সোমবার | ২৬শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:১২
Logo
এই মুহূর্তে ::
পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের অনবদ্য সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি : মনোজিৎকুমার দাস কঠোর শাস্তি হতে চলেছে নেহা সিং রাঠোরের : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন : শান্তা দেবী বাঙালি মুসলমান সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা : ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সিন্ধু সভ্যতার ভূখণ্ড মেলুহা-র সঙ্গে বাণিজ্যে মাগান দেশ : অসিত দাস তদন্তমূলক সাংবাদিকতা — প্রধান বিচারপতির কাছে খোলা চিঠি : দিলীপ মজুমদার হেমন্তকুমার সরকার ও নজরুল-স্মৃতিধন্য মদনমোহন কুটির : ড. দীপাঞ্জন দে রামমোহন — পুবের সূর্য পশ্চিমে অস্তাচলে গেলেও শেষ জীবনে পিছু ছাড়েনি বিতর্ক : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় মাওবাদী দমন না আদিবাসীদের জমি জঙ্গল কর্পোরেট হস্তান্তর : তপন মল্লিক চৌধুরী জৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষে শ্রী অপরা একাদশী মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত পর্যটন মানচিত্রে রামমোহনের জন্মভূমিতে উন্নয়ন না হওয়ায় জনমানসে ক্ষোভ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সংগীতে রবীন্দ্রনাথ : সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর গোয়ার সংস্কৃতিতে সুপারি ও কুলাগার কৃষিব্যবস্থা : অসিত দাস পুলওয়ামা থেকে পহেলগাঁও, চিয়ার লিডার এবং ফানুসের শব : দিলীপ মজুমদার ক্যের-সাংরী কথা : নন্দিনী অধিকারী সুপারি তথা গুবাক থেকেই এসেছে গোয়ার নাম : অসিত দাস রোনাল্ড রসের কাছে জব্দ ম্যালেরিয়া : রিঙ্কি সামন্ত রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ছে, কমবে অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় উনিশের উত্তরাধিকার : শ্যামলী কর কেট উইন্সলেটের অভিনয় দক্ষতা ও চ্যালেঞ্জিং ভূমিকার ৩টি চলচ্চিত্র : কল্পনা পান্ডে হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলা — আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংকট : সুব্রত কুমার দাস সিন্ধুসভ্যতার ভাষা যে ছিল প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার প্রমাণ মেলুহা তথা শস্যভাণ্ডার : অসিত দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (শেষ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস জাতিভিত্তিক জনগণনার বিজেপি রাজনীতি : তপন মল্লিক চৌধুরী গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তালশাঁসের চাহিদা : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (ষষ্ঠ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস ভারতের সংবিধান রচনার নেপথ্য কারিগর ও শিল্পীরা : দিলীপ মজুমদার চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (পঞ্চম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস আলোর পথযাত্রী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (চতুর্থ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ২৪২ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫

দোল উৎসবের দিনে এক ভাবনার জন্ম। কিন্তু ভাবনার কথা এখন থাক, আগে দোল নিয়ে খোলসা করে কিছু বলা যাক। ফাল্গুনী পূর্ণিমায় এই উৎসব। প্রথমে ন্যাড়া (মেড়া) পোড়া, তারপর দোল, আর তারপরে হোলি। উৎসবের সময়কালটা দেখুন। বসন্ত। শীত নয়, গ্রীষ্ম নয়, নাতিশীতোষ্ণ। আর এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাধা-কৃষ্ণের অনুযঙ্গ। আর প্রেম।

বাংলার বাইরে রাধা-কৃষ্ণ দেবতা হয়ে বিরাজ করতে পারেন, কিন্তু বাংলায় তাঁরা প্রেমের প্রতিরূপ। আদর্শ প্রেমিক-প্রেমিকা। বাংলায় কৃষ্ণের ঐশ্বর্যরূপ একদম খাপ খায় নি। মালাধর বসুর ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ তাই আপামর বাঙালি গ্রহণ করে নি। প্রেমের সঙ্গে ঋতুর যোগ স্বাভাবিক। বসন্ত তাই প্রেমের ঋতু। মনের কালিমা ভুলে, বিদ্বেষ ভুলে দোলের দিনে মিলিত হবে সবাই। বাংলা সব উৎসবের মধ্যে এই মিলনের সুরটা সবচেয়ে বড়।

কালিদাসের ‘শকুন্তলা’য়, শূদ্রকের ‘মৃচ্ছকটিকে’, ‘মালবিকাগ্নিমিত্রে’, হর্ষের ‘রত্নাবলী’তে, জয়দেবের ‘গীতগোবিন্দে’, শ্রীজীব গোস্বামীর ‘শ্রীগোপালচম্পু’তে, কবি কর্ণপুরের ‘আনন্দবৃন্দাবনচম্পু’তে দোল উৎসবের বর্ণনা আছে। উৎসবটির প্রাচীনত্ব বোঝানোর জন্য এই সব বই-এর উল্লেখ করলাম।

কৃষ্ণ বা রাধার উপর যতই দেবত্ব আরোপ করা হোক না কেন, দোল উৎসব ছিল অসাম্প্রদায়িক উৎসব। পাঠান ও মোগল আমলে মুসলমানরাও এই উৎসবে সামিল হতেন। প্রমাণ? প্রমাণ মানুচির লেখায়, প্রমাণ আলেকজাণ্ডার হ্যামিলটনের লেখায়। সেসব লেখায় দেখা যায় রাজস্থানে হোলির উন্মাদনা। সুর্মায়, আতরে, রঙিন পাগড়িতে সুসজ্জিত হয়ে পাঠান সেনাপতি কেতুনগড়ে আসেন হোলি খেলতে। আকবর আর জাহাঙ্গীরের আমলে এই উৎসবের জৌলুস ছিল নয়নলোভন। হুমায়ুন তো মিলিয়ে দিয়েছিলেন পারস্যের ‘নওরোজে’র সঙ্গে ‘হোলি’কে।

দোলের আগের দিনে যে হোলিকা দহন বা ন্যাড়া (মেড়া) পোড়া হয়, তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে হিরণ্যকশিপু ও প্রহ্লাদ ও হোলিকার কথা। হোলিকা দহনের মূল কথাটি হল অশুভ শক্তির বিনাশ।

এবার বলি ভাবনার কথা।

বলেছিলাম উৎসবের সঙ্গে ঋতুর যোগ আছে। দোল ও হোলির সঙ্গে যোগ আছে বসন্তের। কিন্তু সে বসন্ত কি আর আছে? কোথা হা হন্ত চিরবসন্ত আমি বসন্তে পুড়ি। বর্যের মতো, শরতের মতো, শীতের মতো, বসন্তকেও গ্রাস করেছে গ্রীষ্ম। কেন? কারণ মানুষের অত্যাচারে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এই উৎসবে আমরা কি ভেবে দেখছি সে কথা? আমরা কি প্রকৃতির প্রতিশোধের কথা ভেবে শিহরিত?

দ্বিতীয় ভাবনা প্রেমকে নিয়ে। প্রেম কি ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে না এই উন্নততর পৃথিবীতে? চারদিকে দেখছি বিদ্বেষের বিষবাষ্প, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের একমাত্র আয়োজন, প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়, শৈশবের অকালমৃত্যু ; রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে, ধর্মে-ধর্মে, জাতিতে-জাতিতে হানাহানি। ইন্টারনেটে আর মুঠোফোনে পৃথিবী আজ হাতের মুঠোয়, ‘থার্ড ওয়েভে’র লেখক কল্পনা করেছিলেন ‘গ্লোবাল ভিলেজে’র। অথচ বাস্তবে দেখুন মানুষ আজ কত নিঃসঙ্গ, বৈদ্যুতিক আলোর ঝকমকানির মধ্যে কি নিবিড় অন্ধকার! কেন প্রমোদে (উন্নয়নে) ঢালিয়া দিনু মন/মন কেন কাঁদেরে।

দোল উৎসবের অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছিলাম। আজ আমাদের দেশে কি শুনছি? শুনছি বিভাজনের কথা। যত মত তত পথ নয়, এক মত এক পথের কথা। তাই আজ রবীন্দ্রনাথের মতো কোন বাউল এসে যদি গান ধরেন, ‘ওরে ও গৃহবাসী/খোল দ্বার খোল/লাগল যে দোল’, তাহলে স্বার্থমগ্ন, বিভাজনপ্রমত্ত মানুষ সেই গায়ককে ‘ছিটেল’ বলতে দ্বিধা করবে না।

ন্যাড়াপোড়ায় অংশগ্রহণ করি আমরা, খড় বা কাঠের তৈরি অশুভ শক্তির প্রতীক যখন পুড়ে ছাই হয়ে যায়, তখন উল্লাস ও উত্তেজনা বোধ করি; কিন্তু বাস্তবের অশুভ শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করে চলি। উলঙ্গ রাজারা দাপিয়ে বেড়ান, বলে যান ‘নিন্দারে করিব ধ্বংস কণ্ঠরুদ্ধ করি’ — আমরা তখন দেঁতো হাসি হেসে পাশ কাটিয়ে যাই।


আপনার মতামত লিখুন :

3 responses to “খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার”

  1. Dr. Partha Banerjee says:

    খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা। এবং বিশেষ করে শেষের কথাগুলো।

  2. প্রবীর সামন্ত। says:

    চমৎকার। খুব ভালো লাগল। ছোট অথচ কি সুন্দর চমৎকার ভাবে দোলের প্রাচীনত্ব, রাধা-কৃষ্ণ, প্রেম, ঋতু, উষ্ণায়্ণ, বর্তমান সময়ে প্রেম ভাবনা সব কথার উল্লেখ ব্যাখ্যা করেছেন এই ছোট্ট পরিসরে।
    চমৎকার লেখা
    আরও অনেক মানুষ পড়ার সুযোগ পেলে ভালো হয়।
    লেখক আমার শিক্ষক, আমার অনেক শ্রদ্ধেয়।

  3. যাক গে শেষ পর্যন্ত পার্থবাবুর দৃষ্টি আকর্ষণ করা গেল । পার্থবাবু , হয়তো দেখেছেন , বইমেলায় ‘রাধাকথা কৃষ্ণকথা’ নামে আমার একটি বই বেরিয়েছে সিগনেট প্রেস থেকে । আমি কৃষ্ণের মানবিক রূপটি দেখাতে চেয়েছি ।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন