশা নদী নাচতে নাচতে এসে কঠিন পাথর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে নিচে। নাম নিয়েছে কর্কটগঢ় জলপ্রপাত। করমচাট জলাধার ঘিরে রয়েছে শিবলিঙ্গের মত একখন্ড পাহাড়কে। সবটাই বড় মনোরম। চোখ জুড়োনো। মালিন্য, নীচতা, অশুচির ঊর্দ্ধে ওঠা শান্তির এক একটি আবাসস্থল।

সাসারামে শেষ শয্যায় শুয়ে আছেন শেরশাহ সুরি তাঁর আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে। শেরশাহ তাঁর আব্বাজান এবং প্রিয় বেয়াই মশাইকেও ভোলেন নি। তাঁদের সমাধিও রয়ে গেছে সাসারামের বুকে।

ইতিহাস বিখ্যাত এই আফগানী বাদশা মুঘল সাম্রাজ্যকে টক্কর দিয়েছিলেন। তাঁর চিরশত্রু হুমায়ূনও তাঁকে সম্মান দিয়ে ওস্তাদ-ই-বাদশাহাঁ বলতে কার্পণ্য করেননি। তিনি ছিলেন সুলতান-ই-আদিল বা ন্যায়পরায়ণ শাসক। শাসনব্যবস্থার সংস্কারে আকবরের পূর্বসূরী।

তাঁর সমাধিস্থলের চারিদিকে জলের পরিখা। স্থানীয় মানুষ এটিকে বলেন পানি রোজা। নিজের জীবদ্দশায় এই সমাধির কাজ শের শাহ শুরু করে দিয়েছিলেন। সূর্যাস্তে জলের ওপর ছায়া পড়ে সেই অপূর্ব ইন্দোইসলামিক স্থাপত্যের।

কেমন যেন মন বিষণ্ণ হয়ে যায় ।

তিন হাজার বছরেরও পুরনো সভ্যতা আর সংস্কৃতির পীঠস্থান বিহার। এখানেই প্রথম গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেছিল লিচ্ছবিরা। বিহার আমাদের দিয়েছে বোধিবৃক্ষের ধ্যান, নালন্দা-ওদন্তপুরী-বিক্রমশীলার জ্ঞান। সেই কোন কলেজ জীবনে নালন্দা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। সেকথা আবার মনে পড়ে গেল এতদিন পর আবার বিহারে এসে। আমরা যে বড্ড ভালোটুকু আঁকড়ে বাঁচতে চাই!


আপনার মতামত লিখুন :

2 responses to “সাসারামের রোহতাসগড়, বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ : নন্দিনী অধিকারী”

  1. Parama Dasgupta says:

    Khub bhalolaglo. known off beat place tar somporke jene

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন