সোমবার | ৩১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:৩৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
আরামবাগে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে আরাধনার মধ্য দিয়ে দিঘীর মেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘বিজ্ঞান অন্বেষক’ পত্রিকার ২২তম বর্ষ উদযাপন : ড. দীপাঞ্জন দে হিন্দিতে টালা মানে ‘অর্ধেক’, কলকাতার টালা ছিল আধাশহর : অসিত দাস আত্মশুদ্ধির একটি বিশেষ দিন চৈত্র অমাবস্যা : রিঙ্কি সামন্ত চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় : ড. দীপাঞ্জন দে রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল জৈব কৃষি বিপণন হাট অশোকবৃক্ষ, কালিদাসের কুমারসম্ভব থেকে অমর মিত্রর ধ্রুবপুত্র : অসিত দাস কৌতুকে হাসতে না পারলে কামড় তো লাগবেই : তপন মল্লিক চৌধুরী জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর ও রোহিঙ্গা সংকটে অগ্রগতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন এথেন্সের অ্যাগনোডাইস — ইতিহাসের প্রথম মহিলা চিকিৎসক : রিঙ্কি সামন্ত সন্‌জীদা খাতুন — আমার শিক্ষক : ড. মিল্টন বিশ্বাস হিমঘরগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ আলু মজুত, সস্তা হতে পারে বাজার দর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শিশুশিক্ষা : তারাপদ রায় জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘শোলে’র পঞ্চাশ বছর : সন্দীপন বিশ্বাস বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ইতিহাস পালটাতে চায় : তপন মল্লিক চৌধুরী অশোক সম্পর্কে দু-চারটে কথা যা আমি জানি : অসিত দাস চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস প্রাণগৌরাঙ্গের প্রিয় পঞ্চব্যঞ্জন : রিঙ্কি সামন্ত ‘দ্য স্টোরিটেলার’ — শিল্প এবং বাজারের মধ্যে দ্বন্দ্ব : কল্পনা পান্ডে অপুষ্টি আর দারিদ্রতা ঢাকতে সরকার আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান আওড়ায় : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কৌতুকে হাসতে না পারলে কামড় তো লাগবেই : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ৬৮ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

কথায় বলে হাসির মার বড় মার। শ্লেষ বা ব্যঙ্গকৌতুক যাই ভাবি আর বলি না কেন তা মোটেও লোক হাসানো নয়। কোনো কোনো অবস্থায় আপাতনিরীহ ব্যাঙ্গ বা কৌতুক যে মানুষের কাছে একটা প্রয়োজনীয় হাতিয়ার হয়ে ওঠে উলটোদিকে রাষ্ট্রকে ভয়ঙ্কর ক্ষুব্ধ করে তোলে, সম্প্রতি কুণাল কামরার স্ট্যান্ড-আপ কমেডি মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রীকে জনপ্রিয় গান ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ গানের শব্দ বদলে তাঁকে ‘গদ্দার’ বা ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলার পর মুম্বই পুলিশ তাঁকে যেমন তলব করেছে একইসঙ্গে শিন্দে সেনা কর্মীরা তাণ্ডব চালিয়ে হ্যাবিট্যাট স্টুডিও ভাঙচুর করা হয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত নিজের বক্তব্যে অনড় রয়েছেন কুনাল কামরার, তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ক্ষমা চাইবেন না। হ্যাবিট্যাট স্টুডিও মুম্বাইয়ের স্ট্যান্ড-আপ কমেডির জন্য একটি জনপ্রিয় কেন্দ্র এবং এটি এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্ট্যান্ডআপ কমেডি যে খুব নতুন কিছু তা কিন্তু নয়। বরং বলা যায় বহু আগের সেই গ্রাম গঞ্জের ঠাট্টা-ব্যাঙ্গের আসরের পর সব দিক থেকেই পুরোপুরি আধুনিক হল আজকের ‘এইসি তেইসি ডেমোক্রেসি’। যেখানে রয়েছেন একজন কুনাল কামরা, আর, একজন মুনাওয়ার ফারুকী। আমরা প্রায়শই কুনাল কামরার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা এবং মুনাওয়ার ফারুকীর গ্রেপ্তারের খবর পড়েছি। মুনাওয়ার ফারুকী এবং তার ম্যানেজার ও ওই কমেডি শোয়ের সংগঠকরা প্রায় এক মাসের ওপর ইন্দোরের জেলে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়ানোর, এবং ওই সংক্রান্ত গাইডলাইন্স না মানার অভিযোগও ছিল। তার বেলের আবেদন প্রথমে ট্রায়াল কোর্ট, আর তারপর মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট রিজেক্ট করে, শেষ মেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে মুনাওয়ারের বেল হয়। উল্লেখ করা যায়, চিত্রকর অসীম ত্রিবেদী পার্লামেন্ট আর অশোক স্তম্ভ কার্টুন এঁকেছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস সেডিশনের কেস রুজু করেছিল, তিনিও কয়েকদিনের মধ্যে বেল পেয়েছিলেন কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন যে বেল তিনি চাইবেননা কারণ তিনি কোনো অন্যায় করেননি।

কুণাল কামরার আজ যথেষ্ট পরিচিত নাম এবং তিনি তাঁর শিল্পের মাধ্যমে যেভাবে শাসকগোষ্ঠীর সমালোচনা করেন ও বিতর্কের সৃষ্টি করেন সে বিষয়েও দেশের মানুষ যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। কলেজে পড়াকালীন জনপ্রিয় চ্যানেলে ইন্টার্ন হিসাবে কাজ করার প্রস্তাব পেয়ে কুনাল পড়াশোনা ছেড়ে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। তিন বছর ইন্টার্নশিপের পর আরও এক বছর ইন্টার্নশিপ হিসাবে কাজ করেন কুণাল। পরে পরিচালক প্রসূন পাণ্ডের সঙ্গে তাঁর প্রযোজনা সংস্থায় সহকারী প্রযোজক হিসাবে কাজ করেন। জনপ্রিয় সংস্থার বিজ্ঞাপন প্রযোজনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সঙ্গে কর্মসূত্রে বৈঠক করতেন কুণাল। বন্ধুর পরামর্শে ২০১৩ সালে পেশাগত ভাবে ‘স্ট্যান্ড আপ কমেডি’র অনুষ্ঠান করতে শুরু করে কুণাল। পেশাগত জীবনে সাফল্যের পাশাপাশি বিতর্কেও জড়াতে শুরু করেন কুণাল। মুম্বইয়ের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। কিন্তু বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য সেই বাড়ি থেকে কুণালকে উচ্ছেদ করে দিয়েছিলেন তাঁর বাড়িওয়ালি। এক অতিপরিচিত সাংবাদিকের সঙ্গে বিমান সফরের পরেই বিভিন্ন বিমান সংস্থা কুণালের উপর বিমান সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।

অন্যদিকে যারা তাণ্ডব চালিয়ে হ্যাবিট্যাট স্টুডিও ভাঙচুর করেছে মুম্বই ও সংলগ্ন শিল্পাঞ্চলে তাদের কাজই ছিল ঠ্যাঙাড়ে বাহিনি হিসাবে শক্তিশালী বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নগুলির উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাণ্ডব চালানো। উল্লেখ্য, শিবসেনার বালাসাহেব ঠাকরে নিজেও কার্টুনিস্ট ছিলেন। যদিও শিবসেনার নেতা হিসাবে তিনি গণতন্ত্রের ধার ধারতেন না। অন্তত শিবসেনা যেভাবে মুম্বই চালাত তাতে গণতন্ত্র লজ্জা ও ঘৃণা বোধ করত। মহারাষ্ট্রে মুসলমান তো বটেই দক্ষিণ ভারতীয় শ্রমজীবী মানুষজনও শিবসেনার আক্রমণের লক্ষ্য ছিল, নয়ের দশকের মুম্বইয়ের দাঙ্গায় শিবসেনার ন্যক্কারজনক ভূমিকা কারও অজানা নয়। তবে তখন শিবসেনা ছিল রাষ্ট্রকেও তোয়াক্কা না করে রাষ্ট্রশক্তিকে নিজের ইচ্ছা মতো চালাতে বাধ্য করা শক্তি আজ একনাথের শিবসেনা রাষ্ট্রের অংশ। তাই কেবল সেনাদের তাণ্ডবেই ক্ষোভ থেমে যায়নি, খোদ মুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের আধিকারিকরা ছুটে গিয়ে দ্য হ্যাবিট্যাটে ভাঙচুর চালিয়েছে। মজার ব্যাপার যারা ভাঙচুর চালালো তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা মোকদ্দমা হওয়ার খবর নেই বরং তারাই কুণালের নামে এফআইআর করেছে। এটাই বোধহয় গুন্ডাবাহিনির তাণ্ডব আর ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসের ফারাক। শিবসেনার আদিপুরুষ ঠিক একই পথে মুম্বাইকে ত্রাসে রাখতেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীশ প্রায় অনুগামীর স্বরেই বলছেন, বাকস্বাধীনতার সীমা আছে, কুণাল যা খুশি তাই বলতে পারেন না, তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে।

স্বভাবতই আসে দেশের সংবিধান এবং বাক-স্বাধীনতার প্রসঙ্গ। সংবিধানের ১৯ (১) (ক) অনুচ্ছেদ সমস্ত নাগরিকের বাকস্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের অধিকার দিয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতও বারবার রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সাংবিধানিক এই বিধানের উপর হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেছে। যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ মাথায় রেখেও এই প্রশ্ন ওঠেই যে রাষ্ট্র কি তাদের ন্যায্য চেতনায় এই বিধিনিষেধগুলি মেনে চলছে? কারণ দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধের অস্ত্র প্রয়োগের ফলে প্রায়শই সমালোচনার শ্বাসরোধ করা হয়েছে এবং হচ্ছে, তা ব্যঙ্গাত্মক হোক কিংবা অন্য যে আকারেই হোক না কেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, একটি পরিণত গণতন্ত্রের দেশে কেন মত প্রকাশের অধিকার এখনও ব্যাহত হবে? তার মানে কি গণতন্ত্র সম্পূর্ণ উপহাস।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন