শনিবার | ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:২০
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দশম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুর ও তৎকালীন বঙ্গসংস্কৃতি : অসিত দাস দধি সংক্রান্তি ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (নবম পর্ব) : আবদুশ শাকুর সপ্তাহে একদিন উপবাস করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো : অনুপম পাল অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত’র ভাষা : ড. হান্স্ হার্ডার সবগুলো গল্পেই বিজয়ার নিজস্ব সিগনেচার স্টাইলের ছাপ রয়েছে : ড. শ্যামলী কর ভাওয়াল কচুর কচকচানি : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (অষ্টম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুরের উইল ও দ্বারকানাথের ধনপ্রাপ্তি : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (সপ্তম পর্ব) : আবদুশ শাকুর যে শিক্ষকের অভাবে ‘বিবেক’ জাগ্রত হয় না : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস সসীমকুমার বাড়ৈ-এর ছোটগল্প ‘ঋতুমতী হওয়ার প্রার্থনা’ সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতিফলনে সিনেমা : সায়র ব্যানার্জী নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সুও দুও ভাসে’
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

জনপ্রিয় স্ন্যাক্স চিনাবাদাম অল্প হলেও খান প্রতিদিন : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৬৩৭ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৩

‘বাদাম বাদাম দাদা চিনাবাদাম/ আমার কাছে নাইকো বুবু কাঁচা বাদাম/আমার কাছে পাবে শুধু চিনাবাদাম’ গানের সুরটা ভুবন বাদ্যকরের হলেও কথাগুলো পাল্টে সেদিন কৃষ্ণনগর লোকালে দেখা মিললো এক বাদামওয়ালার। হঠাৎ করে চিনাবাদামের সাক্ষাৎকার পেয়ে ভালোই লাগলো। কিনেও নিলাম খানিক।

চিনেবাদামের খোসা ভাঙার মুচুর-মুচ, মুচুর-মুচ শব্দটা কিন্তু ইউনিক। আমাদের সময়ে জনপ্রিয় স্ন্যাক্স ছিলো এই চিনাবাদাম। গল্পের আসরে খবরের কাগজ পেতে মুড়ি ঢেলে তাতে নারকেল-চানাচুর-ছোলা-চিনাবাদাম, কাঁচালঙ্কা, সর্ষের তেল মেখে আড্ডা বসত। আপনি জেনে খুশি হবেন সেই এক মুঠো চিনাবাদাম আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বিস্ময়কর পজিটিভ কাজ করেছে। বিকেলে আপনার স্যালাড এবং আইসক্রিমে ছড়ানো ওই বাড়তি মুচমুচে চিনাবাদাম বা বিভিন্ন রকমের বাদাম আমরা খাই বটে কিন্তু এর গুনাগুন অনেকেই জানি না। চিনাবাদামের জন্মকুষ্ঠি, কি গুন, কখন খেলে, কিভাবে খেলে উপকার মেলে, অপকারিতাই বা কি… আজ বরং এই নিয়েই কথা হোক।

চিনাবাদামের নামটার মধ্যেই একটা চিন চিন একটা গন্ধ পাওয়া যায়। ছোটবেলায় আমি তো ভাবতাম হয়তো চীন থেকে এসেছে বলেই এই নাম। যদিও চিনেবাদামের আদিবাস দক্ষিন আমেরিকা। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় আজ থেকে ৩ হাজার বছর পূর্বে পেরু অঞ্চলে এটির সন্ধান মেলে। স্পেনের হার্মাদরা দক্ষিণ আমেরিকার গুষ্টিতুষ্টি করে করে মিশনারীদের হাত ধরে চিনেবাদামকে দেশ-বিদেশে ভ্রমণে পাঠিয়ে দেয়। নানাদেশ ঘুরে বহু ভোজন রসিকের মন জয় করে অবশেষে সে ভারতে এসেছিল। যদিও ভারতে চিনা বাদাম কোথা থেকে এসেছে সে বিষয়ে নানা মুনির নানা মত। ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজরা ব্রাজিল থেকে সংগ্রহ করে দক্ষিন আফ্রিকা, ফিলিপাইন্স হয়ে জাপান মালয়েশিয়া ও ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। সম্ভবত অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে চীন, জাপান, মালয়েশিয়া থেকে ভারতের আগমন। তবে এর জন্যই যে চিনাবাদাম নাম হয়েছে, তা বলা খুব মুশকিল। বাংলার এটিকে বলে মাঠকড়াই। ইংরেজি নাম গ্রাউন্ড নাট।

বহু শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট বর্ষজীবী গাছটি বছরে দু-তিনবার চাষ হয়ে থাকে, প্রথমের দিকে গাছ খাড়া থাকে, বেশি লম্বা হলে মাটিতে শুয়ে পড়ে। গাছগুলি দুহাতের বেশি হয় না। ফুলের রং হলুদ।সেই ফুলে পরাগায়ন হবার পর পাপড়িগুলো ঝরে যায় এবং পুষ্পদন্ডটি ধীরে ধীরে মাটি স্পর্শ করে এবং ঝুরো মাটি হলে কিছুটা মাটির ভিতর প্রবেশ করে এবং ধীরে ধীরে চিনাবাদাম ফল হয়ে মাটির নিচেই বাড়তে থাকে। বিজ্ঞানসম্মত নাম : অ্যারাকিস হাইপোজিয়া (Arachis hypogea) এছাড়া প্রচলিত নামগুলি চীনাবাদাম, আর্থনাট, মুংগফলী, মেটে বাদামও বলা হয়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে যে বাদামের উল্লেখ করা আছে সেটি কিন্তু আমন্ড কেউ কেউ চিনা বাদাম ও পিনাটকে আলাদাভাবে দেখিয়েছেন তা ঠিক নয় দুটোই একই দ্রব্য। আখরোট, আমন্ড, কাজু, পেস্তা, পিনাট বা চিনাবাদাম সবই বাদাম কিন্তু সব বাদাম এক নয়।

চিনাবাদাম প্রোটিন এবং ফাইবারের একটা সমৃদ্ধ উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে ৪৯.২৪ গ্রাম আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা হৃৎপিণ্ডের পক্ষে স্বাস্থ্যকর। চীনাবাদামে রেসভেরাট্রল নামের একটা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট (যেটি রেড ওয়াইনে বিদ্যমান) বিদ্যমান যা মানুষের মধ্যে ক্যান্সার, কার্ডিওভাস্কুলার এবং অ্যালজহাইমার্স ব্যাধির বিপদ কমায়। এছাড়া ভিটামিন ই, প্রোটিন, কপার, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্লোরিন, ফসফরাস, ফাইবার ইত্যাদি রয়েছে।

চিনাবাদামের তেল রান্নার কাজে যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনি ত্বকে মোলায়েম রাখতেও এটি ব্যবহৃত হয়। অনেকে অলিভ অয়েলের পরিবর্তে এটি ব্যবহার করে থাকেন। রান্নার ক্ষেত্রেও এই তেলটি ব্যবহার করা যায় তবে ভাজাভুজি করার পর অতিরিক্ত তেল ফেলে দেবেন। আসুন জেনেনিন এর উপকারিতা : —

১) শক্ত হাড়ের জন্য : এতে উপস্থিত ফসফরাস ও ম্যাঙ্গানিজ শরীরে প্রবেশ করার পর হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে। নিয়মিত চিনাবাদাম খেলে হাড়ের কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

২) বুদ্ধির জন্য (Makes your Brain Sharpe)r : একটি সুস্থ এবং তীক্ষ্ণ মস্তিষ্কের জন্য ভিটামিন বি ১, নিয়াসিন এবং ফোলেটের মতো পুষ্টির প্রয়োজন। আপনি যখন চিনাবাদাম খান তখন আপনার শরীরে এই পুষ্টিগুণগুলি যোগ হয়। ফলস্বরূপ, আপনার মস্তিষ্ক আরও সক্রিয় এবং তীক্ষ্ণ হয়। এই ভিটামিনগুলি আলঝেইমারের মত রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

৩) ডায়াবেটিক-বান্ধব : যেহেতু চিনাবাদামে চিনির কোনো উপাদান নেই, তাই এগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। এগুলি পুষ্টির সমৃদ্ধ উৎস এবং একই সাথে সুস্বাদু। গবেষণায় দেখা গেছে যে সকালে চিনাবাদাম খাওয়া হলে, সারাদিনের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার সময় এটি একটি পরিমাণে ইনসুলিন স্পাইক প্রতিরোধ করতে পারে। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি সমীক্ষা অনুসারে, চিনাবাদামের নিয়মিত ব্যবহার টাইপ-২ ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার প্রাকৃতিক ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।

৪) ক্যান্সার প্রতিরোধে : বাদমে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এছাড়াও কোষের ক্ষত রোধ করতে সাহায্য করে।

৫) অপুষ্টিতে : এতে উপস্থিত সবকটি প্রাকৃতিক উপাদান ভিটামিন বি-২, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়া, ফাইবার, প্রোটিন, ফ্যাট শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বালিতে ভাজা চিনাবাদাম অথবা খোসা ছাড়িয়ে বাদাম বেটে খেলে উপকার পাবেন।

৬) স্তন্যল্পতায় : প্রসবের পর মায়েরা ভাজা চিনেবাদামের শরবত খেতে পারেন। যতদিন বাচ্ছা দুধ খাবে দিনে অন্তত একবার খেতে পারেন, তবে হজমের দিকে লক্ষ্য রাখবেন যেন কোন সমস্যা না হয়।

৭) ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে : নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রতিদিন বাদাম খাওয়া হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ২৯% কমাতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণ মনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, থাকে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, কোনওরকম ট্রান্স ফ্যাট থাকে না।

৮) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেতে পারেন।

৯) ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।

১০) এই বাদাম নতুন রক্ত কণিকা বা হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে

চিনেবাদাম ১০ থেকে ১২ গ্রাম পর্যন্ত অবস্থা বিশেষে খাওয়া যেতে পারে। অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যা হবে। অল্পমাত্রায় শুক্রবর্ধক কিন্তু অধিক মাত্রায় গ্রহণ করলে শীঘ্রপতনের সমস্যা দেখা যায়। এছাড়া চিনা বাদামে অনেকেরই শ্বাসকষ্ট, এলার্জি হতে পারে। সেজন্য তিন বছর বয়স পর্যন্ত এটি খেতে দিতে বারণ করেন অনেকে।

সারা বিশ্বে চিনাবাদামের ব্যবহার বড় অনুপাতে পরিবর্তিত হয় তাই বাণিজ্যিক পণ্যগুলিও বৈচিত্র্যময় এবং সাধারণত স্থানীয়করণ করা হয়। চিনাবাদাম থেকে তৈরি মাখন, তেল, পেস্ট, সস, ময়দা, দুধ, চিনাবাদাম পানীয়, স্ন্যাকস (লবণ এবং মিষ্টি বার) এবং চিনাবাদাম পনির এনালগ (peanut cheese analog) মত বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাঁচা চিনাবাদাম সারা বিশ্বেই খাওয়া হয়। চিনাবাদামকে প্রায় ১২-১৫ মিনিটের জন্য ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বা আর্দ্রতার পরিমাণের উপর নির্ভর করে ৪০-৬০ মিনিটের জন্য ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গরম করে ভাজা চিনাবাদাম প্রক্রিয়া করা হয়।

অনেকেই ভাজা বাদাম না কাঁচা বাদাম নিয়ে সমস্যায় পড়েন। ভাজা বাদাম খেলে মিলবে একই উপকারিতা। ভাজা বাদাম খেলে দাঁতের ক্ষয়, বদহজমের সমস্যাও দূর হয়।

প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকার কারণে খাদ্যতালিকায় নিয়মিত চিনাবাদাম রাখলে উপকার পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য দিনে এক মুঠো সস্তার চিনাবাদামই যথেষ্ট।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন