শনিবার | ১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:৩৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
যুদ্ধ দারিদ্র কিংবা বেকারত্বের বিরুদ্ধে নয় তাই অশ্লীল উন্মত্ত উল্লাস : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী ও শান্তিনিকেতন : প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বাঙালী রবীন্দ্রনাথ : সৈয়দ মুজতবা আলী অনেক দূর পর্যন্ত ভেবেছিলেন আমাদের ঠাকুর : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথের প্রথম ইংরেজি জীবনী : সুব্রত কুমার দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (প্রথম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস শুক্লাম্বর দিঘী, বিশ্বাস করে দিঘীর কাছে কিছু চাইলে পাওয়া যায় : মুন দাশ মোহিনী একাদশীর ব্রতকথা ও মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত নিজের আংশিক বর্ণান্ধতা নিয়ে কবিগুরুর স্বীকারোক্তি : অসিত দাস ঝকঝকে ও মজবুত দাঁতের জন্য ভিটামিন : ডাঃ পিয়ালী চ্যাটার্জী (ব্যানার্জী) সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা : লুৎফর রহমান রিটন সংস্কৃতি জগতের এক নক্ষত্রের নাম বসন্ত চৌধুরী : রিঙ্কি সামন্ত আংশিক বর্ণান্ধতাজনিত হীনম্মন্যতাই রবীন্দ্রনাথের স্কুল ছাড়ার কারণ : অসিত দাস পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী : তপন মল্লিক চৌধুরী সাত্যকি হালদার-এর ছোটগল্প ‘ডেলিভারি বয়’ নব নব রূপে এস প্রাণে : মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য ভারতের সংবিধান লেখার সেই ঝর্না কলমটা… : দিলীপ মজুমদার গীতা রাজনৈতিক অস্ত্র নয়, ভারতাত্মার মর্মকথা : সন্দীপন বিশ্বাস সিন্ধুসভ্যতা ও সুমেরীয় সভ্যতায় কস্তুরীর ভূমিকা : অসিত দাস রবি ঠাকুর ও তাঁর জ্যোতিদাদা : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী তরল সোনা খ্যাত আগর-আতর অগুরু : রিঙ্কি সামন্ত নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সাদা-কালো রীল’ গঙ্গার জন্য লড়াই, স্বার্থান্বেষীদের ক্রোধের শিকার সাধুরা : দিলীপ মজুমদার সিন্ধুসভ্যতার প্রধান মহার্ঘ রপ্তানিদ্রব্য কস্তুরী : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক করিডোর : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন রামকৃষ্ণ মিশন মানে ধর্মকর্ম নয়, কর্মই যাঁদের ধর্ম তাঁরাই যোগ্য : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে সিংহবাহিনী মন্দির, নবগ্রাম (ঘাটাল) : কমল ব্যানার্জী পরিবেশ মেলা ২০২৫ : ড. দীপাঞ্জন দে মন্দির-রাজনীতি মন্দির-অর্থনীতি : দিলীপ মজুমদার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ অক্ষয় তৃতীয়ার আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ২০৫ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

রাঢ় অঞ্চলের মানুষের কাছে আজও মৃত্যুঞ্জয়ী ভেষজ উদ্ভিদ। বিশেষ করে চৈত্র গাজনের সন্ন্যাসীদের কাছে। বঙ্গে একের পর এক নতুন বছর আসে। পরিবর্তনশীল সমাজে রাঢ় বঙ্গে গাজন সন্ন্যাসীদের গতানুগতিক ধারার জীবন আজও অপরিবর্তনীয়। তিনদিনের কৃচ্ছসাধনের সঙ্গে সঙ্গে শিবকে তুষ্ট করতে মধ্যযুগীয় আচার প্রথা সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি। রাঢ় অঞ্চলের চৈত্র মাসের গাজন উৎসবে সন্ন্যাসীদের অঙ্গের বিভিন্ন অংশে বাণফোঁড়া থেকে শুরু করে কাতানের উপরে ঝাঁপ, এমনকি সারা শরীরে পেরেক গেঁথে ইষ্টদেবতা শিবকে তুষ্ট করতে গিয়ে দেবালয়ের সামনে রক্তের স্রোত আজও লক্ষ্যনীয়। যা দেখলে শিউড়ে উঠতে হয়। কিন্তু এর পিছনে সন্ন্যাসীদের রক্ষা করতে কালাপুষ্প আজও বিরাজ করছে। পুরানো বর্ষে রাঢ় বঙ্গের সন্ন্যাসীদের সুস্থ করে, সেইসঙ্গে এখান মানুষের বেঁচে থাকার বার্তা দেওয়ার রেওয়াজ আজও প্রচলিত। শুভ বাংলা নববর্ষে এখানকার মানুষ আজও কালাপুষ্পকে বাঁচিয়ে রাখার মেহনত থেকে পিছপা হন না। কারণ তাঁরা জানেন, বর্ষ শেষে চৈত্র গাজনের সন্ন্যাসীদের সুস্থ রাখতে পারে একমাত্র কালাপুষ্প। যখন মানুষ দেখেন জিহ্বা, কপাল, নাক, কান ও পেটে লোহার শলাকা প্রবেশ করে এফোঁড় ওফোঁড় করে সন্ন্যাসীরা রক্তের স্রোত শিবের পায়ে নিবেদন করে নববর্ষকে আহ্বান করেন এবং তারপরেই কালাপুষ্প জলজ উদ্ভিদের রস গায়ের ক্ষতস্থানে প্রলেপ দিয়ে রক্ষা পান। তাই এখানকার মানুষের কাছে কালাপুষ্প নববর্ষের ধারক ও বাহক ও বটে। একে ছোটোখাটো খাবার, পুকুরে আজও সযত্ন রাখা আছে।

নববর্ষে রাঢ় বাংলায় শেওড়াগাছের যেমন কদর তার চেয়ে বেশি কদর কালা পুষ্পের। কারণ সারা বছর এই জলজ ভেষজ উদ্ভিদ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে অব্যর্থ ওষুধ। তাই বর্ষ শেষ ও শুরুতেই কালা পুষ্পকে ঘিরে আলাদা প্রভাব রাঢ় বাংলায়। প্রসঙ্গত, আরামবাগ ও বেঙ্গাই তথা সমগ্র রাঢ় অঞ্চলের কুলদেবতা হলেন ধর্মরাজ। তাঁর উপর যুগ থেকে যুগান্তে মানুষ বিশ্বাস রেখে চলেছেন। সেই যুগান্তের বিশ্বাসে ভর করেই শ্যামরায় ধর্মরাজের সেবায়েতরা বিবিধ রোগের লৌকিক চিকিৎসা করে থাকেন। কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। বস্তু মিলুক না মিলুক, বিশ্বাস করতে ক্ষতি কী? তাঁদের দেওয়া সেই ঔষধের নাম হল কালাপুষ্প। তাতে সন্ন্যাসীদের কৃচ্ছ্রসাধনের রক্ত বন্ধ করতে যেমন কাজে লাগে, তেমনি বন্ধ্যাত্ব, নানা স্ত্রীরোগও নাকি নিরাময় হয়। এটা এখানকার মানুষের গাঁয়ের বিশ্বাস। এই ওষধি পুষ্প গাবায় হয়। গাবা বা গাবাল পুকুরের ঢালু অংশকে বলা হয়। তাই রাঢ় বঙ্গের অনেক জায়গায় এই জলজ ভেষজ উদ্ভিদকে সযত্নে রাখা আছে।

উল্লেখ্য, এই কালাপুষ্প ছাড়াও আরও বেশ কিছু উদ্ভিদ যাদের বিভিন্ন অংশ (যেমন পাতা, ফুল, ফল, শিকড় বা বাকল) বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই গাছগুলো ঐতিহ্যগতভাবে লোকায়তনিক চিকিৎসা বা আয়ুর্বেদের অংশ, যেখানে তাদের থেরাপিউটিক বা ঔষধি গুণাবলী ব্যবহার করা হয়। যা রাঢ় বাংলায় এদের গুরত্ব অপরিসীম। যেমন নিম, তুলসী, আদা, হলুদ, এবং চিরতা ঔষধি গুণাবলির জন্য পরিচিত।

প্রসঙ্গত, রাঢ় বাংলায় নববর্ষে যেমন কালা পুষ্পকে মানুষ কদর করে, ঠিক একইভাবে সূচনায় বিভিন্ন সবজি গাছ লাগিয়ে সংসারের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করেন। বিশেষ করে উল্লেখ করতেই হয় কালা পুষ্পের। চৈত্রের সংক্রান্তির গাজন উৎসবে সন্ন্যাসীদের ঘরে ঘরে জিওনকাঠি হিসেবে বিরাজ করছে কালাপুষ্প।

২০২৫ নববর্ষ বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন