রবিবার | ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:৪৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলাভাষার নেচিতে ‘ময়ান’ ও ‘শাহিস্নান’-এর হিড়িক : অসিত দাস একটু একটু করে মারা যাচ্ছে বাংলা ভাষা : দিলীপ মজুমদার রাজ্যে এই প্রথম হিমঘরগুলিতে প্রান্তিক চাষিরা ৩০ শতাংশ আলু রাখতে পারবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সামরিক জান্তার চার বছর — মিয়ানমার পরিস্থিতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ১৯ ফেব্রুয়ারি ও স্বামীজির স্মৃতিবিজড়িত আলমবাজার মঠ (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চাষিদের বাঁচাতে রাজ্যের সরাসরি ফসল কেনার দাওয়াই গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার মোদীর মিডিয়া ব্যস্ত কুম্ভের মৃত্যুমিছিল ঢাকতে : তপন মল্লিক চৌধুরী রেডিওকে আরো শ্রুতিমধুর করে তুলেছিলো আমিন সায়ানী : রিঙ্কি সামন্ত গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি চুঁচুড়ার সুগন্ধ্যায় : অসিত দাস প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি — মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : সুমিত ভট্টাচার্য মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়, মিথ এবং ডিকনস্ট্রাকশন : অসিত দাস মহাকুম্ভ ও কয়েকটি প্রশ্ন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব কাশীকান্ত মৈত্রের জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন : ড. দীপাঞ্জন দে অমৃতের সন্ধানে মাঘী পূর্ণিমায় শাহীস্নান : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

হাই হিল জুতোর কড়চা : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৬৭৮ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রেড কার্পেট থেকে অফিস পার্টি হাইহিল জুতোর জয়জয়কার সর্বত্র। ‘কমপ্ল্যান’ যখন উচ্চতা বাড়াতে হার মানে, তখন সৌন্দর্য বাড়াতে হাই হিল জুতোই একমাত্র ভরসার সঙ্গী হয়ে ওঠে। জানলে অবাক হতে হয়, হাই হিল জুতোর জন্ম হয়েছিলো মূলত পুরুষদের জন্য।

এইধরনের জুতোর ধারণা প্রথম আসে পার্সিয়ান সৈনিকদের হাত ধরে। সেই সময় ঘোড়ায় সওয়ারি ছিলো পরিবহন আর সামরিক অভিযানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই ঘোড়ায় চড়ার সুবিধার্থে তারা জুতোর নীচের অংশ বিশেষভাবে উচুঁ করে তৈরি করতো। ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করার সময় পাদানিতে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হলে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য হাই হিল পরা জুতো কাজে লাগতো।

উচুঁ হিলের ‘চেলসি বুট’

এরপর ১৬ শতকের দিকে “হাই হিল” জুতো প্রচলিত হয়ে ওঠে নারী পুরুষ সবার মাঝে। নারীদের হাই হিল জুতোর তুলনায় পুরুষদের জুতো চওড়া, সমতল ও শক্তভাবে তৈরি করা হতো। তবে এই ধরণের জুতোগুলোর আদি বাসস্থান ছিল তুরস্ক আর ভেনিসে। পরবর্তীতে তা ইউরোপে প্রচলিত হয়ে ওঠে।

সপ্তদশ শতাব্দীতে ইরান তথা এশিয়া থেকে ইউরোপে হাই হিল জুতোর কনসেপ্ট ছড়িয়ে পড়ে পার্সিয়ান সৈনিকদের মাধ্যমে। তত্কালীন ইরানি সম্রাট শাহ আব্বাস ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে উপহার-সহ একদল উচুঁ হিলের জুতো পরা সৈনিক পাঠান। তাদের অনুকরণেই হাই হিলের ফ্যাশন ইউরোপে চালু হয়।

রেনেসাঁ পরবর্তী যুগে ইউরোপের গন্যমান্য ব্যক্তিরা নিজেদের ব্যবহৃত পোশাক পরিচ্ছেদ সাধারন মানুষের থেকে আলাদা করে রাখতো। এই জন্য তারা তাদের জুতোয় যোগ করতেন বিশাল লম্বা সব “হিল”। সমাজে পৌরুষ, ক্ষমতা ও সামরিক দক্ষতার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায় এই হাই হিল জুতো।

ইউরোপে হিলের উচ্চতা এতটাই বেশি ছিলো যে, ধনী ব্যক্তিরা জুতোর উপর ভর দিয়ে হাঁটার সময় যাতে পরে না যায় দু-জন করে ভৃত্য নিয়োগ করতেন। ৩০ ইঞ্চি উঁচু জুতোরও খোঁজ পাওয়া গেছে।

যার হিল যত বেশি উচুঁ ও লাল রঙের হবে, তাকে তত বেশি ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হবে।

ইউরোপে হাই হিল জুতোর প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন ‘সান কিং’ চতুর্দশ লুই (‘Sun King’ Louis XIV)। যার হিল যত বেশি উচুঁ ও লাল রঙের হবে, তাকে তত বেশি ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হবে। তিনি আইন প্রণয়ন করেন যে, সমাজের উচুঁ জাতের লোকেরা লাল হিলের জুতো পড়বে। তিনি নিজে লাল হিলের জুতো পরতেন ও তার সভার সদস্যেরা ও লাল হিলের জুতো পরতেন। তার এই দৃষ্টিভঙ্গিতে অনুপ্রাণিত হয়ে শু-ডিজাইনার ক্রিশ্চিয়ান লুবউটিন (christian louboutin) নব্বইয়ের দশকে বিখ্যাত হয়েছিলেন।

রিংগোর ব্র্যান্ড ‘বিটলস’

তবে ফরাসী বিপ্লবের পর থেকেই হাই হিল পুরুষের ফ্যাশন তালিকা থেকে বাদ হতে শুরু করে।

আঠারো শতকের শুরুতে হাই হিল ক্রমে ক্রমে পুরুষ থেকে নারীদের ফ্যাশনে পরিণত হয়। আভিজাত্যের প্রকাশ ঘটাতে জুতোর হীল উঁচু ও অলঙ্কার সমৃদ্ধ হতে থাকে।

উনিশ শতকে এসে আমেরিকার উত্তর-অংশের কাউবয়রা উচুঁ হিলকে পুনরায় ফ্যাশন ট্রেন্ডে নিয়ে আসে। বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে যুক্তরাজ্যের চার তরুণের দল সুরের মূর্ছনায় বিশ্বকে মাতাল করে দেওয়া জন লেনন (John Lennon), পল ম্যাককার্টনি (Paul McCartney), জর্জ হ্যারিসন (George Harrison) ও রিংগোর ব্র্যান্ড ‘বিটলস’-এর (Ringo’s Brand ‘Beatles’) হুজুগে পুরুষদের ফ্যাশনে আবারও ফিরে আসে হাই হিল। জন লেনন তো এক সাক্ষাৎকারে বলেই ফেলেন, “বিটলস ব্যান্ড যিশু খ্রিস্টের চেয়েও বেশি জনপ্রিয়”। সঙ্গীতের বাইরে তাদের সাজ পোশাক, জুতো, কেশবিন্যাস, বক্তব্য ইত্যাদিকে নকল করতে থাকে ফ্যানের দল। মূলত তারা সমতলভাবে তৈরি বিশেষ উচুঁ হিলের ‘চেলসি বুট’ (Chelsea boots)-কে নতুনভাবে ফিরিয়ে আনে।

ম্যাডোনা

সে যুগের বাড়াবাড়ি রকমের হিল জুতোর চল এ সময়ে না থাকলেও হাই হিল জুতোর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি এতটুকু। বরং পশ্চিমের দেশের মেয়েদের সাজের অন্যতম উপকরণ ছিলো এই হাই হিল। তাদের মতে নারীর সৌন্দর্য বাড়াতে হাই হিল জুতোর কোন বিকল্পই নেই। জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো একবার বলেছিলেন, ” জানি না হাই হিল জুতো কে আবিষ্কার করেছে, কিন্ত সব মেয়েরাই তাকে শ্রদ্ধা করে।” ম্যাডোনার মতো বিখ্যাত তারকারা যখন ফ্যাশনের অঙ্গ হিসেবে হাই হিলকে ব্যবহার করে, তখন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসাবে জনজীবনে এর প্রভাব থাকবেই।

উনিশ শতকের শেষের দিক থেকে পর্নোগ্রাফাররা চিত্রশিল্প অথবা ভাস্কর্যে নগ্ন নারীর ছবির সৌন্দর্য বাড়াতে হাই হিল জুতো পায়ে ছবির প্রচলন করে।

জানি না হাই হিল জুতো কে আবিষ্কার করেছে, কিন্ত সব মেয়েরাই তাকে শ্রদ্ধা করে।

মডেলদের ভঙ্গিতে ধ্রুপদি ছোঁয়া থাকলেও আরো আবেদনময়ী করে তুলতে ‘পিন-আপ’ ফটোগ্রাফিতে মডেলকে পড়ানো হয় হাই হিল জুতো। এই চিত্রই ছড়িয়ে পরে ফ্যাশন জগতে ফলে নারীর ফ্যাশন আইকনে পরিণত হয় হাই হিল।

তবে নারীর পায়ে হই হিলের সবচেয়ে পুরনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় বারো শতকের ভারতের রামাপ্পা মন্দিরে (Ramappa temple high heels) এক ভাস্কর্যে। সেই যুগ থেকে আজ অবধি যুদ্ধ, আইন, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, ও রাজনৈতিক বিপ্লব পেরিয়ে আজকের হাই হিল জুতোর বর্তমান রূপ আমরা পেয়েছি। নারীর সৌন্দর্য্যের অবধারিত সংযোজন এই হাই হিল।

হই হিলের সবচেয়ে পুরনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় বারো শতকের ভারতের রামাপ্পা মন্দিরে

কিন্তু চিকিৎসকেরা বলেন, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হাই হিল জুতোর এই স্টাইল মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। সারাদিন এই ধরণের জুতো পরে থাকলে কাফ মাসেলের যন্ত্রণা, লো ব্যাক পেন, পায়ের পাতা, হাঁটুর ব্যথার কারণ হয়ে ওঠে।

বর্তমান বিশ্বের নামীদামী মডেল, অভিনেতা অভিনেত্রীদের হিল পরার অভ্যাস চালু আছে। সমকামী পুরুষ ছাড়া ফ্যাশন সৌন্দর্যের অঙ্গ হিসেবে বহু পুরুষের  পায়ে থাকে হাই হিল জুতো। তাই যদি কেউ হাই হিল জুতো পরা শুধুমাত্র নারীর বৈশিষ্ট্য বলে, তাকে মনে করিয়ে দিতে হবে হাই হিল জুতোর ইতিহাস।

Source : Various articles and journals have been referred for the Writeup.


আপনার মতামত লিখুন :

12 responses to “হাই হিল জুতোর কড়চা : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Pallab dey says:

    খুব সুন্দর লেখনী👏👏👏

  2. তপন says:

    খুবই ভালো লেখা। খুব ভালো।

  3. ধীরাজ দণ্ডপাট says:

    অজানা তথ্যের ইতিহাস জেনে ভালো লাগলো।

  4. p k biswas says:

    *হাই হিল হাই হিল হাই হিল পরনে*
    খাট খিট ঠিক ঠিক শব্দের ধরনে*
    পদশোভা গৌরব সুশ্রীর শ্রীচরণে*
    পেজ ফোর*আর রিঙ্কি সামন্ত’র প্রতিবেদন খুব
    আকর্ষণ করে পাঠকদের। এই ইতিহাস ঘাটা
    বিবরণে,ছবিতে মনের খিল খুলতে বাধ্য করলো
    *হাই হিল* ভালোলাগা ভালোবাসা*

  5. Amar Nath Banerjee says:

    তুই কতো জানিস! কোন গব্ব নেই।

  6. শুভাশিস ঘোষ says:

    বাহ! ভালো লাগল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন