মঙ্গলবার | ২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:৫৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘শোলে’র পঞ্চাশ বছর : সন্দীপন বিশ্বাস বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ইতিহাস পালটাতে চায় : তপন মল্লিক চৌধুরী অশোক সম্পর্কে দু-চারটে কথা যা আমি জানি : অসিত দাস চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস প্রাণগৌরাঙ্গের প্রিয় পঞ্চব্যঞ্জন : রিঙ্কি সামন্ত ‘দ্য স্টোরিটেলার’ — শিল্প এবং বাজারের মধ্যে দ্বন্দ্ব : কল্পনা পান্ডে অপুষ্টি আর দারিদ্রতা ঢাকতে সরকার আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান আওড়ায় : তপন মল্লিক চৌধুরী দোহলী মানে অশোকবৃক্ষ, তা থেকেই দোল ও হোলি : অসিত দাস সিনেমা প্রেমীদের হোলির গান : রিঙ্কি সামন্ত দোলের আগের দিনের চাঁচর নিয়ে চাঁচাছোলা কথা : অসিত দাস খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত সিঙেরকোণ-এর রাধাকান্ত এখনও এখানে ব্যাচেলর : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত বাজারে ভেজাল ওষুধের রমরমা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘কুড়কুড়ে ছাতুতে’ ক্যানসার নিকেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বোলপুর কি সত্যিই বলিপুর : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন অসুখী রাজকন্যাদের লড়াইয়ের গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বিশ্ব থেকে ক্যানসারকে নির্মূল করতে গবেষণায় একের পর এক সাফল্য রূপায়ণের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ফেলে আসা বছরে দেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া না ঝড় : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ৩১০ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪

যদিও স্বাধীনতার ৭৭ বছর পেরিয়ে দেশের চর্চার অন্যতম বিষয় উত্তরপ্রদেশের সম্ভাল জনপদে জামা মসজিদের নীচে আসলে মন্দির ছিল কিনা, দেশের পার্লামেন্টেও অন্যতম ইস্যু এখন সেটাই। অসম সরকার ঘোষণা করেছে হোটেল, রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানেও গোমাংস খাওয়া কিংবা পরিবেশন করা চলবে না। আমেরিকার যে কোনও সংবাদমাধ্যমে চোখ রাখলে লক্ষ্য করা যাবে তাদের চর্চার বিষয় ফের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইমপোর্ট ট্যারিফ রেট কতটা বাড়াবেন। আর আমরা? সরকারের অন্যতম চালিকাশক্তি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান আহ্বান করেছেন মহিলাদের অন্তত তিনটি করে সন্তান থাকা উচিত। কারণ, ভারতের গড় ফার্টিলিটি হার যেভাবে কমছে, সেটা উদ্বেগজনক। ইতালির অন্যতম বৃহৎ ব্যাঙ্ক ইউনিক্রেডিট ঠিক করেছে তারা জার্মানির আর্থিক সংস্থা কমার্জব্যাঙ্ককে কিনবে। জার্মান সরকার সেটা ঠেকাতে মরিয়া। জার্মানির নাগরিকরাও ক্ষুব্ধ। কারণ এটা রাষ্ট্রীয় সম্মানের ব্যাপার। অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতি নিয়ে আইন এনেছে, ১৬ বছরের কম বয়সিদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। গুগল, মেটা, এক্স তাতে চিন্তিত হয়ে পড়েছে কারণ, তাদের ব্যবসাই তো ধাক্কা খাবে। আজও ভারত একটি মোবাইল ব্র্যান্ড দুনিয়াকে দিতে পারেনি, কোনও টেলিভিশন, কোনও প্যাড, কোনও লেদার প্রোডাক্ট, কোনও শীতের পোশাক, কোনও গরমের পোশাক কিছুই নেই আমাদের। অর্থাৎ আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, বেজিং, স্কটল্যান্ড, মেলবোর্ন, প্যারিস, ব্রাজিলের নাগরিকরা ভারতের কোনও একটি ব্র্যান্ড ব্যবহার করার জন্য উদগ্রীব এমন উদাহরণ নেই।

তবু আমাদের দেশের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ২০২৪–২৫ আর্থিক বছরে ভারতের জিডিপি ৬.৭ শতাংশ বাড়তে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় এও জানিয়েছিল, মূলত গ্রামাঞ্চলের চাহিদা বাড়ার জেরেই দেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগতে পারে। দেশের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়েই জানিয়েছিল, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপির সূচক মধ্যম সারিতে থাকলেও তা উল্লেখযোগ্যহারে বাড়বে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতির পরেই দেশের অর্থনৈতিক বিশেষঙ্গদের ধারণা হয়েছিল এই হারে যদি জিডিপি বৃদ্ধি হয় এবং সেই ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ভারতের পক্ষে দ্রুততম প্রবৃদ্ধির বৃহৎ অর্থনীতির শীলমোহর পাওয়া কোনো অবস্থাতেই পিছল খাবে না। উল্লেখ্য, একই কথা বলেছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। কেবল তাই নয়, কয়েক মাস আগে তারা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হতে পারে ৭ শতাংশ। এরপরই নভেম্বর মাসে দেশের অর্থ মন্ত্রণালয় মাসিক পর্যালোচনার পর আরও সুখবর জানায়, তাদের বক্তব্য, ভারতের গ্রামাঞ্চলের চাহিদায় স্থিতিশীলতা এসেছে একই সঙ্গে শহরের ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে। তাদের এমন ধারণার কারণ অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দুই ও তিন চাকার গাড়ি বিক্রি এবং দেশীয় ট্র্যাক্টর বিক্রির হার দেখে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষায় জানা যায়, অক্টোবর-নভেম্বর মাসে যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রি বাড়ে মোট ১৩.৪ শতাংশ। অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান জানায়, এই দুই মাসে বিমান পরিবহণে যাত্রী সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর থেকে বোঝা যায়, শহরাঞ্চলের মানুষের চাহিদাও বেড়েছে।

পাশাপাশি অর্থ মন্ত্রণালয় ধারণসা করেছিল, নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার আরও কমবে এবং বাজারে সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল্যস্ফীতির সূচক নিম্নমুখী হবে। চলতি বছর বর্ষাকালে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে মাঠে ফলন যথেষ্ট ভালো হয়েছে। জিডিপির জন্য যেটা ইতিবাচক বলেই মনে করে অর্থ মন্ত্রণালয়। যদিও চলতি অর্থবছর জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার নেমে গিয়েছিল ৫.৪ শতাংশে। তাছাড়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আছে। দেশের উৎপাদন খাতে আগের চেয়ে গতি এসেছে। উল্লেখ্য, ট্রাম্প আবার হোয়াইট হাউসে ফিরে আসায় ভারতের বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক তাদের প্রকাশিত রিপোর্টে জানাচ্ছে, বিশ্বের অর্থনীতি এই সময় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তা স্বত্বেও ভারতের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বাভাবিক গতিতে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক এও জানাচ্ছে, বর্তমানে বিশ্বের গড় অর্থনীতি ২.৬ শতাংশ হারে কমেছে। সেই অবস্থায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষে ভারতীয় অর্থনীতি বৃদ্ধি পেয়েচিল ৮.২ শতাংশ হারে। এই হিসাব থেকে বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানায়, চলতি অর্থবর্ষেও তা লাভের মুখ দেখবে। উল্লেখ্য, কেবল বিশ্ব ব্যাঙ্ক নয়, আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে ইতিবাচক কথাই বলে এসেছে।

কিন্তু সত্যিই কি ভারতীয় অর্থনীতি খুব সুরক্ষিত? যে দেশের অর্থনীতি এখনও কৃষিনির্ভর, তার মানে যদি বর্ষা ভাল না হয়, তা হলে ভারতের অর্থনীতিকে বড় ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। অর্থাৎ, ভারতীয় অর্থনীতি অনেকাংশেই নির্ভর করছে বর্ষা ভাল বা খারাপ হওয়ার উপর। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর বস্ত্র, চামড়া এবং জুতো রফতানিতে চিনের মতো কয়েকটি দেশের রমরমা ব্যবসা কিছুটা হলেও কমেছে। কিন্তু ভারতের এই সব শিল্পক্ষেত্রগুলি অদক্ষ শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল। অদক্ষ শ্রমিকের কারণে সুযোগ থাকা স্বত্বেও ভারত তা কাজে লাগাতে পারেনি বরং লাভ কুড়িয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, পোল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো দেশগুলি। বস্ত্র রফতানিতে ভারত বিশ্বে বাংলাদেশের উপরে যেতে পারেনি। এমনকি সে দেশের টালমাটাল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েও ভারত বস্ত্র ব্যবসা নিজেদের দিকে টানতে পারেনি, পারলে অর্থনৈতিক লাভ দেখত। কৃষি নির্ভর হলেও ভারত সরকার কৃষকদের জন্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প তৈরির পরিকল্পনা করেও ফলপ্রসূ হয়নি। যদি পরিকল্পনা সফল করতে পারত তাহলে কৃষক দূরদূরান্তে নিজেদের পণ্য পাঠাতে পারত। ফলে যে পরিমাণ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হওয়ার কথা তা হয়নি। তার চেয়েও বড় কথা ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি পেলেও এতে উৎপাদন খাতের পরিমাণ মাত্র ১৬ শতাংশ। গত কয়েক বছরে ভারতে মুদ্রাস্ফীতি দফায় দফায় লাগামছাড়া হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বিভিন্ন সময়ে আকাশ ছুঁয়েছে। এতে কি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে?

ভারতের অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করে বেকারতত্ব। নিদারুন বেকারত্বের সমস্যা অর্থনীতির মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। শহুরে এলাকায় বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পেয়ে ১৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। জে কারণে একাধিক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দেশের অর্থনীতি নিয়‌ে গর্ব করার সময় কোথায় বরং খামতি পূরণের দিকে বেশি নজর দেওয়া দরকার। অন্যদিকে রাস্তা বন্ধ এবং টোল প্লাজ়ার নানাবিধ যন্ত্রনায় ভারতীয় পণ্যবাহী যানগুলি নিজস্ব কর্মক্ষমতার থেকে ৬০ শতাংশ কম কাজ করতে পারে। এর ফলে পরিবহণ খরচ দুই থেকে তিন গুণ বেশি পড়ে। যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে যদি কাজ করতে পারতো তাহলে খরচ যেমন কম পড়তো তেমনি পণ্যও সঠিক সময়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে যেত। এতে দেশের অর্থনীতি অনেক বেশি উন্নত হত।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন