মঙ্গলবার | ১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ১১:১২
Logo
এই মুহূর্তে ::
স্মরণে মননে জন্মদিনে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় : রিঙ্কি সামন্ত হুগলি জেলায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ছে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় খালিয়াজুরি মৌজার প্রাচীন ইমারত : ফারুকুর রহমান চৌধুরী দুর্দৈবপীড়িত রবীন্দ্রনাথ : দিলীপ মজুমদার শান্তি সভ্যতার গুণ, যুদ্ধ তার অপরাধ … ভিক্টর হুগো : অশোক মজুমদার হরপ্পার ব্যুৎপত্তি নিয়ে নতুন আলোকপাত : অসিত দাস বল পয়েন্ট কলমের জার্নির জার্নাল : রিঙ্কি সামন্ত মহেঞ্জোদারো নামের নতুন ব্যুৎপত্তি : অসিত দাস পরিসংখ্যানে দারিদ্রতা কমলেও পুষ্টি বা খাদ্য সংকট কি কমেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী অথ স্নান কথা : নন্দিনী অধিকারী তন্ত্র বিদ্যার বিশ্ববিদ্যালয় চৌষট্টি যোগিনীর মন্দির : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী মেসোপটেমিয়া ও সিন্ধুসভ্যতার ভাষায় ও স্থাননামে দ্রাবিড়চিহ্ন : অসিত দাস ধরনীর ধুলি হোক চন্দন : শৌনক দত্ত সিন্ধুসভ্যতার ভাষা মেসোপটেমিয়ার ব্যাবিলনের রাজা হামুরাবির নামে : অসিত দাস বিস্মৃতপ্রায় জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী মেসোপটেমিয়ার সুমেরীয় ভাষায় সিন্ধুসভ্যতার মেলুহার ভাষার প্রভাব : অসিত দাস বঙ্গতনয়াদের সাইক্লিস্ট হওয়ার ইতিহাস : রিঙ্কি সামন্ত নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘ঝড়ের পরে’ ভালো থাকার পাসওয়ার্ড (শেষ পর্ব) : বিদিশা বসু গাছে গাছে সিঁদুর ফলে : দিলীপ মজুমদার ভালো থাকার পাসওয়ার্ড : বিদিশা বসু সলিমুল্লাহ খানের — ঠাকুরের মাৎস্যন্যায় : ভাষা-শিক্ষায় সাম্প্রদায়িকতা : মিল্টন বিশ্বাস নেহরুর অনুপস্থিতিতে প্যাটেল, শ্যামাপ্রসাদও ৩৭০ অনুমোদন করেছিলেন : তপন মল্লিক চৌধুরী সিঁদুরের ইতিকথা আর কোন এক গাঁয়ের বধূর দারুণ মর্মব্যথা : দিলীপ মজুমদার সাহিত্যিকদের সংস্কার বা বাতিক : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে শ্রীপাণ্ডবা বা নির্জলা একাদশীর মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত দশহরার ব্যুৎপত্তি ও মনসাপূজা : অসিত দাস মেনকার জামাই ও জামাইষষ্ঠী : শৌনক ঠাকুর বিদেশী সাহিত্যিকদের সংস্কার ও বাতিক : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভক্তের ভগবান যখন জামাই (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই প্রভু জগন্নাথদেবের শুভ স্নানযাত্রার আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

তিন মাথা যার বুদ্ধি নেবে তার — এঁদের ভাব ভাবনা ও আদর্শ থেকে বঞ্চিত আজকের প্রজন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ৪৩০ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

যত দিন যাচ্ছে পাল্টাচ্ছে সবকিছু। চোখের সামনে যা দেখি, সবই যেন কোথায় গরমিল লক্ষ্য করি। ভয় হয়। কেন জানি না। ইদানিং প্রবীণ কিংবা বয়স্ক লোকদের আর একসঙ্গে বসে আড্ডা দিতে দেখি না। আবার চোখেও পড়ে না একেবারে বৃদ্ধদেরও। যাঁরা হাঁটু মুড়ে কিম্বা মাথা হাঁটুর উপর রেখে বসে আছেন। আর ঠিক পাশেই রাখা আছে শেষ জীবনের সহায় সম্বল লাঠিটা। এঁদের মা বলতেন ‘তিন মাথা’ পুরুষ। বুঝতে না পারায় বিষয়টি মা আরও খুলে বলেছিলেন। তা হল দুই হাঁটুর মাথা আর শরীরের মূল মাথা, মোট তিন মাথা।

আগে সমাজে তিন মাথাদের বুদ্ধি নিয়ে মানুষ চলত। সমীহ করত সকলে। এঁদের দেখা পেলেই শুধোতাম ‘দাদু কেমন আছো?’ ঝুলে পড়া গাল, চামড়ার ভিতরে ঢুকেছে চোখ দুটো। ফোকলা হাসি। হাত-পায়ের আঙুলগুলো কাঁপছে। তবুও জড়ানো গলায় দাদু বলতেন, ‘এই বেশ আছি। পরপারের অপেক্ষা করছি।’ ছেলেবেলায় সেই সমস্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের কাছে কত গল্প শুনেছি। তাঁদের আর দেখা পাই না। রাস্তা-ঘাটে চোখ খুঁজে বেরিয়েছে ওই সমস্ত মানুষদের। দেখা নেই। কাউকে শুধোলে বলে, যে দু-একজন আছেন, তাঁরা আর বাড়ির বাইরে বের হন না। প্রবীণদের কথা শুনব বলে প্রতিদিন মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠতো। একবার ঠাকুরদার মুখে শুনেছিলাম, ‘তিন মাথা যার বুদ্ধি নেবে তার, মাঝপুকুরের জল খাবে আর ভিটেতে বাজার বসাবে।’

তিনটি কথার অর্থ তখনও বুঝিনি। তিন মাথা বলতে বুঝেছিলাম ব্রহ্মার কথা বলছে। মাঝপুকুরে জল অর্থাৎ দিঘি বা পুকুরের মাঝখানে গিয়ে জল এনে খাওয়া এটাই বোধগম্য হয়েছিল। শেষ কথাটা অর্থাৎ ‘ভিটেয় বাজার বসাবে’ — এই কথাটি শুনে মনে হয়েছিল ভিটেতে জিনিসপত্রের কেনা বেচার হাট বসাতে। এই কথাগুলি শুনে ঠাকুরদাকে ভাল লাগেনি। মনে হয়েছিল শেষ বয়সে ভিমরতি ধরেছে। মাথাটা একেবারে গেছে। যখন বড় হলাম, বুঝলাম ওই তিনটে কথার অর্থ। ‘তিনমাথা যার বুদ্ধি নেবে তার’ কথাটা একজন প্রবীণ অভিজ্ঞ মানুষের কথা বলতে চেয়েছেন। বয়সকালে অনেক বৃদ্ধকেই দেখা যায় দু-হাঁটু উপর দিকে মুড়ে বসে থাকতে। দুই হাঁটু আর মাথা এক হয়ে যেত। এই প্রবীণ মানুষের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারলে জীবনে বড় হবার পথ দেখা যাবে।

তাই এই সমস্ত বৃদ্ধদের যে কোনও কাজের পরামর্শ নিতে পারলে লাভ। আবার ‘মাঝপুকুরের জল খাবে’ অর্থাৎ কেউ জল খেতে দিলে সবসময় উপরের জলটা ফেলতে হবে। ধুলো-বালি-ময়লা উড়ে এসে পড়তেই পারে। শরীর সুস্থ বা পেট সুস্থ রাখতে বিশুদ্ধ জল পান করা উচিত। এটাই মনে করাতে চেয়েছেন। এছাড়া শেষকথাটি হল — ভিটেতে বাজার বসাবে। কখনওই ভিটেতে কেউ বাজার-হাট বসায় না। বৃদ্ধ বলতে চেয়েছেন গ্রামে-গঞ্জে ভিটেতে ঘর-বাড়ি থাকে। তার পরেও জায়গা পড়ে-থাকে। ওই জায়গা ফেলে না রেখে বিভিন্ন ধরনের সবজির গাছ বসাতে হবে। তাহলে বাজারে যেতে হবে না। সংসারের প্রয়োজনীয় সবজি এখান থেকেই মিলবে।

এই গূঢ় অর্থ আজ বুঝেছি। যখন বুঝেছি তখন আর সেই ঠাকুরদা নেই কিম্বা কোনও বয়স্ককেও আর দেখতে পাই না। কেউ বৃদ্ধাশ্রমে, কেউ বা বাড়ির অন্তরালে ঘরের এক কোণে পরপারের আশায় দিন গুনছেন। যেখানে শান্তির বদলে দুঃখ বড় হয়ে বিরাজ করছে। বাড়ির মানুষের কাছে এরা এখন বোঝা। প্রবীণের উপদেশ, ভাব-ভাবনা, আদর্শ থেকে বঞ্চিত আজকের প্রজন্ম। তাই মনে হয় বড়দের আদর্শকে ভুলে যাচ্ছে। ‘তিন মাথা’দের বুদ্ধি বা উপদেশ পাবার জন্য গলি থেকে পাড়া, পাড়া থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে শহর ছুটে বেড়াচ্ছি। হায়! এদের দেখা মেলে না। একমাত্র সঙ্গী মেয়েটাও প্রশ্ন করে, কোথায় গেল ‘তিন মাথারা?’ উত্তর দিতে পারি না। চাপা দুঃখ, বেদনা নিয়ে পথ চলছি। জানি না এপথ কোথায় শেষ হবে!


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “তিন মাথা যার বুদ্ধি নেবে তার — এঁদের ভাব ভাবনা ও আদর্শ থেকে বঞ্চিত আজকের প্রজন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়”

  1. hadi bin jalil says:

    ভাইজান আমি দেখা পেয়েছি

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন