বাংলা নাট্য জগতে বিখ্যাত এক নাম বাদল সরকার।
তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি নাট্যব্যক্তিত্ব। যিনি থার্ড থিয়েটার নামক ভিন্ন ধারার নাটকের প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। ৭০ দশকের নকশাল আন্দোলনের সময় প্রতিষ্ঠান বিরোধী নাটক রচনার জন্যে তিনি পরিচিত হন, মঞ্চের বাইরে সাধারণ মানুষের ভেতর নাটক’কে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রথম কাজ বাদল সরকারের। তার নিজস্ব নাটক দল শতাব্দী গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে। ভারতে আধুনিক নাট্যকার হিসেবে হাবিব তনভীর, বিজয় তেন্ডুলকর, মোহন রাকেশ এবং গিরিশ কারনাডের পাশাপাশি বাংলায় বাদল সরকারের নাম উচ্চারিত হয়।
তিনি তার নাটকে জাদুবস্তবতা তুলে ধরেন। অতি নিপুণ ভাবে বাম ধারাক উপস্থাপন করতে পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেন।
পাঁচের দশকের শুরুর দিক থেকেই তাঁর নাট্যজীবন শুরু হয়। প্রথম জীবনে শৌখিন থিয়েটারে অভিনয়ের পর ‘শতাব্দী’ নামে নতুন একটি নাট্যগোষ্ঠী তৈরি করেন তিনি যে কথা আগেই বলা হয়েছে। কলকাতার কার্জন পার্কে নিয়মিত এই গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বাদল সরকার থার্ড থিয়েটারে অভিনয় করেছেন। নাটক রচনার ক্ষেত্রে তিনি মূলত অ্যাবসার্ড নাট্যদর্শন দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। ‘এবং ইন্দ্রজিৎ’ তাঁর লেখা সর্বাধিক জনপ্রিয় নাটক। শুধু নাটক নয়, অনেক বিদেশি গল্প অনুসরণে তিনি বহু বাংলা গল্পও লিখেছেন। বাংলা থিয়েটারের ইতিহাসে অন্যধারার শিল্পী হিসেবে তিনি আজও স্মরণীয়।
১৯২৫ সালের ১৫ জুলাই উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটে এ জন্মগ্রহণ করেন বাদল সরকার। তার স্কুল ও কলেজ জীবনে তার নাম ছিল সুধীন্দ্রনাথ সরকার। কিন্তু পরবর্তী কালে পরিচিত হয়েছিলেন বাদল সরকার নামে৷ স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হয়ে ভর্তি হন শিবপুর বেংগল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। পেশাগত দিক থেকে ছিলেন টাউন প্ল্যানার৷ শিবপুর বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তার অন্যতম সহপাঠী ছিলেন সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যাল। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার পর টাউন প্ল্যানার হিসেবে কাজ করেছেন ভারতে ও বিভিন্ন দেশে। ইংল্যান্ড ও নাইজেরিয়াতে পেশার কাজে যান৷ আবার সাহিত্য-নাটকের প্রতি আগ্রহের জন্য বৃদ্ধ বয়েসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পারেটিভ লিটারেচার ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন৷ ১৯৯২ সালে। নাটক বিনোদনের মাধ্যম হলেও তা কখনো কখনো হয়ে ওঠে প্রতিবাদের হাতিয়ার। এই কাজটাই করেছিলেন সুধীন্দ্রনাথ সরকার। যিনি থিয়েটার জগতে বাদল সরকার নামে পরিচিত। খানিকটা শখের থিয়েটার থেকে যাত্রা শুরু হলেও পরে তাঁর হাত ধরে জন্ম নেয় এক নাট্য দর্শনের।
গণসস্কৃতি আন্দোলনের একজন পুরোধা কর্মী হয়ে ওঠেন এবং জীবনে শেষদিন পর্যন্ত থিয়েটারকে গণসস্কৃতির এক ধারালো অস্ত্র হিসেবে শান দিয়ে গেছেন। চাকরির সূত্রে বিভিন্ন দেশবিদেশ ঘুরেছিলেন। তার ফলে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা ও থিয়েটার খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। ইউরোপে থাকাকালীন বিভিন্ন ধরনের নাটক দেখার সুযোগ পান। যা তাঁর উপর গভীর প্রভাব ফেলে। পরবর্তীকালে যা তাঁর নাট্যদর্শনে এক নতুন বোধের জন্ম দেয়। যার উন্মেষ ঘটতে দেখা যায় তাঁর নাটকে।
নাটক বিনোদনের মাধ্যম হলেও তা কখনো কখনো হয়ে ওঠে প্রতিবাদের হাতিয়ার। এই কাজটাই করেছিলেন সুধীন্দ্রনাথ সরকার। যিনি থিয়েটার জগতে বাদল সরকার নামে পরিচিত। খানিকটা শখের থিয়েটার থেকে যাত্রা শুরু হলেও পরে তাঁর হাত ধরে জন্ম নেয় এক নাট্য দর্শনের।
বাদল সরকারের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৪৭ সালে নাগপুরের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে৷ টাউন প্ল্যানার হিসেবে তিনি কলকাতা, লন্ডন ও নাইজেরিয়ায় কাটিয়েছেন এবং ফরাসি সরকারের বৃত্তি নিয়ে টাউন প্ল্যান ট্রেনিংয়ের জন্য ফ্রান্সেও বেশ কিছুদিন বাস করেছেন৷ ১৯৫৩ সালে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন। এই সময় বেসরকারি একটি কলেজে অধ্যাপনার পাশাপশি মানিকতলা অঞ্চলে ট্রেড ইউনিয়ন ফ্রন্টে কাজ করতেন তিনি। ১৯৫৩ সালে তিনি যখন মাইথনে কর্মরত তখন অবসর সময় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন নাটক রচনায়। মাইথন থেকে কলকাতায় ফিরে এসে বাদল সরকার তাঁর রচিত নাটকগুলি মঞ্চায়িত করার ব্যবস্থা করেন। এই সময়কালেই তিনি বিদেশি ছবি ‘মাঙ্কি বিজনেস’ অবলম্বনে ‘সলিউশন এক্স’ নামে একটি নাটক লিখেছিলেন যেটি ১৯৫৮ সালে ‘খাপছাড়া’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৫৭ সালে বাদল সরকার ইংল্যান্ড যান এবং মূলত চাকরি সূত্রেই লন্ডনের ফিল্ম সোসাইটির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৫৯ সালে তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং তারপরই তৈরি করেন ‘চক্র’ নামে একটি নাট্যদল৷ এই দলের জন্য তিনি বেশ কিছু নাটক লিখেছিলেন। ১৯৬১ সালে তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য কৌতুক নাটক ‘বড় পিসিমা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৬২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আরেকটি নাটক ‘রাম শ্যাম যদু’। এই তিনটি চরিত্র যথাক্রমে জুয়াচোর খুনি, ও চোর ছিল।কিন্তু সমাজবিরোধী হয়েও একটি পরিবারের দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে এরা কিভাবে মনুষ্যত্বে উদ্দীপ্ত হল সেই কাহিনী এই নাটকে বর্ণনা করা হয়েছে৷
আগেই বলা হয়েছে বাদল সরকারের নাট্যজীবন শুরু হয়েছিল পাঁচের দশকের গোড়ার দিকে। প্রথম জীবনে তিনি শৌখিন থিয়েটারে ‘চিরকুমার সভা’, ‘বন্ধু’, ‘ডিটেকটিভ’, ‘লালপাঞ্জা’ প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। বাদল সরকারকে সর্বভারতীয় খ্যাতি এনে দিয়েছিল ছয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে লেখা ‘এবং ইন্দ্রজিৎ’ নাটকটি। এই নাটকটি ‘বহুরূপী’ পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছিল৷ এরপর তাঁর রচিত ‘বাকি ইতিহাস’, ‘প্রলাপ’, ইত্যাদিতে খ্যাতি এনে দেয়।
প্রথম জীবনে তিনি শৌখিন থিয়েটারে ‘চিরকুমার সভা’, ‘বন্ধু’, ‘ডিটেকটিভ’, ‘লালপাঞ্জা’ প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। বাদল সরকারকে সর্বভারতীয় খ্যাতি এনে দিয়েছিল ছয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে লেখা ‘এবং ইন্দ্রজিৎ’ নাটকটি। এই নাটকটি ‘বহুরূপী’ পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছিল৷ এরপর তাঁর রচিত ‘বাকি ইতিহাস’, ‘প্রলাপ’, ‘পাগলা ঘোড়া’, ‘শেষ নাই’ সবকটি নাটকই শম্ভু মিত্রের পরিচালনায় ‘বহুরূপী’ গোষ্ঠীর প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হয়েছিল৷ ১৯৬৭ সালে তিনি ‘শতাব্দী’ নাট্যগোষ্ঠী স্থাপন করেন যার প্রথম প্রযোজনা ছিল ‘এবং ইন্দ্রজিৎ’ নাটকটি। তাঁর রচিত ‘পরে কোনোদিন’, ‘যদি আর একবার’, ‘প্রলাপ’ ও ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে আছে বাংলা সাহিত্যে ও থিয়েটারের ইতিহাসে।
এবং ইন্দ্রজিৎ’ বাদল সরকারের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ নাটক। এটি একটি অ্যাবসার্ড নাটক। ‘অ্যাবসার্ড’ কথাটির অর্থ — উদ্ভট, হাস্যকর, অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অযৌক্তিক। অ্যাবসার্ড নাটকের কাহিনীর মধ্যে থাকে শূন্যতা ও অবক্ষয়। তাছাড়া এই শ্রেণির নাটকগুলির পাত্র-পাত্রীদের মনে হয় মৃত্যুই একমাত্র মুক্তির পথ। তাঁর রচিত অন্য আরেকটি অ্যাবসার্ডধর্মী নাটক ‘যদি আর একবার’ বহুরূপীর প্রযোজনায় অ্যাকাডেমিতে ১৯৬৭ সালের ২৭ফেব্রুয়ারি অভিনীত হয়েছিল। এটি ছিল একটি লঘু রসের কমেডি নাটক। এর সংলাপও ছিল ছন্দে বাঁধা। নাটকটি দুই দম্পতি ও এক অবিবাহিত মেয়ের গল্প। বর্তমান জীবনের ক্লান্তি ও অবসাদ এই নাটকে চিত্রিত হয়েছে। তাঁর ‘প্রলাপ’ নাটকটি বহুরূপী কর্তৃক নিউ এম্পায়ারে ১৯৬৭ সালের ৩ অক্টোবর অভিনীত হয়েছিল এবং বাদল সরকার নিজেই এর নির্দেশক ছিলেন৷ এই নাটকটিতে মূলত অস্তিত্ববাদী দর্শন প্রাধান্য পেয়েছে। বাদল সরকারের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে ‘বীজ’ এবং একাঙ্ক নাটক ‘মণিকাঞ্চন’ একটি উল্লেখযোগ্য। রাষ্ট্রযন্ত্রের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এই নাটকে প্রবল প্রতিবাদের সুর ধ্বনিত হয়েছে। তাঁর অন্যান্য একাঙ্ক নাটকগুলি হল ‘সমাবিত্ত’, ‘সারারাত্তির’, ‘বল্লভপুরের রূপকথা’, ‘সাদাকালো’, ‘চূর্ণপৃথিবী’, ‘বায়োস্কোপ’, ‘ভুল রাস্তা’, ‘ক-চ-ট-ত-প’, ‘ওরে বিহঙ্গ’ প্রভৃতি।
সাতের দশকে শহরাঞ্চলে, মফস্বলে প্রসেনিয়াম থিয়েটারের চর্চা চলছিল। যা এখনও চলে। নাটকের মাধ্যমে যে বক্তব্য রাখা হচ্ছিল তা শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছিল। গ্রামাঞ্চলে বা সাধারণ মানুষের মধ্যে সেভাবে পৌঁচ্ছচ্ছিল না। ফলে থিয়েটারে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ঘটছিল না বা বলা যায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে একটা দূরত্বের সম্পর্ক থেকে যাচ্ছিল। এই বিষয়টি তাঁকে গভীরভাবে নাড়া দেয়।
সেই সময় বাদল সরকার অন্য ধরনের থিয়েটারের কথা ভাবেন। সেই ভাবনাকে বাস্তবে রূপদানের জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেন। সঙ্গী হিসেবে কিছু মানুষকে সঙ্গেও পেয়ে গেলেন। প্রয়োজন পড়ল নাটককে নির্মেদ ও বহনযোগ্য করে গড়ে তোলার। যা সহজে পৌঁছে যাবে গ্রাম, মফসসলের সাধারণ মানুষের কাছে। ট্রেনে, বাসে, সাইকেলে, মাঠে-ময়দানে অভিনয় করে ঘুচিয়ে ফেলা হল দর্শক এবং অভিনেতার মধ্যের দূরত্ব।
জন্ম নিল নতুন ধারার থিয়েটারের। বাদল সরকার নাম দিলেন “থার্ড থিয়েটার”। তৈরি হল “মিছিল”, ” ত্রিংশ শতাব্দী”, “বোমা”, “পিকাদান”। দলের নাম দিলেন “শতাব্দী”। তাঁর “শতাব্দী” ঘুরতে থাকল গ্রাম থেকে মফসসলে। দর্শকের সঙ্গে তৈরি হল নিকট সম্পর্ক। “শতাব্দী” দোসর হিসেবে পেল কাঁচরাপাড়ার “পথসেনা” এবং বেহালার “আয়না”কে।
শিয়ালদার লরেটো স্কুলে নিয়মিত নাট্যচর্চা হতে লাগল। প্রতি তিনমাস অন্তর দুদিনের নাট্যোৎসব চলল। নন্দন চত্বরে মাসের প্রথম ও তৃতীয় রবিবার হল থিয়েটারের প্রর্দশন। থার্ড থিয়েটার এক নতুন দর্শনের জন্ম দিল। এছাড়া গ্রামের মানুষের কাছে থিয়েটারকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য করা হল “গ্রাম পরিক্রমা”।
বর্তমানে কল্যাণীর “রক্তকরবী” মঞ্চে এবং “নিরঞ্জন সদনে” থার্ড থিয়েটারের নিয়মিত অভিনয় হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের মধ্যে থিয়েটারকে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াস এখন অব্যাহত। থিয়েটারকে প্রসেনিয়াম থিয়েটারের ফ্রেমের বাইরে, প্রেক্ষাগৃহের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা বাদল সরকার আজীবন করেছিলেন। এখন তাঁর দল “শতাব্দী” এবং আরো অনুগামী দল আজও সে কাজ করে চলেছে।
বাদল সরকারের তৃতীয় থিয়েটার তাঁরই পরিচালনা আর অভিনয়ে দেখার সুযোগ ঢাকার দর্শকদের হয়েছে। সেটা ১৯৯৭ সালের অক্টোবরে। ‘উন্মুক্ত নাট্য উৎসব’ নামে ওই পরিবেশনার আয়োজক ছিল গণনাট্য সংস্থা আর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। অভিনয় স্থানটা ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম-দক্ষিণ গেটের অদূরে উদ্যানের ভেতর দিকের কদমতলার নিচে। তৃতীয় থিয়েটারের মঞ্চায়ন হয় চার দিন। ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ অক্টোবর। মঞ্চায়ন আরম্ভ করা হয় বিকেলে। ঢাকার সোহরাওয়র্দী উদ্যানের সবুজ দূর্বা ছাওয়া অঙ্গনে ২৫ অক্টোবর, শনিবার বিকেলে বাদল সরকারের তৃতীয় থিয়েটার মঞ্চায়নের সূচনা করা হয় ‘হট্টমালার ওপারে’ নাটকটি দিয়ে। এটির প্রযোজনা করে শতক দল। বাদল সরকারের এ নাটকে শিল্পীদের অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করে। নদীর স্রোত, গাছগাছালি, পাখির ডাক এ সবকিছুই শিল্পীরা নিপুণ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে জীবন্ত করে তোলেন। বাদল সরকার ৭২ বছর বয়সেও অভিনয় করছেন। ‘ভোমা’ নাটকে বাদল সরকার এ বৃদ্ধ বয়সেও দাপটে অভিনয় করেছেন ঢাকায়।
১৯৬৮ সালে সঙ্গীত নাটক আকাডেমি এবং ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী খেতাব পান তিন। ১৯৯৭ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি ফেলোশীপ থেকে ভারত সরকারের সর্ব্বোচ্চ পুরষ্কার “রত্ন সদস্য” পদকে তাকে সন্মানিত করা হয়। তার নাটক সব বাদল সরকারকে নিয়ে দুটি তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছিল। একটি তথ্যচিত্রের পরিচালক ছিলেন আমশন কুমার এবং অপরটির পরিচালক ছিলেন সুদেব সিনহা।
সারাজীবনে অজস্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ১৯৬৮ সালে তিনি সঙ্গীত নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ লাভ করেন এবং পারফর্মিং আর্টসে সর্বোচ্চ সম্মান সংগীত নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ— ‘রত্ন সদস্য’ পেয়েছিলেন তিনি৷ ১৯৭১ সালে তিনি জওহরলাল নেহরু ফেলোশিপ পান৷ ১৯৭২ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননায় ভূষিত করে৷
২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে পুনেতে জাতীয় চলচ্চিত্র সংরক্ষণাগার (National Film Archive of India),অনুষ্ঠিত ‘তেন্ডুলকার মহোৎসব’-এ বাদল সরকারের জীবন নিয়ে একটি ডিভিডি এবং একটি বই প্রকাশ করা হয়।
২০১১ সালের ১৩ মে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাদল সরকারের মৃত্যু হয়।
পরিশেষে বলতে হয় বাদল সরকার :বাংলায় থার্ড থিয়েটারে বা ‘তৃতীয় ধারা’র নাটকের জনক হিসাবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
মনোজিৎকুমার দাস, প্রাবন্ধিক, লাঙ্গলবাঁধ, মাগুরা, বাংলাদেশ।