সোমবার | ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:৪৫
Logo
এই মুহূর্তে ::
দুর্দৈবপীড়িত রবীন্দ্রনাথ : দিলীপ মজুমদার শান্তি সভ্যতার গুণ, যুদ্ধ তার অপরাধ … ভিক্টর হুগো : অশোক মজুমদার হরপ্পার ব্যুৎপত্তি নিয়ে নতুন আলোকপাত : অসিত দাস বল পয়েন্ট কলমের জার্নির জার্নাল : রিঙ্কি সামন্ত মহেঞ্জোদারো নামের নতুন ব্যুৎপত্তি : অসিত দাস পরিসংখ্যানে দারিদ্রতা কমলেও পুষ্টি বা খাদ্য সংকট কি কমেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী অথ স্নান কথা : নন্দিনী অধিকারী তন্ত্র বিদ্যার বিশ্ববিদ্যালয় চৌষট্টি যোগিনীর মন্দির : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী মেসোপটেমিয়া ও সিন্ধুসভ্যতার ভাষায় ও স্থাননামে দ্রাবিড়চিহ্ন : অসিত দাস ধরনীর ধুলি হোক চন্দন : শৌনক দত্ত সিন্ধুসভ্যতার ভাষা মেসোপটেমিয়ার ব্যাবিলনের রাজা হামুরাবির নামে : অসিত দাস বিস্মৃতপ্রায় জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী মেসোপটেমিয়ার সুমেরীয় ভাষায় সিন্ধুসভ্যতার মেলুহার ভাষার প্রভাব : অসিত দাস বঙ্গতনয়াদের সাইক্লিস্ট হওয়ার ইতিহাস : রিঙ্কি সামন্ত নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘ঝড়ের পরে’ ভালো থাকার পাসওয়ার্ড (শেষ পর্ব) : বিদিশা বসু গাছে গাছে সিঁদুর ফলে : দিলীপ মজুমদার ভালো থাকার পাসওয়ার্ড : বিদিশা বসু সলিমুল্লাহ খানের — ঠাকুরের মাৎস্যন্যায় : ভাষা-শিক্ষায় সাম্প্রদায়িকতা : মিল্টন বিশ্বাস নেহরুর অনুপস্থিতিতে প্যাটেল, শ্যামাপ্রসাদও ৩৭০ অনুমোদন করেছিলেন : তপন মল্লিক চৌধুরী সিঁদুরের ইতিকথা আর কোন এক গাঁয়ের বধূর দারুণ মর্মব্যথা : দিলীপ মজুমদার সাহিত্যিকদের সংস্কার বা বাতিক : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে শ্রীপাণ্ডবা বা নির্জলা একাদশীর মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত দশহরার ব্যুৎপত্তি ও মনসাপূজা : অসিত দাস মেনকার জামাই ও জামাইষষ্ঠী : শৌনক ঠাকুর বিদেশী সাহিত্যিকদের সংস্কার ও বাতিক : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভক্তের ভগবান যখন জামাই (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-এর ছোটগল্প ‘সময়ের প্ল্যাকটফর্ম’ গুহাচিত্র থেকে গ্রাফিটি : রঞ্জন সেন জামিষষ্ঠী বা জাময়ষষ্ঠী থেকেই জামাইষষ্ঠী : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই প্রভু জগন্নাথদেবের শুভ স্নানযাত্রার আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ২৮৭ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

রাঢ় অঞ্চলের মানুষের কাছে আজও মৃত্যুঞ্জয়ী ভেষজ উদ্ভিদ। বিশেষ করে চৈত্র গাজনের সন্ন্যাসীদের কাছে। বঙ্গে একের পর এক নতুন বছর আসে। পরিবর্তনশীল সমাজে রাঢ় বঙ্গে গাজন সন্ন্যাসীদের গতানুগতিক ধারার জীবন আজও অপরিবর্তনীয়। তিনদিনের কৃচ্ছসাধনের সঙ্গে সঙ্গে শিবকে তুষ্ট করতে মধ্যযুগীয় আচার প্রথা সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি। রাঢ় অঞ্চলের চৈত্র মাসের গাজন উৎসবে সন্ন্যাসীদের অঙ্গের বিভিন্ন অংশে বাণফোঁড়া থেকে শুরু করে কাতানের উপরে ঝাঁপ, এমনকি সারা শরীরে পেরেক গেঁথে ইষ্টদেবতা শিবকে তুষ্ট করতে গিয়ে দেবালয়ের সামনে রক্তের স্রোত আজও লক্ষ্যনীয়। যা দেখলে শিউড়ে উঠতে হয়। কিন্তু এর পিছনে সন্ন্যাসীদের রক্ষা করতে কালাপুষ্প আজও বিরাজ করছে। পুরানো বর্ষে রাঢ় বঙ্গের সন্ন্যাসীদের সুস্থ করে, সেইসঙ্গে এখান মানুষের বেঁচে থাকার বার্তা দেওয়ার রেওয়াজ আজও প্রচলিত। শুভ বাংলা নববর্ষে এখানকার মানুষ আজও কালাপুষ্পকে বাঁচিয়ে রাখার মেহনত থেকে পিছপা হন না। কারণ তাঁরা জানেন, বর্ষ শেষে চৈত্র গাজনের সন্ন্যাসীদের সুস্থ রাখতে পারে একমাত্র কালাপুষ্প। যখন মানুষ দেখেন জিহ্বা, কপাল, নাক, কান ও পেটে লোহার শলাকা প্রবেশ করে এফোঁড় ওফোঁড় করে সন্ন্যাসীরা রক্তের স্রোত শিবের পায়ে নিবেদন করে নববর্ষকে আহ্বান করেন এবং তারপরেই কালাপুষ্প জলজ উদ্ভিদের রস গায়ের ক্ষতস্থানে প্রলেপ দিয়ে রক্ষা পান। তাই এখানকার মানুষের কাছে কালাপুষ্প নববর্ষের ধারক ও বাহক ও বটে। একে ছোটোখাটো খাবার, পুকুরে আজও সযত্ন রাখা আছে।

নববর্ষে রাঢ় বাংলায় শেওড়াগাছের যেমন কদর তার চেয়ে বেশি কদর কালা পুষ্পের। কারণ সারা বছর এই জলজ ভেষজ উদ্ভিদ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে অব্যর্থ ওষুধ। তাই বর্ষ শেষ ও শুরুতেই কালা পুষ্পকে ঘিরে আলাদা প্রভাব রাঢ় বাংলায়। প্রসঙ্গত, আরামবাগ ও বেঙ্গাই তথা সমগ্র রাঢ় অঞ্চলের কুলদেবতা হলেন ধর্মরাজ। তাঁর উপর যুগ থেকে যুগান্তে মানুষ বিশ্বাস রেখে চলেছেন। সেই যুগান্তের বিশ্বাসে ভর করেই শ্যামরায় ধর্মরাজের সেবায়েতরা বিবিধ রোগের লৌকিক চিকিৎসা করে থাকেন। কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। বস্তু মিলুক না মিলুক, বিশ্বাস করতে ক্ষতি কী? তাঁদের দেওয়া সেই ঔষধের নাম হল কালাপুষ্প। তাতে সন্ন্যাসীদের কৃচ্ছ্রসাধনের রক্ত বন্ধ করতে যেমন কাজে লাগে, তেমনি বন্ধ্যাত্ব, নানা স্ত্রীরোগও নাকি নিরাময় হয়। এটা এখানকার মানুষের গাঁয়ের বিশ্বাস। এই ওষধি পুষ্প গাবায় হয়। গাবা বা গাবাল পুকুরের ঢালু অংশকে বলা হয়। তাই রাঢ় বঙ্গের অনেক জায়গায় এই জলজ ভেষজ উদ্ভিদকে সযত্নে রাখা আছে।

উল্লেখ্য, এই কালাপুষ্প ছাড়াও আরও বেশ কিছু উদ্ভিদ যাদের বিভিন্ন অংশ (যেমন পাতা, ফুল, ফল, শিকড় বা বাকল) বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই গাছগুলো ঐতিহ্যগতভাবে লোকায়তনিক চিকিৎসা বা আয়ুর্বেদের অংশ, যেখানে তাদের থেরাপিউটিক বা ঔষধি গুণাবলী ব্যবহার করা হয়। যা রাঢ় বাংলায় এদের গুরত্ব অপরিসীম। যেমন নিম, তুলসী, আদা, হলুদ, এবং চিরতা ঔষধি গুণাবলির জন্য পরিচিত।

প্রসঙ্গত, রাঢ় বাংলায় নববর্ষে যেমন কালা পুষ্পকে মানুষ কদর করে, ঠিক একইভাবে সূচনায় বিভিন্ন সবজি গাছ লাগিয়ে সংসারের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করেন। বিশেষ করে উল্লেখ করতেই হয় কালা পুষ্পের। চৈত্রের সংক্রান্তির গাজন উৎসবে সন্ন্যাসীদের ঘরে ঘরে জিওনকাঠি হিসেবে বিরাজ করছে কালাপুষ্প।

২০২৫ নববর্ষ বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন