বৃহস্পতিবার | ১৭ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:৪২
Logo
এই মুহূর্তে ::
ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (দ্বিতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ হুমায়ুন-এক স্মৃতি-এক আলাপ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সনজীদা যার সন্তান : শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ৯৯ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

রাঢ় অঞ্চলের মানুষের কাছে আজও মৃত্যুঞ্জয়ী ভেষজ উদ্ভিদ। বিশেষ করে চৈত্র গাজনের সন্ন্যাসীদের কাছে। বঙ্গে একের পর এক নতুন বছর আসে। পরিবর্তনশীল সমাজে রাঢ় বঙ্গে গাজন সন্ন্যাসীদের গতানুগতিক ধারার জীবন আজও অপরিবর্তনীয়। তিনদিনের কৃচ্ছসাধনের সঙ্গে সঙ্গে শিবকে তুষ্ট করতে মধ্যযুগীয় আচার প্রথা সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি। রাঢ় অঞ্চলের চৈত্র মাসের গাজন উৎসবে সন্ন্যাসীদের অঙ্গের বিভিন্ন অংশে বাণফোঁড়া থেকে শুরু করে কাতানের উপরে ঝাঁপ, এমনকি সারা শরীরে পেরেক গেঁথে ইষ্টদেবতা শিবকে তুষ্ট করতে গিয়ে দেবালয়ের সামনে রক্তের স্রোত আজও লক্ষ্যনীয়। যা দেখলে শিউড়ে উঠতে হয়। কিন্তু এর পিছনে সন্ন্যাসীদের রক্ষা করতে কালাপুষ্প আজও বিরাজ করছে। পুরানো বর্ষে রাঢ় বঙ্গের সন্ন্যাসীদের সুস্থ করে, সেইসঙ্গে এখান মানুষের বেঁচে থাকার বার্তা দেওয়ার রেওয়াজ আজও প্রচলিত। শুভ বাংলা নববর্ষে এখানকার মানুষ আজও কালাপুষ্পকে বাঁচিয়ে রাখার মেহনত থেকে পিছপা হন না। কারণ তাঁরা জানেন, বর্ষ শেষে চৈত্র গাজনের সন্ন্যাসীদের সুস্থ রাখতে পারে একমাত্র কালাপুষ্প। যখন মানুষ দেখেন জিহ্বা, কপাল, নাক, কান ও পেটে লোহার শলাকা প্রবেশ করে এফোঁড় ওফোঁড় করে সন্ন্যাসীরা রক্তের স্রোত শিবের পায়ে নিবেদন করে নববর্ষকে আহ্বান করেন এবং তারপরেই কালাপুষ্প জলজ উদ্ভিদের রস গায়ের ক্ষতস্থানে প্রলেপ দিয়ে রক্ষা পান। তাই এখানকার মানুষের কাছে কালাপুষ্প নববর্ষের ধারক ও বাহক ও বটে। একে ছোটোখাটো খাবার, পুকুরে আজও সযত্ন রাখা আছে।

নববর্ষে রাঢ় বাংলায় শেওড়াগাছের যেমন কদর তার চেয়ে বেশি কদর কালা পুষ্পের। কারণ সারা বছর এই জলজ ভেষজ উদ্ভিদ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে অব্যর্থ ওষুধ। তাই বর্ষ শেষ ও শুরুতেই কালা পুষ্পকে ঘিরে আলাদা প্রভাব রাঢ় বাংলায়। প্রসঙ্গত, আরামবাগ ও বেঙ্গাই তথা সমগ্র রাঢ় অঞ্চলের কুলদেবতা হলেন ধর্মরাজ। তাঁর উপর যুগ থেকে যুগান্তে মানুষ বিশ্বাস রেখে চলেছেন। সেই যুগান্তের বিশ্বাসে ভর করেই শ্যামরায় ধর্মরাজের সেবায়েতরা বিবিধ রোগের লৌকিক চিকিৎসা করে থাকেন। কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। বস্তু মিলুক না মিলুক, বিশ্বাস করতে ক্ষতি কী? তাঁদের দেওয়া সেই ঔষধের নাম হল কালাপুষ্প। তাতে সন্ন্যাসীদের কৃচ্ছ্রসাধনের রক্ত বন্ধ করতে যেমন কাজে লাগে, তেমনি বন্ধ্যাত্ব, নানা স্ত্রীরোগও নাকি নিরাময় হয়। এটা এখানকার মানুষের গাঁয়ের বিশ্বাস। এই ওষধি পুষ্প গাবায় হয়। গাবা বা গাবাল পুকুরের ঢালু অংশকে বলা হয়। তাই রাঢ় বঙ্গের অনেক জায়গায় এই জলজ ভেষজ উদ্ভিদকে সযত্নে রাখা আছে।

উল্লেখ্য, এই কালাপুষ্প ছাড়াও আরও বেশ কিছু উদ্ভিদ যাদের বিভিন্ন অংশ (যেমন পাতা, ফুল, ফল, শিকড় বা বাকল) বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই গাছগুলো ঐতিহ্যগতভাবে লোকায়তনিক চিকিৎসা বা আয়ুর্বেদের অংশ, যেখানে তাদের থেরাপিউটিক বা ঔষধি গুণাবলী ব্যবহার করা হয়। যা রাঢ় বাংলায় এদের গুরত্ব অপরিসীম। যেমন নিম, তুলসী, আদা, হলুদ, এবং চিরতা ঔষধি গুণাবলির জন্য পরিচিত।

প্রসঙ্গত, রাঢ় বাংলায় নববর্ষে যেমন কালা পুষ্পকে মানুষ কদর করে, ঠিক একইভাবে সূচনায় বিভিন্ন সবজি গাছ লাগিয়ে সংসারের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করেন। বিশেষ করে উল্লেখ করতেই হয় কালা পুষ্পের। চৈত্রের সংক্রান্তির গাজন উৎসবে সন্ন্যাসীদের ঘরে ঘরে জিওনকাঠি হিসেবে বিরাজ করছে কালাপুষ্প।

২০২৫ নববর্ষ বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন