রবিবার | ৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:২৫
Logo
এই মুহূর্তে ::
মুর্শিদাবাদের কৃষি ঐতিহ্য : অনুপম পাল নক্সী কাঁথায় বোনা জসীমউদ্দীনের বাল্যজীবন : মনোজিৎকুমার দাস পঞ্চানন কুশারীর জাহাজী গানই কি কবির লড়াইয়ের মূল উৎস : অসিত দাস দিব্যেন্দু পালিত-এর ছোটগল্প ‘ঝালমুড়ি’ নকশালবাড়ি আন্দোলন ও বাংলা কবিতা : কার্তিক কুমার মণ্ডল নিঃসঙ্গ ও একাকিত্বের আখ্যান : পুরুষোত্তম সিংহ ভিয়েতনামের গল্প (পঞ্চম পর্ব) : বিজয়া দেব অন্তরের আলো জ্বালাতেই কল্পতরু উৎসব : সন্দীপন বিশ্বাস কল্পতরু — এক উত্তরণের দিন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চলচ্চিত্র উৎসবে পানাজি থেকে কলকাতা (শেষ পর্ব) : সায়র ব্যানার্জী ফেলে আসা বছরে দেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া না ঝড় : তপন মল্লিক চৌধুরী কার্ল মার্কসের পরিজন, পরিকর (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোয়ানিতা ম্যালে-র ছোটগল্প ‘নাইট জব’ অনুবাদ মনোজিৎকুমার দাস দেশজ ফসলের বীজকে কৃষির মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে নদিয়া বইমেলা মুখপত্র : দীপাঞ্জন দে চলচ্চিত্র মহোৎসবে পানাজি থেকে কলকাতা (প্রথম পর্ব) : সায়র ব্যানার্জী শৌনক দত্ত-র ছোটগল্প ‘গুডবাই মাষ্টার’ হেলান রামকৃষ্ণ শিশু বিতানের রজত জয়ন্তী বর্ষপূর্তি উৎসব পালিত হল মহাসমারোহে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কার্ল মার্কসের পরিজন, পরিকর (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জীবনানন্দ দাশের স্বপ্নের নদী ধানসিঁড়ি আজও আছে কিন্তু মৃতপ্রায় : মনোজিৎকুমার দাস মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-এর ছোটগল্প ‘শঠে শাঠ্যং’ যথোচিত মর্যাদায় পালিত হল খানাকুলের রূপকার শান্তিমোহন রায়ের জন্মদিন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় আবার দেখা যদি হলো সখা প্রাণের মাঝে আয় — নেতাজী নগর বিদ্যামন্দিরের পুনর্মিলন : সুশান্ত দাস মোদি বনাম মনমোহন: ইতিহাস বারবার এই বিশ্লেষণ করবে : সন্দীপন বিশ্বাস কবির লড়াইয়ের স্রষ্টা হলেন রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষ পঞ্চানন কুশারী : অসিত দাস চল্লিশতম নদিয়া বইমেলা স্মরণিকা : দীপাঞ্জন দে ভাগ্নার পদধূলিতে ধন্য হল মামার বাড়ি, বেলুড় মঠ ও মিশন অধিগ্রহণ করে মর্যাদা দিল : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ভিয়েতনামের গল্প (চতুর্থ পর্ব) : বিজয়া দেব কার্ল মার্কসের পরিজন, পরিকর (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ভিয়েতনামের গল্প (তৃতীয় পর্ব) : বিজয়া দেব
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই ২০২৫ ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

আদৌ কি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদ ছিলেন গোপাল ভাঁড়? : অসিত দাস

অসিত দাস / ৫৪১ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গোপাল ভাঁড়ের আসল পরিচয় কী? তাঁকে কি ঐতিহাসিক চরিত্র হিসেবে ধরা হয়? নাকি কাল্পনিক এক বিদূষকের জায়গাতেই রাখা হয় তাঁকে?

নদীয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ও গোপাল ভাঁড়কে জড়িয়ে অসংখ্য কৌতুকী শোনা যায়৷

কৃষ্ণনগর তথা নদীয়াবাসীদের গোপাল ভাঁড়ের ঐতিহাসিক অস্তিত্বের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় আছে৷ পেশায় ক্ষৌরকার ঘূর্ণিনিবাসী গোপাল যে রাজার ব্যক্তিগত সহচর ও অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন, তা গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলি পড়লেই বোঝা যায়৷ কোথাও গেলে গোপালকে নিয়ে বেরোতেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র। গোপালও কৃষ্ণচন্দ্র সমভিব্যাহারে ঘুরতে বেশ পছন্দ করতেন।

ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর ছাড়াও মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সভায় বিরাজ করতেন শ্রীকান্ত, কমলাকান্ত, বলরাম, শঙ্কর, দেবল, মধুসূদন, রামপ্রসাদ সেন, কবি ভূমেশ্বর বিদ্যালঙ্কার, নৈয়ায়িক শরণ তর্কালঙ্কার ও জ্যোতির্বিদ অনুকূল বাচস্পতি৷ হুগলির সুগন্ধ্যার গোবিন্দরাম রায় কৃষ্ণচন্দ্রের রাজচিকিৎসক ছিলেন৷ নৈয়ায়িক কালীদাস তর্কসিদ্ধান্ত কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদদের মধ্যে সর্বপ্রধান ছিলেন৷ ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের অন্নদামঙ্গল (কালিকামঙ্গল) কাব্যে কৃষ্ণচন্দ্রের সভার মন্ত্রী-অমাত্য থেকে শুরু করে পেয়াদা বাজনদারদেরও নাম পাওয়া যায়৷ যায় না শুধু গোপাল ভাঁড়ের নাম৷ গোপাল ভাঁড় তাহলে কি কিংবদন্তি মাত্র, যেমনটি ভেবেছেন গবেষক সুকুমার সেন মহাশয়? তবে বিখ্যাত রসসাহিত্যিক পরিমল গোস্বামী যে গোপাল ভাঁড়কে ‘গেবল্ ভ্যান্ড’-এর বঙ্গীয় সংস্করণ ভেবেছেন, তা ভাবিয়ে তোলার পক্ষে যথেষ্ট৷

অধম গবেষক হিসেবে আমার মনে হয় ‘গোপাল ভাঁড়’ নাম ভাঁড়িয়ে আমাদের সামনে যিনি এসেছেন, তিনি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের ব্যক্তিগত চিকিৎসক গোবিন্দরাম রায়৷ একজন চিকিৎসকের পক্ষেই যে-কোনও অভিযানে, যে-কোনো যাত্রায় কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গী হওয়া সম্ভব৷ অনেক চিকিৎসকই সুরসিক ও উপস্থিত বুদ্ধির অধিকারী৷ গোপালের পেশাগত পরিচয় নাপিত তথা পরামানিক, ক্ষুর ও নরুন নিয়েই ছিল তাঁর কারবার৷ আগেকার দিনে নাপিতরাই শল্যচিকিৎসকের কাজ অর্ধেক করে দিতেন৷ তা ফোড়া কাটা থেকে শুরু করে গ্যাঁজ ও পায়ের কড়া কেটে দেওয়া, নখের সুব্যবস্থা করা, যাই হোক না কেন৷ রাজচিকিৎসক গোবিন্দরাম রায়ের কোনও কীর্তিকলাপের কথা বিশদভাবে কোথাও পাওয়া যায় না৷ তবে তিনি যে চরক ও সুশ্রুত গুলে খেয়েছিলেন, সে কথা ইতিহাসে লেখা আছে৷

দুজনের নামই ‘গো’ দিয়ে শুরু হচ্ছে৷ গোপাল ভাঁড়ের আসল নাম নাকি ‘গোপালচন্দ্র নাই’৷ মনে হয়, গোবিন্দরাম রায় তাঁর রাজচিকিৎসক পরিচয় গোপন করে হাটেবাজারে পথেঘাটে আমজনতার ভিড়ে ‘গোপাল ভাঁড়’ সেজে থাকতেন৷ গোবিন্দরামের কৌতুকক্ষমতা হয়তো অসাধারণ ছিল৷ গোপাল ভাঁড়ের গল্পে সাধারণ মানুষের সাধারণ কথা থাকে, অনেকসময় তা ইতরতাদোষে দুষ্ট৷ সেকালে এটাই ছিল আদত৷

মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের একবার একজন রাজবদ্যির দরকার পড়ে৷ বহু পরীক্ষার্থীর মধ্যে থেকে ঠিকজনকে বেছে নেওয়ার জন্য গোপাল ভাঁড়কে পরীক্ষক নিযুক্ত করেন তিনি৷ বদ্যিচুড়ামণি না হলে এ গুরুদায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হতে না৷ গোপাল ভাঁড়ের গল্পে দেখা যায়, প্রায়ই নিজের মৃত্যুসংবাদ তিনি নিজেই রটাচ্ছেন৷ ডাক্তাররাই মৃত্যুকে ন্যাচারাল ফেনোমেনন বলে ভাবেন৷ তাই কোনও সংস্কার থাকে না মনে। একজন ডাক্তারের পক্ষেই সাধারণ মানুষের প্রাতঃকৃত্য অভ্যাস সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেওয়া সম্ভব৷ মানুষের মনস্তত্ত্ব বোঝার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল গোপালের৷ তিনটি ভাষা সমানে বলা পণ্ডিতপ্রবরকে অজান্তে ধাক্কা মেরে গোপাল তাঁর আসল ভাষাটি জেনে নিয়েছিলেন — ‘ষঁড়া অন্ধা অছি!’

সাধারণ মানুষের সঙ্গে এক চিকিৎসক হিসেবে প্রভূত মেলামেশার সুবাদে গোবিন্দরাম রায় তাঁদের দৈনন্দিন অভাব-অভিযোগ সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন৷ তাদের যন্ত্রণামিশ্রিত জীবন-কৌতুকের পাঁচালি তাঁর জানা ছিল৷ তাই রাজচিকিৎসক হওয়ার পর সেই অভিজ্ঞতার দৌলতেই তিনি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে হাস্যরসে আপ্লুত করতেন৷ অর্থাৎ ডা. জেকিল ও মিস্টার হাইডের আগেই ডা. গোবিন্দরাম ও মি. গোপাল ভাঁড় চরিত লেখা হয়ে গিয়েছিল৷ কৃষ্ণচন্দ্র সবই জানতেন, জানতেন হয়তো আরও অনেকে৷ কিন্তু আমজনতা গোপাল ভাঁড়ের এই ধন্বন্তরিরূপ ধরতে পারেনি৷ গোপাল ভাঁড় অবশ্যই ঐতিহাসিক চরিত্র৷ রাজবৈদ্য গোবিন্দরাম রায়ই বকলমে গোপাল ভাঁড়।


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “আদৌ কি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদ ছিলেন গোপাল ভাঁড়? : অসিত দাস”

  1. G A Krishna says:

    কষ্টকল্পিত!!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন