রবিবার | ১৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:২৫
Logo
এই মুহূর্তে ::
হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলা — আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংকট : সুব্রত কুমার দাস সিন্ধুসভ্যতার ভাষা যে ছিল প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার প্রমাণ মেলুহা তথা শস্যভাণ্ডার : অসিত দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (শেষ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস জাতিভিত্তিক জনগণনার বিজেপি রাজনীতি : তপন মল্লিক চৌধুরী গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তালশাঁসের চাহিদা : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (ষষ্ঠ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস ভারতের সংবিধান রচনার নেপথ্য কারিগর ও শিল্পীরা : দিলীপ মজুমদার চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (পঞ্চম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস আলোর পথযাত্রী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (চতুর্থ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস কন্নড় মেল্ল থেকেই সিন্ধুসভ্যতার ভূখণ্ডের প্রাচীন নাম মেলুহা : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (তৃতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস লোকভুবন থেকে রাজনীতিভুবন : পুরুষোত্তম সিংহ চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (দ্বিতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত রবীন্দ্রনাথের ইরান যাত্রা : অভিজিৎ ব্যানার্জি ঠাকুরকে ঠাকুর না বানিয়ে আসুন একটু চেনার চেষ্টা করি : দিলীপ মজুমদার যুদ্ধ দারিদ্র কিংবা বেকারত্বের বিরুদ্ধে নয় তাই অশ্লীল উন্মত্ত উল্লাস : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী ও শান্তিনিকেতন : প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বাঙালী রবীন্দ্রনাথ : সৈয়দ মুজতবা আলী অনেক দূর পর্যন্ত ভেবেছিলেন আমাদের ঠাকুর : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথের প্রথম ইংরেজি জীবনী : সুব্রত কুমার দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (প্রথম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস শুক্লাম্বর দিঘী, বিশ্বাস করে দিঘীর কাছে কিছু চাইলে পাওয়া যায় : মুন দাশ মোহিনী একাদশীর ব্রতকথা ও মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত নিজের আংশিক বর্ণান্ধতা নিয়ে কবিগুরুর স্বীকারোক্তি : অসিত দাস ঝকঝকে ও মজবুত দাঁতের জন্য ভিটামিন : ডাঃ পিয়ালী চ্যাটার্জী (ব্যানার্জী) সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা : লুৎফর রহমান রিটন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস

অসিত দাস / ২৪৯ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫

পঁচিশে বৈশাখ নিয়ে কিছু লিখতে গেলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি আক্ষেপের কথা মনে পড়ে। তিনি নাকি কবিতায় বৈশাখের সঙ্গে জয়ঢাক ছাড়া কিছু মেলাতে পারেননি।

আর একটি কবিতা পড়েছিলাম বহুদিন আগে। কবির নাম মনে পড়ছে না। কবিতাটির নাম ‘চব্বিশে ও ছাব্বিশে বৈশাখ’। এখানে লিখলাম যতটা মনে পড়ে —

চব্বিশে ও ছাব্বিশে বৈশাখ

পঁচিশে বৈশাখের আগের দিনটি ছিল চব্বিশে বৈশাখ।

এক মহাপুরুষের জন্মের শেষ প্রস্তুতি চলছিল,

ডাক্তার, বদ্যি, হাকিম, ধাইমা সকলেই ছিল উৎকণ্ঠিত।

এর মধ্যেই ঘন ঘন বার্তা পাঠানো হচ্ছিল

এদিক ওদিকে আত্মীয় কুটুম্বজনের বাড়িতে

এক নক্ষত্রের জন্মের আগাম খবর জানিয়ে।

দলগত সংহতির কোনও ত্রুটি বা ব্যত্যয়

ঘটাতে পারত সমূহ সর্বনাশ।

**

মহাপুরুষের জননীকে কিন্তু থাকতে হচ্ছিল

ধীর স্থির ও অচঞ্চল,

কারণ তিনিই তো হবেন রত্নগর্ভা

মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাদেই!

মহাপুরুষ ভূমিষ্ঠ হলেন পঁচিশে বৈশাখে—

তারপরের দিনটি যে ছিল ছাব্বিশে বৈশাখ

তা বলাই বাহুল্য।

**

এদিনটা ছিল আরও মারাত্মক

পৃথিবীর আলোর সঙ্গে মুখোমুখি মোলাকাতের

দ্বিতীয় চব্বিশ ঘণ্টার গুরুত্ব ছিল আরও অনেক বেশি

পৃথিবীর যাবতীয় ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া ও ছত্রাকের

আক্রমণ প্রতিহত করার প্রক্রিয়াটা সেদিনই যে

সেই নবজাতককে রপ্ত করতে হয়েছিল।

এরপরের ঘটনা তো কীটাণুর বিরুদ্ধে

এক মানবসন্তানের যুদ্ধজয়ের ইতিহাস।

এহেন ক্রান্তদর্শী ও কালজয়ী রবীন্দ্রনাথেরও কিন্তু দৃষ্টির কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। লাল-দুর্বলতা বলা যায় এটিকে। লাল রঙ তিনি ভালো দেখতে পেতেন না। তখন লাল সেলামের চল হয়নি বঙ্গে। হলে তিনি আরও আতান্তরে পড়তেন।

কাব্যসাহিত্যে তিনি ‘লাল’ শব্দটি বেশি জায়গায় লেখেননি। ‘রাঙা’ ব্যবহার করেছেন। ‘আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে’— যেমন লিখেছেন, তেমনি ছেলে-ভোলানো ‘রবিমামা দেয় হামা, গায়ে রাঙা জামা ওই’— এটাও লিখেছেন।

লাল একেবারে লেখেননি তা নয়, তবে তুলনায় কম। সাহিত্যে ও আত্মজৈবনিক লেখাতে ক্বচিৎ কদাচিৎ লাল রঙের উল্লেখ পাওয়া যায়।

জীবনস্মৃতিতে ‘হিমালয়যাত্রা’ পর্বে লিখেছেন, ‘পিতা গায়ে একটি লাল শাল পরিয়া হাতে একটি মোমবাতির সেজ লইয়া নিঃশব্দসঞ্চরণে চলিয়াছেন’।

‘য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র’-এ লিখিয়াছেন, “একজন মুসলমানিনী সাজিয়াছেন, লাল ফুলো ইজের, তার উপর একটা রেশমের পেশোয়াজ, মাথায় টুপির মতো—”।

আর একটি পত্রে লিখিয়াছেন, “ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে লাল লাল ফুলো ফুলো মুখ নিয়া বাড়ির দরজার বাইরে ও রাস্তায় খেলা করিতেছে।”

তাহলে কবিগুরু প্রশান্তকুমার মহলানবিশের পত্নী নির্মলকুমারী মহলানবিশকে তিনি লাল রঙ দেখতে না পাওয়ার কথা বলতে গেলেন কেন? তা না বললে নির্মলকুমারীই বা বাইশে শ্রাবণ বইয়ে লিখলেন কেন, —

“বাগানে ঘাসের মধ্যেও খুব ছোট নীল রঙের জংলী ফুল ফুটে থাকলে ঠিক ওঁর চোখে পড়তো, বলতেন, ‘দ্যাখো দ্যাখো, কী চমৎকার ফুলটা’। হাসতেন আর বলতেন, ‘কী আশ্চর্য। এতো স্পষ্ট জিনিসটা দেখতে পাচ্ছ না? আমি তোমার লাল ফুল ভালো দেখতে পাইনে বলে আমাকে ঠাট্টা করো।…”

তবে কবিতা, গল্প, উপন্যাসে লাল-এর চেয়ে ‘রাঙা’ যে বেশি ব্যবহার করেছেন, সেটা অনস্বীকার্য।

কবিগুরু যে আংশিক বর্ণান্ধ ছিলেন, তা কবি নিজেই স্বীকার করেছেন।

তাহলে রবীন্দ্রনাথের ‘লাল’ রঙ আসলে কী? তিনি যদি সত্যিই লাল রঙ দেখতে পেতেন, তবে তিনি বিভিন্ন সময়ে লাল রঙ দেখতে না পাওয়ার কথা বলতে গেলেন কেন?

আমরা বর্ণান্ধ মানুষের রঙের স্পেক্ট্রামের কথা জানি। রেড-গ্রিন কালার ব্লাইন্ড ব্যক্তিরা লালকে শুধু সবুজই দেখেন না, বাদামি ও ধূসরও দেখেন। রবীন্দ্রনাথের লেখায় উল্লিখিত লাল আসলে বাদামি বা ধূসর। তাঁর আঁকা ছবিতেও সেটা লক্ষ্য করা যায়। মনে হয় রবীন্দ্রনাথের রেড-সেনসিটিভ কোন সেলে (Cone Cell) শুধু নয়, গ্রিন-সেনসিটিভ কোন সেলেও গোলমাল ছিল। অর্থাৎ তিনি শুধু প্রোটানোপই (Protanope) ছিলেন না, ডিউটেরানোপ-ও (Deuteranope) ছিলেন।

তাই তিনি লাল রঙকে বেগুনি, বাদামি বা ধূসর দেখতেন। এই রঙকেই তিনি ‘লাল’ লিখেছেন বিভিন্ন লেখায়।

জানি না, চক্ষুবিশেষজ্ঞরা কবির রঙের এই বিচিত্র পারসেপশন নিয়ে কী বলবেন! জ্যোতির্ময় বসু আর পিকফোর্ডের পরে কেউ এটা নিয়ে কাজ করেছেন কি?


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন