মঙ্গলবার | ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৫৬
Logo
এই মুহূর্তে ::
খালাসিটোলা, রবীন্দ্রনাথ ও পঞ্চানন কুশারী : অসিত দাস পীযূষ পাঠ প্রস্তাব : ড. পুরুষোত্তম সিংহ চর্যাপদে সমাজচিত্র : নুরুল আমিন রোকন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দশম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুর ও তৎকালীন বঙ্গসংস্কৃতি : অসিত দাস দধি সংক্রান্তি ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (নবম পর্ব) : আবদুশ শাকুর সপ্তাহে একদিন উপবাস করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো : অনুপম পাল অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত’র ভাষা : ড. হান্স্ হার্ডার সবগুলো গল্পেই বিজয়ার নিজস্ব সিগনেচার স্টাইলের ছাপ রয়েছে : ড. শ্যামলী কর ভাওয়াল কচুর কচকচানি : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (অষ্টম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুরের উইল ও দ্বারকানাথের ধনপ্রাপ্তি : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (সপ্তম পর্ব) : আবদুশ শাকুর যে শিক্ষকের অভাবে ‘বিবেক’ জাগ্রত হয় না : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

হেঁসেল কথা : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৯৭৬ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ৩ জুন, ২০২২

“If you can organize your kitchen, you can organize your life.” Louis Parrish

লুইস প্যারিস কথাগুলির সত্যতা অনুভূত হয়েছিল ব্যক্তিগত অনুভূতি দিয়ে পঞ্চাশ দশকে তৈরি তপন সিংহের কালজয়ী সিনেমা “গল্প হলেও সত্যি” দেখে। ঔপনিবেশিক রান্নাঘর, তার সামনে শ্যাওলা ধরা উঠোন আর তার উল্টোদিকের দালানে বসে খাওয়া দাওয়া। সেই পরিবারে নেই সুখ শান্তি, আছে মনোমালিন্য এবং কর্মবিভাগ নিয়ে ক্ষোভ আর রান্নাঘরের দায়িত্ব এড়ানোর জন্য একে অপরের প্রতি দোষারোপ। আসলে রান্না-বান্না যৌথ যাপনের অঙ্গ, অনেক বড় সমাজধর্ম। রান্নাঘরেই বোনা হয় পরিবারের সব সদস্যের মধ্যে ভালোবাসার সুতো। সিনেমাতে এই সুতো বাঁধার ভূমিকা নিয়েছিলেন রবি ঘোষ।

“পুরুষের মনের রাস্তা পেট হয়ে যায়” এই আপ্ত বাক্যটি কিন্তু পরিবারের সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ভাজা, ভাতে, পোড়া, সিদ্ধ, শুক্তো, ঘণ্ট, ছ্যাঁচড়া, ছেঁচকি, চচ্চড়ি, ছক্কা, ছোকা, ঘ্যাঁট, লাবড়া, ঝাল, ঝোল, ভাপা, ডালনা, দোলমা, অম্বল, টক… এক পঙ্‌ক্তিতে ধরানোর মুশকিল পদগুলির সৃষ্টির স্থান এই রান্নাঘর।

রবীন্দ্রনাথের পঞ্চাশতম জন্মদিনে তাঁকে ‘কবিসম্বর্ধনা বরফি’ রেঁধে খাইয়েছিলেন হেমেন্দ্রকুমার ঠাকুরের মেজো মেয়ে প্রজ্ঞাদেবী। নিত্যনতুন পদের জন্ম দিতেন এই রান্নাঘরেই। তিনি রচনা করেছিলেন গার্হস্থবিজ্ঞানেরও কিছু বই, রন্ধন প্রণালী সম্পর্কিত বেশকিছু প্রয়োজনীয় তথ্য। নতুন সৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত করতেন তাঁর প্রিয়জনদের নাম যেমন — ‘রাম মোহন দোলমা পোলাও’, ‘দ্বারকানাথ ফিরনি পোলাও’, ‘সুরভি’ (তাঁর অকাল মৃত মেয়ের নাম); এছাড়াও আছে আরো বেশকিছু উদ্ভট মজার নতুন ব্যঞ্জন যেমন খেজুরের পোলাও, লঙ্কা পাতার চচ্চড়ি, রসগোল্লার অম্বল, পানিফলের ডালনা, ঝিঙ্গা পাত পোড়া, মিঠা দই মাছ, মাংসের বোম্বাই কারী ইত্যাদি।

পুরনো আমলের রান্নাঘরের গল্পের কথা কারুর মনে থাকলে বুঝতে পারবেন… দেওয়ালে ঝুলকালি মাখানো, কোথাও বেতের ঝুড়ি, বাজারের থলে ঝুলছে, ধোঁয়ায় ভরা অন্ধকার ঘরের ছবি ভেসে ওঠে। বাঙালিনীর পরাধীনতা আরো বেশি আন্ডারলাইন হয়েছে এই রান্নাঘরে। শ্বাশুড়ি বা পিসশ্বাশুড়ির সঙ্গে বৌমাদের অহরহ মনস্তাত্ত্বিক, রাজনৈতিক, সামাজিক সংঘাতের স্থান ছিল এই রান্নাঘর।

সময়ের সঙ্গে সামাজিক বিবর্তনের মধ্যে পরিবর্তিত হয়েছে কুলীন হেঁশেল। ক্রমে ক্রমে সে হয়ে উঠলো বর্গফুটের মডিউল কিচেন বা আধুনিক ওপেন কিচেন। হামেশাই শোনা যায় রান্নাতে জাদু আছে, তাই জাদুঘর পরিবর্তিত হলো হেঁশেলে।

বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী বাড়ির বা ফ্ল্যাটের অগ্নিকোণ অর্থাৎ দক্ষিণ-পূর্ব কোন কিচেনের আদর্শ জায়গা। একান্তই অগ্নিকোনে করা না গেলে বিকল্প হিসেবে বায়ুকোণকে অর্থাৎ উত্তর-পশ্চিম দিক বেছে নেওয়া যেতে পারে।

কিচেন যাতে যথেষ্ট আলো, হওয়া পায় ও প্রায় সারাটা দিন ধরে শুকনো থাকে তার দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

ঘরের “High Touch Area” অর্থাৎ যে সকল স্থানে আমাদের হাতের স্পর্শ বেশি থাকে তাকে অবশ্যই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

আমরা আধুনিক কিচেনকে মডিউলার কিচেনই বলি কিন্তু মডিউলার কিচেন আর সেমি-মডিউলার কিচেন এক নয়। মডিউলার কিচেন কোন ফ্যাক্টরি থেকে মেসিনের সাহায্যে তৈরি হয়ে আপনার হেঁসেলে এনে ফিট করে দেওয়া হয় ও প্রয়োজনে তা খুলে অন্য কোথাও লাগিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু সেমি-মডিউলার কিচেন হলো কাস্টমাইজড কিচেন, যেটি আপনি নিজের মতো করে বানিয়ে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে বাড়ী চেঞ্জের সময় আপনি সবকিছু খুলে নিয়ে যেতে পারেন কিন্তু টেবিল টপ অর্থাৎ গ্রানাইট বা টালি অটুট অবস্থায় খুলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

কিচেনে চিমনি লাগানোটাও বেশ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিচেন ফিটিংসের ক্ষেত্রে যাতে জায়গার অপচয় না হয় সেটির সিদ্ধান্ত আপনি নিজেই নিতে পারেন অথবা চটজলদি না করে ইন্টিরিয়র ডিজাইনারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়াটাই ঠিক।

রান্না যে কেবলমাত্র গৃহকোণের হেঁসেলে আটকে থাকা দৈনিক খাটনি নয়, তা যে শিল্প, সেই কথা প্রমাণিত হয়েছে বহুবার বহুভাবে।

“জীবনের নানা কথা অনায়াসে বলে গেছেন আশাপূর্ণা দেবী এই রান্নাঘরে বসে। লেখার প্লট ভাববার জন্য তাঁকে হাতে পেন তুলে নিয়ে বন্ধ ঘরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়নি। রান্নাঘরে কুটনো কুটতে কুটতে, কড়াইতে ফোড়ন দিতে দিতেও আশাপূর্ণা দেবীর ভাবনায় তৈরি হয়ে গেছে গল্প, উপন্যাসের রেখাচিত্র। হলুদ মাখা আঁচল নিয়ে লেখার টেবিলে বসে এভাবেই তিনি লিখে গেছেন মেয়েদের কথা, সমাজের কথা সর্বোপরি জীবনের কথা।”

রান্নাঘরে সময় কাটাতে এগিয়ে এসেছে পুরুষও। মিথ ভেঙেছে বহুদিন। যে কোনও বড় রেস্তোরাঁর শেফ কিন্তু বেশিরভাগ ছেলেরাই হন। হোস্টেল কিংবা মেসলাইফে এসে অনেক পুরুষই রন্ধন পটিয়সী হয়ে ওঠেন।

সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা বলছে যেসব ছেলেরা ভালো রান্না করতে পারেন বা জানেন মেয়েরা নাকি তাঁদের প্রতি একটু বেশিই আকৃষ্ট হন। বিশেষ করে, লকডাউনের সময় হোম কোয়ারেন্টিনে অফিসের কাজের ফাঁকে রান্না শিখে নিয়েছেন অনেকেই।

কোন বাড়িতে কত সুখ তা হেঁশেল দেখে বোঝা যায়। “the home is where the hearth is…”

যে বাড়ির রান্নাঘর যত জমজমাট, সে বাড়ি তত সুখের আলয়। এবং সুখ হল ছোট্ট বাড়ি, যার রান্নাঘরটি বৃহৎ। (Happiness is a small house, with a big kitchen… Alfred Hitchcock .)

এখানে রান্নাঘর কোন ছোট ঘর না তা নদীর পাড়, উঠোন, ধান ভাণার জায়গা…. সর্বত্র ব্যাপ্ত। সেখানে উনুন সূর্য দেব এবং তিনিই গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত।

Sources: Various books and articles have been referred to for the writing.


আপনার মতামত লিখুন :

2 responses to “হেঁসেল কথা : রিঙ্কি সামন্ত”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন