শুক্রবার | ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৪৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
দোলের আগের দিনের চাঁচর নিয়ে চাঁচাছোলা কথা : অসিত দাস খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত সিঙেরকোণ-এর রাধাকান্ত এখনও এখানে ব্যাচেলর : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত বাজারে ভেজাল ওষুধের রমরমা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘কুড়কুড়ে ছাতুতে’ ক্যানসার নিকেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বোলপুর কি সত্যিই বলিপুর : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন অসুখী রাজকন্যাদের লড়াইয়ের গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বিশ্ব থেকে ক্যানসারকে নির্মূল করতে গবেষণায় একের পর এক সাফল্য রূপায়ণের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কল্পনার ডানায় বাস্তবের রূপকথা : পুরুষোত্তম সিংহ হাইকোর্টের রায়ে ভাবাদিঘীতে তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরুর নির্দেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমছে, সঙ্কটে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল : তপন মল্লিক চৌধুরী ফল্গু নদীর তীরে একটি ছোট শহর এই বুদ্ধগয়া : বিজয় চৌধুরী শাহিস্নান নয়, আদতে কথাটি ছিল সহিস্নান : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ভূতের গল্পো ‘হোমস্টে’ রহস্য ঘেরা বলিউডের নক্ষত্রপতন : রিঙ্কি সামন্ত বাঁকুড়ার দু-দিন ব্যাপী দেশীয় বীজ মেলায় দেশজ বীজের অভূতপূর্ব সম্ভার পেজফোর-এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ২০২৫ এত গুণী একজন মানুষ কত আটপৌরে : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সরস্বতীর উৎস সন্ধানে : অসিত দাস ‘সব মরণ নয় সমান’ সৃজনশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে যথোচিত মর্যাদায় স্মরণ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সিপিএম-এর রাজ্য সম্মেলন, তরুণ প্রজন্মের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে খামতি রয়েছে দলে : তপন মল্লিক চৌধুরী প্রথম পাঠ — মার্কসবাদের বিশ্বভ্রমণ : সন্দীপন চক্রবর্তী বঙ্গবিভূষণ কাশীকান্ত মৈত্র স্মারকগ্রন্থ : ড. দীপাঞ্জন দে ‘খানাকুল বাঁচাও’ দাবিতে সরব খানাকুল-সহ গোটা আরামবাগের মানুষ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় হরি হরের কথা এবং বীরভূমের রায়পুরে বুড়োনাথের বিয়ে : রিঙ্কি সামন্ত ত্র্যম্বকেশ্বর দর্শনে মোক্ষলাভ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কুম্ভমেলায় ধর্মীয় অভিজ্ঞতার থেকে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেশি : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ৩৯ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫

দোল উৎসবের দিনে এক ভাবনার জন্ম। কিন্তু ভাবনার কথা এখন থাক, আগে দোল নিয়ে খোলসা করে কিছু বলা যাক। ফাল্গুনী পূর্ণিমায় এই উৎসব। প্রথমে ন্যাড়া (মেড়া) পোড়া, তারপর দোল, আর তারপরে হোলি। উৎসবের সময়কালটা দেখুন। বসন্ত। শীত নয়, গ্রীষ্ম নয়, নাতিশীতোষ্ণ। আর এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাধা-কৃষ্ণের অনুযঙ্গ। আর প্রেম।

বাংলার বাইরে রাধা-কৃষ্ণ দেবতা হয়ে বিরাজ করতে পারেন, কিন্তু বাংলায় তাঁরা প্রেমের প্রতিরূপ। আদর্শ প্রেমিক-প্রেমিকা। বাংলায় কৃষ্ণের ঐশ্বর্যরূপ একদম খাপ খায় নি। মালাধর বসুর ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ তাই আপামর বাঙালি গ্রহণ করে নি। প্রেমের সঙ্গে ঋতুর যোগ স্বাভাবিক। বসন্ত তাই প্রেমের ঋতু। মনের কালিমা ভুলে, বিদ্বেষ ভুলে দোলের দিনে মিলিত হবে সবাই। বাংলা সব উৎসবের মধ্যে এই মিলনের সুরটা সবচেয়ে বড়।

কালিদাসের ‘শকুন্তলা’য়, শূদ্রকের ‘মৃচ্ছকটিকে’, ‘মালবিকাগ্নিমিত্রে’, হর্ষের ‘রত্নাবলী’তে, জয়দেবের ‘গীতগোবিন্দে’, শ্রীজীব গোস্বামীর ‘শ্রীগোপালচম্পু’তে, কবি কর্ণপুরের ‘আনন্দবৃন্দাবনচম্পু’তে দোল উৎসবের বর্ণনা আছে। উৎসবটির প্রাচীনত্ব বোঝানোর জন্য এই সব বই-এর উল্লেখ করলাম।

কৃষ্ণ বা রাধার উপর যতই দেবত্ব আরোপ করা হোক না কেন, দোল উৎসব ছিল অসাম্প্রদায়িক উৎসব। পাঠান ও মোগল আমলে মুসলমানরাও এই উৎসবে সামিল হতেন। প্রমাণ? প্রমাণ মানুচির লেখায়, প্রমাণ আলেকজাণ্ডার হ্যামিলটনের লেখায়। সেসব লেখায় দেখা যায় রাজস্থানে হোলির উন্মাদনা। সুর্মায়, আতরে, রঙিন পাগড়িতে সুসজ্জিত হয়ে পাঠান সেনাপতি কেতুনগড়ে আসেন হোলি খেলতে। আকবর আর জাহাঙ্গীরের আমলে এই উৎসবের জৌলুস ছিল নয়নলোভন। হুমায়ুন তো মিলিয়ে দিয়েছিলেন পারস্যের ‘নওরোজে’র সঙ্গে ‘হোলি’কে।

দোলের আগের দিনে যে হোলিকা দহন বা ন্যাড়া (মেড়া) পোড়া হয়, তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে হিরণ্যকশিপু ও প্রহ্লাদ ও হোলিকার কথা। হোলিকা দহনের মূল কথাটি হল অশুভ শক্তির বিনাশ।

এবার বলি ভাবনার কথা।

বলেছিলাম উৎসবের সঙ্গে ঋতুর যোগ আছে। দোল ও হোলির সঙ্গে যোগ আছে বসন্তের। কিন্তু সে বসন্ত কি আর আছে? কোথা হা হন্ত চিরবসন্ত আমি বসন্তে পুড়ি। বর্যের মতো, শরতের মতো, শীতের মতো, বসন্তকেও গ্রাস করেছে গ্রীষ্ম। কেন? কারণ মানুষের অত্যাচারে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এই উৎসবে আমরা কি ভেবে দেখছি সে কথা? আমরা কি প্রকৃতির প্রতিশোধের কথা ভেবে শিহরিত?

দ্বিতীয় ভাবনা প্রেমকে নিয়ে। প্রেম কি ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে না এই উন্নততর পৃথিবীতে? চারদিকে দেখছি বিদ্বেষের বিষবাষ্প, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের একমাত্র আয়োজন, প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়, শৈশবের অকালমৃত্যু ; রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে, ধর্মে-ধর্মে, জাতিতে-জাতিতে হানাহানি। ইন্টারনেটে আর মুঠোফোনে পৃথিবী আজ হাতের মুঠোয়, ‘থার্ড ওয়েভে’র লেখক কল্পনা করেছিলেন ‘গ্লোবাল ভিলেজে’র। অথচ বাস্তবে দেখুন মানুষ আজ কত নিঃসঙ্গ, বৈদ্যুতিক আলোর ঝকমকানির মধ্যে কি নিবিড় অন্ধকার! কেন প্রমোদে (উন্নয়নে) ঢালিয়া দিনু মন/মন কেন কাঁদেরে।

দোল উৎসবের অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছিলাম। আজ আমাদের দেশে কি শুনছি? শুনছি বিভাজনের কথা। যত মত তত পথ নয়, এক মত এক পথের কথা। তাই আজ রবীন্দ্রনাথের মতো কোন বাউল এসে যদি গান ধরেন, ‘ওরে ও গৃহবাসী/খোল দ্বার খোল/লাগল যে দোল’, তাহলে স্বার্থমগ্ন, বিভাজনপ্রমত্ত মানুষ সেই গায়ককে ‘ছিটেল’ বলতে দ্বিধা করবে না।

ন্যাড়াপোড়ায় অংশগ্রহণ করি আমরা, খড় বা কাঠের তৈরি অশুভ শক্তির প্রতীক যখন পুড়ে ছাই হয়ে যায়, তখন উল্লাস ও উত্তেজনা বোধ করি; কিন্তু বাস্তবের অশুভ শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করে চলি। উলঙ্গ রাজারা দাপিয়ে বেড়ান, বলে যান ‘নিন্দারে করিব ধ্বংস কণ্ঠরুদ্ধ করি’ — আমরা তখন দেঁতো হাসি হেসে পাশ কাটিয়ে যাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন